Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

স্বপ্ন এবার সত্যি হলো— প্রজন্মের হাতে হাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ


২২ নভেম্বর ২০২০ ১৩:০৪

জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তখন রাষ্ট্রপতি। তথ্য প্রযুক্তির কাজে টেলিযোগাযোগের জন্য দুর্গম এলাকা বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ স্থাপন ও উদ্বোধন করেন। সে যুগের আধুনিক তথ্য সম্প্রচারের দিগন্ত ভূ-উপগ্রহ উন্মোচন করেন। ১১টি দেশের সঙ্গে টেলিফোন ডাটা কমিউনিকেশন, ফ্যাক্স, টেলেক্স ইত্যাদি আদান-প্রদানের সুবিধা বঙ্গবন্ধুর হাতে এদেশের ভিত্তিভূমিতে প্রথম স্থাপিত হয়। সেই ১৯৭৫-এর ১৪ জুন। অথচ আজ? অবাক কাণ্ড! মহাশূন্যে উড়ছে আমাদের স্যাটেলাইট। এমন স্বপ্ন আগে কে কবে দেখেছেন? বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আজ সত্যি হয়েছে। বাঙালির স্বাধীন সত্তা বিকাশের বড় প্রতীক- জয়বাংলা খচিত ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’ মহাশূন্যে সদা জাগ্রত, সদা তৎপর। সম্প্রচারের ‘নতুন দিগন্ত’ স্বপ্নের ডিজিটাল জানালা খুলে দিয়েছে মহাশূন্যে ডানা মেলা ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১’। উন্নয়নের অভিনব যাত্রায় এগিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা সরকারের নতুন বাংলাদেশ স্যাটেলাইটের যুগে প্রবেশ করেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারী ৫৭তম দেশ। জাতি হিসেবে ব্যাপারটা আমাদের জন্য অবশ্যই গৌরবের।

বিজ্ঞাপন

এখন বিশ্বায়নের যুগ। বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সময়। ডিজিটাল সময়। এরইমধ্যে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের সেবা পৌঁছে গেছে জনগণের দোরগোড়ায়। স্যাটেলাইটের মধ্য দিয়ে স্যাটেলাইট ও অ্যান্ড্রয়েড টিভি, স্মার্টফোন, গেজেট, পঞ্চম প্রজন্মের ৫জি মোবাইল নেটওয়ার্ক, ওয়াইফাই ইন্টারনেট সম্প্রচার ও দুর্গম এলাকায় টেলিযোগাযোগ ও ডিজিটাল তথ্যপ্রযুক্তিতে এনেছে দুর্দান্ত গতি। ভাবা যায়? মাত্র ১০ বছর সময়ের মধ্যে সবকিছুই প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল হয়ে উঠেছে। চারপাশে চোখ মেলে তাকালে অন্ধকারেও চোখে পড়ে নীলাভ আলো। তার মানে স্মার্ট গেজেটে দরকারি কাজ হচ্ছে। হাতে হাতে অ্যান্ড্রয়েডে তথ্য প্রযুক্তির ছড়াছড়ি। সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগ আর তরুণদের হাত ধরে দেশে স্মার্ট গেজেট, ওয়াইফাইয়ের ব্যবহার বেড়ে গেছে। ডিজিটাল কমিউনিকেশনের প্রভাবে বাঙালির জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এসেছে পরিবর্তন। দ্রুত বদলে গেছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা ও চাহিদার ধরন। ধরা যাক, ফেসবুক। দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী ছয় কোটির বেশি। এর মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে ফেসবুকভিত্তিক ব্যবসা। ডিজিটাল কমিউনিকেশনের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের বাতাসে সামাজিক মিডিয়ার সুবিধা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান উদ্যোক্তা। সত্যিই এটি বাস্তব। রূপকথা নয়। কী চমৎকার ডিজিটাল ম্যাজিক। অনলাইন পর্দা জুড়ে বসে গেছে যাবতীয় ব্যবসা পণ্যের ভিজুয়াল হাট-বাজার। তাও আবার হাতের তালুতে। সব সময়। পণ্যের প্রচার ও প্রসার ঘটানো যায় খুব সহজে। এক ক্লিকে। ডিজিটাল এই বিপণন স্মার্টফোনকে শপিং ব্যাগ আর দোকানে পরিণত করেছে। আগে আমাদের কোনো পণ্য কিনতে হলে মার্কেটে যেতে হতো। ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে ঘরে বসেই নিজের ইচ্ছানুযায়ী খুব সহজে এখন জিনিসপত্র কেনাবেচা করা যাচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি, পড়াশোনা সবকিছু হয়ে গেছে ডিজিটাল।

বিজ্ঞাপন

শুধু কি তাই? তৈরি হয়েছে স্মার্টকার্ড, ডিজিটাল লাইসেন্স, পাসপোর্ট, ইউনিক আইডির বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ। এতে সেবা প্রদান হয়েছে সহজ ও স্বচ্ছ। দুর্নীতি, অপরাধ, জুচ্চুরি জালিয়াতি করে কারও পালানোর পথ নেই। ১০ কোটি ডিজিটাল আইডি এখন নাগরিকের হাতে হাতে। এছাড়াও ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা, ডেটাবেইজের মাধ্যমে দুস্থ এবং বিধবা মহিলাদের ভাতা, মুক্তিযোদ্ধাদের ভাতা প্রদান তো রয়েছেই। ওয়েবভিত্তিক চাকরি, ব্যাংক, সিটি কর্পোরেশন নাগরিক হেল্পডেস্ক, এসএমএসের মাধ্যমে গ্যাস, ফোন, বিদ্যুৎবিল, রেলওয়ের অনলাইন টিকেট, যাত্রীদের তথ্যসেবা, মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য ডাটাবেইজ, পারসোনাল ডাটাসিট (পিডিএস) অনলাইন প্রদর্শন এবং প্রিন্ট ইত্যাদি জরুরি কাজে এখন কোন মানুষ লাগে না। হয়ে যা বললেই হলো। আঙ্গুলের স্পর্শেই হয়ে যায়।

মানুষের দোরগোড়ায় তথ্য ও সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য চালু রয়েছে জাতীয় তথ্য-বাতায়ন। এই তথ্য-বাতায়নের ৪৫ হাজার ওয়েবসাইট ও সরকারি বিভিন্ন সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ‘জাতীয় তথ্য বাতায়নে’ ভিজিট করে যাবতীয় তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। শুধু কি তাই? গুগল প্লে স্টোরে রাখা হয়েছে ৬০০ মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক নাগরিক নিজেদের প্রয়োজনে এসব অ্যাপ্লিকেশন স্মার্টফোনে বিনামূল্যে ডাউনলোড ও ইনস্টল করে ব্যবহার করছেন। কঠিন কাজ হয়ে যাচ্ছে একদম সহজ। জলবৎ তরলং। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক এসব অ্যাপের মাধ্যমে পাচ্ছেন কৃষিসংক্রান্ত বিভিন্ন দরকারি তথ্য।

প্রতারণা বা সহিংসতার শিকারে ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে সঙ্গে সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে পুলিশের জরুরি সেবা। মৎস্য ও পশুসম্পদ তথ্যকেন্দ্র এখন হাতের মুঠোয়। স্থানীয় সরকার পর্যায়ে সার্বক্ষণিক চালু রয়েছে ইউনিয়ন পরিষদভিত্তিক তথ্যকেন্দ্র। আর কী চাই। মানুষের জরুরি সেবাগুলোর প্রাপ্তি সহজ হয়েছে। এভাবে ডিজিটাল গভার্নেন্স প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণ এবং সরকারের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে উদার গণতান্ত্রিক নৈকট্য। ইতিমধ্যে ডিজিটাল ইভিএম-এ প্রথম ভোট ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে (স্বল্প ভোটার উপস্থিতি হলেও) নিরপেক্ষতার নজীর স্থাপন করেছে। ডিজিটাল কনটেন্টের মাধ্যমে শিক্ষক প্রশিক্ষণ ফলপ্রসূ হচ্ছে। প্রাইমারি স্কুলেও মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর। দামে সস্তা বড় বড় এলইডি মনিটর, প্রজেক্টর, ডিজিটাল অ্যান্ড্রয়েড গেজেটের ব্যবহার বাংলাদেশের গ্রামগঞ্জের চারিদিকে এখন জয়জয়কার দেখা যায়। ডিজিটাল বাংলাদেশে ‘উবার-পাঠাও’-এর মতো রাইড শেয়ারিং সেবা চালু হওয়ায় যুবসমাজের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। তেমনি যাতায়াতেও বেড়েছে সুবিধা। ঘরে বসে মুঠোফোনকে বললেই হলো। ‘ওভাই’, ও বোন, আমার জন্য একটা ‘উবার’ ‘পাঠাও’ তো, ‘সহজ’ হয়ে যায়! ঘরে বসেই নগদ, বিকাশ, ইউক্যাশ, শিউর ক্যাশ প্রভৃতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মুহূর্তেই পাঠানো যাচ্ছে টাকা আপনজনদের কাছে। গ্রামের মায়েরা উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছেন হাতে হাতে, ঘরে বসে। এজন্যে আগের মতো কয়েক কিলোমিটার দূরে ব্যাংকে যেতে হয় না। এছাড়াও রয়েছে ডিজিটাল খাতের একটি বড় অংশ (সাড়ে ছয় লাখ) আউটসোর্সিং করা ফ্রিল্যান্সার। গড়ে উঠেছে সফটওয়্যার খাতের উদ্যোক্তা। নারীদের ডিজিটাল প্রযুক্তিতে যুক্ত করায় এ খাতে সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের কারণেই গ্লোবালাইজেশন যুগে বাঙালি প্রজন্ম একই বিশ্ব ছাতার নীচে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার অনন্য সুযোগ পেয়েছে। গুগল, ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ও অন্যান্য প্ল্যাটফর্ম মানুষের জীবনকে করেছে অনেক সহজ ও আধুনিক। অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে যা ব্যাপক গুরুত্ব বহন করছে।

জ্বি হ্যাঁ, ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্যে ‘ভিশন ২০২১’ শিরোনামে নির্বাচনী ইশতেহারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একটি উন্নত দেশ, সমৃদ্ধ ডিজিটাল সমাজ, একটি ডিজিটাল যুগের জনগোষ্ঠীর রূপান্তরিত উৎপাদনব্যবস্থার কথা ঘোষণা দেয়। নতুন জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির কথা বলে। যাতে অর্থ ও শারীরিক শক্তির বদলে মেধা ও জ্ঞানের শক্তির বেশি প্রাধান্য থাকবে। এমন সমাজ গঠনের প্রেরণা ও স্বপ্ন দেখিয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনিই ডিজিটাল বাংলাদেশের পথিকৃৎ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের কার্যকরী দিকনির্দেশনা এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সফল প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট জুনায়েদ আহমেদ পলক এমপির প্রচেষ্টার ফসল- জীবনযাত্রা বদলে যাওয়া, এই-‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’।

তবে বদলানোর শুরুটা এতো সোজা ছিল না। মাত্র বছর দশেক আগের কথা স্মরণ করলে বুঝা যাবে। আমরা কী অদ্ভুত এক অন্ধকার জগতেই না বাস করে এসেছি। সত্যিই সেলুকাস! বাংলাদেশ তখন সনাতনী সমাজ ব্যবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে বিজ্ঞান-প্রযুক্তির সমাজে সবেমাত্র পা দিয়েছে। তখনকার অ্যানালগ থেকে একটি দেশ ডিজিটাল হওয়ার প্রসব যন্ত্রণা কী ভয়াবহ ছিল? ভাবা যায়? সে সময় চারপাশে নানান মুখে ‘ডিজিটাল’ নিয়ে শোনা যেতো তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যভরা খেদোক্তি: ‘আহ! ডিজিটাল বাংলাদেশ।’ সেইসব তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যকে পায়ে দলে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর কাজে একযোগে এগিয়ে এসেছে রাষ্ট্রের সর্বাঙ্গ। তবে একাজে সবার আগে চ্যালেঞ্জ নিয়ে এগিয়ে আসে বাংলাদেশ ব্যাংক। ডিজিটাল বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের নীতি-কৌশল বাস্তবায়নে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে যারা কাজ করেছেন, তাদের অন্যতম বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু চেয়ার প্রফেসর ড. আতিউর রহমান। গভর্নর থাকাকালে ব্যাংকিং সেক্টরে তিনি উদ্ভাবনী শক্তির অনন্য স্বাক্ষর রাখেন। যা কোনমতেই অস্বীকার করার বিষয় নয়। একথা কে না জানেন, ব্যাংক ও আর্থিক সেক্টরে ব্যবহারিকভাবে দ্রুত আধুনিক ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রবেশ ঘটে তার আমলে। বিকাশ, ক্রেডিট কার্ড, এটিএম বুথ, অনলাইন ব্যাংকিং ইত্যাদির সফল রূপান্তর ঘটে। সাবেক গভর্নর আতিউর রহমানের সময়ে প্রবর্তিত মোবাইল ব্যাংকিংয়ে এখন প্রায় ৩৮ হাজার কোটি টাকা লেনদেন হচ্ছে। মোবাইল ব্যাংকিংয়ে নিবন্ধিত গ্রাহকসংখ্যা ৭ কোটি ৫৫ লাখ। এটি এখন অলটারনেটিভ পেমেন্ট চ্যানেল হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। ঠিক একইভাবে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রেও কর্মসংস্থান ও সেবা প্রাপ্তির এক অনন্য নজির স্থাপিত হয়েছে। এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে গ্রাহকসংখ্যা ৫২ লাখ। গ্রাহকরা জমা রাখেন ৭ কোটি টাকা। দেশের ৩৮০০ ডিজিটাল সেন্টারে এজেন্ট ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু রয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতায় ১০ লাখেরও বেশি মানুষকে ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের মাধ্যমে (ইএফটি) ভাতা প্রদান করছে। এছাড়াও কৃষিভিত্তিক গ্রামীণ অর্থনীতি, পরিবেশবান্ধব সবুজ বা গ্রিন ব্যাংকিং, স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য স্কুল ব্যাংকিং (বর্তমানে জমা ১,৪৯৪ কোটি টাকা) চালু করেন। গরীবের গভর্নর বলে সুখ্যাতি কুড়ানো তুখোড় মেধাবী আতিউর রহমান চালু করেন ১০ টাকার অ্যাকাউন্ট, নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ, নতুন উদ্যোক্তাদের এসএমই ঋণ, সিএসআর ইত্যাদি নানান নামে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সেবায় আনেন। ডিজিটাল ব্যাংকিং ব্যবস্থা প্রবর্তন ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরকারের উন্নয়নের বাস্তবভিত্তিক দুরন্ত এবং দুর্দান্ত সব পরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়ন করেছেন তিনি। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক সেবার বাইরে থাকা প্রায় ৬০ শতাংশ মানুষকে আর্থিক সেবাভুক্তি কার্যক্রমের আওতায় আনা চাট্টিখানি কথা নয়। এভাবে আর্থিক সেক্টর সমৃদ্ধ হয়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে গেছে। ব্যাংকিং সেবা পৌঁছে গেছে গ্রাম, দুর্গম ও প্রত্যন্ত এলাকায়। নিয়তির পরিহাস! সাইবার হ্যাকিং নামে ‘ডিজিটাল ট্র্যাজেডি’র শিকার হন ডিজিটাল প্রযুক্তিবান্ধব প্রজন্মের প্রিয়মুখ, সৎ শুভজন, সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান।

আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ এনে দিয়েছে আরাম। দেশের ডিজিটাল সেবার সুফলভোগী আপনি আমি সবাই। বিশ্বাস না হলে হাতের অ্যান্ড্রয়েড গেজেট ক’দিনের জন্য বাদ দিলেই বুঝবেন ডিজিটাল অতৃপ্তি অসুবিধার যন্ত্রণা কাকে বলে। তাই ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাভোগী প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে শহরে প্রজন্মের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। হাতে হাতে স্মার্টফোনে ফেসবুকে তা প্রতিধ্বনিত হয়ে যাচ্ছে। ডিজিটাল শব্দ নিয়ে তাচ্ছিল্য করা সমালোচনামুখর সেইসব কুশীলবদের মুখে পড়েছে ছাই। ঠিক যেমন ছাই পড়েছে বাংলাদেশকে ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ উক্তি করা হেনরি কিসিঞ্জারের মুখে।

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন বঙ্গবন্ধু। সমৃদ্ধি ও উন্নত জীবন প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ এই প্রজন্মের জন্যে সেই স্বপ্ন পূরণ করেছে। কালের আবর্তে ডিজিটাল বাংলাদেশ আজ বাস্তবতা। প্রমাণ হয়েছে এ নীতি দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনেই শুধু নয়, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করায় নিঃসন্দেহে বড় অবদান রেখেছে। বাংলাদেশে বর্তমান অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশের ওপরে। বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। মানে বিদেশীরা এখন বাংলাদেশকে অনুকরণ করে চলে। আজ আর গল্প-উপকথা নয়-পদ্মাসেতু। চোখেই দেখা যায়। নিজস্ব অর্থায়নে শিল্প বিপ্লবের দিকে ধাবমান বাংলাদেশ। পরিকল্পিত উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে দূর্বার গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশিয়ার সমৃদ্ধ অঞ্চলে পরিণত হতে আর বেশিদিন বাকি নেই। অচিরেই মধ্যম আয়ের দেশের তালিকায় জায়গা করে নিতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তাই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ হলো একুশ শতকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা। তার সুযোগ্যকন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নত বিশ্বের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি, জন্মভূমি- ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’। স্বপ্ন এবার সত্যি হলো। প্রজন্মের হাতে হাতে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ।

লেখক: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ডিজিটাল বাংলাদেশ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর