Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সারাবাংলা বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমে যেন এমবাপ্পে


৮ ডিসেম্বর ২০২০ ১৯:৪৩

অনলাইন সংবাদমাধ্যম হিসেবে খুব দ্রুত মানুষের মন জয় করতে পারার উদাহরণকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখার অবকাশ রয়েছে। ‘সারাবাংলা’-তা করতে পেরেছে। এখন ধারাবাহিকতা ধরে রেখে সারাবাংলা পরিবার এগিয়ে যাক, তেমন আশীর্বাদ রেখেই বলা যেতে পারে— শুভ জন্মদিন।

সারাবাংলা.নেট-এর স্লোগান— ‘সারাবাংলা সারাক্ষণ’। পাঠকশ্রেণির হয়ে বলা যায়— নামকরণের সার্থকতা খুঁজতে বাংলাদেশ ও বাংলার মাটি- কৃষ্টির সব ধরণের সংবাদ তুলে ধরতে পারলেই এগিয়ে যাওয়া হলো। সঙ্গত যুক্তিতে ওপার বাংলার রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক খবর তুলে ধরা যেতে পারলেও ভালো হয়। এক অভিন্ন সংস্কৃতির বাংলার খবর তুলে ধরার মধ্যেই সারাবাংলার পথচলা মসৃণ হোক।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলার পথচলার মধ্যে তাদের সাংস্কৃতিক বিচরণকে সৃজনশীল সাংবাদিকতার বিকাশ হচ্ছে বলে আগ্রহী হলেও ধরেই নেওয়া হচ্ছে, সব কিছু পরিপাটি আঙ্গিকে এগোচ্ছে না। ক্রীড়াসংবাদ পরিবেশনে ধারাবাহিকতার অভাব দেখা যাচ্ছে। কিন্তু প্রতিভাধর ক্রীড়া প্রতিবেদক রয়েছে তাদের ঘরে।

এদিকে রাজনৈতিক সংবাদ পরিবেশনে অত্যন্ত মেধাবী পর্যায়ের সংবাদকর্মীরা তাদের সেরাটা ভবিষ্যতে দেবেন— তেমন আশা করা হচ্ছে।

আমাদের দেশের মূলধারার সংবাদমাধ্যমের প্রধান সমস্যা হলো, অর্থনৈতিক জ্ঞানমনস্ক সাংবাদিক তৈরির কারিগর হিসেবে তারা নিজেকে মেলে ধরতে পারছে না। ঝুঁকি নিতে পারেন না, সাহস দেখান না। জায়গা করে দিতে তারা ইকোনোমিকস ব্যাকগ্রাউন্ডের শিক্ষকদের সংবাদকর্মী হিসেবে তৈরি করতে সচেষ্ট হয় না—  যা এক ধরণের দুর্বলতা। সঙ্গত যুক্তিতে তাই বলতে চাইছি, তারা দেবপ্রিয় বাবুদের সামনে যাচ্ছে। কোনোমতে তারা একটি প্রাসঙ্গিক প্রতিবেদন দাঁড় করাতে পারছে। অথচ আবুল মাল মুহিতদেরকে আজ পর্যন্ত অর্থবহ জিজ্ঞাসায় না আনতে পেরে দেশিয় ও বৈশ্বিক অর্থনীতির খবরাখবর তুলে ধরতে ফলত ব্যর্থ হচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমও যেন অনুবাদ নির্ভর বাংলা সাহিত্যের কবি-লেখকদের মতো করে হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদকেরাও গুগলে সার্চ দিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খেলার খবর, রাজনৈতিক খবর ও অর্থনীতির খবর পড়ে কপি ও পেস্ট করছে। অনেক ক্ষেত্রে ‘অবলম্বনে’ উল্লেখ করত নিজেদের দুর্বলতাকে সাহসের সাথেও প্রকাশ করতে তারা আগ্রহী। যা বাংলা সংবাদ মাধ্যমের বাস্তবতাকে তুলে ধরে জানান দিচ্ছে, আমাদের বেহাল দশা রে!

সারাবাংলা যখন শুরু করেছিল, আমার কাছে মনে হয়েছিল যে, এই মাধ্যমটি তাদের জাত চেনাতে উদ্যোগী হবে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখে বলেছিলামও যে, বিডিনিউজ যদি ক্রিস্টিয়ানো হয়, বাংলানিউজ২৪ যদি লিও মেসি হয়, বাংলাট্রিবিউন—নেইমার, তবে সারাবাংলা যেন এমবাপ্পের মতো। কাজেই ক্রীড়া সংস্কৃতির এমন প্রতীকী উদাহরণ ধরে রেখেই সারাবাংলাকে এগিয়ে যেতে হবে। এমবাপ্পের যেমন নিজেকে প্রমাণের অযুত সময় রয়েছে, ঠিক একইভাবে সারাবাংলা.নেট নিজেদেরকে প্রমাণ করুক। ধারাবাহিকতার সঙ্গে পেশাদারিত্ব তাদেরকে অনেক দূর নিয়ে যেতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে আমি সব সময় বলেছি, ধারা ভাঙার প্রয়াসে থাকলেই শুধু  হবে না, ভেঙে ফেলেই জানান দিত হবে— আমি ও আমরা শ্রেষ্ঠ।

সংবাদকর্মী হতে চাইলে গবেষণা, বিশ্লেষণ, নিজস্ব গদ্যরীতি অস্তিত্বের মজ্জায় জমাট বাঁধতে হবে, নতুবা, এসাইনমেন্ট পাওয়ার পর নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর প্রতিবেদন দাঁড় করাতে ই-মেইল চাইতে হবে। প্রেস রিলিজ কুড়িয়ে খুড়িয়ে খুঁড়িয়ে প্রতিবেদন জমা দিয়ে বলতে হবে, পেরেছি। না, এই পারার মধ্য দিয়ে অবদান রাখা হলো না। সারাদিনে বারংবার নিউজ পোর্টালে প্রবেশ করে তাৎক্ষণিক খবর পড়বার পাশাপাশি এমন কী কোনো প্রতিবেদন বা কলাম তোমার মাধ্যমে আজ প্রকাশিত হয়েছে কিনা, যেখানে সরাসরি সারাবাংলা.নেট লিখে প্রবেশ করার পর্যায়ে আছি। তেমন সংস্কৃতি আমার ও আমাদের মাঝে গড়ে উঠলেই সারাবাংলা সারাক্ষণ স্লোগানটিও তাৎপর্যপূর্ণ মাহাত্ম্যে পৌছাতে পারলো। জীবনের কোমল-জটিল পারিপার্শ্বিকতাকে ডিঙিয়ে দিনরাত্রির মাঝে সাংস্কৃতিক সমর্থন হয়ে সারাবাংলা প্রভাব বিস্তার করুক সকল অস্তিত্বে— তেমন প্রত্যাশা করি। গণমাধ্যমের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গন হয়ে সারাবাংলা সংবাদমাধ্যমটি অন্যতম শ্রেষ্ঠ হয়ে পাঠকশ্রেণির হৃদয়ে বেঁচে থাকুক।

লেখক: প্রধান সম্পাদক, ক্রীড়ালোক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর