Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিজয়ের ৪৯ বছর— বাংলাদেশ এগিয়েছে বহুদূর


১৫ ডিসেম্বর ২০২০ ২১:৪৫

বিজয়ের কথা সামনে এলে সবার মনেই আনন্দের অনুভূতি জাগে। ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস বাঙালির মহৎ অর্জনের একটি দিন। আবারও ফিরে এসেছে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালির মুক্তির দিন। এই দিনই দুই যুগের পাকিস্তানি শাসনের অবসান ঘটে।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিশ্বের মানচিত্রে নতুন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল একটি ভূখণ্ডের— যার নাম বাংলাদেশ। সবুজের জমিনে রক্তিম সূর্য খচিত মানচিত্রের এই দেশটির ৪৯ বছর পূর্তি উদযাপন করছি আমরা। ৫০ বছরে পা রাখতে চলেছে প্রিয় বাংলাদেশ। ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করবে বাঙালি জাতি। বিজয় অর্জনের পর ৪৯ বছরের পথচলায় দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। একাত্তরে স্বাধীনতার মহানায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, আর তাঁরই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গড়ে তুলতে চলেছি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীনতার পর ‘তলাবিহীন ঝুড়ির’ দেশ আখ্যা দিয়ে যারা অপমান-অপদস্থ করেছিল, সেই তাদের কণ্ঠেই এখন বাংলাদেশের অগ্রগতির প্রশংসা। দারিদ্র্য আর দুর্যোগের বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে উত্তরণের পথে। অনেকর জন্য রোল মডেল। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ আর্থ-সামাজিক প্রতিটি সূচকে এগিয়েছে বাংলাদেশ। বিজয়ের এই ক্ষণে সমৃদ্ধির এই ধারা ধরে রাখতে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানের মুষ্টিমেয় সহযোগী ছাড়া বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের জয় হয়েছিল। বহু ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে অর্জিত বিজয়ের পর সেদিন মানুষ হাঁফ ছেড়ে নিঃশ্বাস নিয়েছিল। যুদ্ধে হারিয়ে যাওয়া প্রিয়জন-স্বজনদের জন্যে কেঁদেছিল চিৎকার করে। কারণ যুদ্ধের নয় মাস তো তাদের কান্না করারও অধিকার ছিলো না।

বিজ্ঞাপন

এই জয়ের পেছনে রয়েছে বাঙালির বহু ত্যাগ ও নির্যাতনের ইতিহাস। তবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে সেই স্বজন হারানো, সম্ভ্রম হারানোর শোক ও লজ্জাকে শক্তিতে পরিণত করে সামনের দিকে এগিয়ে গেছে এই দেশের মানুষ। এর মাঝে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি ছিল মানুষ সৃষ্ট নানা সঙ্কট। তবুও পিছু হটেনি। জয়ী হয়েছে শত বাধা পেরিয়ে। বাধা-বিঘ্নকে পেছনে ফেলেই সৃষ্টি করেছে নতুন ইতিহাস, নতুন গল্পের, নতুন জীবনের, নতুন প্রেরণার। বিজয়ের পর পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফেরেন স্বাধীনতার মহানায়ক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

দেশে ফিরেই সহযোদ্ধা-সহকর্মীদের নিয়ে শুরু করেন একটি বিধ্বস্ত দেশ গড়ার কাজ। তার সেই সময় নেওয়া উদ্যোগগুলো ছিলো প্রশংসনীয় ও সময়োপযোগী। তিনি চেয়েছিলেন এদেশের মানুষ মাথা উঁচু করে বাঁচুক। গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন সোনার বাংলা। এ লক্ষ্যে গ্রহণ করেন নানা অসাধ্য কর্মসূচির।

একটি দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য— বাঙালির হাজার বছরের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য— মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-নির্ভর একটি সময়োপযোগী আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য— সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন জাতির পিতা। একটি রাষ্ট্রের জন্য প্রয়োজনীয় এমন কোনো বিষয় নেই যে তিনি স্পর্শহীন রেখেছেন। প্রযুক্তিনির্ভর জাতির ভিত্তি গড়তে তিনি স্বাধীনতার পর রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় স্থাপন করেন ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র। জোর দেন শিক্ষার ওপর।

১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে শিক্ষা খাতে বিনিয়োগকে বঙ্গবন্ধু সর্বোৎকৃষ্ট বিনিয়োগ বলেছিলেন। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা ভাবনার প্রতিফলন দেখা যায় রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন পদক্ষেপে। বঙ্গবন্ধু প্রাথমিক শিক্ষা সরকারিকরণে সংবিধানের ১৭নং অনুচ্ছেদে গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার বিধান রাখেন। নিরক্ষরতা দূর করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথাও সংবিধানে বলা হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে বিনামূল্যে বই, অন্যান্য শিক্ষা উপকরণ ও খাবার বিতরণ করার উদ্যোগ নেন। বর্তমানে বাংলাদেশে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে যে সাফল্য, এর পেছনেও বঙ্গবন্ধুর এসব পদক্ষেপের বড় ভূমিকা রয়েছে। এরই আলোকে তার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ মানসম্মত শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করছেন।

দেশে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ছিল ৪৭ শতাংশ, এখন তা মাত্র ৬.২ শতাংশ। এ হার আরও কমানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি। প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি উভয় সূচকের স্থিতিশীলতার বিচারেও দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম। এছাড়া রফতানি খাতে বিশাল রূপান্তর ঘটেছে। ১৯৭৪-৭৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের রফতানি আয় ছিলো মাত্র ৩৮৩ মিলিয়ন ডলার। মূলত পাকিস্তান আমলে গড়ে ওঠা রফতানি নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হওয়ায় স্বাধীনতার পরপর রফতানি কমে গিয়েছিল।

বর্তমানে বাংলাদেশের রফতানি ৮১ গুণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১.২ বিলিয়ন ডলার। একই সঙ্গে বেড়েছে রফতানি পণ্যের সংখ্যাও। স্বাধীনতার পর রফতানি আয়ের ৭০ ভাগ ছিলো পাটের দখলে। বর্তমানে মোট রফতানির ৮২ শতাংশই তৈরি পোশাক খাতের দখলে। তৈরি পোশাকে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম রফতানিকারক দেশ হিসেবে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ। চল্লিশ লাখের বেশি শ্রমজীবী এ খাত সংশ্লিষ্ট পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন— যার আশি ভাগই নারী শ্রমিক। ব্যবসা-বাণিজ্যের এ চিত্র বাংলাদেশের অর্থনীতির সক্ষমতা নির্ণয়ে একটি অকাট্য প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপিত হতে পারে। সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশে আমদানি ব্যয়ের চেয়ে রফতানি আয় বেশি হবে।

তবে এ অবস্থায় আসা সহজ ছিলো না। বঙ্গবন্ধু হত্যার মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিতে নেমে আসে হত্যা-খুন ও অপসংস্কৃতির ধারা। একাত্তরের যে ঐক্যে জাতি জন্মভূমিকে শত্রুমুক্ত করেছিল, ১৯৭৫ সালে সেই ঐক্যে ফাটল ধরে। বারবার সামরিক শাসন জারি হয়। তবে অনেকটা ঐক্যবদ্ধভাবে ১৯৯০ সালে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায় বাংলাদেশের মানুষ। স্বৈরাচারের কবল থেকে মুক্ত হয় গণতন্ত্র। গণতন্ত্র আছে বলেই মানুষ নানা দলে-উপদলে ভাগ হয়ে আছে। অথচ গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তভিত্তির ওপর স্থাপিত হয়নি। এখনও নানা সময়ে শোনা যায় সাম্প্রদায়িক শক্তির মাথাচাড়া দিয়ে ওঠার খবর, ধর্মীয় গোঁড়ামির খবর। এসবের বিরুদ্ধে সচেতনভাবে চিন্তা করতে হবে।

২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। সেদিক থেকে এবারের বিজয় দিবস আমাদের কাছে একটু অন্যরকম। তবে আমরা এমন একটি সময়ে উদযাপন করতে যাচ্ছি, যখন চারদিকে বৈশ্বিক মহামারি নভেল করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) থাবা। প্রতিদিনই খবর আসছে অদৃশ্য এই শত্রুর হানায় মৃত্যুর খবর। এ পর্যন্ত দেশে ৪ লাখ ৯৪ হাজার ২০৯ জনের দেহে করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ৭ হাজার ১২৯ জনের।

করোনাকালে পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বছরজুড়ে মুজিবর্ষের অনুষ্ঠানমালাসহ প্রায় কর্মসূচী বাতিল কিংবা সীমিত করা হয়েছে। এছাড়া ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’র সুফল কাজে লাগিয়ে অনলাইনেও কিছু কিছু অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হচ্ছে। ৫০ বছরে পা রাখতে চলেছে বাংলাদেশ-স্বভাবতই একটু আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠান আয়োজনের কথা। সেখানে আমাদের মানতে হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব, সঙ্গনিরোধ, বিচ্ছিন্ন থাকা ইত্যাদি। আমরা বাধ্য হচ্ছি ঘরে থাকতে। দীর্ঘ লকডাউন শেষে জীবন-যাপনের প্রয়োজনে ‘নিউ নরমাল’ হতে শুরু করেছে বিশ্ব। বাংলাদেশও খুলতে শুরু করেছে কল-কারখানা, অফিস-আদালত।

এরইমধ্যে এসেছে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ। স্কুল-কলেজ এখনও খুলছে না। লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক অবস্থা শোচনীয়। মানুষের মাঝে হতাশাও বাড়ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে বেড়েছে অপরাধ। সরকারের উদ্যোগে এ ধরনের সামাজিক বিষয়কে বেশ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে। বলা হচ্ছে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর মানবজাতি এত ভয়াবহ সঙ্কটে আর পড়েনি। প্লেগ, কলেরা, ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো মহামারিতে ব্যাপক মানুষের মৃত্যু হলেও পৃথিবীজুড়ে এমন শঙ্কা, অনিশ্চয়তা নাকি আর কখনো দেখা যায়নি। পৃথিবী আগে কখনো এভাবে স্থবির হয়নি, অবরুদ্ধ হয়নি।

যুদ্ধ, মহামারি যাই হয়েছে— তা সীমাবদ্ধ থেকেছে কয়েকটি দেশের গণ্ডিতে, সীমিত সংখ্যক মানুষের মধ্যে। কিন্তু করোনা যেন কিছুই মানছে না। কী ধনী, কী গরিব। এই দুর্যোগে সবাই আক্রান্ত। এ অবস্থায় এক ভিন্ন পরিবেশে আমরা দিনাতিপাত করছি। উদযাপন করতে যাচ্ছি বিজয় দিবস। এবার হয়তো স্মৃতিসৌধে বিশাল জমায়েত হবে না। বাংলার শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের শ্রদ্ধা জানাতে ১৪ ডিসেম্বর ঢল নামবে না রায়েরবাজারেও। তবে অন্তরের সবটুকু শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা দিয়েই মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবো আমরা। সম্মান জানাবো মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি, সূর্যসন্তানদের প্রতি।

পৃথিবীতে কোনো দুর্যোগই স্থায়ী হয় না। এই দুর্যোগও কাটবেই। হয়তো অচিরেই। এরই মাঝে টিকা আবিষ্কারের কথা শোনা যাচ্ছে। অনেক দেশ বলছে, এগুলো কার্যকরও। তবে এই অদৃশ্য শত্রুর আক্রমণের ক্ষত শুকাতে সময় লাগবে। বৈশ্বিকভাবে যে অর্থনৈতিক দুর্দশা দেখা দিয়েছে— বাংলাদেশেও এর বাইরে নয়। তবে এই দুর্যোগ মোকাবিলায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন সরকার প্রণোদনাসহ বেশকিছু উদ্যোগ নিয়েছে। যা ইতিমধ্যে ফলদায়ক বলে প্রমাণিত হয়েছে। মাঠ-পর্যায়ে এসব উদ্যোগের সুষম-বণ্টন ও সবাই এই সুবিধা ভোগ করুক আমাদের প্রত্যাশা এটাই।

আরেকটি বিষয়, বাংলাদেশের মানুষ জন্মগতভাবেই বেশ সহনশীল। প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেই নিজেদের টিকে থাকার পথ বের করে এগিয়ে চলে তারা। বাংলাদেশ নামক দেশটিও জন্মের পর থেকেই নানা সঙ্কট কাটিয়ে আলোর পথে যাত্রা করে এগিয়ে চলেছে। এবারও পিছু হটবে না। একাত্তরে সঙ্কট উত্তরণে নতুন স্বপ্নের নেতৃত্বে ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর বিজয়ের ৪৯ বছর পর উন্নত বাংলাদেশের সামনে রয়েছেন তারই কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই এবারও তারুণ্যনির্ভর এই জাতি সব বাধা উপেক্ষা করে ফের আকাশে বিজয় কেতন ওড়াবে।

প্রায়ই অনেককে বলতে শুনি, বিজয়ের ৪৯ বছরে আমাদের অর্জন কতটুকু? সবাই কী স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছে? এর উত্তর বেশ সোজা। বাংলাদেশের গ্রামগুলোই এর প্রমাণ। দরিদ্রতার কষাঘাতে কেউ না খেয়ে থাকে না। নারীরা কাজ করছে। ভূমিকা রাখছে সিদ্ধান্তে। অনেকক্ষেত্রে উন্নয়ন ও সাফল্য অর্জিত হয়েছে। প্রসার ঘটেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে। বিশ্বের উন্নত দেশের মতো চতুর্থ শিল্প অবতীর্ণ হতে প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠাকুরগাঁও কিংবা সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত অঞ্চলের তরুণটিও। বাংলার ছেলে-মেয়েরা এখন সিলিকন ভ্যালিতে উচ্চপদে নেতৃত্ব দিচ্ছে। আবিষ্কারে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে বিশ্বকে।

তবে সামগ্রিকভাবে গৌরব করার জন্য আমাদের আরও জায়গা রয়েছে। সেই জায়গাগুলোতে এগিয়ে যেতে হবে, আরও কিছু কাজ করতে হবে। সুষ্ঠু ও উন্নত রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রচলন করতে হবে, যার প্রভাব পড়বে সমাজে-অর্থনীতিতে।

পরিশেষে বিজয়ের ৫০ বছরে আমাদের অঙ্গীকার হোক এই— যে চেতনা ও উদ্দেশ্য নিয়ে একাত্তরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতাযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আপামর জনসাধারণ, তার বাস্তবায়ন। মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাঁথা নিয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ তথা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলবে নতুন প্রজন্ম— এই হোক বিজয় দিবসের প্রত্যয়। দেশের সব মানুষের শিক্ষা, অন্ন, বস্ত্র, চিকিৎসা ও বাসস্থান নিশ্চিত হোক। স্বাধীনতাহীনতায় কেউ থাকবে না। সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে যাক স্বাধীনতার সুফল, সুষমভাবে।

লেখক: শিক্ষাবিদ; উপাচার্য, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস মুক্তিযুদ্ধ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর