মওলানা ভাসানীর তিনটি রাষ্ট্রনৈতিক প্রস্তাবের পুনঃমূল্যায়ন
২৩ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:০৯
‘অভিসন্ধিতে লিরিক দিচ্ছি শোনো,
সুরে বলে যাই আজকের কথাগুলো
একদিন হবে গণঅভ্যুত্থান,
সেদিন আমার গানের ভাঁড়ার খুলো।
আপাতত ছোট শিশিতে এ গান ভরে,
ভাসিয়ে দিচ্ছি সময়ের দরিয়ায়
দেখি এ ভাবনা ভেসে যায় কতদূর,
ভাবনা আমার তোমার দিকেই যায়’
—গীতি কবিতা: কবীর সুমন
ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় এমন অনেক কিছুই করেন, যা তার সময়ে সবটাই সফল হয় না। যা কিছু বলেন তার সবটাই পরিষ্কার বোঝা যায় না। কতকটা ‘রেটোরিক’ বা ‘কথার কথা’ মনে হতে পারে। এমন কালোত্তীর্ণ কর্ম তৈরি করেন, যা সমকাল ধরতে পারে না। ইতিহাসের আলো পড়লে তাকেই আবার দিব্যজ্ঞানের বাণী মনে হতে থাকে। নতুন দিনের স্বপ্ন দেখার আলোকবর্তিকার মতো লাগতে পারে।
মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ১৪০তম জন্মবার্ষিকীতে এসে তাঁর কাজকর্ম ও জীবনের আদর্শের খোঁজ নিতে এসে সেরকমই দশা আমার, সম্ভবত একই দশা হবে যে কারও। মওলানা ভাসানীর সংগ্রামী জীবন লম্বা সময়ের। তিনি ১৯০৯ সালের দিকে দেওবন্দে পড়ালেখার সময় মৌলানা শাহ ওয়ালিউল্লাহ, শাহ আহমদ বেরোলভির মতো ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ-বিরোধী উলামা নেতাদের শিষ্যত্বে সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার প্রাথমিক শিক্ষা নিয়েছেন। তখন থেকে শুরু করে ১৯৭৬ সালের ১৭ নভেম্বর মৃত্যু পর্যন্ত ৬৫ বছরেরও বেশি সময় তিনি জুলুমশাহী শোষণ-বিরোধী সংগ্রাম করেছেন। এই দীর্ঘ সংগ্রামের ইতিহাসে এই জনপদে এমন কোনো জনগণের মুক্তির সংগ্রাম হয়নি, যেখানে মওলানা ভাসানী নিজেকে যুক্ত করেননি।
আলোচনার সীমিত পরিসরে মওলানা ভাসানীর ৬৫ বছরের জীবন ও সংগ্রামী ইতিহাস আলোচনা করার সুযোগ নেই, সেই সাহসও নেই। সেটা বিচক্ষণ গুণীদেরই কাজ। এই বিষয়ের বিদগ্ধজন ও গবেষকদের শিক্ষক জ্ঞান করে আমাদের এই মরা কটালের কালে মওলানার তাৎপর্য কিছুটা হলেও আমাদের হাতে চালান করার বরং ঋণ স্বীকার করি। আমাদের এই নৈরাশ্যের ঊষর সময়ে মওলানার অন্তত তিনটি দিব্যজ্ঞান নিয়ে খুব আলোচনা হওয়া দরকার।
রাষ্ট্রক্ষমতায় রবুবিয়াতের আদর্শ
মওলানা ভাসানী বিগত শতাব্দীর সেই সত্তরের দশকেই আমাদের দিয়ে গেছেন প্রবল সম্ভাবনাময় রাজনৈতিক দর্শন ‘রুবুবিয়াত’, আজকের দুনিয়ায় যার গুরুত্ব কিছুমাত্র কমেনি, বরং বেড়েছে। আমাদের কালে দুনিয়াব্যাপী প্রবল কর্তৃত্ববাদী শাসনবাদের বিপরীতে পালনবাদের চর্চার যে আদর্শ তিনি আমাদের হাতে তুলে দিয়ে গেছেন, এখন সময় এসেছে তা জনপ্রিয় করে তোলার।
মওলানা ভাসানী রবুবিয়াত (স্রষ্টার পালনবাদ) দিয়ে বুঝিয়েছেন— সৃষ্টিকর্তা যেমন তার প্রত্যেক জাত-ধর্ম, বর্ণ-লিঙ্গ, ভাষা কিংবা সামর্থ্য নির্বিশেষে সব সৃষ্টির জন্য পক্ষপাতহীনভাবে (ইনসাফের সঙ্গে) সমান সুযোগ দান করেছেন, সৃষ্টিকর্তা খোদার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ও তার প্রতিনিধি (খলিফা) হিসেবে মানুষের দায়িত্ব তেমনি প্রতিজন নাগরিকের জন্য সবকিছুর সমান ভাগ-বাটোয়ারার বন্দোবস্ত (রাষ্ট্র বা সামাজিক চুক্তি) করা। আশরাফুল মাখলুকাত মানুষের পত্তন করা রাষ্ট্রে ‘রবুবিয়াত’ কায়েম হলে তাই রাষ্ট্রের নীতি হবে ‘পালনবাদী’, কর্তৃত্ববাদী নয়। রবুবিয়াতি রাষ্ট্রের দ্বায়িত্ব হবে নাগরিকদের পরিচর্যার ও লালন পালনের। শাসনবাদ আইন (ইনসাফ) আর শাসনের ভেদ করে নয়, আইনের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় শাসন বা জুলুম। ‘জননিরাপত্তা’র আইনে তাই এরা ফাঁদ পাতে জননিয়ন্ত্রণের। অন্যদিকে ‘পালনবাদ’ শুধু মানুষ নয়, বরং সকল জীব এবং প্রকৃতির পরিচর্যার মতবাদ।
এখনকার কর্তৃত্ববাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা কেবলই দমনমূলক নিজের নাগরিকদের বশে রাখতে, সম্মতি উৎপাদন করতে। তার রয়েছে নানারকম বিনি সুতার বাঁধন, নানা ধরনের দমনমূলক হাতিয়ার তেমন সেনা-পুলিশ-বাহিনী ইত্যাদি। এসব ব্যবহার করে রাষ্ট্র মানুষের ওপর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে, শোষণ চালায়। শুধু তাই নয়— তার রয়েছে স্কুল-পরিবার-সাংস্কৃতিক-ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ট্রেড ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দল, রেডিও-টিভি-পত্রিকা ইত্যাদি। দার্শনিক আলথুসেরের ভাষায়— এসব ‘ভাবাদর্শিক’ ও ‘দমনমূলক’ হাতিয়ার নিয়ে রাষ্ট্র হয়ে ওঠে কর্তৃত্ববাদী ও সাম্রাজ্যবাদী।
রবুবিয়াতের রাষ্ট্র কৃষকের ফসলের ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে কোনো বাধা তো হবেই না, বরং এটাকেই স্বীয় দ্বায়িত্ব জ্ঞান করবে। সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়াবে প্রতিপালকের মতো হেফাজতকারীর ভূমিকা নিয়ে। হায়, পাঞ্জাব-গুজরাটের গ্রামগুলো থেকে দিল্লির দরবার ঘেরাও করতে আসা কৃষকদের কাছে যদি মওলানার রবুবিয়াতের বাণী পৌঁছানো যেত! ‘আমি আর শ্বাস নিতে পারছি না’ (আই কান্ট ব্রিদ) বলা মজলুম কালো মানুষটার দেশে যদি মওলানার মতো করে কেউ খামোশ বলে উঠত! গায়ের রঙ কালো বলে, ধর্মে মুসলিম কিংবা হিন্দু সম্প্রদায়ের বলে, সংখ্যায় লঘু বলে মেরে-কেটে বশ্যতা স্বীকার করানো আর শাসন করার বিশ্বব্যাপী যে স্বজাত্যতোষণবাদী (পপুলিস্ট) রাজনীতি চলছে— মওলানা ভাসানী এসবের বিরুদ্ধে আমাদের গর্ব করার মতো প্রতিবাদী কণ্ঠ ছিলেন।
প্রাণ-প্রকৃতি-বাস্তুসংস্থানের টেকসই উন্নয়ন
মওলানা ভাসানী সম্ভবত এই মহাদেশে প্রথম দার্শনিক, যিনি এমনকি ‘মানুষকেন্দ্রিক’ দুনিয়াতে মানুষ ছাড়াও আরও প্রাণের (অমানব) যে হক আছে, উচ্চকিত স্বরে তার রাজনৈতিক স্বীকৃতি দিয়েছেন। এই সভ্যতার যে মানুষকেন্দ্রিক চেহারা, মানুষের ভোগের স্বার্থে গাছ কাটো, নদী মারো, প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংস করো— এরকম যা কিছু এখন চলছে, তার বিরুদ্ধে প্রথম রাজনৈতিক বয়ান মওলানা ভাসানী তৈরি করেছেন। আজকের করোনাকালে আমরা নতুন করে দেখলাম পৃথিবীর বাস্তুসংস্থান ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে মানুষ উন্নয়নের নামে তার অপরিসীম ভোগ অব্যাহত রাখলে প্রকৃতির নির্মম প্রতিশোধ আসতেই থাকবে। অতিমারি, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রাণঘাতী জীবাণুর বিস্তার প্রতিরোধ করে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে উন্নয়ন দর্শন নিয়ে মানুষকে নতুন করে ভাবতে হবে, ভাবতে হবে প্রকৃতি সংরক্ষণের কথা।
কার্ল মার্ক্স একদা দিশা দেখিয়েছিলেন— এই সংকটের নির্মূল তখনই সম্ভব, যখন ‘মানুষ কর্তৃক মানুষ শোষণ ও মানুষ কর্তৃক প্রকৃতি শোষণের অবসান ঘটবে।’ আবার আমেরিকান দার্শনিক ও পরিবেশবাদী মারে বুকচিন তার ‘সামাজিক বাস্তুবিদ্যা’ নামে ১৯৮৭ সালে এক তত্ত্বের প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলেন। তাতে তিনি ব্যাখ্যা করেছেন— মানবপ্রকৃতি ও জৈবিক প্রকৃতি পারস্পরিক সম্পর্কিত। তার মতে, প্রযুক্তিগত উন্নয়নে অসঙ্গতি বৃদ্ধি পেয়েছে বলেই মানব ও অমানব ক্রিয়াগুলোর কারণে উৎপন্ন পরিবেশগত পরিবর্তনের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক পরিবেশ পুনর্নির্মাণে মানুষ প্রকট ভূমিকা পালন করেছে। ফলে মানব ও অমানব জীবন আরও সমস্যাযুক্ত হয়ে পড়ে। মানুষ বায়ু, পানি, মাটি, শব্দ দূষণে, নদী-নালা জলাশয় দখল ও দূষণে, ভরাটের মাধ্যমে বন সাবাড় ও পাহাড় ধ্বংস করে অজস্র প্রাণী নির্মূলে পরিবেশ-প্রকৃতিকে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে।
আমাদের ‘তালের টুপি’ পরা মওলানা ভাসানী এই উপমহাদেশের অন্য দামি পশমি টুপিওয়ালা নেতাদের চেয়ে এক্ষেত্রে অনন্য। তিনি তার পোশাকে বয়ানে আদর্শে পালনবাদ লালন করে গেছেন, বাইয়্যাত (শিক্ষা) দিয়ে গেছেন। মওলানা ভাসানী সেই ১৯৭৬ সালেই ফারাক্কা লংমার্চের বয়ানে মার্কিন বুকচিনের অনেক আগে মানব ও অমানব প্রকৃতির সহাবস্থানের নীতি ঘোষণা করে গেছেন।
ফারাক্কা বাঁধের প্রতিবাদে তিনি বলেছিলেন— নদীতে বাঁধ দেওয়া, এমনকি ভারত ও বাংলাদেশের জনগণ সম্মিলিতভাবে যদি দেয়, সেটাও দেওয়া ঠিক নয়। কেননা এই নদী, এই প্রকৃতি শুধু মানুষের নয়। পশু-পাখি, সাপ-ব্যাঙ সমস্ত প্রাণের অধিকার এই প্রকৃতিতে। সমস্ত প্রাণ টিকে থাকলেই বাস্তুসংস্থান টিকবে, বাস্তুসংস্থান টিকলেই মানুষও টিকে থাকবে। বাস্তুসংস্থান টিকিয়ে রাখার মতো আধুনিক বিজ্ঞানের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করা, নিজের বার্ধক্যজনিত বহুবিধ অসুস্থতা এমনকি বহুমূত্র রোগ চেপে রেখে ফারাক্কার মতো প্রকৃতি বিরুদ্ধ মেগা প্রকল্প ঠেকানোর তাড়না, সব মিলিয়ে মওলানা ভাসানীকে সমকালীন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের তুলনায় হারকিউলিস মনে হয়, বোধকরি এখনকার সময়ের তুলনাতে আরও বেশি।
জনগণের ক্ষমতায়নে জাগ্রত দল
মওলানা ভাসানী তার সময়ে এই উপমহাদেশের সবচেয়ে আকর্ষণীয় ও আশা জাগানিয়া বিশ্বনেতা ছিলেন। সাম্প্রতিক সময়ে ড. লাইলি উদ্দিন তার গবেষণাতে দেখিয়েছেন ম্যালকম এক্স মার্কিন মুলুক থেকেই মওলানা ভাসানীকে নিয়ে মজলুম মানুষের আন্দোলনের জন্য একসঙ্গে পত্রিকা বের করেছিলেন। খোন্দকার মোহাম্মদ ইলিয়াস রচিত ‘ভাসানী যখন ইউরোপে’ কিংবা মওলানার স্বরচিত ‘মাও সেতুং-এর দেশে’ গ্রন্থ থেকে আমরা জানতে পারি— মওলানা মজলুম মানবতার মুক্তি নিয়ে বিশ্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করতেন। তিনি বুর্জোয়া গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মৌলিক একটি প্রশ্ন নিয়ে সারাজীবন প্রায়োগিক নিরীক্ষা করেছেন।
আধুনিক গণতন্ত্র এখন সাংবিধানিকভাবেই কর্তৃত্ববাদী ও ফ্যাসিবাদী শাসন চালানোর জন্য উপযুক্ত আধার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে দেশে দেশে। বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে, এই গণতন্ত্রের প্রবক্তা খোদ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এখন আর ‘শতকরা ৯৯ ভাগ’ মানুষ শাসক হিসেবে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে, তার ঘোষিত নীতিমালাকে বেছে নিতে পারে না। বিজনেস চেম্বার, ট্রেড ইউনিয়ন, রাজনৈতিক দল, রেডিও টিভি পত্রিকা সামাজিক মাধ্যম ইত্যাদি ‘ভাবাদর্শিক’ ও হাতিয়ার নিয়ে রাষ্ট্র এমনকি রাজনৈতিক দল জনগণের সংখ্যাগুরু মতামতের ওপর সংখ্যালঘু মতামতকে প্রভুত্বশীল (হেজিমনিক) করে তোলে। মওলানা জনগণের ক্ষমতায়নকেই সবকিছুর ঊর্ধ্বে রাখতেন, রাখার সংগ্রাম করেছেন আজীবন।
১৯৪৭ সালে দেশভাগের আগেই আসাম মুসলিম লীগের অপ্রতিদ্বন্দ্বী সভাপতি ছিলেন মওলানা ভাসানী। মুসলিম লীগ তখন আসামের ক্ষমতায় এলে ড. সাদউল্লাহকে বানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মওলানা ভাসানী কিন্তু নিজে মন্ত্রী হননি। আসামের প্রাদেশিক সভায় তিনি অল্পকাল ছিলেন, সেখানে গণমুখী কথাবার্তার কারণে তার নিজের দলই তাকে হজম করতে পারেনি। ১৯৪৯ সালে ভাসানীর নেতৃত্বে যে আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠিত হয়, তার কর্মসূচির মধ্যে প্রাদেশিক স্বায়ত্তশাসন গুরুত্ব সহকারে জায়গা করে নিয়েছিল। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্ব দিলেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলো, তিনি হন সভাপতি। তিনি কিন্তু এবারেও প্রধানমন্ত্রী হননি। শুধুমাত্র কথার কথা নয়, তিনি বারবার প্রমাণ করে দেখিয়েছেন— তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাননি, জনতার ক্ষমতায়ন চেয়েছেন। রাজনীতি বিজ্ঞানের এই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তিনি হাজির করেছেন সেই ষাটের দশকেই।
মওলানা ভাসানী সন্দেহ করতেন, নিজের দল ক্ষমতায় গেলেই কি জনগণের স্বার্থ রক্ষা হবে? জনগণের স্বার্থের সঙ্গে যদি নিজের দল সরকারে গিয়ে বিশ্বাসঘাতকতা করে, তাহলে জনতার স্বার্থ কে দেখবে? দল ও সরকারের ভূমিকা যে আলাদা আলাদা, মওলানা ভাসানী সেটি তখনই তুলেছিলেন। সরকার ক্ষমতায় গিয়ে আপস করতে পারে, কিন্তু দল সবসময় জনগণের পক্ষে থেকে সরকারকে জবাবদিহিতায় রাখবে, জনগণের স্বার্থ আদায় করবে। মওলানা ভাসানী তার সংগ্রামের ভেতর দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন, সরকার ও দলকে আলাদা রাখতে হয় এবং সরকারকে প্রতিমুহূর্তে জবাবদিহিতার আওতায় রাখতে হয়।
রাষ্ট্রক্ষমতায় রবুবিয়াতের রাজনৈতিক আদর্শ প্রস্তাব, সমস্ত প্রাণ-প্রকৃতি-বাস্তুসংস্থানকে বিবেচনায় নিয়ে অধুনা প্রচলিত টেকসই উন্নয়নের ধারণা প্রস্তাব কিংবা জনগণের সার্বক্ষণিক ক্ষমতায়নের চর্চা মওলানা ভাসানী তার সারা জীবনের সংগ্রামের ভেতর দিয়ে দেখিয়েছেন। আজকের বিশ্বে তাই মওলানা ভাসানী নতুন করে মূল্যায়নের দাবি রাখে।
লেখক: গবেষক, মওলানা ভাসানী আর্কাইভ