Wednesday 16 Jul 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এ এক অন্য সাকিব, অনন্য বাংলাদেশ!


১৭ মার্চ ২০১৮ ১১:১৯ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ১৭:১৬
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

উপমহাদেশের ক্রিকেট মানেই তো আবেগের ক্রিকেট। এই ক্রিকেটে বাঁধ সাধতে পারে না বৈরী আবহাওয়া, মাঠের শিশির, পিচের টার্ন কোনো কিছুই। যেই দিনটি যার জন্য বরাদ্দ জয় তার নিশ্চিত। চাই দলে না থাকুক কেউ তুমুল ফর্মে, চাই দলে না থাকুক কোনো তারকা ক্রিকেটার। ভয়ানক পেশাদার ক্রিকেটে অভ্যস্ত ভারতের জাতীয় দলের ফর্ম না থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন মাঠে নেমেছেন জীবন্ত কিংবদন্তী ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার। কারণ, শচীন দলে থাকলে যেন একাদশে পেত নতুন মাত্রা।

ভারতের জন্য যেমন শচীন অপরিহার্য, ঠিক তেমনি আমাদের দলে সাকিব আল হাসান। ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না তিনি। সেরে উঠতে আরও কিছুদিন দরকার ছিলো। কিন্তু তাকে ছাড়াই দল যখন সুদূর শ্রীলঙ্কায় ফাইনালের  স্বপ্নে বিভোর। নিজেকে কি আর ধরে রাখতে পারলেন তিনি! ঠিকই ছুট দিলেন প্রেমদাসার দ্বারপ্রান্তে। সাকিবকে পেয়ে উজ্জীবিত দল, জয়ের স্বপ্নে যোগ হলো পাহাড়সম আত্মবিশ্বাস!

বিজ্ঞাপন

হঠাৎ ই আমার মনে হলো, এই সাকিব কি সেই সাকিব যিনি বিসিবির অনুমতি না নিয়ে ক্যারিবীয় লীগ খেলতে গিয়ে সমালোচনার শিকার হয়েছিলেন বছর তিনেক আগেও। নিষিদ্ধ হয়েছিলেন ছয় মাসের জন্য। আজ তিনি দেশের জন্য ছুটে গেছেন ইনজুরির ঝুঁকি নিয়েও দেশকে ফাইনালের আসরে তুলে আনতে। এরই নাম বুঝি দেশপ্রেম; এরই নাম বাঁধ ভাঙা আবেগ। ১৬ কোটি মানুষের আবেগকে মাথায় নিয়েই তিনি স্বসম্মানে নিজের দায়িত্বটুকু পালন করেছেন অসামান্য দক্ষতায়। দলকে নিয়ে গেছেন জয়ের বন্দরে, নোঙর গেড়েছেন ফাইনালের আসরেও।

সাকিবের বাংলাদেশের কি দুর্দান্ত শুরু বল হাতে। ছয় বছর আগেও শ্রীলঙ্কার সাথে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন আপ যেভাবে ছিন্নভিন্ন হয়ে যেত তার উল্টোটা দেখলো পুরো বিশ্ব। ওভার প্রতি ৮ গড়ে তাড়া করার লড়াই তামিম, মুশফিক আর মাহমুদুল্লাহর অনবদ্য ইনিংস আর আবার সেই আবেগের জোরেই ফাইনাল নিশ্চিত করলো টাইগাররা।

শেষ ওভারের তুমুল নাটকীয়তায় আমি সাকিবের আচরণেরই পক্ষে; অন্তত অন্যায়ের সমোচিত প্রতিবাদ তো হলো। ক্রিকেট কোডে তা খানিকটা অন্যায় হলেও শেষ ওভারের বারো রানের পাহাড়সম চাপে পর পর দুটি বল প্রায় ওভার দ্যা শোল্ডার কিন্তু ‘নো’ ডাকার নাম গন্ধও নেই- এমন আচরণে প্রতিবাদ তো হতেই পারে। এমন একটা টেনশন মোমেন্টে এমন যৌক্তিক দাবি আমার আবেগে যথার্থ। আমরা বড্ড আবেগি হলেও সেই অবিচারের জবাবটাও আমরা দিলাম ব্যাটেই। মাহমুদুল্লাহর ঝলসে ওঠা ব্যাটে বল যখন উড়ছেনই সাথে সাথে উড়েছে সারাবিশ্বের কোটি সমর্থক। সেই একই আবেগে। দেশকে অফুরান ভালোবাসার আবেগ।

ক্রিকেটের ভাষায় কাল হয়তো কোড অব কন্ডাক্টে খানিকটা শায়েস্তা হবেন আমাদের বেশ কজনা টাইগার কিন্তু ক্রিকেটকে ভালোবেসে দেশকে ভালোবেসেই সেই আত্মত্যাগ! মাঝে মাঝে নিজেকে ধরে রাখা কঠিন তার সহজ অনুনয় ছিল সাকিবের কন্ঠেও। কিন্তু দিনশেষে প্রেমাদাসা সাক্ষী হলো এক অনন্য ক্রিকেট ম্যাচের, তাও বা কম কি!

আর এদিকে, ইনজুরির ঝুকি নিয়ে দলের জন্য, দেশের জন্য সাকিবের এমন লড়াই সত্যি সাকিবকে এক অন্য অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে। সমর্থক হিসেবে এমন একটি ম্যাচ সত্যি মনের খোরাক উসুল করেছে শতভাগ, আকাঙ্খা করেছে দ্বিগুণ। আসন্ন ফাইনালে জয় না হোক এমন আরেকটা আবেগি লড়াই তো চাইতেই পারি।

 

সারাবাংলা/এমআই

বিজ্ঞাপন

বরিশালে এনসিপির পদযাত্রা
১৬ জুলাই ২০২৫ ০১:৪৩

আরো

সম্পর্কিত খবর