এবার ভারতই হারবে!
১৮ মার্চ ২০১৮ ১৪:১৭
টি-টোয়েন্টিতে ভারতের সঙ্গে একটা জয়ও নেই বাংলাদেশের (সাত ম্যাচের সাতটিতেই হার)! বাংলাদেশ কি এমনই ছোট দল! বিষয়টি খোদ অধিনায়ক সাকিব আল হাসানকেও ভাবায়। দীর্ঘদিন তিনি ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ-আইপিএল এ খেলেন। এবারের ভারত দলের অনেকেই তার আইপিএল সতীর্থ। অন্যদিকে এবার সরাসরি বাংলাদেশ দলের নেতৃত্বে সাকিব। সব মিলিয়ে মিস্টার সেভেনটি-ফাইভের ভাবনায় যে নতুন কিছু- সেটি আর বলার অপেক্ষা রাখে না! ভারতের বিপক্ষে জয় খরা কাটিয়ে বাংলাদেশ যদি কিছু একটা করতে না পারে, তবে খানিকটা বিব্রত কি হবেন না বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান?
তাই তো এই টুর্নামেন্টে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচ হারা নিয়ে সাকিবের উত্তর ছিল ঠিক এমন, ‘বাংলাদেশ ফাইনালে উঠেছে। এর আগে ভারতের সঙ্গে এক ম্যাচ হয়েছে। ওই সময় রিয়াদ ভাই (মাহমুদউল্লাহ) অধিনায়ক ছিলেন। তিনি একটা লক্ষ্য পূরণ করে দিয়ে গেছেন। আমার সামনে নতুন লক্ষ্য।’
নতুন লক্ষ্যটা আসলে কী; তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। যদিও ফাইনালে গেলে বাংলাদেশের কী যেন একটা হয়ে যায়। তীরে এসেও তরী ডোবানোর রেকর্ড আছে লাল সবুজদের। কখনও ১/২ রান আক্ষেপ, কখনও ভেঙে পড়া- যাই হয়েছে অতীতে, এবার অন্তত তেমনটি হবে না এমনই আশা ভক্তদের। এছাড়া এবার খেলা দেশে নয়, বিদেশে। ঘরের মাঠ ব্যতীত অন্যের মাটিতে প্রথমবার ফাইনালে ওঠা টাইগাররা ভিন্ন কিছু করবেই, এই আত্মবিশ্বাস কোটি বাঙালির! পাশাপাশি ভুল প্রমাণ করবে দেশের মাটিতে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে চারটি ফাইনালে উঠে হেরে যাওয়ার বিষয়টিকে!
এমএস ধনী, বিরাট কোহলি, হার্দিক পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার, জসপ্রীত বুমরাহ, মোহাম্মদ সামিসহ আরও দু’একজন নিয়মিত ক্রিকেটার ভারত দলে নেই। এই সুযোগটি কাজে লাগাতে পারতে হবে বাংলাদেশকে। তাছাড়া, টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচের (ভারতের বিপক্ষে) অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করতে হবে- এমনটাই মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, সুনীল গাভাস্কার, অর্জুনা রানাতুঙ্গা কিংবা ইনজামাম উল হকরা করলে সেটি ‘প্রতিবাদ’ আর সাকিব আল হাসান করলে ‘বেয়াদবি’- ভারতীয় গণমাধ্যম যেন এই নীতিতেই সংবাদ পরিবেশন করেছে শনিবারব্যাপী (১৭ মার্চ)। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ‘নো বল’ বিতর্ক নিয়ে ভারত এতোটাই উদ্বেলিত যেন বাংলাদেশের ফাইনালে যাওয়ারই কথা না! গেছেই যখন, তখন টাইগারদের ‘তামিজ’ শেখাবে ভারত (ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের ভাষা)! তারা তো, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাংলাদেশের জিতের মধ্যেও হারের গন্ধ খুঁজছে! যদিও সেই হারের গন্ধে তারাই নিমজ্জিত হবে কিনা সেটি হয়ত সময়ই বলে দেবে।
এতো কিছুর পরও সাকিব স্মৃতিকাতর মানুষ নন। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৬ মার্চের ম্যাচটা তার খেলা সবচেয়ে রোমাঞ্চকর টি-টোয়েন্টি কিনা তা তিনি স্পষ্ট করেননি। কেবল জানিয়েছেন, দেশের জার্সিতে অবশ্যই সাম্প্রতিক সময়ের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর ও আবেগের উত্তাপমাখা ম্যাচই ছিল সেটি। দলে থেকেও না খেলার কথা তার। আগের দিন (১৫ মার্চ) ঢাকা থেকে কলম্বোতে উড়ে এলেন, নেতৃত্ব দিলেন- জয় করলেন। কে জানে- হয়ত আরও বড় জয় অপেক্ষা করছে বলেই তার শেষ সময়ে পূর্ণ ফিটনেসে ফিরে আসা…। আর সেটি হলে এবার ভারতই হারছে!
সৈয়দ ইফতেখার আলম, সংবাদিক
সারাবাংলা/এসএন
বিশেষ দ্রষ্টব্য: এই কলামে তুলে ধরা সকল মতামত লেখকের নিজস্ব।