বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগুন, এই দানবদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও
২৯ মার্চ ২০২১ ১৫:১৬
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আগুন দিয়ে গোটা বাংলাদেশের মানুষের গায়েই আগুন ধরিয়ে দিয়েছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিশ দলীয় জোটের সেকেন্ড ভার্সন হেফাজতে ইসলাম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দুই দিনের সফরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঢাকায় আসলে ক্ষমতা হারিয়ে পাগলপ্রায় বিএনপি ও তাদের আজীবনের দোসর জামাতের ইঙ্গিতে এবং তাদের নেতৃত্বাধীন জোটের শরিকদের সংগঠন হেফাজতে ইসলামের কিছু ধান্দাবাজ, সুবিধাবাদী কিছু নেতা ও অপরাপর আরও কিছু সাম্প্ৰদয়িক দেশিবিদেশি শক্তির অর্থ খেয়ে তথাকথিত মোদি বিরোধী, ভারত বিরোধী স্লোগান দিয়ে কয়েকদিন হলো মাঠে নামে। এরা ভারতে পড়াশুনা করে, ভারতে কেনাকাটা করে, চিকিৎসা করে আর অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ভারত বিরোধিতার নামে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ধ্বংসলীলা চালায়।
এরা আসলে বাংলাদেশ বিরোধী, বাংলাদেশের স্বাধীনতাবিরোধী। এদের প্রধান শত্রু মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ। তা না হলে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে আসার বিরোধিতার নাম করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাংলাদেশের মানুষের আবেগ অনুভূতির একমাত্র জায়গা, বিশ্বের আধুনিককালের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মহান নেতা ও প্রতীক, জুলিওকুরি শান্তি পদকে ভূষিত বিশ্বের নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষের মাথার মুকুট, স্বাধীনতার মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে আগুন ধরিয়ে দেয় ও গুঁড়িয়ে দেওয়ার উদ্ধত দেখায়! তাও আবার বঙ্গবন্ধুর দল আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকা অবস্থায়। ওরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগুন দেয়নি ওরা আগুন দিয়েছে এই দেশে বঙ্গবন্ধুর আদর্শের কোটি কোটি সৈনিকদের গায়ে। ওদের এই উদ্ধত রুখে দাঁড়াতে হবে। ওরা মোদি বিরোধী নয়, ওরা বাংলাদেশ বিরোধী, বঙ্গবন্ধু বিরোধী ওরা স্বাধীনতাবিরোধী। ওদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এই সমস্ত ধর্মের নামে ইসলামের নামে জঙ্গি উগ্রবাদী, সাম্প্ৰদয়িক দেশবিরোধী শক্তিতে নিষিদ্ধ করতে হবে। ওদের আস্ফালন আর সহ্য করা যায় না।
বিএনপি জামাতের ইন্ধনে বাবুনগরী, মামুনুলের মতো স্বাধীনতা বিরোধীদের উচিত শিক্ষা দিতে হবে। ওরা ধর্মের নামে ওয়াজের নামে মাদরাসার নিরীহ ছাত্রদের ব্যবহার করে তালেবানি কায়দায় দেশের ক্ষমতা দখল করতে চায়। একাত্তরের পরাজয় ওরা ভুলতে পারেনি, ওই পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়। ওদের আর ছাড় দেওয়া উচিত হবে না, ওরা বিষধর সাপ। সরকার যদি কোনো কারণে ওদের আগে কিছুটা ছাড়ও দিয়ে থাকে কিন্তু এখন ওরা স্বরূপে বেরিয়ে এসেছে। ওদের টার্গেট বঙ্গবন্ধু, আওয়ামী লীগ, শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ। ওদের এই বিশৃঙ্খলার কঠোর বিচার করতে হবে, না হয় ওরা আরও পেয়ে বসবে। ওদের সাথে আছে ক্ষমতাহারা হয়ে দিশেহারা বিএনপি। বিএনপির লন্ডন পলাতক দণ্ডিত তারেক জিয়ার নির্দেশে এই অপশক্তি মাঠে নামার দুঃসাহস পেয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশে সফরে আসাকে কেন্দ্র করে মাদরাসার নিরীহ ছাত্রদের মাঠে নামিয়ে এবং তাদের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হতে যারা ইন্ধন জুগিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। প্রগতিশীল শক্তি বলে পরিচিত বা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের অন্যান্য দল যারা এই নৈরাজ্যে চুপ করে আছেন এবং ভাবছেন সরকার বিপদে পড়ে গেছে, তাদেরও ভেবে দেখা দরকার এই মৌলবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠলে প্রগতিশীল কোনো শক্তিই তাদের হাত থেকে রেহাই পাবে না। তাদেরও এদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত। সরকার ও সরকারি দল আওয়ামী লীগকেও নতুনভাবে ভাবতে হবে এই সকল অপশক্তিতে আর কোনো অবস্থায় কোনো ছুতাছাতায় আস্কারা দিয়ে মাথায় তোলা যাবে না। আওয়ামী লীগের মধ্যেও ওদের পক্ষে ঘাপটি মেরে থাকা লোকজন থাকার কথা অবিশ্বাস করা যায় না। প্রশাসনেও ওদের লোক আছে। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে বহুমুখী চক্রান্ত ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এর সঙ্গে আছে দেশিবিদেশি কিছু অপশক্তি। যারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি চায় না।
রাজশাহীতে বিএনপি নেতারা প্রকাশ্যেই পঁচাত্তরের মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনাকে হুমকি দিয়েছে। সব সাম্প্ৰদয়িক শক্তিকে ওরা মাঠে নামিয়েছে। ক্ষমতা ফিরে পেতে ওরা মরিয়া হয়ে গেছে। ওরা মসজিদকে ব্যবহার করে রাজনীতি শুরু করেছে। ওরা মাদরাসায় ছোট ছোট ছাত্রদের ধর্মের দোহাই দিয়ে মাঠে নামিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করছে। ওরা দেশের সম্পদ ধ্বংস করছে। ওরা টেস্ট কেস হিসেবে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধিতা শুরু করেছিল, আজ ওরা ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগুন ধরিয়ে গুঁড়িয়ে দিতে চেয়েছে। ওরা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগুন দেয়নি ওরা বাংলাদেশের মানুষের গায়ে আগুন দিয়েছে । ওদের কঠোর বিচার করতে হবে, তা না হলে ওরা আরও বেড়ে যাবে। ওদের আর বাড়তে দেওয়া যাবে না। দলে, সরকারে নতুন করে শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে। ঘাপটি মেরে বসে থাকা জামাতি হেফাজতিদের চিহ্নিত করে দল থেকে বের করে দিতে হবে। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে আগুন, বাংলাদেশের মানচিত্রে আগুন, জাতীয় পতাকায় আগুন মেনে নেয়া যায় না। এদের বিরুদ্ধে এখনই রুখে দাঁড়াতে হবে।
লেখক: কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ