Monday 25 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

কারারুদ্ধ রোজিনা— কারাগার বাংলাদেশের ছবি

হাবীব ইমন
১৯ মে ২০২১ ২১:১১

এক

নোয়াখালী অঞ্চলে একটি গল্প শ্রুত রয়েছে। গল্পটি এমন— ‘এক লোক তার স্ত্রীকে বলল, ছাইবানি আঁই চলোইন্না ট্রেন খাড়া করা আলাইতাম হারি। আঁর হে হেডম আছে। স্ত্রী তখন বলল, ছাই দেবাও ছাই তোঁর কেইক্কান্না হেডম আছে? লোকটি একটি লাল কাপড় চলন্ত ট্রেনের সামনে ধরতেই ট্রেন থেমে গেল। গার্ড নেমে এসে তাকে কী যেন জিজ্ঞাসা করে কষে এটা থাপ্পড় মারলো। তার স্ত্রী দূর থেকে সব দেখছিল। ট্রেন আবার চলে গেল। তার স্ত্রী এসে জিজ্ঞাসা করলো, তো তোঁর হেডম তো দেইখলাম। কিন্তু তোঁরে চোবড়াইলো কিল্লাই? লোকটি অসহায় হয়ে জবাব দিলো, আঁর হেডম আঁই দেবাইছি, আর হেতার হেডম হেতে দেবাইছে।’

বিজ্ঞাপন

সম্প্রতি ক্ষমতার অপব্যবহারের ঘটনাটির সঙ্গে এ গল্পটির একটি নিরবচ্ছিন্ন সম্পর্ক জাতির সামনে আরেকটু পরিষ্কার হলো। এ অঞ্চলের বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ— ‘হেডম জাহাজের কচ্ছপ’। অকারণে ক্ষমতার দাপট দেখানোর জন্য এ প্রবাদটি উল্লেখ করা হয়। নোয়াখালীর ভাষায় ‘হেডম’ অর্থ ‘ক্ষমতা’। হালকা চালে হলেও প্রতিবাদের একটি পরিভাষা রয়েছে এ প্রবাদটিতে।

দুই

১৯৬৭ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধ বিষয়ে মার্কিন সরকারের প্রতিরক্ষা দফতর একটি সমীক্ষা করে। সেই সমীক্ষা যারা করেন তাদের একজন ড্যানিয়েল এলসবার্গ এই গোপন দলিলগুলো ১৯৭১ সালে নিউইয়র্ক টাইমসের সাংবাদিকের হাতে তুলে দেন। তিনি সরকারি ভাষ্যের সঙ্গে একমত ছিলেন না। তার বক্তব্য ছিল— এগুলো মার্কিন নাগরিক, যাদের অর্থে ভিয়েতনামে যুদ্ধ চালানো হচ্ছে, তাদের জানার অধিকার আছে। তিনি মনে করেছেন যে সরকার মিথ্যাচার করছে। একই সময় ওয়াশিংটন পোস্টের হাতেও এই দলিলগুলো পৌঁছে। দুই পত্রিকাই এগুলো ছাপার উদ্যোগ নেয়।

বিজ্ঞাপন

নিউইয়র্ক টাইমস ১৩ জুন থেকে ধারাবাহিকভাবে এই বিষয়ে প্রতিবেদন ও দলিল ছাপতে শুরু করার পরে তিন দিনের মাথায় আইন মন্ত্রণালয় আদালতের কাছ থেকে সাময়িক রেস্ট্রেইনিং অর্ডার লাভ করে। এর আগে হোয়াইট হাউজ এগুলো না ছাপতে অনুরোধ করেছিল। হুমকিও দিয়েছিল যে তাদের রিপোর্টারদের হোয়াইট হাউজে প্রবেশাধিকার থাকবে না। সরকারের বক্তব্য ছিল— এগুলো প্রকাশিত হলে ‘জাতীয় নিরাপত্তা’ বিঘ্নিত হবে। তাই সরকার নিউইয়র্ক টাইমসের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে হাজির হয়।

সেই সময়ে নিউইয়র্ক টাইমসের সঙ্গে যোগ দেয় ওয়াশিংটন পোস্ট। দু’টি প্রতিদ্বন্দ্বী সংবাদপত্র একযোগে সরকারের বিরুদ্ধে লড়েছিল। তারা মনে করেছে, নাগরিকের তথ্য জানার অধিকার রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট ৬-৩ ভোটে রায় দিয়েছিল যে সরকার এটা প্রমাণে ব্যর্থ হয়েছে— কেন এইসব দলিল প্রকাশের ফলে জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। এরপরে বোস্টন গ্লোব এবং অন্যান্য কাগজেও এইসব গোপন দলিল প্রকাশিত হয়। এক পর্যায়ে এসে সিনেটের এক সাব-কমিটির শুনানিতে সিনেটর মাইক গ্রাভেল এই সব দলিলের অংশবিশেষ জোরে জোরে পড়ে শুনিয়েছিলেন, যেন দলিলগুলো প্রকাশ্য হয়ে পড়ে। পরে নিক্সন প্রশাসন এলসবার্গ আর তার সহযোগী এন্থনিও রুশার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, গোয়েন্দাবৃত্তি ও সরকারি সম্পত্তি চুরির মামলা করেছিল। সেই মামলাতেও সরকার পরাজিত হয়েছিল।

তিন

সরকার আমাদেরকে একটি বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে— শুধু বহুল নিন্দিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনই নয়, সরকারের কাছে থাকা আরও হাতিয়ার আছে, যা ঔপনিবেশিক আমলের হলেও সাংবাদিকের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করতে তারা মোটেও দ্বিধান্বিত নয়। তা না হলে কোনো সাংবাদিকের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টে মামলা হতো না। এই আইনে এর আগে কোনো সাংবাদিক অভিযুক্ত হয়েছেন— এমন উদাহরণ জানা নেই।

যাই হোক, সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট ১৯২৩-এর আওতায় আনা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে এই ঘটনাগুলো আবার স্মরণ করলাম। কারণ— কী করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংবাদপত্রগুলো একত্রিত হয়েছিল (যারা এই সময়ে ওয়াশিংটন পোস্টের মালিক, পরিচালক ও সম্পাদক কিভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা দেখতে উৎসাহী, তারা স্টিভেন স্পিলবার্গের তৈরি করা ছায়াছবি দ্য ‘পোস্ট’ দেখতে পারেন), সেটি দেখানো। বাংলাদেশের সাংবাদিকতার জন্যে এই রকম মুহূর্ত তৈরি হয়েছে বলেই ধারণা করি। রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে আনা মামলার মেরিট ইত্যাদি নিয়ে আইনজীবীরা এরই মধ্যে বলেছেন। তারা রোজিনা ইসলাম বা তার পক্ষ থেকে কীভাবে মামলা করা যায়, সে বিষয়েও পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু এই মামলার মর্মবস্তু কেবল তার বিরুদ্ধে আনা কোনো ব্যক্তিগত মামলা বলে বিবেচিত হতে পারে না। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের জন্যে যে আইন ব্যবহৃত হয়েছে, সেটি নিয়েই প্রশ্ন তোলা দরকার।

হয়তো সহসাই রোজিনা আদালত থেকে জামিন পাবেন। হয়তো এই মামলা একসময় হিমাগারে গিয়ে উপস্থিত হবে। কিন্তু এই মামলার মধ্য দিয়ে সাংবাদিকতার বিরুদ্ধে এই আইনের প্রয়োগের সূচনা হলো। সেটার কারণেই এখন এই কথাগুলো বলা দরকার। ফলে কেবল রোজিনা ইসলামের জামিনের মধ্যেই যেন সন্তুষ্টি না খুঁজি। জামিন হলেই যেন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ দিয়ে আনন্দের বন্যা না বইয়ে দেই। জামিনপ্রাপ্তি নাগরিক হিসেবে তার অধিকার। তিনি বা তার পক্ষে মামলা করা হবে কি না, সেটিও আলাদা বিষয়। যা বিবেচনার তা হচ্ছে অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের ব্যবহার।

চার

রোজিনা কোনো ফাইল থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য মোবাইলে ধারণ করেছেন। মাঠ সংবাদকর্মীর অভিজ্ঞতায় এটি একটি সাধারণ ঘটনা। সংবাদের নির্ভরযোগ্যতায় এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ খবরের নথি তো অনেকে সোর্স দিয়ে ফটোকপি করে। তর্কের খাতিরে এটা অবশ্য তথ্য চুরি। কিন্তু জনস্বার্থে তথ্য ফাঁস করাই তো সাংবাদিকের কাজ। রোজিনার প্রতি যে আচরণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী-কর্মকতারা করেছেন, সেটি ন্যাক্কারজনক। বর্বরতাও।

কিন্তু কী এমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল, রোজিনা যা চুরি করেছেন বলা হচ্ছে? রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপনীয় তথ্য তো নয়। এই মুহূর্তে করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে চীন-রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তির গোপনীয়তার কথা তুলতে পারেন কর্মকর্তারা। কোনো রিপোর্টার না হয় সেটা এক্সক্লুসিভ পেল। রিপোর্টাররা কি সারাবছর আপনার ধরিয়ে দেওয়া, বস্তাপঁচা সংবাদ ছাপার কাজ করবে! সে কারণে বেতন পাবে অফিস থেকে?

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্তারা একের পর এক ফাঁস হওয়া তাদের দুর্নীতি, অযোগ্যতার তথ্যকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বলে চালিয়ে দিলে কি তা মানতে হবে আমাদের? স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তো রাষ্ট্রের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কাজ করে না। আর জাতীয় স্বার্থ কেবল আমলারাই বুঝবেন কেন!

পাঁচ

রোজিনা সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করতে গিয়েছিলেন। সিঁদ কাটতে নয়। পুরো বাংলাদেশ দেখতে পেল, হেনস্তার শিকার হয়ে একজন দায়িত্বশীল নারী মাটিতে পড়ে যাচ্ছেন। রোজিনার গলার ওপর চেপে বসা আঙুলগুলো গভীর অর্থময় এক প্রতীকের মতো লাগছে। মনে হচ্ছে আঙুলগুলো কোনো ব্যক্তির গলায় নয়, বরং বাংলাদেশের বাক-স্বাধীনতার কণ্ঠনালীতে চেপে বসেছে। এই আমাদের আচরণ! এই আমাদের সভ্যতা!

রোজিনার ওপর জেবুন্নেসার যে অ্যাকশনের ছবি ভাইরাল হলো, তাতে স্পষ্ট— এটি একটি ক্রিমিনাল অফেন্স। তাহলে জেবুন্নেসার বিরুদ্ধে কি মামলা করার কেউ নেই? কেবল রোজিনার সন্তান বা ভাই বা আমাদের মতো দুয়েকজন অ্যাকটিভিস্ট লোকজন গলায় প্ল্যাকার্ড ঝুলিয়ে রোজিনার মুক্তি চাইব? প্রকৃত অর্থে রোজিনা ইসলাম নয়, এটি সামগ্রিকভাবে সাংবাদিকতা ও দুর্নীতিবিরোধী নীতি ও মূল্যবোধের বিরুদ্ধে এক বিশাল আঘাত।

ছয়

পেশাগত দায়িত্ব পালনে আমলাদের হাতে সাংবাদিক নির্যাতন ও মামলার ঘটনা বেড়েছে। মানবাধিকার ও সাংবাদিক সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত দুই বছর ধরে সরকারি অফিসে দায়িত্ব পালনের সময় সাংবাদিক নিগ্রহের ঘটনা বেড়েছে।

সংগঠনগুলোর কর্মকর্তারা বলছেন, ‘আমলাদের দুর্নীতির খবর প্রকাশ করার কারণেই তারা সাংবাদিকদের ওপর চটে আছেন। সাংবাদিক লাঞ্ছনার ঘটনায় অভিযুক্ত আমলাদের কারও বিচার না হওয়াতেও এ ধরনের ঘটনা বাড়াচ্ছে।’

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কারাবন্দি লেখক মুশতাক আহমেদ মারা যান। তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর হাই সিকিউরিটি কারাগারে ছিলেন। মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হিসাব অনুযায়ী, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২২ বছরে বাংলাদেশে ৩৫ জন সাংবাদিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। প্রতিমাসেই দেশের কোথাও না কোথাও সাংবাদিক নির্যাতন ও হেনস্তার ঘটনা ঘটছে।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল পর্যন্ত দেশে ১১ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা দায়ের হয়েছে। এর মধ্যে তিন জন সাংবাদিক কারাগারে আছেন। আর্টিকেল নাইনটিনের ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী, সারাদেশে গত বছর দু’জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে, ৭৮ জন হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন, ১৬৬ জন সাংবাদিক হত্যা ও অপহরণের হুমকি পেয়েছেন, ৩৫টি মামলায় ৫৮ সাংবাদিককে আসামি করা হয়েছে, ১২টি ফৌজদারি মামলায় ২০ জনকে আসামি করা হয়েছে এবং ৩১ সাংবাদিকের ক্যামেরাসহ গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম ভাঙা হয়েছে। এসব ঘটনার সঙ্গে পুলিশ, আমলা, রাজনীতিবিদ ও ঠিকাদাররা জড়িত ছিল।

রাষ্ট্রের নীতি ও আচরণের প্রতিবাদ করলে ভীতিপ্রদর্শন এবং নিপীড়নের উদ্দেশ্যে বিবিধ দমনমূলক আইনের প্রাদুর্ভাব এবং সেই সব আইনে আটক করে মানুষকে বন্দি রাখবার প্রবণতা দেশে নতুন নয়। কিন্তু এই বিষয়ে সরকারের অসহিষ্ণুতা ও দমন-নিপীড়নের তৎপরতার কোনো তুলনা নাই। স্পষ্টতই, রাষ্ট্রক্ষমতার সুযোগে সরকার আইনকে পীড়নের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করতে বদ্ধপরিকর। অতিমারির বিভীষিকাও রাষ্ট্রীয় পীড়নের স্পৃহাকে এতটুকু কমাতে পারেনি।

পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাংবাদিক সংগঠনগুলোকেও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সাংবাদিক সংগঠনগুলো পেশাগত স্বার্থে দলীয় দৃষ্টিভঙ্গি পরিত্যাগ করে যতদিন একত্রিত না হতে পারবে, ততদিন বাংলাদেশে মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতার চর্চা অসম্ভব। পাশাপাশি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৃণমূল পর্যায়ের সাংবাদিকদের ভূমিকা রাখার  দরকার। তা না হলে প্ল্যাকার্ডে দু’দিন পর লেখা থাকবে— ‘Where is kajol?‘

সরকারকে স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা অববারিত রাখার ক্ষেত্রে তার সাংবিধানিক দায়দায়িত্বের কথা স্মরণ করে দিচ্ছি এবং অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে— এমন সব আইন ও বিধিবিধান বাতিলের জোরালো দাবি জানাচ্ছি। কেননা, প্রশাসন ও আমলাতন্ত্র সাংবাদিকের যেকোনো কার্যক্রমকে ‘অপরাধ’ হিসেবে শনাক্ত করে মামলা ঠুকতে পারে। সংবিধানের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যতটুকু দেওয়া হয়েছে, তার সঙ্গে এই আইনগুলো সাংঘর্ষিক।

লোকরহস্যে বঙ্কিম বলেছিলেন, ‘পণ্ডিতেরা বলেন যে কালক্রমে পশুদিগের অবয়বের উৎকর্ষ জন্মিতে থাকে। এক অবয়বের পশু ক্রমে অন্য উৎকৃষ্টতর পশুর আকারপ্রাপ্ত হয়। আমাদিগের ভরসা আছে যে মনুষ্য পশুও কালপ্রভাবে লাঙ্গুলাদি বিশিষ্ট হইয়া ক্রমে বানর হইয়া উঠিবে।’ বঙ্কিমের ভবিষ্যদ্বাণী এত দ্রুত অক্ষরে অক্ষরে ফলে যাবে, কয়েক দশক আগেও তা ভাবা যায়নি। মাটির স্মৃতি, দেশের কথা কবেই বিস্মরণের তলদেশে চলে গেছে। ক্ষমতা এখন ব্যক্তিগত উদ্দেশ্য সিদ্ধির অছিলায় পরিণত হয়েছে।

সাত

রোজিনা জামিন পেলেন না। তবে জামিন দিয়ে গেলেন। এখন আরাম কেদারা ছেড়ে উঠে আসা সৌখিন-মৌসুমীদের হাত ধরাধরি এলাটিং-বেলাটিং প্রতিবাদ হবে। স্বার্থরক্ষাকারী আমলাদের হেডমও বাড়বে।

কারারুদ্ধ রোজিনা— কারাগার বাংলাদেশের উন্মুখ ছবি।

লেখক: সহকারী সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, কেন্দ্রীয় কমিটি

সারাবাংলা/এসবিডিই

রোজিনা ইসলাম হাবীব ইমন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর