Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বদলাচ্ছে ‘বিষ’, বদলাচ্ছে ভাষা

পাভেল পার্থ
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ১২:৪৩

বিষ মানে কী আমরা কমবেশি জানি। যা গ্রহণে প্রাণের ক্ষয় ও বিনাশ হয়। চলতি আলাপটি বিষ নিয়ে নয়। আলাপখানির অন্তর জুড়ে আছে ভাষা ও ভাষার রূপকল্পের প্রশ্নহীন বদল। বহুজাতিক বাহাদুরি আর উপনিবেশিক বাজারি বাস্তবতায় কীভাবে ভাষার রূপকল্প আমূল পাল্টে যাচ্ছে আলাপখানি তা নিয়ে। তাহলে আলাপে ‘বিষ’ নামক এমন বিনাশী বস্তুকে টেনে আনা কেন? কারণ গত পঞ্চাশ বছরে বাংলাদেশের নিন্মবর্গের ভাষিক অভিধান থেকে ‘বিষের’ ঐতিহাসিক রূপকল্পগুলো উধাও হয়েছে বা গায়েব করে দেয়া হয়েছে। চলতি আলাপে আমরা বিষ প্রত্যয়টির ঐতিহাসিক ও চলমান মানে থেকে ভাষার রূপকল্প বদলে যাওয়ার একটা হদিশ পাবো। যার সাথে অন্যায়ভাবে জড়িয়ে আছে বহুজাতিক বাজারের পণ্যসর্বস্ব বাহাদুরি।

২.

গ্রামীণ জনপদে সাপের বিষ, বোলতা, মৌমাছি, বৃশ্চিক, ভীমরুল, পিঁপড়া, কুকুর, ধুতরা, করবী, হীরা, ব্যাঙের ছাতা (ছত্রাক) এমন প্রাণসত্তাকেই বিষধারী হিসেবে চিহ্নিত করার চল। ‘বিষ’ এই জনপদের নিন্মবর্গের ভাষিক তলে জীবনপ্রবাহের এক বহমান রূপকল্প হিসেবেই বিকশিত হয়েছে। ‘বিষ’ কোনোভাবেই দুর্লংঘ্য, অচিন, বহিরাগত, চাপিয়ে দেয়া কোনো ধারণা ছিল না। বিষ জীবনেরই এক অংশ। তাইতো বাত-ব্যথায় কাতর মানুষেরা বলেন ‘শরীরের বিষ-বেদনা’। জীবন যখন দুর্বিষহ অতিষ্ট হয়ে ওঠে, অনেকে বলেন জীবন ‘বিষময়’। অসহ্য যন্ত্রণার ফোঁড়াকে ‘বিষ-ফোঁড়া’ নামেই আমরা চিনি। লাগাতার যন্ত্রণার রূপকল্প হিসেবে এসেছে ‘গোদের উপর বিষ-ফোঁড়া’ প্রবাদখানি। ‘মুখে মধু, অন্তরে বিষ’ বচনখানিও জানান দেয় জীবনের সাথে বিষের নিবিড় সম্পর্ক। মহাভারতের আদিপর্বে আছে, বিষ্ণুর আদেশে দেবতারা সমুদ্রমন্থন করে গরল থেকে অমৃত উৎপন্ন করে অমরত্ব লাভ করেন। আবার ‘বিষে বিষক্ষয়’ বলে বহুল একটি চিকিৎসা ধারণারও প্রচলন ঘটেছিল একসময়। কোনো প্রাণীর কামড়ে বিষাক্রান্ত মানুষের চিকিৎসা হতো। গ্রামীণ কবিরাজী থেকে শুরু করে আয়ুর্বেদ, চাকমাদের তালিক, মণিপুরীদের মেইবা কি মেইপাদের শাস্ত্রেও বিষ নিরোধের চিকিৎসা আছে। বিষধর সাপে কাটার চিকিৎসাকে বেদে-মাঙতা ভাষায় এখনও ‘বিষ-নামানো’ হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। বিষকে নামাতে হয়, বিলীন করতে হয়, বিষের ক্ষয় গুণ নাশ করতে হয়, বিষে বিষ ক্ষয় করতে হয়। গ্রামজনপদের বিষ-ধারণা তাই কখনোই প্রাণের অসীম বিস্তারের ভেতর কোনো দুর্বলের উপর প্রবলের কোনো একতরফা স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলপ্রয়োগ নয়। হাওরাঞ্চলে বিষ-বেদনার চিকিৎসায় তাই ‘কলতামারা ঝাড়া’ বা সাপের বিষ নামানোর জন্য বিলাঞ্চলে মনসা ভাসান পালার সূচনা। এক বিষ ঘিরে এই জনপদে জীবনের কত ব্যাঞ্জনা, কত আয়োজন।

৩.

‘কাজলরেখার’ কাহিনি কমবেশি সকলেরই জানা। সূঁচবিদ্ধ রাজকুমারের সারা শরীর থেকে রাজকন্যা কাজলরেখা একে একে সব সূঁচ তুলে ফেলে। বাকি থাকে দুই চোখের সুঁই। তখনই ঘরে প্রবেশ করেন অন্য এক নারী, রূপকথায় তাকে ‘দাসী’ বলা হয়েছে। দাসী কাজলরেখাকে স্নানে পাঠিয়ে নিজেই চোখের উপর থেকে সুঁই তুলে ফেলে। প্রাণ ফিরে পেয়ে রাজপুত্র দেখে দাসী এক সম্মুখে তার। মনে করে সেই বাঁচিয়েছে জীবন। স্নান সেরে কাজলরেখা ঘরে ফেরে, কিন্তু বিধির লিখন নিজ পরিচয় গোপন রাখতে হয়। রাজকন্যা হয়ে যায় দাসী, দাসী হয়ে যায় রাজকন্যা। এক পর্যায়ে দুষ্ট দাসী কাজলরেখাকে ‘বিষ’ খাইয়ে মারতে চায়। রূপকথার কথা-কাহিনিতে নানান সময়ে ‘বিষ’ নামক বিষয়টি এসেছে মূলত কাউকে মেরে ফেলা এবং ‘হিংসার’ সর্বশেষ বহিঃপ্রকাশ হিসেবে। সক্রেটিস হেমলক নামক বিষ খেয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। শেকসপিয়ারের ম্যাকবেথে বিষ তৈরির তালিকায় গিরগিটির চোখ, কুকুরের জিভ, নেকড়ের দাঁত ও গাছগাছড়ার বিবরণ আছে। গ্রামীণ জনপদে সাধারনত আশেপাশের নানান গাছগাছড়া ও প্রাণীজ উপাদানই একটা সময় ‘বিষ’ হিসেবে ব্যবহৃত হত। শিকার, চিকিৎসা, আত্মহত্যা কিংবা শত্রুতায়। করবী গাছের ফল বেশ পরিচিত বিষ। আদিবাসীরা তীরের ফলায় নানান উদ্ভিদ ও প্রাণীজ উপাদান মাখিয়ে তীরকে ‘বিষাক্ত’ করে নেয়। পাহাড়ি ছড়া বা ছোট ঝিরির দুই পাশে আটকে গাছগাছড়ার রস ঢেলে মাছ ধরার প্রচলন আছে অনেক সমাজে। সাময়িক সময়ের জন্য সেই প্রতিবেশ মাছের জন্য বিষাক্ত হয়ে ওঠে। হাজং আদিবাসীরা হিজল ও তমালের ছাল, মুন্ডারা বিশল্যকরণীর পাতা, লালেংরা মনকাঁটার ফল, মান্দিরা নাখালবিদুর লতার ছাল, ত্রিপুরারা আবিথির শেকড়, ওরাঁওরা মুঙ্গাশাগের শেকড় মাছ ধরার জন্য বিষ হিসেবে ব্যবহার করে।

৪.

বিষ সংসারেরই এক ঘনিষ্ঠ সহচর। শৈশব থেকে জানতে হয় কোন প্রাণসত্তার কোন অঙ্গে বিষ। এই বিষ কী কাজে লাগে, কিভাবে এর সাথে মিশতে হয়। চুতরাপাতা কি বিছুটি শরীরে লাগলে প্রচন্ড চুলকায়, জ্বালাপোড়া করে। আবার এ চুতরাপাতার কচি ডগা শাক হিসেবেও খায় খাসি আদিবাসীরা। সাংসারেক ধর্মের মান্দিরা বনাক গাছকে পবিত্র মনে করে, জৈন্তিয়াদের ভেতর রম্বুই গাছ তাদের গোত্রপ্রতীক। এসব গাছের নিচে গেলে অনেকের শরীর বিষ-ব্যাথায় ফুলে যায়। কারো কারো জন্য এসব গাছ ‘বিষ-বাতাস’ ছাড়ে। এই জনপদে বিষের দর্শন ও ব্যবস্থাপনা মূলত নারীর জ্ঞান। অভিজ্ঞ বেদে-মাঙতা নারীরা সাপের বিষ-থলি থেকে নির্বিঘ্নে বিষ সংগ্রহ করতে জানেন। নিরাপদে খেলা দেখানোর জন্য অনেকে ‘বিষ-দাঁত’ তুলে ফেলেন। শিং, টেংরা, কৈ মাছ কাটার বিশেষ নিয়ম আছে। না জানলে বিষ-ঘাই খেতে হয়। সুন্দরবন অঞ্চলে কাইন নামের একটি মাছ পাওয়া যায়। স্থানীয় বিশ্বাস এ মাছের সাথে সাপের সঙ্গম হয়। তাই কাইন মাছের নাভীতে বিষ জমে। সুস্বাদু এই মাছ রান্নার আগে খুব কায়দা করে নাভী ফেলে দিতে হয়। পটকা মাছ যেমন বিষ ফেলে খাওয়ার নিয়ম। ঘাঘড়া শাকে বিষ থাকে, কিন্তু বরিশাল অঞ্চলে এটি ব্যাপক জনপ্রিয় শাক।

৫.

বরেন্দ্র অঞ্চলে বিষের আদি নাম ছিল ‘কাথেলা জহর’। গ্রামাঞ্চলে করবলা (করবী) গাছের ফল দিয়েই এই কাথেলা জহর তৈরি হত। নাটোরের দিঘাপতিয়ার পাগলা রাজাকে এই কাথেলা জহর খাইয়ে মেরে ফেলার গল্প বরেন্দ্র অঞ্চলে প্রবীণেরা এখনও করেন। কৃষি ও জুমে রোগবালাই দমনের জন্য বিষ হিসেবে নিম, নিশিন্দা, আতাফল, তুলসী, গন্ধভাদালী, বিষকাঁটালী, বাসক, উড়ি, জংচাক, বলসাল, দুরুখ বাখুমান এসব গাছগাছড়া একটা সময় ব্যবহার করা হতো বাঙালি কি আদিবাসী সমাজে। কিন্তু সেই চর্চা ও সম্পদের উৎস এখন পাল্টে গেছে। বহুল বর্ণিত সায়ানাইড বা হেমলক নয়, গত পঞ্চাশ বছরে রাষ্ট্রব্যাপি ‘বিষের’ মানে বদলে গেছে। বদলে দেয়া হয়েছে। তথাকথিত ‘সবুজ বিপ্লবের’ মাধ্যমে ‘বিষ’ নামক প্রত্যয়টি বাংলাদেশের নিন্মবর্গের ভাষিক অভিধান থেকে তার নিজস্ব ঐতিহাসিক রূপকল্পসহ নিরুদ্দেশ হয়েছে। ১৯৬০ এর দশকে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক কৃষি গবেষণা পরামর্শক দল (সিজিআইএআর) এর নির্দেশে বাংলাদেশসহ তৃতীয় দুনিয়ার দেশগুলোতে চাপিয়ে দেয়া হয় ‘সবুজ বিপ্লব’ নামে এক উন্নয়ন মারদাঙ্গা। মাটির তলার জল যন্ত্র দিয়ে টেনে তুলে, রাসায়নিক সার ও তথাকথিত উচ্চফলনশীল বীজের আমদানি ঘটিয়ে দেশের ঐতিহাসিক উৎপাদনপ্রবাহকে অস্বীকার করে চালু হয় সবুজ বিপ্লব। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈচিত্র্য ও সম্পদে ভরপুর রাষ্ট্রসমূহের উৎপাদন ও বিকাশের ব্যাকরণকে ছিনতাই করে রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা। আর এই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা পেতে থাকে নানান বহুজাতিক কৃষিবাণিজ্য কোম্পানির লাগাতার বাহাদুরির ভেতর দিয়ে। সবুজ বিপ্লবের মাধ্যমেই চালু হয় বহুজাতিক কোম্পানির কীটনাশক, ছত্রাকনাশক, আগাছানাশক বাণিজ্য। বহুজাতিক কোম্পানির এই নাশকতাই ‘বিষ’ প্রত্যয়টির মানে ও রূপকল্প সমূলে পাল্টে দিতে থাকে। দেশের জুম থেকে জমিনে ব্যবহৃত নানান মনস্যান্টো, সিনজেনটা, বায়ার, কারগিল এমনতর বহুজাতিক কোম্পানির এসব বালাইনাশকই আজ গ্রামীণ জনপদে ‘বিষের’ প্রতিশব্দ হয়ে ওঠেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের গ্রামজনপদে বিষ বলতে শুধুমাত্র প্রশ্নহীনভাবে বহুজাতিক কোম্পানির এসব বালাইনাশককেই বুঝে সবাই। ‘বিষ’ খেয়ে কেউ মরেছে মানে সে রনস্টার, রিফিট, রটেনন, একতারা, ফুরাডন, ক্যারাটে এমন কোনো বালাইনাশক গিলেছে। পাশাপাশি ‘সার-বিষ’ ছাড়া মানে রাসায়নিক সার ও বালাইনাশক ছাড়া চাষকৃত ফসল ‘নিরাপদ অর্গানিক’ হিসেবে এক আলাদা শ্রেণীবৈষম্যের ভিত্তিও মজবুত করে তুলছে।

৬.

প্রাণ ও প্রকৃতির ধারাবাহিক বিবর্তন ও বিকাশমানতার আখ্যানেই প্রাণসত্তার শরীরে জমা হয়েছে বিষ। বিচ্ছুতে ক্লেরোটক্সিন, মৌমাছিতে মেলিটনিন এমন রাসায়নিক উপাদান হিসেবে। কিন্তু বহুজাতিক কোম্পানিরা প্রকৃতির এ ব্যাকরণ মানেনি। তারা শিশি-বোতল-প্যাকেটে রাসায়নিক উপাদান ‘বিষ’ নামে বিক্রি করতে শুরু করেছে। তারা প্রকৃতির নিয়ম থেকে বিষকে তাদের বাণিজ্যিক পণ্যে পরিণত করার ভেতর দিয়ে বিষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মানে ভেঙেচুরে টুকরো টুকরো করে দিয়েছে। বহুজাতিক কোম্পানির তৈরি করা এবং বহাল রাখা বর্তমান এই ‘বিষ’ মানে হলো, নিজের উৎপাদনকে বাঁচানোর জন্য আর সকল প্রাণসত্তাকে খুন করা। ধান বাঁচাতে কেঁচো, মাকড়সা, পতঙ্গ, মাছি, প্রজাপতি, ভেষজ লতাগুল্ম, মাটি, পানি, শামুক, জোঁক সবকিছুকে মেরে ফেলা। বহুজাতিক এই বাণিজ্যিক বিষ, একক কোনো প্রাণসত্তা নয় অন্যায় মৃত্যুদন্ড চাপিয়েছে সমষ্টির উপর। এখানে বিষের সাথে নিন্মবর্গের ব্যবস্থাপনা, ন্যায্যতা, ভাগাভাগি, যোগ-বিয়োগের কোনো সম্পর্ক নেই। পাশাপাশি বিষ-ব্যাবস্থাপনার জ্ঞান এবং অভিধা গুলোও নির্দয়ভাবে নিশ্চিহ্ন হতে চলেছে। এমনকি প্রকৃতিতে বিষের উৎসগুলোও অন্যায়ভাবে নিহত হয়ে যাচ্ছে প্রতিদিন। বহুজাতিক কোম্পানির মাধ্যমে শুরু হওয়া রাসায়নিক এই বিষ-বাণিজ্য গ্রামীণ সমাজে সম্পর্কের নয়া মেরূকরণেও প্রভাব তৈরি করছে। রাস্তাঘাটে, হাটবাজারে যেখানে সেখানে এখন এসব বহুজাতিক বালাইনাশক বিক্রি যত বেড়েছে ততই গ্রামাঞ্চলে আত্মহত্যার ঘটনা বাড়ছে। বহুজাতিক বিষ-বাণিজ্য, সম্পর্কের নয়া তলও তৈরি করছে। এভাবেই বহুজাতিক বাণিজ্য বাহাদুরি বিষকে গ্রামীণ নিন্মবর্গের মহাবয়ানের আখ্যান থেকে কেটে ছেনে আজ ‘বিষের’ এক বৈষম্যমূলক মানে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে।

৭.

বিষ নিয়ে বাংলা জুড়ে কত যে রূপকল্প, কত যে ব্যাঞ্জনা। আর এ সব নিয়েই কিন্তু ভাষার ময়দান। জ্ঞান দাস যখন বলেন, সুখের লাগিয়া এ ঘর বাঁধিনু, অনলে পুড়িয়া গেল, অমিয় সাগরে সিনান করিতে সকলি গরল ভেল’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গানে আছে, ‘জেনে শুনে বিষ করেছি পান, প্রাণের আশা ছেড়ে সঁপেছি প্রাণ’। লালন ফকির উচ্চারণ করেছেন, ‘বিষ জুদা করিয়ে সুধা রসিক জনা করে পান। বিষ বলতে এই জনপদের ভাষিক রূপকল্প এমনই জটিল, মহাবয়ানের অংশ। আজ কেন বহুজাতিক কোম্পানির বালাইনাশকই ‘বিষের’ একমাত্র প্রতিশব্দ ও রূপকল্প হয়ে ওঠবে? আমরা যখন ভাষা নিয়ে আলাপ তুলি, ভাষা টিকে থাকবার ও বিকশিত হওয়ার শর্ত ও কারিগরি নিয়ে খুব কম প্রশ্ন তুলি। কিন্তু ভাষার ময়দানে এটিই তো জরুরী বাহাস। সমাজ রূপান্তরের ব্যাকরণে নিন্মবর্গেও যাপিতজীবনের ভেতর দিয়েই প্রতিদিন বদলে যাবে, পাল্টে যাবে নিজের ভাষা। নিজের রূপকল্প। কিন্তু কোনো বহিরাগত বহুজাতিক বাহাদুরি যদি সেই কারিগরি ও ব্যাঞ্জনা নির্দিষ্ট ও অনিবার্য করে দেয় তা রুখে দাঁড়ানো জরুরি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, আসামের বাংলা ভাষা আন্দোলন, বিষ্ণুপ্রিয়া মণিপুরী ভাষার আন্দোলন কি অবিরাম দেশের জাতিগত নিন্মবর্গের ভাষিক দ্রোহ এই স্ফূলিঙ্গই তো জিইয়ে রেখেছে। আসুন অনর্গল স্ফূলিঙ্গ হয়ে ওঠি।

লেখক: লেখক ও গবেষক

সারাবাংলা/এসবিডিই

করবী কাথেলা জহর পাভেল পার্থ বদলাচ্ছে ভাষা বালাইনাশক বিষ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর