তরুণদের উদ্যোক্তা হতেই হবে
২৩ এপ্রিল ২০২২ ১৭:০৭
শিক্ষিত তরুণদের চাকরির পেছনে হন্যে হয়ে না ঘুরে উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শদান ইদানীংকালের একটি অতি জনপ্রিয় ধারণা। আর এ ধারণা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত যৌক্তিক এবং এর পক্ষে তরুণদের উদ্বুদ্ধ করার যথেষ্ট প্রয়োজনও রয়েছে। কিন্তু অভিজ্ঞতা হচ্ছে, পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে লক্ষ্য পরিবর্তন করে সংশ্লিষ্ট তরুণ যখন চাকরি খোঁজার পরিবর্তে উদ্যোক্তা হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তখন বা এর পরপরই বিনিয়োগসংশ্লিষ্ট বেশকিছু প্রশ্নের জবাব ও অত্যাবশ্যকীয় কিছু সহায়তা পেতে তাকে রীতিমতো গলদঘর্ম হতে হয়।
উল্লিখিত তরুণ যেহেতু সম্পূর্ণ পূর্ব-অভিজ্ঞতাবিহীন, ফলে এসব প্রশ্নের জবাব ও আনুষঙ্গিক সহায়তাগুলো দ্রুত, ঝামেলাবিহীন ও গুণগত মানে পাওয়াটা তার জন্য খুবই জরুরি। কিন্তু যথাসময়ে ও কাম্য মান অনুযায়ী তা না পেলে যা ঘটে তা হচ্ছে, হয় সে হতাশ হয়ে পূর্ব-সিদ্ধান্তে ফিরে যায় অর্থাৎ আবার চাকরি খুঁজতে শুরু করে অথবা বিনিয়োগক্ষেত্র ও কৌশল নির্বাচনে ভুল করে। আর এ উভয়বিধ সিদ্ধান্তের কোনোটিই ওই তরুণ বা এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কারোর জন্যই মঙ্গলজনক বা কাম্য হতে পারে না। ফলে রাষ্ট্র ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সবারই উচিত হবে উল্লিখিত এ উভয়বিধ অকাম্য পরিস্থিতি থেকে ওই তরুণদের মুক্ত থাকতে সহায়তা করা।
এখন কথা হচ্ছে, উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী শিক্ষিত তরুণের প্রাথমিক প্রশ্ন ও চাহিদাগুলো কী কী? জবাবটি দীর্ঘ। ফলে এখানে শুধু প্রথম প্রশ্নটি নিয়ে অর্থাৎ তিনি কোথায় বিনিয়োগ করবেন বা কোথায় বিনিয়োগ করাটা তার জন্য অধিকতর লাভজনক হতে পারে, সে প্রসঙ্গে খানিকটা আলোকপাত করা যেতে পারে। প্রশ্নের জবাবটি আপাতদৃষ্টে খুব কঠিন মনে না হলেও বাস্তবে তা অতটা সহজ নয় মোটেও।
কারণ বিনিয়োগ-পরামর্শ ও এ বিষয়ে সহায়তাদানের জন্য দেশে যেসব সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে, তাদের অধিকাংশের কাছেই এ বিষয়ে জরিপনির্ভর কোনো তথ্য-উপাত্ত নেই যার ভিত্তিতে তারা ওই নবীন উদ্যোক্তাকে সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র উল্লেখ করে বিনিয়োগের বিষয়ে স্পষ্ট ও কার্যকর দিকনির্দেশনা প্রদান করতে পারেন। ফলে এ বিষয়ে তারা যা যা বলেন তার বেশির ভাগটাই হচ্ছে আঁচ-অনুমান-নির্ভর কথাবার্তা, যা উদ্যোক্তাকে প্রায়ই অত্যন্ত বিভ্রান্তিতে ফেলে। আর বিষয়টি বুঝতে পেরে সম্ভাবনাময় বহু নতুন উদ্যোক্তাই সঠিক বিনিয়োগক্ষেত্র চিহ্নিত করতে না পেরে হাল ছেড়ে দিয়ে আবার পূর্ব-সিদ্ধান্তে ফিরে যান অর্থাৎ চাকরি খুঁজতে শুরু করেন।
তাহলে স্বভাবতই প্রশ্ন আসে, বিনিয়োগসংক্রান্ত পরামর্শদানের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিনিয়োগক্ষেত্র চিহ্নিতকরণ বিষয়ে মাঠপর্যায়ের জরিপভিত্তিক মৌলিক তথ্য না থাকলে আগ্রহী উদ্যোক্তাকে কি পরামর্শ বা সহায়তা দেওয়া একেবারে অসম্ভব? না, কাজটি অসম্ভব নয় মোটেও, তবে কঠিন। আর সে কঠিন কাজটিকেই অধিকতর কঠিন করে তুলেছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর অপেশাদারিমূলক দৃষ্টিভঙ্গি। নতুন বিনিয়োগের বিষয়ে পরামর্শদান ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য ওইসব প্রতিষ্ঠানে মূলত দু’ধরনের লোক কাজ করেন : এক. প্রতিষ্ঠানের স্থায়ী কর্মী, যারা উদ্যোক্তা উন্নয়নের বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে এক ধরনের বিশেষজ্ঞ জ্ঞান অর্জন করেছেন।
এই বিশেষজ্ঞ কর্মীদের কাছে মৌলিক জরিপের তথ্য না থাকলেও তারা তাদের অভিজ্ঞতার আলোকে মোটামুটি একটি মানসম্পন্ন স্তরের পরামর্শ ও সহায়তা আগ্রহী উদ্যোক্তাদের প্রদান করতে পারেন। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, এসব বিষয়ে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ও পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত প্রদানের এখতিয়ার বা কর্তৃত্ব রাখেন না। সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষমতা বস্তুত ওইসব প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের হাতে, অধিকাংশ ক্ষেত্রে যারা ক্যাডার সার্ভিস থেকে প্রেষণে আসা কর্মকর্তা। প্রেষণাধীন এ কর্মকর্তাদের মেধা নিয়ে হয়তো তেমন বড় ধরনের কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু উদ্যোক্তা উন্নয়নের বিষয়ে অভিজ্ঞতাবিহীন এ কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত দিতে গিয়ে প্রায়ই পেশাদারির পরিচয় দিতে ব্যর্থ হন। ফলে খুব স্বাভাবিকভাবেই এ সংক্রান্ত সেবাদানের কাজটি শুধু বিলম্বিতই হয় না-মানহীনতায়ও ভোগে। আর এরই ফলে উদ্যোক্তা উন্নয়নসংক্রান্ত সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান এখন ১৩৭ দেশের মধ্যে ১৩২, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সর্বনিুে অর্থাৎ যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানেরও পরে।
যা হোক, এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা অন্য লেখায় আসতে পারে। বর্তমান নিবন্ধে বস্তুত নতুন উদ্যোক্তা কোথায় ও কীভাবে নিজের সম্ভাবনাময় বিনিয়োগক্ষেত্রগুলো খুঁজে পাবেন, তা নিয়ে খানিকটা আলোচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে প্রথম কথা হচ্ছে, কোনো একটি বিনিয়োগক্ষেত্র কখনোই সবার জন্য সমান সম্ভাবনাময় বা সম্ভাবনাহীন নয়। অর্থাৎ একজনের জন্য যেটি সম্ভাবনাময়, অন্যজনের ক্ষেত্রে তা সম্ভাবনাময় নাও হতে পারে।
আর সে কারণেই লক্ষ করা যায় যে, লোকসানে পড়া বিক্রীত একটি প্রতিষ্ঠান অন্যজন নিয়ে লাভবান হচ্ছেন। আর এসবকিছুকে মনে রেখেও বলব, কৃষি হচ্ছে বাংলাদেশে বর্তমানে এমন একটি খাত (তবে একমাত্র খাত নয় অবশ্যই) যেখানে উদ্যোক্তাবৃত্তির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। আর সে বিপুল সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো গেলে শিক্ষিত তরুণরা নিজেরাই যে কেবল সফল উদ্যোক্তা হিসাবে গড়ে উঠতে পারবেন তাই নয়, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের কৃষি খাত তথা সামগ্রিক অর্থনীতিও লাভবান হবে।
এখন দেখা যাক কৃষি খাতের এ সম্ভাবনাগুলো কোথায় কীভাবে লুকিয়ে আছে। প্রথম কথা হচ্ছে, শস্য বহুমুখীকরণ তথা নানামাত্রিক ফসল উৎপাদনের ক্ষেত্রে গত ৫০ বছরে বাংলাদেশে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে এবং এর চলমান ধারাও যথেষ্ট গতিশীল। আর এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারলে শস্য বহুমুখীকরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষে অচিরেই একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক অবস্থান তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়। কিন্তু কৃষির যে ক্ষেত্রটিতে এখনো যথেষ্ট অগ্রগতি সাধিত হয়নি সেটি হচ্ছে, একই জমিতে একই সময়ে একাধিক ফসল উৎপাদনের চর্চা এবং সেই সঙ্গে ফসলের মৌসুম সংখ্যা বৃদ্ধিকরণ।
শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তারা শেষোক্ত এ বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়ে এক্ষেত্রে লাভজনক বিনিয়োগের জন্য এগিয়ে আসতে পারেন বলে মনে করি। বিষয়টির স্পষ্টীকরণের জন্য এখানে একটি ধারণাগত উদাহরণ টেনে আনা যেতে পারে। ধরুন, প্রচলিত কৃষিব্যবস্থার আদলে আমাদের সামনে একটি ফলবাগান রয়েছে, যে বাগানের জমিতে বছরে একটিই ফসল ফলে, যা হচ্ছে কমলা। শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তাকে ওই কমলাবাগানের ভেতরে একই সময়ে দ্বিতীয় আরেকটি ফসল ফলানোর চেষ্টা করতে হবে যা খুবই সম্ভব, তা সেটির উৎপাদনশীলতার স্তর যত নিুবর্তীই হোক না কেন। আর নিু উৎপাদনশীলতার হার মেনেও সেখান থেকে যদি সামান্য মুনাফাও আসে, তবু সেটি যে শুধু কমলার ওপর নির্ভর করার চেয়ে অনেক বেশি লাভজনক হবে, সেটি প্রায় নিশ্চিত করেই বলা যায়।
অতঃপর ওই তরুণ উদ্যোক্তা এ ক্ষেত্রে যে দ্বিতীয় উদ্যোগটি গ্রহণ করতে পারেন তা হচ্ছে, ফসলের আবাদকালীন মৌসুমের মেয়াদকে যতটা সম্ভব ছাঁটাই করে সেখানে একটি নতুন চাষ মৌসুম যোগ করা। অর্থাৎ কমলাবৃক্ষ ফল দিতে শুরু করার পর থেকে এর আবাদে এখন যেখানে সাত থেকে আট মাস সময় লাগে, সেখানে এ আবাদকালীন মৌসুমকে ছয় মাসে নামিয়ে আনতে হবে যাতে একই জমিতে বছরে দুবার কমলার চাষ করা সম্ভব হয়। আর এ কাজটি বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ও প্রশিক্ষণের ভিত্তিতে একজন শিক্ষিত উদ্যোক্তার পক্ষেই কেবল করা সম্ভব। যা হোক, শিক্ষিত নবীন উদ্যোক্তা কৃষিতে কী কী করতে পারেন, তার দুটি মাত্র উদাহরণ এখানে উল্লেখ করা হলো। বস্তুত কৃষিভিত্তিক এরূপ আরও অনেক সৃজনশীল কাজেই তাদের পক্ষে উদ্ভাবনাময় ও লাভজনক উদ্যোক্তাবৃত্তির স্বাক্ষর রাখা সম্ভব।
উল্লিখিত ধরনের সৃজনশীল উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষিত তরুণরা প্রচলিত ধাঁচের কৃষিতেও নানা লাভজনক বিনিয়োগের কথা ভাবতে পারেন, যার মধ্যে ফুল, শস্য, মাছ, মাংস, দুধ প্রভৃতির উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণের বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে। তবে এসব ক্ষেত্রে তাদের সর্বাগ্রে সর্বাধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ ও প্রক্রিয়াজাতকরণের কথা ভাবতে হবে, যেটি বৈশ্বিক মানদণ্ডেও প্রতিযোগিতামূলক ও লাভজনক হয়ে উঠতে পারে। এসব ক্ষেত্রে কোনো অবস্থায়ই তাদের শুধু স্থানীয় মান ও চাহিদার কথা বিবেচনা করলে হবে না। কারণ উন্মুক্ত বাজারের এ সমকালীন প্রতিযোগিতায় স্থানীয় বাজার বলে কিছু নেই। পুরো বিশ্ব মিলে এখন আসলে একটিই বাজার-বিশ্ববাজার। সে বিশ্ববাজারে প্রত্যেককে (কৃষি খাতের উদ্যোক্তাকেও) প্রতিযোগিতা করেই টিকে থাকতে হবে, তা সেটি এ খাতের কোনো ক্ষুদ্রতম পণ্য হলেও। ফলে উল্লিখিত নতুন উদ্যোক্তারা কোনোভাবেই যেন মনে না করেন, অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটিয়ে তারা তাদের বিনিয়োগ-ব্যয় বাড়িয়ে ফেলছেন। বরং তাকে ভাবতে হবে যে, এ ধরনের বিনিয়োগই তার উদ্যোগকে অধিকতর টেকসই ও লাভজনক হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে রক্ষাকবচ হিসাবে কাজ করবে।
উচ্চফলনশীল বীজ ও পরীক্ষিত কৃষি উপকরণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের কৃষি খাতে বর্তমানে একটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের কৃষকদের মেধা, দক্ষতা ও দূরদৃষ্টির প্রতি পূর্ণ সম্মান রেখেও বলা প্রয়োজন যে, উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকার কারণে এসব কৃষি উপকরণের পরিমিত ও বৈজ্ঞানিক ব্যবহার সেখানে দারুণভাবে বিঘ্নিত হচ্ছে এবং এতে দীর্ঘমেয়াদে ভূমির উর্বরতা ও গুণাগুণ প্রচণ্ডভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও রাতারাতি বাড়তি উৎপাদনের লোভে দিনের পর দিন এ কাজটি তারা করেই চলেছেন। আশা করা যায়, এ কাজে শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তাদের যুক্ত করা গেলে কৃষি উপকরণের পরিমিত ব্যবহার বহুলাংশে নিশ্চিত হবে।
তবে এক্ষেত্রেও প্রস্তাবিত নতুন উদ্যোক্তাদের একটি বিষয়ের প্রতি লক্ষ রাখতে হবে যে, অধিক উৎপাদনমুখী কৃষি উপকরণ ব্যবহার করতে গিয়ে তারা যেন জিএম (জেনেটিক্যালি মোডিফাইড) বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান মনসান্টোর মতো সাম্রাজ্যবাদী কোম্পানিগুলোর হাতে বন্দি না হয়ে পড়েন। স্পষ্টীকরণের জন্য বলি, জিএম বীজ হচ্ছে সেই বীজ, যে বীজ একবার জমিতে বপন করলে তা থেকে উৎপাদিত ফসল আর কখনো বীজ হিসাবে ব্যবহার করা যায় না। বরং বীজ এবং সার, কীটনাশক ও অন্যান্য উপকরণের জন্য কৃষককে বারবার মনসান্টোর কাছেই ফিরে যেতে হয়। প্রসঙ্গত জানাই, অধিক উৎপাদনের লোভে ভারতের পাঞ্জাবের তুলা চাষি কর্তৃক জিএম বীজ ব্যবহার করা এবং তাতে সর্বস্বান্ত হওয়ার ঘটনা নিকট ইতিহাসের এক জাজ্বল্যমান কষ্টদায়ক উদাহরণ।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, শিক্ষিত তরুণ শহরের অভ্যস্ত মোহ ছেড়ে গ্রামে গিয়ে কৃষিতে যুক্ত হতে চাইবে কি না বা তাকে সেখানে যুক্ত হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা যাবে কি না। ওই তরুণদের লক্ষ করে বলতে চাই, বাংলাদেশের স্কয়ার, এসিআই, প্রাণ, মেঘনা, আকিজ, কাজী ফার্মস, আফতাব প্রভৃতি বৃহৎ কোম্পানির খাদ্যসংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলো তো কৃষিরই সম্প্রসারিত রূপ। তো, তারা যদি কৃষি উৎপাদন ও এর বাজারজাতকরণ নিয়ে ব্যবসা করে সফল হতে পারে, তাহলে আমাদের শিক্ষিত তরুণরা নয় কেন? আমার তো ধারণা, নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও গ্রামীণ অবকাঠামোর (যোগাযোগব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ইন্টারনেট সংযোগ প্রভৃতি) বিস্তার এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, তাতে তাদের জন্য এ মুহূর্তের সবচেয়ে নিরাপদ, কম ঝুঁকিপূর্ণ ও অধিক লাভজনক বিনিয়োগক্ষেত্রই হচ্ছে কৃষি।
ফলে লেখাপড়া শিখে তিনি কেন কৃষিকাজ করবেন-এরূপ ভ্রান্ত ধারণা দ্বারা আচ্ছন্ন না থেকে তারা যদি মুক্তমনে সম্পূর্ণ আধুনিক ও প্রগতিশীল চিন্তাভাবনা নিয়ে নিজেদের সর্বোচ্চ নিষ্ঠা, দক্ষতা, মেধা ও অঙ্গীকার নিয়ে কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পে যুক্ত হন, তাহলে তাদের সবার পক্ষেই দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হবে বলে মনে করি।
লেখক: সাবেক পরিচালক, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থা (বিসিক)
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি