শেখ ফজলুল হক মনির স্বপ্ন ও আদর্শ বাস্তবায়নে কাজ করছে যুবলীগ
১০ নভেম্বর ২০২২ ১৭:৩৭
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের মহানায়ক, বাঙালির মহান নেতা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে যুবসমাজকে কাজে লাগিয়ে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন শেখ ফজলুল হক মনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের চার মূলনীতি গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, ধর্ম-নিরপেক্ষতা ও সমাজতন্ত্র বাস্তবায়ন, সেই সাথে সমাজের সংস্কারের ও টেকসই উন্নয়ন, যুবসমাজের সৃজনশীল ও সাংস্কৃতিক বিকাশ ও তাদের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণ, মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তি ও গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপদান, বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে যুব ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। বিশাল যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার দায়িত্ব দেন মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুক্তিযুদ্ধের প্রধান গেরিলা বাহিনী বাংলাদেশ লিবারেশন ফোর্স-বিএলএফ (মুজিব বাহিনী) প্রধান কমান্ডার ও তুখোড় সংগঠক শেখ ফজলুল হক মনির উপর। বঙ্গবন্ধুর বড় বোন শেখ আছিয়া বেগম ও ভগ্নিপতি শেখ নূরুল হক এর বড় ছেলে শেখ ফজলুল হক মনি ১৯৩৯ সালের ৪ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক টুঙ্গিপাড়ায় জন্ম গ্রহন করেন। তিনি ঢাকার নব কুমার ইনিস্টিটিউট থেকে মাধ্যমিক, জগন্নাথ কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন আইন বিষয়ের উপর এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন ।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার প্রিয় ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনিকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন তার বোন শেখ আছিয়া বেগমের কাছে অনুরোধ করে। ছোটবেলা থেকেই শেখ ফজলুল হক মনির আদর্শ ছিলেন তার মামা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ছাত্র থাকা অবস্থায় শেখ মনি তার প্রখর দূরদর্শী রাজনৈতিক চেতনা ও অসাধারণ সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে সারা দেশের ছাত্র সমাজে কাছে জনপ্রিয় এবং গুরুত্বপূর্ণ নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হন। ষাটের দশকে পাকিস্তানি স্বৈরশাসক বিরোধী সকল ছাত্র আন্দোলনে জাতির পিতার নির্দেশনায় তিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। শেখ ফজলুল হক মনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দু’বার নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ছিলেন এবং ছাত্রলীগকে সংগঠিত করতে বড় ভূমিকা পালন করেছিলেন। তিনি সাধারণ শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে সবসময় সোচ্চার ছিলেন। সামরিক শাসক আইয়ুব খান ১৯৫৮ সালে শিক্ষা সংস্কারের নামে তৎকালীন শিক্ষাসচিব ড. এস এম শরিফকে প্রধান করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করে। এই কমিশন আট মাসের মধ্যে একটি শিক্ষা কমিশন রিপোর্ট দাখিল করে কিন্তু তা চূড়ান্তভাবে প্রকাশ পায় ১৯৬২ সালে। শিক্ষার ব্যয় বৃদ্ধি, উচ্চশিক্ষার সুযোগ বন্ধ বা সংকোচন, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ সহ সম্পূর্ণ গণবিরোধী এবং প্রতিক্রিয়াশীল এই শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে পূর্ব পাকিস্তানে ছাত্র সমাজের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় ও ছাত্র আন্দোলন ব্যাপকতা লাভ করে। শেখ ফজলুল হক মনি “শরীফ শিক্ষা কমিশন” ও পরবর্তীতে গণবিরোধী আরেকটি কমিশন “হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন” এর রিপোর্টের বিরুদ্ধে দূর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন এবং এই আন্দোলন নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য শেখ মনিকে ছয় মাসের কারাভোগ করতে হয়। তৎকালীন পাকিস্তানি স্বৈরশাসকদের অত্যাচার, নিপীড়্ন, রক্তচক্ষু তাকে দমাতে পারেননি। গণবিরোধী শিক্ষানীতির প্রতিবাদে ১৯৬৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান বর্জন আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও তৎকালীন গভর্নর আবদুল মোনেম খানের কাছ থেকে সনদপত্র গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। এই আন্দোলনের ফলে সমাবর্তন পণ্ড হয়ে যায়। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার ডিগ্রি বাতিল করে দেয়। পরে তিনি এই ডিগ্রি বাতিল এর বিরুদ্ধে মামলায় জয়লাভ করে ডিগ্রি ফিরে পান। এরপর ১৯৬৫ সালে নিরাপত্তা আইনে কারারুদ্ধ করা হয় এবং মাসের পর মাস বিনা বিচারে কারাগারের অন্ধকার প্রকোষ্ঠে রাখা হয় শেখ মনিকে । শেখ মনির দূরদর্শী ও সাংগঠনিক দক্ষতার পরিচয় পাওয়া যায় ৬ দফার পক্ষে বিভিন্ন আন্দোলনে। বাঙালির মুক্তি সংগ্রামে ও স্বাধিকার আন্দোলনে ছাত্রসমাজ ও শ্রমিকদের তিনি সংগঠিত করেছিলেন। তিনি ছয় দফার পক্ষে জনমত গঠনে ও সকল আন্দোলনে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন। হরতাল সহ বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচী সফল করার জন্য তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন এবং সেই দায়ে পাকিস্তানি সরকার বিভিন্ন অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আটটি মামলা দায়ের করে ও শেখ মনিকে আবার গ্রেফতার করে। এরপর দীর্ঘ কারাবাস শেষে ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান পর তিনি মুক্তি পান। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনের ইশতেহার ও কর্মসূচি প্রণয়নের শেখ ফজলুল হক মনি সরাসরি যুক্ত ছিলেন । তিনি নির্বাচনি ইশতেহারে ও কর্মসূচীতে ব্যাংক-বিমা ও ভারী শিল্প, পাট ও তুলা ব্যবসা, বৈদেশিক বাণিজ্য জাতীয়করণ, তৎকালীন পাকিস্তানের প্রতিটি প্রদেশকে ছয়দফা ভিত্তিক স্বায়ত্তশাসন, পূর্ব পাকিস্তানের জায়গিরদারি, জমিদারি ও সর্দারি প্রথার উচ্ছেদ, শ্রমিকদের ভারী শিল্পের শতকরা ২৫ শতাংশ শেয়ার, ২৫ বিঘা পর্যন্ত কৃষি জমির খাজনা মওকুফ ও বাস্তুহারাদের পুনর্বাসন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করেন যা তার গভীর দেশপ্রেম ও সমাজতান্ত্রিক আদর্শের প্রতিফলন (স্মরণীয়-বরণীয়, ব্যক্তিত্ব, বাংলা বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-পৃ:৪৬১)। মহান মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক শেখ ফজলুল হক মণির অবদান অবিস্মরণীয়। শেখ মণির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীদের নিয়ে মুজিব বাহিনী গঠন করা হয় যা একটি সুসংগঠিত ও প্রশিক্ষিত বাহিনী হিসাবে পাকহানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে পার্বত্য চট্টগ্রামে, কুমিল্লা, ঢাকা, সিলেট ও নোয়াখালীতে সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধে দেশপ্রেমিক শেখ ফজলুল হক মণির ও মুজিব বাহিনী (বি.এল.এফ) এর অবদান স্বাধীন বাংলাদেশ শ্রদ্ধাভরে স্মরণ রাখবে চিরকাল।
স্বাধীনতার পর ১৯৭২-৭৫ মাত্র ৩ বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উন্নয়নের যে ভিত্তি স্থাপন করে দিয়েছিলেন তা ছিল এককথায় বিস্ময়কর। বঙ্গবন্ধু বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে যুব ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন। দেশ স্বাধীন পর শেখ মণি আত্মনিয়োগ করেন সদ্যস্বাধীন বাংলাদেশ নির্মাণে। তিনি চাইলে মন্ত্রিত্ব পেতে পারতেন কিন্তু তা না নিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে এদেশের প্রগতিশীল ছাত্র যুবক তরুণদের সংগঠিত করতে কাজ করে গেছেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। তার একান্ত প্রচেষ্টায় গড়ে তুলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর এক যুব কনভেনশনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের প্রথম ও সর্ববৃহৎ এই যুব সংগঠন। আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি মাধ্যমে যুবকদের দারিদ্র ও বেকারত্ব দূর করে মুক্তিযুদ্ধের মূলনীতির ভিত্তিতে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠা করাই ছিল যুবলীগের উদ্দেশ্য। দেশের নানা কার্যক্রমে মুক্তিযোদ্ধা ও যুবকদের ঐক্যবদ্ধ করে তাদের সক্রিয়ভাভবে দেশের অগ্রযাত্রায় সম্পৃক্ত করা ছিল যুবলীগ প্রতিষ্ঠার অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। সেই লক্ষে তিনি ও তার প্রতিষ্ঠিত যুবলীগ নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছিল। তিনি একই সাথে শ্রমিকদের অধিকারের ব্যাপারে সব সময় সোচ্চার ছিলেন। তিনি তেজগাঁও আঞ্চলিক শ্রমিকলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে বাকশাল (বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ) গঠন করেন। শেখ মণি বাকশাল এর সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য মনোনীত হয়েছিলেন। শেখ মণি বাকশালের নেতাদের ঢাকায় নিয়ে এসে প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে তাদের বাকশালের নীতি আদর্শ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে দিক নির্দেশনা মূলক বক্তৃতা দেন যা সারা দেশে নেতাকর্মীদের মাঝে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছিল।
বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শের ব্যাপারে শেখ ফজলুল হক মণি ছিল আপোষহীন। তিনি সব সময় বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত ছিলেন তা তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন “আমরা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ। আমাদের জনতার আশা-আকাঙ্ক্ষা, ভাবনা-চিন্তা আমাদের সাধের বাংলাদেশটিকে কেন্দ্র করে। বঙ্গবন্ধুর জীবন আমাদের মতো একটি সদ্য স্বাধীনতাপ্রাপ্ত সমস্যা সঙ্কুল দেশের মানুষের জন্য অশেষ মূল্যবান। ….আবর্জনা সাফ করে আমাদের যাত্রা পথ তৈরি হচ্ছে। বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন সেই পথপ্রদর্শক কাণ্ডারি। খোদা না করেন, তাকে যদি আমরা হারাই, তাহলে বাংলার এই সাড়ে সাত কোটি দুঃখী মানুষের ভাগ্যে কি আছে! সুতরাং জাতীয় স্বার্থেই তার জীবনের জন্য যে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে তারচেয়ে শতগুণ কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা দরকার ছিল (দূরবীনে দূরদর্শী- পৃ:১২৩)”। সেই সময় আমলাদের নানা অনিয়ম নিয়ে শেখ মণি সরাসরি প্রতিবাদ করতেন তার লেখনীর মাধ্যমে। এই জন্য অনেক সিনিয়র মন্ত্রীরা ও আমলারা একযোগে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। শেখ মণি যে সঠিক কথা বলেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর আমলাদের আচরণ কি হয়েছিল তা দেখে।
শেখ ফজলুল হক মণি শুধু একজন অকুতোভয় বীর সৈনিক, দক্ষ সংগঠক ও দূরদর্শী তরুণ রাজনীতিবিদই ছিলেন না তিনি ছিলেন বহু প্রতিভার অধিকারী। একজন প্রথিতযশা সম্পাদক, তুখোড় বক্তা, লেখক, চিন্তাশীল দার্শনিক ও গল্পকার হিসাবে তার ব্যাপক খ্যাতি ছিল, তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে এদেশের ছাত্র, যুবক ও যুব মহিলাদের অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত করে গেছেন। তিনি দৈনিক বাংলার বাণী, দ্য পিপলস পত্রিকা, সাপ্তাহিক সিনেমা, ইংরেজি দৈনিক বাংলাদেশ টাইমস এর সম্পাদক ছিলেন। দেশে প্রথম আধুনিক প্রিন্টিং ব্যবস্থা তার হাত ধরেই। তিনি একজন সফল সামাজিক সংগঠক ছিলেন। শিশু-কিশোরদের জন্য “শাপলা কুঁড়ি” আসরের প্রতিষ্ঠা করেন। বাঙালী সংস্কৃতি, শিল্প, সাহিত্য বিকাশে সবসময় কাজ করে গেছেন। তিনি বিনোদনধর্মী ম্যাগাজিন ‘সাপ্তাহিক সিনেমার’ এর সম্পাদক ছিলেন। তার ‘অবাঞ্চিতা নামে উপন্যাসটি পরবর্তীতে টেলিফিল্ম হিসাবে দর্শক নন্দিত হয়। তার রচিত গীতারায় গল্পগ্রন্থে মোট (বৃত্ত, ব্যর্থ, জাত, অবাঞ্ছিতা, হোঁচট এবং গীতারায়) ৬টি গল্প রয়েছে।
বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী শেখ ফজলুল হক মণি জীবন থেমে যায় মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসের ভয়ংকরতম হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে। সেদিন সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান ছোট্ট শিশু শেখ পরশ ও শেখ তাপস। প্রায় ৫ দশক ধরে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, অপশক্তি ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম ও অসংখ্য নেতাকর্মীর আত্মত্যাগের মাধ্যমে শেখ ফজলুল হক মণির প্রতিষ্ঠিত যুবলীগ সবসময় দেশের মানুষের পক্ষে ভূমিকা রেখে চলছে। ১৯৭৬ থেকে ১৯৯০ স্বৈরাচারী সরকার গুলোর বিরুদ্ধে আন্দোলন, ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সালে গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনতে ‘ভোট ও ভাতের অধিকার’ আন্দোলন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার বিচারের দাবিতে আন্দোলন, ২০০১-২০০৮ সরকারের অপশাসন বিরুদ্ধে আন্দোলন, ২০০৭ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার মুক্তি এবং গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে জোরালো ভূমিকা পালন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ। শেখ মণির আদর্শ বুকে ধারন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে কাজ করে চলছে তারই সুযোগ্য জ্যেষ্ঠপুত্র শেখ ফজলে শামস পরশ, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী, দেশরত্ন শেখ হাসিনার আপার সঠিক নির্দেশনায় । শেখ পরশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী মেধাবী ও ত্যাগী তরুণদের ঐক্যবদ্ধ করে একটি শক্তিশালী ও সু-শৃংখল যুব সংগঠন হিসাবে যুবলীগ কে জনসাধারণের সামনে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন। অতীত গৌরবোজ্জ্বল ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার করে, দেশ ও জাতির সংকটজনক পরিস্থিতিতে মানবিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে সর্বমহলে প্রশংসিত হয় যুবলীগ। করোনা মহামারীতে সারাদেশে ৪৪ লক্ষ অসহায় মানুষকে খাদ্য সহায়তা, ২৪ ঘণ্টা টেলিমেডিসিন সার্ভিস ও ফ্রি এম্বুলেন্স সার্ভিস, স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ, ৭ লাখের বেশি অসহায় মানুষের মাঝে ইফতার ও ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ, করোনাভাইরাস সুরক্ষা সামগ্রী মাস্ক, স্যানিটাইজার ও সাবান মানুষের মাঝে পৌঁছে দেওয়া, কৃষক ধান কেটে সহায়তা, করোনা মৃতদেহ দাফন, বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা, গৃহহীনদের জন্য আশ্রয় কর্মসূচি, শোকাবহ আগস্ট মাসে ভবঘুরে মানুষ ও পথশিশুদের মাঝে সারা মাসব্যাপী খাবার বিতরণ, বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ, দেশব্যাপী বৃক্ষরোপন কর্মসূচি গ্রহনসহ অসংখ্য কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুবলীগ জনমানুষের পাশে থেকে কাজ করে চলছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ ফজলুল হক মণির আদর্শ ও স্বপ্ন অসাম্প্রদায়িক মুক্তিযুদ্ধ চেতনার সোনার বাংলাদেশে বিনির্মাণে। বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের ৫০ তম জন্মদিনে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, শহিদ শেখ ফজলুল হক মণি, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা আপা সহ যুবলীগের সকল নেতাকর্মী ও সমর্থকদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা।
লেখক: সহকারী অধ্যাপক, ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ
সারাবাংলা/এসবিডিই/এএসজি
ড. মোঃ রায়হান সরকার রেজভী মত-দ্বিমত শেখ ফজলুল হক মনির স্বপ্ন ও আদর্শে বাস্তবায়নে কাজ করছে মানবিক যুবলীগ