‘কৃত্রিম বিপ্লব’ সৃষ্টির চেষ্টা প্রতিহত করতে হবে
১৩ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:১৬
সময় দ্রুত পার হচ্ছে। কাজ করতে যেয়ে ব্যস্ততা তো আছেই। কখন সকাল হচ্ছে, দুপুর গড়িয়ে বেলা; সন্ধ্যা পার করতেই দেখি যে শুভ রাত্রি বলে আশপাশের মানুষগুলোকে বিদায় জানাতে হচ্ছে। আবার আরেকটি ভোরের অপেক্ষা! জীবন এমনই। পদ্মপাতায় শিশির বিন্দু হয়ে টিকে আছি। বাঁচবোই বা কতদিন! তবু সময়কে উপভোগ করতে পারছি। বাংলাদেশে একজন কাজপাগল শেখ হাসিনা আছেন। তার নির্দেশনায় দেশের সমৃদ্ধি খুঁজতে পথিক হয়েছি। যে পথে রওনা করে দেশের জন্য সেরাটা দিতে পারলেই সার্থক হব। তবে সামনেই আসে ও আসবে বন্ধুর পথ। ওই শত্রুপক্ষ বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিতে চায়। ওদের সাথে কোন অপশক্তি তো আছেই। দেশে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধ শক্তি, দেশের বাইরে কোন মন্দ বলয়। আমরা কী করতে পারি? অবশ্যই মোকাবিলা করার সামর্থ্য রয়েছে।
আমি সব সময় বলি, যে দেশ বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে স্বাধীন হয়েছে আর এখন প্রায় এক যুগের বেশী সময় ধরে দেশের সেবায় টানা নেতৃত্বে থেকে ১৪ বছর যিনি রয়েছেন, মানুষ না চাইলে তা কখনই সম্ভব হত না। অর্থাৎ, বঙ্গবন্ধুর কথাকে মানুষ আমলে নিয়ে গ্রহণ করেছিল বলেই টানা নয় মাসের যুদ্ধ এবং আমরা বিজয়ী হতে পেরেছিলাম। একইভাবে একজন শেখ হাসিনাকে মানুষ প্রত্যাশা করে বলেই আমরা দেশের সেবায় নিয়োজিত থাকতে পারছি।
এদিকে খুবই প্রীত হওয়ার বাস্তবতায় রয়েছি, যখন দেশের অর্থমন্ত্রী বেশ কিছুদিন পরে মুখ খুলেছেন এবং তিনি তার মেধাবী সত্তা দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মানসে রয়েছেন, তেমন দিকটি পরখ করে সত্যিই ভাল লেগেছে।
অন্যদিকে রাজনৈতিক বাস্তবতায় ২০২৩ সালটিকে খুবই গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। কারণ, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ প্রত্যাশী হয়ে দায়িত্বও পালন করতে হবে। এছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকেও তৃণমূলের ইচ্ছেকে জিতিয়ে ৩০০ সংসদীয় আসনে সেরা প্রার্থীকে মনোনয়নের দিকও রয়েছে বা আছে।
সত্যি বলতে কথিত নামধারী রাজনৈতিক শক্তি বিএনপিকে খুব বেশী আমলে নেয়ার সুযোগ নেই। আমরা ধরেই নিচ্ছি যে, তাদের ধারাবাহিক পথ পরিক্রমার চূড়ান্ত রূপটি নাশকতাময় হবে, এবং এটি করতেই তারা অভ্যস্ত। তারা খুনের রাজনীতি, বদলার রাজনীতি করতে স্বস্তিতে থাকে। কিন্তু বাংলাদেশে কৃত্রিম একটি বিপ্লবের চেষ্টা চালান হতে পারে, যার জন্য আমি ও আমরা রাজনৈতিকভাবে তা মোকাবিলায় হোমওয়ার্ক করছি।
কৃত্রিম বিপ্লব; এটির ধরণ হল, মানুষ ও সংবাদমাধ্যম এমন করে লিখবে বা বলবে যে, দেশ খুব খারাপ অবস্থায় আছে। সাথে থাকবে রাজনৈতিক অপশক্তির উদ্যোগে কৃত্রিম পন্থায় লোকসমাবেশ। সরকার দলের ওপর অহেতুক চাপ। তখন এমন করে প্রেক্ষাপট তৈরি করা হবে যে, ক্ষমতা ছেড়ে দাও, এমন স্লোগানকে ফলত সার্বজনীন করার চেষ্টা থাকবে! কাজেই তা জেনে বুঝেই আমরা রাজনৈতিক শক্তি হয়েই এই ছলের রাজনীতিকে প্রতিরোধ করব। হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নারী শেখ হাসিনা এই সেদিনেও বলেছেন, ধাক্কা মারলেই আওয়ামী লীগ পড়ে যাবে না। তবে, ওই অপশক্তি একটি কৃত্রিম বিপ্লবের অপেক্ষায় আছে তা বুঝি।
লক্ষ্য করছি, দেশের কিছু সংবাদমাধ্যম ইদানিং ইচ্ছে করে সরকারী আমলা ও হাইব্রিড কিছু সরকার দলের নেতাদের বৈষয়িক অবস্থানকে তুলে ধরে জনমনে একটা ধারণা দেয়ার চেষ্টা করছে। এটি সেই কৃত্রিম বিপ্লব করার প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ কিনা খতিয়ে দেখতে হবে। এটাকে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করা বলে। এই সংকটগুলোর ধরণে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের নেতিবাচক দিক তুলে ধরা, গল্প বানিয়ে বুঝিয়ে দেয়া যে, অমুক তমুক খারাপ কাজগুলো করা হচ্ছে, বিদেশ সম্পর্ক নিয়ে মিথ্যে বলা হচ্ছে। আবার বাজার পরিস্থিতিকে অনিয়ন্ত্রণে রাখার জন্যও ইচ্ছে করে কোন নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া, রেমিট্যান্স নিয়ে ছলচাতুরির অর্থনৈতিক খেলা করাও ওই সংকট সৃষ্টির ধরণের বড় অংশ। তবে কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমকে কার্যত নজরদারীতে রাখতে হবে, এবং এটা করতে হবে দেশের স্বার্থেই।
খুব স্পষ্ট করে বলতে চাই, বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশকে অশান্ত করতে চাইছে বা চাইবে। তবে কোনো অরাজকতা করলে শক্তভাবে মোকাবিলা করা হবে। কারণ, কৃত্রিম বিপ্লব করার অস্ত্র হিসাবে তারা একটি ঢালের মত। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সকল গুণী দার্শনিকদের রাজনৈতিক পছন্দে যেমন শাসক তারা প্রত্যাশা করেন, শেখ হাসিনা তেমনই একজন। আগামী দিনের জাতীয় রাজনীতিতে সাধারণ কর্মী হয়ে আমি আমার বাকী জীবনটি ওই শেখ হাসিনার জন্য উৎসর্গ করতে চাই।
জয় বাংলা! জয় বঙ্গবন্ধু! জয় শেখ হাসিনা!
লেখক: সভাপতিমন্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ
সারাবাংলা/এসবিডিই/আইই