বৈদেশিক কর্মসংস্থানে রেকর্ড, কোটি প্রবাসীকে স্যালুট
১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১০:০৭
বিদেশে কর্মসংস্থানে চলতি বছরে নতুন রেকর্ড গড়েছে বাংলাদেশ। এ বছর এখন পর্যন্ত ৯ লাখ ৭৩ হাজার বাংলাদেশি কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। বছর শেষে সংখ্যাটা দশলাখ ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে সরকার। এর আগে সবচেয়ে বেশি কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছিল আট লাখ ৭৫ হাজার, ২০০৮ সালে।
প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) সূত্র এই তথ্য জানায়।
তবে ইতিবাচক যেকোন পরিসংখ্যানই যেমন আনন্দের, তেমনি নেতিবাচক সংখ্যাগুলোও ভীষণ বিব্রতকর।
চলতি বছরের ৫ মে ব্রিটেনের প্রভাবশালী দৈনিক ইন্ডপিডেন্ট একটি সংবাদ প্রকাশ করে। শিরোনাম ছিলো ‘বাংলাদেশ ইজ নাউ দ্য সিঙ্গেল বিগেস্ট কান্ট্রি অব অরিজিন ফর রিফিউজিসি অন বোটস এ্যাজ নিউ রুট টু ইউরোপ এমারজেস’। বুঝতেই পারছেন ইউরোপে পাড়ি দিতে কত সংখ্যক বাংলাদেশি সমুদ্রে ভাসমান রয়েছে।
ওই সংবাদে লিবিয়া থেকে সমুদ্রপথ পাড়ি দেয়াসহ ইউরোপে কীভাবে অবৈধ বাংলাদেশিরা প্রবেশ করছে তার বিশ্লেষণ তুলে ধরা হয়। এ ধরনের খবরগুলো বিব্রতকর।
জাতিসংঘের উদ্বাস্তু সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যে কয়টি দেশের লোকজন অবৈধভাবে সবচেয়ে বেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করেছে তার মধ্যেও রয়েছে বাংলাদেশের নাম।
ইউরোপীয় কমিশনের পরিসংখ্যান দপ্তর ইউরোস্ট্যাটের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০০৮ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত এক লাখেরও বেশি বাংলাদেশি ইউরোপের দেশগুলোতে অবৈধভাবে ঢুকেছে। এই বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে না নিলে ভিসা বন্ধের হুমকিও দিয়েছিল ইউরোপ। বাংলাদেশ তাদের ফিরিয়ে আনতে রাজি হয়েছে বটে। তবে এই ধরেনের চাপ একটা স্বাধীন দেশের জন্য খুব অস্বস্তিকর।
এই তো বছর দুয়েক আগেও সাগরপথ দিয়ে হাজারো মানুষের মালয়েশিয়া ও থাইল্যাণ্ডে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশ বিশ্বজুড়ে খবর হয়েছিল। এরমধ্যেই এ বছর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মানবাপচার বিষয়ক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের অবস্থান আরেক ধাপ নিচে নেমেছে।
এমন পরিস্থিতিতেই সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও আজ পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস। এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য, ‘নিরাপদ অভিবাসন যেখানে, টেকসই উন্নয়ন সেখানে।’
দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে আজ সোমবার সকাল ৮ টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়। শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে শুরু হয় আলোচনা। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসির সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠান স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীসহ সরকারের নীতি নির্ধারকরা বক্তব্য রাখেন। তাদের বক্তব্য পড়ুন সংশ্লিষ্ট খবরে। এখানে অন্যদিকগুলো তুলে ধরা যাক।
প্রচলিত শ্রমবাজারেই ঘুরপাক: বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত এক কোটিরও বেশি বাংলাদেশি কাজ করতে বিদেশে গেছেন। এরমধ্যে ৩০ লাখ বা ৩০ শতাংশই গেছেন সৌদি আরবে। এছাড়া ২৩ লাখ বা ২০ শতাংশ গেছে মধ্যপ্রাচ্যের আরেক দেশে সংযুক্ত আরব আমিরাতে। তবে গত চারবছর ধরে এই বাজারটি বন্ধ।
এছাড়াও ওমানে ১৩ লাখ, মালয়েশিয়ায় আট লাখ, সিঙ্গাপুরে সাত লাখ, কাতারে সাড়ে ছয় লাখ, কুয়েতে ছয় লাখ, বাহরাইনে পাঁচ লাখ, লেবাননে দেড়লাখ, জর্ডানে দেড়লাখ এবং লিবিয়ায় এক লাখ বাংলাদেশি গেছেন। মূলতঃ প্রচলিত এই শ্রমবাজারেই দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে বাংলাদেশ।
চলতি বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে, সাড়ে নয় লাখের মধ্যে ৫৫ শতাংশ বা সাড়ে পাঁচ লাখ লোকেরই কর্মসংস্থান হয়েছে সৌদি আরবে। সৌদি অরবে যারা গেছে তাদের সবাই যে ভালো চাকুরি পেয়েছে তাও নয়। তেলের দাম কমে যাওয়ার কারণে এমনিতেই মধ্যপ্রাচের অর্থনীতি মন্দার দিকে। অনেক কোম্পানি বন্ধ হয়েছে, অনেক বাংলাদেশি কাজ পাচ্ছেন না।
এছাড়া মালয়েশিয়ায় ৮৫ হাজার, ওমানে ৮৪ হাজার, কাতারে ৮০ হাজার, কুয়েতে ৪৭ হাজার, সিঙ্গাপুরে ৩৮ হাজার, জর্ডানে ২০ হাজার, বাহরাইনে ১৯ হাজার, ব্রুনেইতে আট হাজার, লেবাননে সাত হাজার, মরিশাসে সাড়ে পাঁচ হাজার ও ইরাকে সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশির কর্মংস্থান হয়েছে।
আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস উপলক্ষ্যে গতকাল আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনেও প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থানমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মোট ৯ লাখ ৭৩ হাজার বাংলাদেশী কর্মীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে ১ লাখ ১৮ হাজার নারী কর্মী রয়েছেন।’ প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী বলেন, বছর শেষে ১০ লাখেরও বেশি কর্মীর কর্মসংস্থান হবে।
নতুন শ্রমবাজার নেই: স্বাধীনতার পর থেকে গত চারদশক ধরে মধ্যপ্রাচ্য ও এশিয়ার কয়েকটি বাজারেই আটকে আছে বাংলাদেশ। নতুন বাজার খুঁজতে নানা ধরনের উদ্যোগ চলছে সরকারের তরফ থেকে বারবার এমন কথা বলা হলেও সেই অর্থে বড় কোন নতুন বাজার যুক্ত হয়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বলেন, ‘শ্রমবাজার ধরে রাখাসহ আমরা নতুন নতুন সম্ভাবনাময় শ্রম বাজার অনুসন্ধানে কাজ করছি। ইতোমধ্যে নতুন শ্রমবাজারের সন্ধানে ৫২ টি দেশের শ্রম বাজার নিয়ে গবেষণা কার্যক্রম সমাপ্তির পথে। আমরা আশা করছি এখানে আমাদের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হবে।
নারীদের কর্মসংস্থান বাড়ছে, সঙ্গে বাড়ছে নিপীড়ন: চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এক লাখ ১৩ হাজার নারীর বিদেশে কাজ নিয়ে গেছেন যার মধ্যে ৭৭ হাজারই গেছে সৌদি আরবে। সৌদি আরবে গৃহকর্মী হিসেবে যাওয়া এই নারীদের অনেকেই নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন বলেও খবর আসছে।
এছাড়া জর্ডানে ১৯ হাজার, ওমানে নয় হাজার, আরব আমিরাতে তিন হাজার ও লেবাননে দেড় হাজার নারীকর্মী গেছেন।
মধ্যপ্রাচ্যে কাজ করতে যাওয়া নারীরা নানা রকম নিপীড়নের শিকার হন বলে নানা সময় অভিযোগ উঠেছে। এ প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা নারী কর্মীদের অধিকার সুরক্ষার পাশাপাশি অভিবাসনকে নারীর ক্ষমতায়নে রূপান্তরিত করার লক্ষ্যে কাজ করছি।’
অর্ধেকই অদক্ষ: বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়লেও দক্ষতার দিক থেকে এখনো অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ। যারা বিদেশে যাচ্ছেন তাদের অর্ধেকরও বেশি এখনো অদক্ষই। ফলে বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়লেও প্রবাসী আয় সেভাবে বাড়েছে না।
বিএমইটির তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত যতোজন বিদেশে গেছেন তাদের মধ্যে মাত্র দুই শতাংশ অর্র্থাৎ দুই লাখ ২৭ হাজার ৮৮৪ জন পেশাজীবী। মোটামুটি কাজ জানেন এমন লোকের সংখ্যা ৩২ শতাংশ। আধাদক্ষ ১৫ শতাংশ। বাকি ৪৮ শতাংশকে কাগজে কলমে কিছুটা দক্ষ বলা হলেও বাস্তবে তারা অদক্ষ।
সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বর্তমানে ৭০টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ৪৮টি ট্রেডে কর্মীদের দক্ষ করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
অভিবাসন খরচ কমছে না: বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যেতে যে অভিবাসন খরচ সেটা যে কোন দেশে থেকে অনেক বেশি। সরকার প্রত্যেকটা দেশের জন্য নির্ধারিত খরচ বেঁধে দিয়েছে। কিন্তু কাগজে কলমেই থাকেছে সেটা। যারা বিদেশে লোক পাঠায় তারা অনেক সময়েই বহুগুন বেশি টাকা নেন। এর কারণ, বিদেশে যেমন মধ্যসত্ত্বভোগী আছে, দেশেও তেমনি নানা স্তরে দালালদের দৌরাত্ম। ফলে আট থেকে দশলাখ টাকাও লাগে বিদেশে যেতে।
এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের ভূমিকা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা বেশি টাকা দিয়ে যাচ্ছে তারা যদি আমাদের অভিযোগ না করে আমরা কী করতে পারি? যারা অভিযোগ করেন এদের বেশিরভাগ হচ্ছে বিদেশ যাওয়ার পরে অভিযোগ করে। কিন্তু যাওয়ার পর অভিযোগ করলে কী করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। যাওয়ার আগে যদি লিখিত অভিযোগ নিয়ে আসে আমি ব্যবস্থা নেব। আমরা সার্বক্ষণিক তাদের অভিযোগ নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।’
সরকারের নতুন উদ্যোগ: বিদেশগামী বাংলাদেশি কর্মীদের শতভাগ বীমার আওতায় আনতে একটি নীতিমালা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এছাড়া আন্তর্জাতিক অভিবাসন দিবসকে সামনে রেখে প্রবাসীদের জন্য তিনটি হটলাইন নাম্বার চালু করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। নাম্বারগুলো হলো: ০১৭৮৪-৩৩৩৩৩৩, ০১৭৯৪-৩৩৩৩৩৩ এবং ০২-৯৩৩৪৮৮৮।
মন্ত্রী বলেন, ‘অভিবাসন দিবসটিকে সামনে রেখে আমাদের মন্ত্রণালয় সুর্নিদিষ্ট কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, এর মধ্যে সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ দুটি বিষয় হচ্ছে প্রবাসীদের জন্য ডে-কেয়ার ব্যবস্থা এবং যোগাযোগের জন্য হটলাইন নাম্বার।
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের মন্ত্রণালয়ের ১০ তলায় প্রবাসীদের জন্য স্থায়ীভাবে একটি ডে-কেয়ার সেন্টার করেছি। প্রবাসীরা যেন তাদের সুবিধা-অসুবিধায় আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারে তার জন্য তিনটি হটলাইন নাম্বারের ব্যবস্থা করেছি।’
পদে পদে ভোগান্তি: বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাওয়ার প্রক্রিয়ায় পদে পদে আছে ভোগান্তি-হয়রানি। পাসপোর্ট তৈরি থেকেই এর শুরু। এরপর রিক্রুটিং এজেন্সির দালাল ও প্রতারক এজেন্সি, চাকরির বিষয়ে অসত্য তথ্য, উচ্চমূল্যে ভিসাকেনাবেচা, স্বাস্থ্যপরীক্ষা, সরকারি ছাড়পত্র—সবক্ষেত্রে সীমাহীন যন্ত্রণা। দেশের আকাশ পার হলে শুরু হয় বিরূপ প্রকৃতি, অমানুষিক পরিশ্রম, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবনযাপন, মালিকদের প্রতারণা, নির্যাতনসহ আরও কত কি। এতো ভোগান্তির পরেও মানুষ ছুটছে বিদেশ নামক সোনার হরিণের পেছনে।
এক দশকে ৩০ হাজার লাশ: একদিকে লোকজন যেমন প্রতদিন এয়ারপোর্ট ছাড়ছে আরেকদিকে প্রতিদিন আট থেকে দশজন প্রবাসীর লাশও আসছে। কফিনে করে কার্গো গেট দিয়ে অসে বলে অনেকেরই সেটা চোখে পড়ে না। এদের কেউ মারা যাচ্ছেন স্ট্রোকে কেউ বা হার্ট অ্যাটাকে। ওয়েজ আর্নাস কল্যাণ বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে এভাবে প্রায় ৩০ হাজার প্রবাসীর লাশ এসেছে। এদের অনেকেই ২৮ কিংবা ৩০ বছরেও মারা গেছেন। কেন এতো বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বিদেশে মারা যাচ্ছেন সেই তদন্ত এখনো হয়নি। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত তিন হাজার ১৫৪ জন প্রবাসীর লাশ এসেছে।
এছাড়াও গত সাত বছরে অন্তত দুই লাখ প্রবাসী ফিরে এসেছেন। তাদের কথাও কেউ ভাবে না। বিভিন্ন দেশের কারাগারে আছেন প্রায় ১৫ হাজার বাংলাদেশি।
প্রবাসীরা রাষ্ট্রকে দিচ্ছেন, পাচ্ছেন না কিছুই: চলতি বছরই বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ (রিজার্ভ) ৩৩ বিলিয়ন বা তিন হাজার তিনশ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। রিজার্ভের এই অর্জনের মূল কৃতিত্ব প্রবাসীদের। কিন্তু যারা এতো দুঃখ কষ্ট সহ্য করে প্রবাসী আয় পাঠান তাদের জন্য কতোটা করে রাষ্ট্র? প্রবাসীদের সাধারণ অভিযোগ, বিদেশে যখন তারা নানা বিপদে পড়ে বা কোন কাজে দূতাবাসে যান প্রায়ই সময়ই তাদের সঙ্গে ভালো আচরণ করা হয় না। দীর্ঘদিন পর দেশে ফিরে বিমানবন্দরেও আছে নানা ভোগান্তি। এক বাক্যে, প্রবাসীরা রাষ্ট্রকে শুধু দিচ্ছেন, পাচ্ছেন না তেমন কিছুই। অথচ কোটি প্রবাসীর প্রত্যেকে বাংলাদেশের একেকজন অ্যাম্বাসেডর। তাদের ভালো কাজে দেশ যেমন বড় হয় তেমনি আকায়েদ উল্লাহর মতো অনেকে দেশকে ব্রিবতও করে।
অভিবাসন খাতের পরিস্থিতি উত্তরণের বহু পথ বাকি। তবে সবার আগে সোনার হরিণের জন্য অবৈধভাবে বিদেশে যাওয়া বন্ধ করে জেনে বুঝে দক্ষ হয়ে বিদেশে যেতে হবে। মধ্যসত্ত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য ও খরচ কমাতে হবে। দরকার নতুন শ্রমবাজার, নারীদের সুরক্ষা। তবে রাষ্ট্র-দূতাবাস-স্বজন সবাইকে মনে রাখতে হবে প্রবাসীরা শুধু টাকা পাঠোনোর যন্ত্র নয়। তারা মানুষও। কাজেই সবসময় তাদের মানবিক মর্যাদা দিতে হবে। সেটি শুধু বছরের একটি দিন নয়, সারাবছর।
সবসময় স্যালুট এক কোটিরও বেশি প্রবাসীকে যারা দেশের অর্থনীতি সচল রাখার পাশাপাশি অনেক দূর থেকেও বুকের মধ্যে যত্ন করে রেখেছেন লাল সবুজের জন্য ভালোবাসা।
সারাবাংলা/এসএইচ/এমএম