আওয়ামী লীগ গণমানুষের মুখপাত্র
২০ জুন ২০২৩ ১৭:৩৮
বাঙালি জাতির উপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন, চরম অবেহলা ও দুঃশাসনে নিষ্পেষিত জনগনকে স্বাধীনতা এনে দেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার সুযোগ্য কন্যা দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের ভাত ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিয়েছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় দেশকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। করোনায় তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন ও ডিজিটাল শিক্ষায় আওয়ামী লীগ সরকার শতভাগ সফল হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে ঘুড়ে দাড়িয়েছে। মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। আর দেশকে এগিয়ে নিতে তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক, শোষণমুক্ত, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণে কাজ আসছে। যার শুরু হয়েছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে। বর্তমানে তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগকে গণমানুষের নির্ভরতার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। জনগণের রায় নিয়ে টানা তৃতীয়বারের মতো সরকার গঠন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও গণমানুষের নির্ভরতার প্রতীক হবে আওয়ামী লীগ। জামায়াত-বিএনপিসহ অদৃশ্য সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে এ দেশের গণমানুষ তাদের রায় দিবে। যে রায়ে বিজয়ী হয়ে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করবে।
আওয়ামী লীগের ইতিহাস, বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল অর্জন ও সংগ্রামের ইতিহাস। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাসহ বাঙালি জাতির যা কিছু শ্রেষ্ঠ অর্জন, তার মূলে রয়েছে জনগণের এই প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্ব। জন্মলগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের শক্তির উৎস জনগণ, শক্তির উৎস সংগঠনের তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। আর জনগণের ওপর আস্থা রেখেই দেশ গঠনে এগিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
বাংলার জনগণের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ শুধু এ দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনই নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারাও। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সূচনা লগ্ন থেকেই গণমানুষের মুখপাত্র হয়ে কাজ করে আসছে। দেশের যেকোন সংকটে, অধিকার আদায়ে, লড়াই সংগ্রামে গণমানুষের পাশে থেকে অগ্রণী ভুমিকা রেখেছে।
১৯৪৮ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। যা ১৯৫২ সালে গণজাগরণে পরিণত হয়। শেখ মুজিবুর রহমান সেই সময়ে কারাগারে থেকেও ভাষা আন্দোলনে প্রেরণাদাতার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রাখেন। ভাষা আন্দোলনের বিজয়ের পটভূমিতে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের জয় লাভ করে। তবে ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থেকে দূরে রাখা হয়।
১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে বঙ্গবন্ধু বাণিজ্য, শ্রম ও শিল্পমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৫৭ সালের ৮ আগস্ট মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে দলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বভার গ্রহণ করে বঙ্গবন্ধু ইতিহাস তৈরি করেন। তার কাছে দলের দায়িত্ব মন্ত্রিত্বের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। ১৯৫৮ সালের মার্শাল ’ল বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬২ সালে শিক্ষা কমিশনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের বাঙালির মুক্তির সনদ ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ সালের রক্তঝরা গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ সালের ঐতিহাসিক সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন ও ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা অর্জনে বাঙলি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন বঙ্গবন্ধুর সরকার স্বাধীনতার মাত্র সাড়ে তিন বছরের মাথায় যুদ্ধ-বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে যখন অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রামে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী চক্র আন্তর্জাতিক শক্তির সহায়তায় ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে। তবে বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা প্রাণে বেঁচে যান। ছয় বছর পর ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আসেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি আওয়ামী লীগের দায়িত্ব নেন।
কাউন্সিল অধিবেশনে সংগঠনের সভাপতি নির্বাচিত হন বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দায়িত্ব নেওয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নব উদ্যোমে সংগঠিত হয়। জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাঙালি জাতির হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনরুদ্ধারের এক নবতর সংগ্রামের পথে যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে ২০০১ সালের নির্বাচনে ভোট কারচুপি করে আওয়ামী লীগকে হারানো হয়। তবে ফের সংগঠিত হয়ে ২০০৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর দলটি টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে। সর্বশেষ ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে রেকর্ড টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার সুযোগ্য নেতৃত্বে ও সুদক্ষ রাষ্ট্র পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শেখ হাসিনার যুগান্তকারী উন্নয়নের ফলে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় ঐক্যের রূপকার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের শুভজন্মদিন আজ। ঐতিহাসিক ২৩ জুন অঙ্কুরিত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নসূত্র বঙ্গবন্ধুর আওয়ামী লীগ। আগামী দিনে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা তার ডাইনামিক নেতৃত্বে আওয়ামী লীগকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। জাতির পিতার স্বপ্নের ‘সোনার বাংলাদেশ’ এবং বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে সুপ্রতিষ্ঠা করবেন। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
লেখক: সদস্য, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি); পরিচালক, বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড (বিএসসিএল); সভাপতি, এডুকেশন, রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম, বাংলাদেশ (ইআরডিএফবি)।
সারাবাংলা/এজেডএস