Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৩০০ আসনেই ভালো ফুল বেছে নিতে হবে

মো. আসাদ উল্লাহ তুষার
১৫ জুলাই ২০২৩ ১৬:২২

সম্প্রতি সুইজারল্যান্ড ও কাতার সফর করে এসে গণভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী বাছাই এর ক্ষেত্রে বলেছেন বাগানের শত ভুল থাকবে, তার মধ্যে ভালো ফুলটাই আমরা বেছে নেব। তাই বাগানে বেশি বেশি ফুল ফুটতে দিতে হবে। দলীয় প্রধান হিসেবে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার এই কথায় নেতা কর্মীরা উজ্জীবিত। বঙ্গবন্ধু কন্যা আক্ষরিক অর্থেই তৃণমূল পর্যায়ে যোগ্য নেতৃত্বে গড়ে উঠুক এটাই চায়। তিনি চান তৃণমূল পর্যায়ে বিভিন্ন আসনে বা অন্যান্য জায়গায় একাধিক যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠুক। যেহেতু নির্বাচনে একাধিক প্রার্থী থাকবে কিন্তু তার মধ্যে একজনকে বেছে নিতে হবে এই বেছেটা নেবেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এবং মনোনয়ন বোর্ড। তাই তিনি বলেছেন যোগ্য ফুলটিকেই বেছে নেওয়া হবে বা দল বেছে নেবে। শেখ হাসিনার এই চাওয়া নেতা হিসেবে সঠিক চাওয়া এবং যথার্থই চান তৃণমূল পর্যায়ে বেশি বেশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠুক।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গবন্ধু ছিলেন নেতা তৈরীর কারখানা। তার হাতের ছোঁয়ায় দেশে যে কত নেতা তৈরি হয়েছে তার কোন হিসাব নেই। বঙ্গবন্ধু হয়তো কারো নাম ধরে ডেকেছেন তাতেই তিনি নেতা হয়ে গেছেন। কারো বক্তব্যর প্রশংসা করেছেন তিনি নেতা হয়ে গিয়েছেন। ভালোবেসে বুকে জড়িয়ে ধরে নিয়েছেন তাতেই তিনি নেতা হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর মতো নেতা তৈরীর কারখানা এই পৃথিবীতে আর আছে কিনা সন্দেহ। বঙ্গবন্ধু তৃণমূলের একজন অচেনা কর্মীকে হৃদয় উজার করা ভালোবাসা দিয়ে ভালো ব্যবহার দিয়ে জেলা পর্যায়ের এবং কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতা বানিয়েছেন। বঙ্গবন্ধু নেতা বানাতে কোন কার্পণ্য করেননি, তিনি ছিলেন সিংহ হৃদয়ের অধিকারী। তিনি কর্মী চিনতে ভুল করেননি। কর্মীদের তিনি হৃদয় মন উজাড় করে ভালবাসতেন তার ভালোবাসায় কোন ফাক ফোকর ছিল না। কর্মীরাও বঙ্গবন্ধুকে জীবন দিয়ে ভালোবাসতেন। এর মধ্যে যে কিছু ব্যতিক্রম ছিল না তা না, তবে তা গননার মধ্যে পড়ে না। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাও অনেকটা তাই। পিতার মতোই অনেক গুণাবলী তিনি পেয়েছেন। কর্মীদের তিনি আন্তরিকভাবে ভালোবাসেন,আদর করেন, স্নেহ করেন। তার হাতের ছোঁয়ায়ও অনেক নেতা হয়েছেন। শুধু নেতা নয় এমপি মন্ত্রী, অনেক কিছু হয়েছেন। যাদের যা হওয়ার কথা না তারা তার চেয়েও বেশি কিছু হয়েছেন। এখানে শুধু বঙ্গবন্ধুর সাথে তার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকেই তুলনা করা যায় । তাই তারা আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় বাগানে শত শত ফুল ফুটতে দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

কিন্তু নেতৃত্বের সেই ধারাবাহিকতায় ধাপে ধাপে নিচে নামতে গেলে দেখা যায় আওয়ামী লীগের মতো বাগানে তৃনমুলে খুব বেশি ভালো ফুল নাই। স্থানীয় পর্যায়ে এমপি,মন্ত্রী বা অন্য নেতারা ভালো কোন ফুল ফুটতে দেয় না। তৃণমূলের ভালো কোন যোগ্য মানুষ নেতা হয়ে উঠতে গেলে তাকে আগেই থামিয়ে দেওয়া হয়। ফুল ফোটার আগেই সেই ফুল ঝরে যায়। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার যে প্রত্যাশা শত ফুল ফুটতে দেয়া, তৃণমূল পর্যায়ে সেই শত ফুল ফুটতে দেয়া হয় না। জাতীয় পর্যায়ের নেতা বাদ দিলে স্থানীয় পর্যায়ে অন্য যে কেউ একবার এমপি হয়ে বসলে বা অন্য কোন দলিয় বড় পদে বসলে আর চেয়ার ছাড়তে চায় না। তার আর কোন প্রতিদ্বন্দী যেন জন্ম না হয় সে চেষ্টাতেই সব সময় সেই নেতা ব্যস্ত থাকে। যাদের মনে করে যোগ্য তাদের আগামী দিনের গলার কাটা হিসেবে ভেবে তাদের গলা টিপে হত্যা করতে চায়। তার পরিবর্তে কোন অযোগ্য আত্মীয়-স্বজন বা মোসাহেব, চামচা কাউকে নেতা বানাতে চায়। যে কারণে তৃণমূলের যোগ্য ফুল ফুটতে চাইলেও ফুটতে দেয়া হচ্ছে না। নিজের যোগ্যতায় যা ফুটছে তা চোখে পড়ছে না। কেন্দ্র বাদ দিলে তার নিচের সব ইউনিটে যোগ্য লোক নেতৃত্বে আসতে পারছে না। একইভাবে তারা ইউপি চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান এবং এমপি হিসেবেও প্রকৃত অর্থে যোগ্য,শিক্ষিত সৎ, মেধাবী দলের প্রশ্নে আপোষহীন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু কন্যার প্রশ্নে আপোষহীন, প্রকৃত আওয়ামী লীগের আদর্শিক কোন নেতা জায়গা পাচ্ছে না। দীর্ঘদিন টানা ক্ষমতায় থাকার কারনে এই পথ আরো সংকুচিত হয়ে পড়েছে। তৃণমূলের এইসব নেতাকর্মীদের বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ছাড়া কেউ দেখার নাই, তারা নেত্রীর দিকেই চেয়ে থাকেন, শুধু শেখ হাসিনাই তাদের খবর রাখেন,শেখ হাসিনার কারণেই তারা দলে থাকেন, বঙ্গবন্ধুর কারণেই তারা দল করেন। এমনকি সব কিছু থেকে বঞ্চিত হয়েও, অনেক সময় নিপিড়ন নির্যাতনও ভোগ করেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনি যথার্থই বলেছেন ৩০০ আসনেই ভালো ফুল বেছে নিতে হবে। বিগত দিনে যে ফুলগুলো বেছে নিয়েছিলেন তার অনেক ফুলেই ইতিমধ্যে পোকা ধরেছে। ওই সব ফুল আর সুবাস ছড়াতে পারছে না, বরং বাগান নষ্ট করছে। তাই যেকোনো ফুল দিয়ে বাগান করলে হবে না, ভালো ফুল দিয়ে বাগান করতে হবে। আর ভালো ফুল ফুটতে দিতে হবে। ভালো ফুল ফোটার আগেই সেই ফুলকে ঝরে ফেলে দিলে চলবে না। কেউ কেউ তৃণমূলের সেই ফুলকে ফুটতে দিচ্ছে না, ফুল ফোটার আগেই ফুলকে ডগা থেকে কেটে দিচ্ছে। আপনি তাদের শেষ ভরসা। বঙ্গবন্ধু কন্যা আপনি হলেন আওয়ামী লীগের বাগানের শ্রেষ্ঠ ফুল। আপনার নিজের ফুলের সুবাসেই বাগানের অন্য সব ফুল সতেজ থাকে,সুবাস ছড়ায়। তৃণমূলের নেতাকর্মীদের এখনো শতভাগ বিশ্বাস আগামি নির্বাচনের জন্য আপনি বাগানের ভালো ফুলটিকেই বেছে নিবেন। কোনভাবেই আর পোকায় ধরা ফুলকে এবার বাগানে রাখবেন না। আর আপনার চাওয়া শত ফুলও অনেকে ফুটতে দিতে চায় না। যারা চায়না তারা বাগানের মালিক না, তারা মালি। মালির কাজ বাগান পরিচর্যা করা, শত ফুল ফুটতে দেয়া। ফুল ফুটতে বাধা দেয়া না। অনেকটা তাই করছে এই মালিরা,শত ফুল ফুটতে বাধা দিচ্ছে, ভালো ফুল ফুটতেও।

লেখক: কলামিস্ট রাজনীতিক

সারাবাংলা/এসবিডিই

ভালো ফুল ফুটতে দেয় না মত-দ্বিমত মো. আসাদ উল্লাহ তুষার

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর