Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আলোকিত তারুণ্য

মো. আসাদ উল্লাহ তুষার
২৭ জুলাই ২০২৩ ১৬:১২

দেশসেরা বিজ্ঞানী প্রয়াত ডক্টর এম.ওয়াজেদ মিয়া ও উপমহাদেশের অন্যতম প্রবীণ রাজনীতিবিদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজিব ওয়াজেদ জয়। এটাই যদি তার শুধু পরিচয় হতো তাহলে হয়তো তাকে মূল্যায়ন করার এক ধরনের যুক্তি থাকতো। কিন্তু তিনি পিতা-মাতার পরিচয়ের বাইরেও এমন একজন ব্যক্তিত্বের পরিচয়ে পরিচিত যিনি একটি দেশের প্রতিষ্ঠাতা ও স্থপতি। বহির্বিশ্বে হয়তো জয় তার কর্মের জন্য কিছুটা পরিচিত, তার চেয়েও বেশি পরিচিত বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র হিসেবে। যদিও তার মা এখন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তথাপি তার সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি বঙ্গবন্ধুর নাতি। বিশ্বের নামিদামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে তথ্যপ্রযুক্তিতে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে বড় বড় প্রতিষ্ঠানের চাকরি করা সজীব ওয়াজেদ জয় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা। এই যে এতসব পরিচয়, এমন পরিচয় নিয়ে দেশ-বিদেশে স্বাভাবিক জীবন যাপন করা, বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের সাথে উঠাবসা করা সব কিছুতেই কিন্তু একটি বিরাট চাপ নিতে হয় তাকে। যে চাপ সহ্য করে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা যেকোন মানুষের জন্যই একটি বিরাট দুরোহ ব্যাপার। ক্ষমতার বাগড়ম্বরতা,লোভ লালসা, উচ্চপদে যাওয়ার আকাঙ্ক্ষা ইত্যাদি বিষয়ে নিজেকে সংযত রেখে পথচলা সত্যি সত্যি অনেক কঠিন বিষয়। যা সবাই পারে না, বা আমাদের এই উপমহাদেশে পারা প্রায় অসম্ভব। তেমনই জীবন যাপনে অভ্যস্ত সজিব ওয়াজেদ জয়।

বিজ্ঞাপন

১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই সুমহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সেই ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ অনিশ্চিত অন্ধকার সময়ে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বন্দিশালয় মায়ের কোল আলো করে জন্ম নিয়েছিলেন সজীব ওয়াজেদ জয়। পাকিস্তানি দখলদারদের কারাগারে বন্দি তৎকালীন বিশ্বের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মহান নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগেই বলে রেখেছিলেন তার আদরের নাতি এই পৃথিবীতে আগমন করলে তার নাম রাখা হবে জয়। সজিব ওয়াজেদ জয়ের জন্মের চার মাস যেতে না যেতেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় ছিনিয়ে নিয়ে আসে বাংলার মুক্তিকামী জনগণ। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। আদরের নাতির জন্য নানার নামকরণ সার্থক হয়। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পরাজিত পাকিস্তানের মৃত্যুকুপ থেকে তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে এসে প্রথম নাতির মুখ দেখেন বাঙালির হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান, শতাব্দীর মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান। যিনি হয়তো কয়দিন আগেও ভাবতে পারেন নাই কোনদিন তার স্বপ্নের বাংলাদেশের ফিরে এসে প্রিয়জনদের মুখ দেখবেন। কারণ তার সামনেই তার জন্য কবর খোরা হয়েছিল। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করে সেখানেই কবর দেয়ার ইচ্ছে ছিল সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই বাঙালিকে,বাংলার অবিসংবাদিত এই নেতাকে। তাই হলে হয়তো তার স্বপ্নের স্বাধীন বাংলাদেশও দেখে যেতে পারতেন না, আর পারতেন না প্রিয় নাতি জয়ের মুখ খানা দেখতে।

বিজ্ঞাপন

সজিব ওয়াজেদ জয় ছিলেন নানা বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতার কলিজার টুকরা। বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের সকল ব্যস্ততাই ছিল আদরের নাতি জয়কে নিয়ে। জীবদ্দশায় তাদের নাতিকে তারা চার বছর বয়স পর্যন্ত পেয়েছিলেন। ১৯৭৫ সালের আগস্ট এর প্রথমার্ধে পিতা মাতার সাথে বিদেশ না গেলে হয়তো পনেরই আগস্ট কালো রাতে নানা নানী ও প্রিয়জনদের সাথেই শহীদ হয়ে যেতেন। কারন খুনিরা সেদিন মামা শিশু শেখ রাসেলকেও রেহাই দেয়নি। ভাগ্যগুণে বিদেশ থাকায় মা বাবা,খালা ও একমাত্র আদরের বোনের সাথে সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন চার বছরের শিশু সজিব ওয়াজেদ জয়। কিন্তু এই বেঁচে থাকা কি সেদিন সত্যিকার অর্থেই বেঁচে থাকা ছিল? পিতা-মাতা ভাই ভাবি আত্মীয়-পরিজন হারিয়ে পাগলপ্রায় মা শেখ হাসিনা ও একমাত্র খালা শেখ রেহানাকে নিয়ে তারা দু ভাই বোন তাদের পিতা ডক্টর এম. ওয়াজেদ মিয়ার সাথে বিদেশ বিভূইয়ে অনিশ্চিত জীবন যাপনে বাধ্য হয়েছিলেন। কি অবর্ণনীয় শোক কষ্টে শিশুকালই না পার করতে হয়েছে তাকে। দশ বছর বয়সে মা শেখ হাসিনা ছেলে জয় ও মেয়ে পুতুলকে তাদের পিতা ডক্টর এম. ওয়াজেদ মিয়ার কাছে ভারতে রেখে পিতা রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু বিহীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। শিশু পুত্র-কন্যাকে মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করে দেশ মাতৃকার টানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের বিচার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সামরিক স্বৈরাচার জেনারেল জিয়ার রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বুলেটের মুখে আওয়ামী লীগের দায়িত্ব পেয়ে দেশে ফিরে আসেন। সার্বক্ষণিক মায়ের স্নেহ থেকেও বঞ্চিত হন জয়।

বঙ্গবন্ধুর নাতি ও মেধাবী উচ্চ শিক্ষিত বিজ্ঞানী ডক্টর এম ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার সন্তান হিসেবে জয় বিদেশের বোর্ডিং স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। শিক্ষা জীবনে সব সময় মেধার স্বাক্ষর রাখেন জয়। পড়াশোনা শেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চাকরি নিয়ে জীবন যুদ্ধে অবতীর্ণ হন। এরমধ্যে মা শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে প্রথমবারের মতো দেশের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। জাতির পিতার দৌহিত্র ও দেশের প্রধানমন্ত্রীর সন্তান হিসেবে দেশে ফিরে এসে ক্ষমতার স্বাদ নেয়া তো দুরের কথা বিদেশ বিভূঁইয়ে সংগ্রামের জীবনই বেছে নেন আধুনিক, উচ্চশিক্ষিত, মেধাবি তথ্যপ্রযুক্তি বিজ্ঞানী সজিব ওয়াজেদ জয়। সেই ধারাবাহিকতা এখনো বিদ্যমান। ইতিমধ্যে মা শেখ হাসিনা টানা পনের বছরসহ কুড়ি বছর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। এই পনের বছর জয়কে দেখা গেলো অন্য এক উচ্চতায়। নিজের পড়াশুনা ও মেধাকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে যাওয়া বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে তথ্যপ্রযুক্তিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে মা দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নেপথ্যে থেকে পরামর্শ দিতে লাগলেন। আন্তর্জাতিক মানের তথ্যপ্রযুক্তিবিজ্ঞানী সজীব ওয়াজেদ জয়ের পরামর্শে এবং সার্বিক তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এই যে এগিয়ে যাওয়া তার স্বপ্নদ্রষ্টা মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেও প্রধান কারিগর সজিব ওয়াজেদ জয়। এখানেও ক্ষমতার ব্যাপারে তার নির্মোহভাব দেখা গিয়েছে। দেশের প্রধানমন্ত্রীর অবৈতনিক উপদেষ্টা হিসেবে তিনি এই কাজ করে যাচ্ছেন। যেখানে তার ক্ষমতার মধ্যমণি হিসেবে কাজ করার সুযোগ থাকার পরেও তথাকথিত ক্ষমতা থেকে দূরে থেকেও যে দেশের জন্য সৎভাবে কাজ করা যায় তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ সজিব ওয়াজেদ জয়। এবার তার হাত ধরেই স্মার্ট বাংলাদেশের পথে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ।

কিন্তু একথা অস্বীকার করবার উপায় নাই সজীব ওয়াজেদ জয়ের মতো আধুনিক শিক্ষিত, মার্জিত, সৎ, দেশপ্রেমিক এমন মানুষদের এখন দেশের মুল দায়িত্ব নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে। পৃথিবী যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে তার সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে জয়ের মত নেতৃত্ব এখন অপরিহার্য। মা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ও তার পরামর্শে বাংলাদেশ যেভাবে যে গতিতে এগিয়ে চলছে তাকে আরো গতিশীল করতে এবং যুগোপযোগী রাখতে আগামী দিনে তাকেই বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুস্থভাবে বেঁচে থেকে আরো যে কয়দিন দলের ও দেশের নেতৃত্ব দিতে পারেন তা দিয়ে যাবেন এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। তারপর শেখ হাসিনার গড়ে দেয়া এই দেশকে আরও এগিয়ে নিতে এবং বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে আগামীতে সজীব ওয়াজেদ জয়ই দেশের নেতৃত্ব দিবেন বলে মানুষ বিশ্বাস করে। তাকে তার নিজের জন্য না,দেশের জন্য দরকার। কারন আগামীতে দেশ নিশ্চয়ই কোন দন্ডিত দুর্নীতিবাজ বা খুনিরা নেতৃত্ব দিক তা কারো কাম্য নয়। দেশ আবার জঙ্গিবাজ,বোমাবাজ, মৌলবাদের হাতে পড়ুক সেটা নিশ্চয়ই চাইবে না। কিন্তু অতিতের ঐসব খুনি,দুর্নীতিবাজ,লম্পট খাওয়া ভবনের মালিকেরা পলাতক অবস্থায় থেকে কুৎসিত হুংকার দিয়ে যাচ্ছে। তারা আবার সুযোগ পেয়ে দেশকে আবারো সেই অন্ধকার সময়ে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে তা কোন দিনই হতে দেয়া যাবে না। তাই আগামী দিনে উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মানে ও মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের স্বপ্ন পুরণে সময়োপযোগী যোগ্য নেতৃত্ব একান্ত প্রয়োজন। আর সেই নেতৃত্বই হচ্ছে সজিব ওয়াজেদ জয়।

ক্ষমতার একদম মধ্যমনি থেকেও যে এমন নির্মোহ জীবন যাপন করতে পারে। নানান প্রতিকুল অবস্থায় ধৈর্য ধরে সময়কে যে অতিক্রম করতে পারে। শৈশব কৈশোর থেকে সংগ্রাম করে যে নিজেকে গড়ে তুলতে পারে, তার সামনে কোন কিছুই বাধা হয়ে দাড়াতে পারবে না। তার নিজেরই উক্তি ” সৎভাবে চলার একটা নিজস্ব শক্তি আছে” সেই শক্তিকে সাথে নিয়ে নানা বঙ্গবন্ধু মুজিব ও মা শেখ হাসিনার সাহস, সততা, দৃঢ়তা ও দেশপ্রেমকে ধারন করে ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান হওয়া নিজের মেধা,সততা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ডেল্টা প্ল্যানকে এগিয়ে নিতে সজিব ওয়াজেদ জয়ের কোন বিকল্প নাই। নানা বঙ্গবন্ধু মুজিব যে বয়সে ঘাতকের বুলেটে শহীদ হয়েছিলেন আজ প্রায় কাছাকাছি বয়সে পা দিলেন তার প্রিয় জয়। তার আজকের এই বয়সের আগেই তার নানা বঙ্গবন্ধু মুজিব জাতির পিতা ও প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। মা শেখ হাসিনাও প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন পঞ্চাশের আগেই। আজ তিনি চুয়ান্নতে পা দিলেন। চুয়ান্ন বছর বয়স এখনকার দিনে ভরা তারুণ্য, দেশকে আলোকিত করার শ্রেষ্ঠ সময়। সজিব ওয়াজেদ জয়ের মত মেধাবী আলোকিত তারুণ্যই দিক আগামী স্মার্ট বাংলাদেশের নেতৃত্ব জন্মদিনে এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। শুভ জন্মদিন আলোকিত তারুণ্য সজীব ওয়াজেদ জয়।

লেখক: কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ

সারাবাংলা/এসবিডিই

আলোকিত তারুণ্য মত-দ্বিমত মো. আসাদ উল্লাহ তুষার

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর