Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জয়কে নিয়ে মিথ্যাচার, গুজবকারীদের গালে চপেটাঘাত

তাপস হালদার
২২ নভেম্বর ২০২৩ ১৩:৪৯

গুজব ক্ষণস্থায়ী, সত্য সর্বদা চিরন্তন। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নিয়ে গুজব নতুন কিছু নয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু পূত্র শেখ কামালকে নিয়েও গুজব ছড়ানো হয়েছিল। পরবর্তীতে সবকিছু মিথ্যা প্রমাণিত হয়। বঙ্গবন্ধু পরিবারের যিনিই পাদপ্রদীপের আলোতে আসবেন, তাকেই গুজব সন্ত্রাসের আক্রমণের শিকার হতে হবে, এটা যেন প্রথা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারুণ্যের আইকন সজীব ওয়াজেদ জয় দীর্ঘদিন ধরেই গুজব সন্ত্রাসের টার্গেটে পরিনত হয়েছেন। কিন্তু তিনি বরাবরই তার কাজটি করে যান, এসব গুজবে পাত্তা দেন না। গুজব ছড়ানো হয়েছিল সজীব ওয়াজেদ জয়কে কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছেনা, তিনি গ্রেফতার হয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে কিছু লোককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হয়েছিল। সজীব ওয়াজেদ জয় ঢাকা আসলেন, ইয়ুথ বাংলা অ্যাওয়ার্ড প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে পুরস্কার বিতরণ করলেন। আবারও বিএনপি-জামায়াত গুজব সেলের পরিকল্পিত গুজব প্রপাগাণ্ডা মিথ্যা প্রমানিত হলো।

বিজ্ঞাপন

গত ১৮ নভেম্বের জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে বিএনপি-জামায়াতের কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করে অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘উন্নয়নের গতি ধরে রাখতে পারলে ১০-১৫ বছরে বিএনপি-জামায়াত বলে কোনো কিছু টিকবে না। এই দুইটি দল সন্ত্রাসী ও জঙ্গি দলে পরিনত হয়েছে। তারা বাসে আগুন দিচ্ছে, মানুষ পোড়াচ্ছে। এসব কান্ড উন্নত দেশে কোনো দল করলে তাদের সন্ত্রাসী ও জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হতো। জামায়াতে ইসলামী কোনো কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটা যুদ্ধাপরাধীদের দল।’

বিজ্ঞাপন

নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবার, সরকার, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অনবরত মিথ্যাচার করে গুজব সৃষ্টি করছে একটি চক্র। তারেক জিয়ার এজেন্ডা বাস্তবায়নে তার অর্থায়নে বেশকিছু ফেসবুক পেইজ, ভূয়া অনলাইন পত্রিকা ইউটিউব সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিত্যনতুন গুজব সৃষ্টি করে জনগণকে বিভ্রান্ত করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে নিরন্তর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে তারেক জিয়া গংদের পেইড এজেন্টদের প্রধান টার্গেট সজীব ওয়াজেদ জয়। কারণ জয়কে নিয়েই তাদের বেশি আতংক। সজীব ওয়াজেদ জয় বিশ্বের সেরা দুইটি বিশ্ববিদ্যালয় হার্ভার্ড ও টেক্সাসে পড়েছেন। তিনি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রযুক্তিবিদ। ইতোমধ্যে কোটি কোটি তরুণদের আইকনে পরিনত হয়েছেন। দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ তৈরি করেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এমন একজন নেতাকে নিয়ে তারেক গংদের আতংক হওয়ারই কথা। সঙ্গত কারণেই তিনি বিএনপির গুজব সেলের টার্গেটে পরিনত হয়েছেন।

সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে মিথ্যাচারের শেষ নেই। মার্কিন ভিসা নীতি ঘোষণার পর প্রথম গুজব ছড়ানো হয়েছিল জয়কে আমেরিকা প্রবেশে বাধা দিচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। তিনি লাপাত্তা, মধ্যপ্রাচ্যের একটি দেশে লুকিয়ে আছে। গত ১৫ জুন গুজব ছড়ানো হয়েছিল জয়ের ১০ বিলিয়ন ডলারের মানি লন্ডারিংয়ের সন্ধান পেয়েছে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ। ৩০ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি গুজব ছড়িয়ে দেয়া হলো ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর তথ্য প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইটেক এন্ড টেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেছেন।’ মুহুর্তের মধ্যে খবরটি ভাইরাল হয়ে গেলো। না বুঝে আওয়ামী লীগ সমর্থকেরাও অনেক শেয়ার করলো। অথচ কেউ একবার সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের অপেক্ষা করলো না। পরে আওয়ামী লীগের দপ্তর সেল থেকে জানানো হলো, খবরটি ভূয়া।

বিএনপির গুজব সেল থেকে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রচার করা হলো, জয়কে আমেরিকা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে, সে সিঙ্গাপুরে আশ্রয় নিয়েছে। তখন একটি ছবি গুজবকারীদের অপপ্রচারে জল ঢেলে দিয়েছিল। বরাবরের মতো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘের সন্মেলনের কারণে সেপ্টেম্বর মাসে শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করেন। সে কারনে তিনি ২৮ সেপ্টেম্বর জন্মদিনটা ছেলের সাথে কাটান। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ২৯ সেপ্টেম্বর জয় তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেইজে একটি ছবি পোস্ট করে লিখেন, ‘Ma’s birthday dinner with the family at my golf club in Virginia’. এই ছবি দিয়ে তিনি স্পষ্ট করেন তিনি ভার্জিনিয়ায়ই আছেন। পরিবারের সকলের সাথে মায়ের জন্মদিন পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে ছড়ানো গুজব মিথ্যা ও বানোয়াট।

বিগত কয়েক মাসে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে নানা প্রকার গুজব ছড়ানো হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘মায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছে না সজীব ওয়াজেদ জয়ের’, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে পালিয়েছেন জয়’, ‘যুক্তরাষ্ট্র থেকে ওমানে রাজনৈতিক আশ্রয়ে জয়’, ‘সজীব ওয়াজেদ জয়ের হাজার কোটি টাকা জব্দ করেছে মার্কিন ট্রেজারি বিভাগ’, ‘যুক্তরাষ্ট্র খুঁজছে সজীব ওয়াজেদ জয়কে’, ‘ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেফতার শেখ হাসিনার ছেলে জয়।’ এরকম অসংখ্য গুজব বাজারে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল।

বিদেশে বসে কিছু গুজবকারী নানা কল্পকাহিনী তৈরি, যা কল্পনাকেও হার মানায়। এসব ভিডিও নিদিষ্ট কিছু পেজ ও ইউটিউব চ্যানেল থেকে প্রচার করা হয়। বিএনপি জামায়াতের এসব এজেন্টরা অর্থের বিনিময়ে নিয়মিত কল্পকাহিনী তৈরি করে যাচ্ছে। এসব দুর্বৃত্তরা দেশ থেকে অপকর্ম করে বিদেশে অবস্থান করছে। আর দেশে থেকে কিছু সুশীল নামধারী ব্যক্তি এইসব গুজব নিয়ে মুখরোচক গল্প সাজিয়ে ফেসবুক পেজে টকশোর নামে বিনোদন অনুষ্ঠান করে। এসব অনুষ্ঠানের বক্তা নিদিষ্ট কিছু লোক। যাদের কাজই থাকে সরকারের বিরুদ্ধে খিস্তিখেউড় করা। আরেকজন আছেন যিনি বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা বিভ্রান্তমূলক তথ্য দিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে প্রশ্ন করেন। তিনি খালেদা জিয়ার সাবেক ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি ও হাওয়া ভবনের সদস্য মুসফিকুল ফজল আনসারী। সরকারের বিরুদ্ধে মনগড়া নেতিবাচক প্রশ্ন করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করাই তার কাজ। দেরিতে হলেও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর তার দুরভিসন্ধি আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে।

বিএনপি-জামায়াত সরকার পতনের আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা না পেয়ে গুজবকেই তাদের হাতিয়ার করেছে। এসব গুজবে বিরোধী রাজনৈতিক দল ছাড়াও কিছু হতাশাগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, এক শ্রেণীর কথিত বুদ্ধিজীবি ও কিছু সাংবাদিক পরিকল্পিত ভাবে গুজবের আগুনে ঘি ঢালছেন। আন্দোলনে যখন জনসম্পৃক্ততা থাকেনা, তখনই রাজনৈতিক দলগুলো গুজব ও চোরাগোপ্তা হামলার পথেই অগ্রসর হয়। বিএনপি জামায়াত জোট জনহীন হয়ে সেদিকেই চলে গেছে। তারা একদিকে যেমন হরতাল-অবরোধ দিয়ে আগুন সন্ত্রাস চালিয়ে জানমাল ধ্বংস করছে, অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব সন্ত্রাস চালিয়ে জনমনে আতঙ্ক তৈরি করছে।

সজীব ওয়াজেদ জয় একজন নিভৃতচারী মানুষ। পর্দার আড়ালে থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বির্নিমানে কাজ করেছেন এবং উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গঠনে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি হয়তো এসব গুজবকারীদের মিথ্যা গুজবে কান দেন না, হয়তো দেওয়ার সময়ও নেই। তিনি নিজের কাজটা করে যাচ্ছেন। কিন্তু অস্বীকার করার উপায় নেই, গুজব সেলের মিথ্যা বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য এক শ্রেণীর মানুষ সাময়িক সময়ের জন্য হলেও বিভ্রান্ত হয়। পরে আসল সত্য সামনে আসলে তাদেরকে গালি দেয়, ঘৃণা করে।

সজীব ওয়াজেদ জয় একটি বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘সৎ থাকলে একটা সুবিধা আছে। ভয় পাওয়ার কিছু থাকেনা।’ আমেরিকার অ্যাম্বাসির প্রতিনিধি জন ডেনোলোয়েস আমাকে ব্যক্তিগত ভাবে হুমকি দিয়েছিল, হ্যাঁ তোমার তো ট্যাক্সের অডিট হতে পারে। আমি তার হুমকি হাসি দিয়ে উড়িয়ে দিয়ে বলেছিলাম, অডিট করবা করো, আমার ভয়ের কিছু নেই।’ এমন একজন সৎ সাহসী নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব রটিয়ে তার কোনো ক্ষতি করা যাবেনা। যারা এসব করছেন তারাই রাজনীতির আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে।

লেখক: সাবেক ছাত্রনেতা ও সদস্য, সম্প্রীতি বাংলাদেশ

সারাবাংলা/এসবিডিই

জয়কে নিয়ে মিথ্যাচার- গুজবকারীদের গালে চপেটাঘাত তাপস হালদার মত-দ্বিমত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর