নিবন্ধিত অধিকাংশ দলই নির্বাচনমুখি
৫ ডিসেম্বর ২০২৩ ১৭:৫০
৩০টিরও অধিক নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। এটা একটা বড় সাফল্য। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করার পথে এটি অনেক বড় সুখরব। বর্তমানে যাদের নিয়ে দেশি-বিদেশী সকলের মাথাব্যাথা- সেই বিএনপিও পরোক্ষভাবে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। বিএনপির ১৫ কেন্দ্রীয় নেতা ও ৩০ জন সাবেক সংসদ সদস্য এ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। ইউরোপ-আফ্রিকা-ল্যাটিন আমেরিকার অনেক দেশেই নির্বাচন বিরোধী দল অংশ নেয় না। তাতে কি নির্বাচন অবৈধ ধরা হয়? কিছু দল না এলেই নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হবে না, অবৈধ ধরা হবে, এমনতো কথা নেই। বিএনপির এমপি-মন্ত্রীসহ অনেক হেভিওয়েট নেতা নির্বাচনে অংশ নেয়ার মধ্য দিয়ে একটি বিষয় প্রমাণিত যে, বাংলাদেশের বর্তমান সরকার ও সরকার প্রধান গণতন্ত্রের মানসকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দিতে বদ্ধপরিকর, এই বিষয়টি বাংলাদেশের সকল জনতার পাশাপাশি বিএনপির নেতৃবন্দও বুঝতে পারছেন। এজন্যই তারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। বিরোধী দলেরও আস্থা অর্জন করার সক্ষমতা একমাত্র মানবতার নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনারই আছে। বাংলার অভূতপূর্ব সাফল্যে বিরোধী দলও বুঝতে শিখেছে শেখ হাসিনার হাতেই বাংলাদেশ নিরাপদ। বিএনপির যারা অংশগ্রহণ করছেন- তাদের মধ্যে সৈয়দ এ কে একরামুজ্জামান, মনজুর আলম, শওকত মাহমুদ, তৈমুর আলম খন্দকার, শমসের মবিন চৌধুরী, শাহজাহান ওমর, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আহসান হাবীব, একে এম ফকরুল ইসলামসহ ১৫ জন কেন্দ্রীয় নেতা উল্লেখযোগ্য. তাছাড়াও শাহ মোহাম্মদ জাফর ও মেজর আখতারুজ্জামানসহ সাবেক ৩০ জন এমপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। উপরোক্ত তালিকা থেকে ষ্পষ্টত প্রমাণিত হয়, বিএনপির প্রতিষ্ঠিত বেশিরভাগ নেতাই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। বাকিরাও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী হলেও লন্ডন থেকে গ্রীন সিগনাল না পওয়ায় আর হুমকি-ধামকিতে ভয় পেয়ে চুপ আছে।
বর্তমান সন্ত্রাসী দল বিএনপি আন্দোলনের নামে দেশে যে সহিংসতা ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করছে সেই বিষয়ে কারো কোনো কথা নেই। বিদেশীরা বড় বড় কথা বলে মানবাধিকার নিয়ে কিন্তু এখন তারা চুপ কারণ বিদেশীদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে উন্নয়নমূলক কাজ বন্ধ করতে বর্তমান সরকারকে অসহযোগীতা করা। বিএনপি আন্দোলনের যে চক্রান্ত করছে, তাদের কোনো হরতাল-অবরোধ, কোনো আন্দোলন সফল হয়নি। আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে, মানুষ পুড়িয়ে জনগণের মনে স্থান পাওয়া যায়না। জনগণ হত্যা করে জনগণকে পাশে পাওয়ার চিন্তা করাটাও বিলাসীতা। নির্বাচন কমিশনসহ সরকারের বিভিন্ন মহল থেকে বিভিন্নভাবে সকল দলকে আশ্বস্ত করা হয়েছে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ফ্রি এন্ড ফেয়ার হবে। সেখানে কোনরকম হস্তক্ষেপ করা হবে না। ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে এসে তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করার পূর্বে অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া দলগুলোও স্বতঃস্ফুর্তভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। বিএনপির অনেক নেতা নির্বাচনে করলেও, দল হিসেবে নির্বাচন না করার কারণে তাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করা, বিদেশীদের লেলিয়ে দেয়া, আকারণে দেশের স্বার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফালানো অপ্রয়োজনীয় নিষেধাজ্ঞা নীতি দেয়ানো।
জঙ্গিবাদ, মানুষ হত্যা, অগ্নিসন্ত্রাসের কারণে বিএনপির জনবিচ্ছিন্নতা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। যার ফলে ইদানীং বিএনপি কর্তৃক ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি অতীতের ন্যায় কোনো সাড়া পাচ্ছেনা। যেমন ২৮ শে অক্টোবর মহাসমাবেশের নামে জ্বালাও-পোড়াও এবং সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের পর বিএনপি একের পর এক হরতাল এবং অবরোধ কর্মসূচি দিলেও জনসমর্থনের অভাবে তা কার্যকর হচ্ছে না। বিএনপির ঘোষিত হরতাল ও অবরোধ কর্মসূচি তাদের ঘোষণার মধ্যেই এখন সীমাবদ্ধ থেকে যাচ্ছে বাস্তবে তার প্রয়োগ হচ্ছেনা এবং ভবিষ্যতেও হবেনা। জনসমর্থনহীন কোন কর্মসূচি যে এই গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে কখনো সফল হয়না এবং ভবিষ্যতেও হবেনা তার প্রমাণ এই বিএনপি দলটি এবং তাদের ঘোষিত ব্যর্থ কর্মসূচিসমূহ।
বাংলাদেশের এমন অভূতপূর্ব উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি তথা বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে ঈর্ষান্বিত স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি নিজেদের অতীত ইতিহাস ও বর্তমান কর্মকান্ডের ফলে বাংলাদেশের জনগণের সমর্থন হারিয়ে এখন জনবিচ্ছিন্নে দলে পরিণত হয়েছে। তাদের এই জনবিচ্ছিন্নিতা তাদের জনগণ থেকে অনেক দূরে সরিয়ে দিয়েছে এবং এতে বিএনপি দল হিসেবে নিজেদের অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে সরকারের ক্ষমতায় আসীন হতে যেকোনো দলের জন্য নির্বাচনই একমাত্র পন্থা। নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় যাওয়ার কোনো ধরনের সুযোগ নেই। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন বিএনপি গণতান্ত্রিক এই বাংলাদেশে নির্বাচনে না গিয়ে আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও করে, হরতাল, অবরোধ দিয়ে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি করে পূর্বের ন্যায় ক্ষমতায় আসীন হওয়ার যে অপপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তা কোনোভাবেই একটা গণতান্ত্রিক দেশের রাজনৈতিক শিষ্টাচারের মধ্যে পড়েনা।
বিএনপির বুঝা উচিত যে গণতন্ত্রের দোহাই দিয়ে মহাসমাবেশ, হরতাল এবং অবরোধ কর্মসূচির নামে তারা যত বেশি জ্বালাও-পোড়াও করছে ততই তাদের জনবিচ্ছিন্নতা বাড়ছে এবং আওয়ামী লীগ তথা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার জনসমর্থন বাড়ছে। বিএনপি যত মানুষ হত্যা করবে তার চেয়ে বেশি মানুষ আওয়ামী লীগে যোগ দিবে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি, জনসমর্থন ও জনগণেরর শক্তিতে বিশ্বাসী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ লাশের রাজনীতি চায়না। স্বাধীন বাংলাদেশের শহীদদের রক্ত লিখিত বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন বাংলাদেশ সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আওয়ামী লীগ সংবিধানের আলোকে গঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচনে নিজেরা অংশগ্রহণ করবে এবং অন্য সকল দল অংশগ্রহণ করুক সেটাই চায়। বাংলাদেশের জনগণও চায় গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা হবে গণতান্ত্রিক নির্বাচনে ভোটের যুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতি দিয়ে নয়।
নির্বাচনকে ঘিরে বহুদিন পর উৎসবমূখর পরিবেশ দেখা যাচ্ছে সারা দেশে। চোখে পড়ার মতো উৎসব। জনগণের অংশগ্রহনে উৎসবমুখর পরিবেশই হচ্ছে নির্বাচন কোন একটি দল না আসায় নির্বাচনে কোনো ভাটা পড়েনি আর পড়বেও না। কারও কথায় বা বাধায় নির্বাচনের ট্রেন আর থামানো যাবেনা। জনগণের অংশগ্রহণ ও উৎসবমুখর নির্বাচনই মূল বিষয়। কোন রাজনৈতিক দল অংশ নিবে না নিবে এটা তাদের ব্যাপার এতে নির্বাচন বানচালের সুযোগ, গুজব রটানোরও সুযোগ নেই। সুষ্ঠু, সুন্দর ও উৎসবমুখর পরিবেশে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশও বিরাজমান।
বর্তমান সকল পরিস্থিতি ও সার্বিক নির্বাচনকেন্দ্রিক উন্মাদনা জনগণকে সবসময় চাঙ্গা রাখছে। সন্ত্রাসী দল বিএনপির প্রহসনমূলক হরতাল-অবরোধকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে সর্বস্তরের জনগণ ৭ জানুয়ারি উৎসবের অপেক্ষায়। ৩০ টিরও অধিক রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ, সুন্দর, অংশগ্রহণ ও গ্রহনযোগ্য নির্বাচন হবেই এবং জনগণ তাদের প্রাণের স্পন্দন মানবতার নেত্রী দেশনেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে পুনরায় নির্বাচিত করে দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে।
লেখক: উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও সাবেক চেয়ারম্যান, ট্যুরিজম অ্যান্ড হস্পিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সারাবাংলা/এসবিডিই
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া নিবন্ধিত অধিকাংশ দলই নির্বাচনমুখি মত-দ্বিমত