বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এক্সেলেন্ট তবে ঝুঁকিমুক্ত নয়
২০ মে ২০১৮ ১২:২৩
স্বাধীনতার অনেক পরে হলেও শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাস্তবায়ন। সাম্রাজ্যবাদী এবং পাকিস্তানি আদর্শের অনুসারীরা এখানে দুর্নীতি, সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা আর অনাচারের যে সংস্কৃতি চালু করেছে তা হটিয়ে ধীরে ধীরে এগিয়ে চলছে বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক উন্নয়ন সুচকগুলোর মাপকাঠিতে প্রতিবেশী দেশগুলোকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে স্বাধীনতা বিরোধীদের সৃষ্ট চরম নৈরাজ্য, হত্যা, ধ্বংস, বিদেশি চাপ সামলে নিয়ে মাত্র নয় বছরের মধ্যে বাংলাদেশ নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশে উঠে এসেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘ ঘোষণা করেছে, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের পর্যায়ে উত্তোরণের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছে। এ পর্যায়ে উঠে আসার জন্য প্রয়োজনীয় তিনটি মানদণ্ডের তিনটিতেই উক্তির্ণ হয়েছে বাংলাদেশ। মানদণ্ড গুলো হচ্ছেঃ মাথাপিছু জাতীয় আয়, মানব সম্পদ এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা। বাংলাদেশে শুধু মাথাপিছু আয়ই বাড়েনি; উন্নয়ন হয়েছে মানব সম্পদের; অর্থনীতির বুনিয়াদ হয়েছে মজবুত।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করায় সব থেকে বড় পাওয়া হলো – আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি। ভিক্ষের ঝুলি হাতে প্যারিস কন্সোর্টিয়াম বৈঠকে যোগ দেওয়া বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে যাচ্ছে। এই উত্তরণে প্রতিটি মানুষের মানসিক শক্তি বেড়ে গেছে বহুগুণ। সরকারের সমর্থক কী বিরোধী – প্রতিটি মানুষ এখন অনুভব করছে, আমরা আর দরিদ্র নই; অন্যের মুখাপেক্ষী নই। এখন আমরা নিজের পায়ে নিজে দাঁড়াবার শক্তি অর্জন করেছি। বাঙালির এই আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে অনেক দূর। এ অর্জন দূর করবে আমাদের মানসিক দৈন্য; এনে দেবে উন্নত সংস্কৃতি। আত্মমর্যাদা সম্পন্ন জাতিই বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ এখন আত্মমর্যাদার সঙ্গে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশে পরিণত হবার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে চলছে। এ সময়ে দরকার রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারি কাজের নিরবিচ্ছিন্ন অগ্রগতি।
কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিশ্বব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ, বিশ্ব বিখ্যাত বাঙালি কৌশিক বসু সম্প্রতি প্রজেক্ট সিন্ডিকেটে প্রকাশিত বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নতির কারণ অনুসন্ধানমূলক এক নিবন্ধে লিখেছেন, “প্রগতিশীল সামাজিক নীতিসমূহের কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্রতম দেশ থেকে “উচ্চাকাঙ্ক্ষী ব্যাঘ্রে” পরিণত হয়েছে”। বাংলাদেশের এই উন্নতি টেকসই হবে কি-না এমন প্রশ্ন তুলে নিজেই তাঁর উত্তরে বলেন, “বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ এক্সেলেন্ট তবে ঝুঁকি মুক্ত নয়”। ঝুকিগুলো হচ্ছেঃ দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, বৈষম্য বৃদ্ধির প্রবণতা, এবং মৌলবাদ। অধ্যাপক বসুর এ লেখাটা আমার বিশেষ ভাবে ভাল লেগেছে। কারণ, গত বছর মে মাসে চ্যানেল আই অনলাইনে প্রকাশিত আমার এক লেখার শিরোনাম ছিল, “আওয়ামী লীগের দুই চ্যালেঞ্জঃ মৌলবাদ আর দুর্নীতি”। অর্থনৈতিক বৈষম্য নিয়েও বিভিন্ন সময় লিখেছি। একটা বিশেষ লেখা আছে “বাজেটে সাম্যের অনুসন্ধান” শিরোনামে। সেটাও প্রকাশ হয়েছিল চ্যানেল আই অনলাইনে ২০১৬ সালের জুন মাসে।
অধ্যাপক কৌশিক বসু বাংলাদেশের উন্নয়ণের পেছনে দু’টো চলকের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। একটি নারীর ক্ষমতায়ন অন্যটি তৃণমূল পর্যায়ে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি। ২০১১ সালের নারী উন্নয়ন নীতিসহ নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা এবং নীতি নির্ধারণে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য বেশ কয়েকটি আইন করেছে আওয়ামী লীগ সরকার যার ফলে মেয়েদের স্কুলে ভর্তির হার হয়েছে ৯৯.৪%, নারী শিক্ষা হয়েছে অবৈতনিক, ২৭ লক্ষ নারী পাচ্ছে শিক্ষা বৃত্তি, নির্মান হয়েছে ১৬ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক আর ১৩ হাজার মাতৃসেবা কেন্দ্র, ৫ লক্ষ নারী পাচ্ছে মাতৃত্ব ভাতা, ২ লক্ষ দুগ্ধদানকারী মা পাচ্ছে ভাতা, কর্মক্ষেত্রে নারীর অনুপাত এখন ৩৬%, ৪০ লক্ষাধীক নারী কাজ করছে পোষাক শিল্পে, মৎস্য চাষে নারীর অংশগ্রহণ ৬০%। জাতীয় সংসদে নারী সদস্যের সংখ্যা এখন ৭০ জন বা ২০%, ১৩ হাজার ৫০০ জন নারী ভূমিকা রাখছে স্থানীয় সরকার পরিচালনায়, সরকারি চাকুরিতে নারীর সংখ্যা এখন প্রায় ৪ লক্ষ যা ২০০৯ সালে ছিল সোয়া দুই লক্ষ, নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীগুলোতে নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করছে নারীরা। জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। নারীর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নিরাপত্তা বৃদ্ধির প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে। বেড়েছে জাতীয় উৎপাদন; মাথাপিছু আয়।
সমাজের নিচুতলায় যেহেতু অনেক মানুষ থাকে তাই তাদের আয় বাড়াতে পারলে সামগ্রিক অর্থনীতির ব্যাপক উন্নতি হতে বাধ্য। দরিদ্র মানুষের আয়ের পুরোটাই খরচ হয় দেশে উৎপাদিত পণ্য ভোগের মাধ্যেম। ফলে এদের আয় যত বাড়ে তত বাড়ে দেশজ পণ্যের চাহিদা। চাহিদা মেটাতে বাড়ে যোগান, মানে উৎপাদন। সমাজের দুর্বল অংশের আয় বাড়াতে সরকার চালু করেছে সোশ্যাল সেফটি নেট। এই নেটে সরকার খরচ করছে জাতীয় বাজেটের ৭/৮%। এই নেটের মধ্যে রয়েছে দারিদ্র ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, দুঃস্থ নারী ভাতা, ইত্যাদি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্ণর অধ্যাপক আতিয়ার রহমান চালু করেছিলেন গরীব মানুষের জন্য ব্যাংকে হিসাব খোলার ব্যবস্থা; কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর উদ্যোগে হয়েছে কৃষকের জন্য নিম্ন সুদে ঋণের ব্যবস্থা। বিশ্ব ব্যাংকের উদ্বৃতি দিয়ে অধ্যাপক বসু দেখিয়েছেন পুর্ণবয়স্ক বাংলাদেশিদের মধ্যে ৩৪.১% মানুষের রয়েছে ব্যাংক হিসাব দক্ষিণ এশিয়ায় এই গড় ২৭.৮%। এসবের ফলে গরীব মানুষদের মধ্যে অর্থ প্রবাহ বেড়েছে। অর্থ প্রবাহ বাড়ার ফলে একদিকে কৃষি উৎপাদন বেড়ে নিশ্চিত হয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা। অন্যদিকে বেড়েছে সাধারণ মানুষের আয়; কমেছে দারিদ্র; উর্দ্ধগতি পেয়েছে সামাজিক সুচকগুলো; জ্যামিতিক হারে বেড়েছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড; অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ৫ কোটি দরিদ্র মানুষ উঠে এসেছে মধ্যবিত্তের কাতারে। অতি-দারিদ্রের হার নেমে গেছে ১৩ শতাংশের নিচে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে যাচ্ছে অর্থনৈতিক বৈষম্য। যদিও সাধারণ মানুষের আয় বেড়ে চলছে তথাপি তা দেশের মোট আয় বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপুর্ণ নয়। গরীবের তুলনায় ধনীদের আয় বেড়েছে বেশি হারে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে না পারলে বাংলাদেশের উন্নয়ন হবে ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়ার মত। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না কর্মসংস্থানও। তার মানে উন্নয়ন পরিকল্পনায় বড়সর ত্রুটি রয়েছে। শিল্পখাতে কর্মসংস্থান আশানুরূপ বাড়ছে না। কৃষি খাতে রয়েছে অতিরিক্ত শ্রম নিয়োগ। বিদ্যুৎ এবং গ্যাসের সঙ্কট এখন অনেকটাই কেটেছে। যদিও অনেক দেরি হল তবুও এলএনজি আমদানি শুরু হওয়ায় গ্যাসের ঘাটতি আর থাকবে না। দ্রুততার সঙ্গে ইকোনোমিক জোনগুলো চালু করতে পারলে দ্রুতই বাড়বে শিল্পে বিনিয়োগ। শিল্পে বিনিয়োগ বাড়লে বাড়বে কর্মসংস্থান।
অর্থনৈতিক বৈষম্য রোধের উপায় হচ্ছে কর ব্যবস্থার সংস্কার। বর্তমান কর ব্যবস্থার বড় সমস্যা হচ্ছে এদেশে প্রত্যক্ষ করের চাইতে পরোক্ষ কর থেকে সরকার বেশি রাজস্ব আদায় করে। ব্যবসায়ীরা, পেশাজীবিরা ব্যাপকভাবে কর ফাঁকি দেয় বলে সাধারণ মানুষের উপর ভ্যাটের বোঝা চাপিয়ে সরকারকে রাষ্ট্রের খরচ মেটাতে হয়। কর ফাঁকিবাজদের করের আওতায় আনতে হবে। ডিজিটালিজেশন বাড়ানোর মাধ্যমে আরও বেশি মানুষকে করের আওতায় আনা সম্ভব হবে। করকর্তাদের লাগাম ছাড়া দুর্নীতি চলতে থাকলে কোন ডিজিটালিজেশন কাজ করবে না। সরে আসতে হবে একই হারে ভ্যাট চালুর পরিকল্পনা থেকে। ভ্যাট এমন ভাবে প্রয়োগ করতে হবে যেন নিম্নবিত্তের মানুষের উপর তা কোনভাবে না বর্তায়; উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তের মানুষেরা ব্যবহার করে এমন পণ্য এবং সেবার উপর অনেক বেশি হারে ভ্যাট আরোপ করা উচিৎ।
ব্যাংকিং খাতে বেশ বড় কয়েকটি দুর্নীতির খবর প্রকাশ হওয়ার পরেও দৃশ্যমান বিচার হয়নি জড়িতদের। ২০১০ সালের শেয়ার বাজার কেলংকারীর সঙ্গে জড়িত লোকেরা এখনো বিচার ব্যবস্থার ঊর্ধে। প্রশাসনের দুর্নীতি এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে রডের বদলে বাঁশ দিয়ে নির্মান কাজ করার খবর এসেছে গণমাধ্যেম। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ বানাতে খরচ হয় পার্শবর্তী দেশ এমনকি ইউরোপের থেকেও বেশি। দুর্নীতি দমনে দুদককে বেশ কিছু দৃশ্যমান উদ্যোগ নিতে দেখা গেছে। তবে তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম। কমিশনকে জনবল দিয়ে, আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে শক্তিশালী করা দরকার। বড় বড় কয়েকটা দুর্নীতিবাজকে এখনই চৌদ্দ শিকের পেছনে পাঠাতে পারলে ভয় পাবে অন্যরা; কমে যাবে দুর্নীতি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটা অলআউট যুদ্ধ শুরু না করলে মুখ থুবরে পড়বে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা। চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিংপিং দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে জয়ী হয়েছেন। দেশবাসী তাঁকে তার পুরস্কার স্বরূপ আজীবন রাষ্ট্রপতি পদে বহাল থাকার ব্যবস্থা করেছে। সেখান থেকে শিক্ষা নিতে হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটা অলআউট যুদ্ধে জিতে উন্নয়নের সুবিধা সমানভাবে পৌঁছে দিতে হবে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে।
অধ্যাপক বসু তাঁর নিবন্ধে মৌলবাদের কারণে যেসব দেশে অর্থনৈতিক অগ্রগতি থেমে গেছে তার কিছু উদাহরণ দিয়েছেন। হাজার বছর আগে দামাস্কাস এবং বাগদাদে জ্ঞান-বিজ্ঞান, শিল্প-সংস্কৃতির যে জয়জয়কার ছিল তা ধ্বংস হয়েছে সে সমাজে ধর্মীয় মৌলবাদীদের প্রসারের ফলে। তিনি পঞ্চদশ এবং ষোড়শ শতাব্দীর পর্তুগালের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, খ্রীষ্টান মৌলবাদীদের রাষ্ট্র ক্ষমতা গ্রহণের পর মৃয়মাণ হয়েছে তাদের বিশ্ব শক্তি। ৪৭ সালে দেশ ভাগের পর পাকিস্তানের মাথাপিছু আয় ছিল ভারতের চেয়ে বেশি। সামরিক শাসন আর মৌলবাদী, জঙ্গিবাদী রাজনীতি তাদের অধঃপতন ঘটিয়েছে। ২০০৫ সালের মধ্যে ভারত পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায়। বর্তমানে হিন্দুত্ববাদের উত্থানে নারী এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর নির্যাতন বাড়ায়, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বাঁধা দেয়ায় পিছিয়ে পড়ার হুমকিতে রয়েছে ভারত। বাংলাদেশেও রয়েছে একই হুমকী। বেশকিছু বড় বড় যুদ্ধাপরাধীর বিচার হওয়ায় এবং জঙ্গি দমনে দূর্বল হয়েছে উগ্র মৌলবাদী দল জামায়াতে ইসলামী। তবে বিএনপি’র সঙ্গে জোটবদ্ধ থাকায় এখনো তারা টিকে আছে রাজনীতির মাঠে। বিএনপি’র জোটে রয়েছে আরও কয়েকটি মৌলবাদী সংগঠন। আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে অজঙ্গিবাদী মৌলবাদী কয়েকটি সংগঠন। বিশেষ করে হেফাজতে ইসলাম আওয়ামী লীগের নীতি নির্ধারণের উপর প্রভাব রাখছে বলে জোড়ালো অভিযোগ রয়েছে। সামগ্রিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আওয়ামী লীগকে এখন মৌলবাদীদের ছাড় দিতে হচ্ছে। এই ছাড় দেয়ার রাশটা আগামী নির্বাচনের পরে শক্ত হাতে টেনে না ধরতে পারলে দামাস্কাস, বাগদাদের মত আমাদের শুধু ২০০৯-১৮ সালের অর্থনৈতিক উন্নয়নের গল্প করে কাটাতে হবে। ৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশ হবার যে স্বপ্ন বাঙালি দেখছে তা অধরাই থেকে যাবে।
‘৪১ সালে উন্নত দেশে পরিণত হবার লক্ষ্য সামনে রেখে তৈরী হচ্ছে ২০ বছর (২০২১-৪১) মেয়াদি মহাপরিকল্পনা। ২০০১-০৬ সালের জামায়াত-বিএনপি জোট সরকার বহুদিন ধরে চলে আসা পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বন্ধ করে দিয়েছিল। ‘০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করেই আবার তা চালু করে। শুধু তাই নয় ‘০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ইসতেহার দিয়েছিল তার অংশ ছিল ভিশন ২০২০। ভিশন ছাড়া ভবিষ্যৎ দেখা যায় না। ভবিষ্যৎ দেখতে না পারলে কেউ সামনে চলতে পারে না। নির্মানাধীন ২০ বছর মেয়াদি মহাপরিকল্পনা বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে উন্নত দেশের কাতারে। এখন শুধু দরকার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারাবাহিকতা বজায় রাখা। তার জন্য দ্বায়িত্ব রয়েছে প্রতিটি নাগরিকের। প্রথম দ্বায়িত্ব হলো সরকারের প্রতিটি ভালো কাছের প্রশংসা করে উৎসাহ দেয়া আর মন্দ কাজের প্রতিবাদ করে ভুল সংশোধন করতে সাহায্য করা। দ্বিতীয় দ্বায়িত্ব হলো আওয়ামী লীগের সঙ্গে থেকে আগামী নির্বাচনে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করা। স্বাধীনতার পর অনেকে দেশ পরিচালনা করেছে। এমন ভাবে দেশকে এগিয়ে নিতে পারেনি কেউ। দেশকে এগিয়ে নিতে হলে থাকতে হয় সত্যিকারের দেশপ্রেম, দেশের প্রতিটি মানুষের প্রতি দ্বায়িত্ববোধ। শেখ হাসিনার মধ্যে তা যথেষ্টই রয়েছে। পুঁজিবাদী, সাম্রাজ্যবাদী, জঙ্গি, মৌলবাদী, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিগুলোকে নির্মূল করে সোনার বাংলা গড়তে পারেন কেবল শেখ হাসিনাই।
সাব্বির আহমেদ, কলাবাগান, ঢাকা।
সারাবাংলা/এমএম