Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন

মো. আসাদ উল্লাহ তুষার
১৬ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৩৩

আবহমান বাংলার এক মমতাময়ী নারীর প্রতিচ্ছবি। বাঙালী মা বা বোনের অবয়ব, কখনো বা খালা ফুপু’র। বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতার কন্যা। নির্মম, নিষ্ঠুর, হৃদয়বিদারক স্বজন হারানোর বেদনা বহন করা এক অকুতোভয় যোদ্ধা। নিজেও মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন বার বার। পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৫২ বছর বয়সে জাতির পিতা হয়েছিলেন আর মাত্র ৫৬ বছর বয়সে ঘাতকের নির্মম বুলেটে শাহাদত বরন করেন। নিজেকেও ৫৬ বছর বয়সে মৃত্যু প্রায় গ্রাস করেছিল ২০০৪’র গ্রেনেড হামলায়। পিতার বয়স পার করেছেন কুড়ি বছর আগে সাথে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের বয়সও কুড়ি। চতুর্থবার সফলতার শেষে পঞ্চম বারের মতো দায়িত্ব নিয়েছেন। মানুষের দোয়া ও ভালবাসায় বেঁচে আছেন পিতার অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করার জন্য। ছাত্র রাজনীতি দিয়ে রাজনৈতিক জীবনের হাতে খড়ি। অর্ধ শতাব্দীর বেশি সময়ের রাজনৈতিক উত্থান পতনের নীরব সাক্ষী, কখনো দর্শক আবার কখনো বা পথ প্রদর্শক। আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্থপতি, স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা, উপমহাদেশ তথা বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নারী পার্লামেন্টারিয়ান ও আট বারের নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য গনতন্ত্রের মানসকন্যা দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা পঞ্চম বারের মত প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

ইতিমধ্যেই মন্ত্রিসভাও গঠন করেছেন। তুলনামূলক টানা চারবারের মধ্যে এবারের মন্ত্রিসভাটা সবদিক বিবেচনায় শ্রেষ্ঠ। যোগ্যতা অভিজ্ঞতা সততায় কেউ কারো চেয়ে কম না। স্বচ্ছ ইমেজ এবং দেশবাসীর কাছে গ্রহণযোগ্যতাকেই হয়তো প্রধানমন্ত্রী প্রাধান্য দিয়েছেন। নবীন প্রবীনের সমন্বয় ঘটিয়েছেন সার্থকভাবে। যেমন তরুণ তুর্কি ক্লিন ইমেজের শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলকে একেবারে প্রমোশন দিয়ে পূর্ণ মন্ত্রী করেছেন। ঠিক তেমনি অভিজ্ঞতায় পরিপূর্ণ সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও একসময়ের অর্থনীতির মেধাবী ছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে মন্ত্রিসভায় ফিরিয়ে এনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন। নতুন সরকারের আগের সরকারের সফল কয়েকজন মন্ত্রীকে মন্ত্রিসভায় যেমন রেখে দিয়েছেন। ঠিক তেমনি সাবের হোসেন চৌধুরী, সামন্ত লাল সেনকে মন্ত্রিসভার স্থান করে দিয়ে এবারে কেমন সরকার চালাবেন তা অনেকটা বুঝিয়ে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। ফুল টাইম রাজনীতিবিদ জাহাঙ্গীর কবির নানক,আব্দুর রহমান দলের সাথে সরকার পরিচালনায় এবার শেখ হাসিনা ও ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গী হয়েছেন। র আ ম ওবায়দুল মুক্তাদির চৌধুরী, উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ বা শহীদ তাজউদ্দিন কন্যা সিমিন হোসেন রিমি যে নতুন মন্ত্রী সভায় জনাকাঙ্খিত মন্ত্রী তাতে কোন সন্দেহ নাই।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রিসভার দপ্তর বন্টনও যথার্থ হয়েছে। ওবায়দুল কাদের, আনিসুল হক বা আসাদুজ্জামান খান কামাল স্ব স্ব মন্ত্রণালয় যে সফল মন্ত্রী তা বিরোধীরাও অস্বীকার করে না। শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার একসময়ের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা সদ্য বিদায়ী সরকারের বাকপটু ও কৌশলী তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ পররাষ্ট্র মন্ত্রী হিসেবে ভালো করবেন বলেই সবাই মনে করেন। মন্ত্রিসভার সবচেয়ে সিনিয়র ও বয়সে প্রবীণ মন্ত্রী আক ম মোজাম্মেল হক যেমন প্রধানমন্ত্রীর আস্থাভাজন ঠিক তেমনি বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রীর খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এবং টি এন টি ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকের পথ ধরে মোহাম্মাদ আলী আরাফাত, আহসানুল ইসলাম টিটো ও রুমানা আলী টুসি উচ্চশিক্ষিত সৎ ও স্বচ্ছ ইমেজধারী হিসেবেই মন্ত্রিসভায় জায়গা পেয়েছেন বলে দেশবাসীর ধারণা। মন্ত্রিসভা প্রাথমিকভাবে হয়তো আরেকধাপ কলেবর বৃদ্ধি করবে তখন বঞ্চিত এলাকা থেকে আরো অধিক যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গ মন্ত্রিসভায় স্থান করে নিবে বলে আশা করা যায়। সুদর্শন ফরহাদ হোসেন ও সহজ সরল সাদামাটা ফরিদুল হক খান দুলাল যোগ্যতা দিয়েই নিজ নিজ মন্ত্রণালয় প্রমোশন পেয়ে পুনরায় জায়গা করে নিয়েছেন।

শেখ হাসিনা এমন একজন রাজনীতিবিদ বা প্রধানমন্ত্রী তিনি যা ভাবেন বা করেন তা অনেক সময় তার প্রতিপক্ষ আন্দাজও করতে পারেন না। তিনি তার কাজ শতভাগ বিশ্বাস ও আস্থার সাথে করেন বলেই হয়তো সব বাধা বিপত্তি সফলভাবে উতরে যেতে পারেন। তিনি আবেগী তাতে কোন সন্দেহ নাই কিন্তু কাজের ক্ষেত্রে আবেগের চাইতে বাস্তবতাকে প্রাধান্য দিয়ে থাকেন বলেই প্রতিয়মান হয়। তিনি যেমন সাহসী তেমনি দূরদর্শী। কখন কোথায় কাকে কাজে লাগালে দেশের জন্য ভালো হবে তিনি তা ভালো করে জানেন এবং তা করেন। তিনি যেমন তরুণকে হাত ধরে টেনে তুলে নেন ঠিক একইভাবে প্রবীণকেও যথাযথ সম্মান দেন। দল ও সরকার পরিচালনায় তার যে সকল রাজনৈতিক সহকর্মী ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছেন এবং আনুগত্য থেকেছেন তারা কোন না কোন সময় মূল্যায়িত হয়েছেন, হয় সরকারে না হয় দলে। টানা এই ২০ বছরের যাত্রায় তা একেবারেই পরিষ্কার। কেউ কেউ যে রাজনীতির মাঠ থেকে একেবারে হারিয়ে যায়নি তা না। তার সবই তা তাদের নিজেদের জন্য, অস্থিরতার জন্য বা অদূরদর্শিতার জন্য। অন্যায় করলে বা সমালোচনামূলক কোনো কাজ করলে নিজের আত্মীয় -স্বজনসহ কোন পর্যায়ের নেতাকর্মীকেই একেবারে ছেড়ে দেননি শেখ হাসিনা। বৃহৎ রাজনৈতিক পরিবারের মন্ত্রী হওয়ার মতো যোগ্য রাজনীতিবিদকেও আত্মীয়তার কারণে সরকারে জায়গা দেননি। যাদের অনেকেই বহুবার এমপি হয়েছেন এবং রাজনীতিতে অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। একইভাবে নিজের যোগ্য ছেলে মেয়েকে বা বোন ভাগ্নীকে ক্ষমতার চেয়ার থেকে দূরে রেখেছেন। তারা নিজ যোগ্যতায় জাতীয় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।

একজন শেখ হাসিনা দেশ তথা বিশ্ব রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। পচাত্তর বয়স পেরিয়ে শেখ হাসিনার টানা চার বার তথা মোট পঞ্চম বারের মতো ক্ষমতায় যাবার প্রাক্কালে দ্বাদশ সংসদের মনোনয়ন থেকেই কাজ শুরু করেছিলেন। তারপর বিভিন্ন চক্রান্ত ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে সফলভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করে একটি যুগোপযোগী মন্ত্রিসভা গঠনের মাধ্যমে তার এবারের যাত্রা শুরু করেছেন। তিনি জনগণের মনের ভাষা বোঝেন। নিত্যপন্যের দাম যে কোন উপায়ে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে এসে মানুষকে স্বস্তি দিতে হবে তা যেমন তিনি জানেন। আবার যেকোনো মূল্যে কঠোরভাবে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরতে হবে তাও তিনি জানেন। আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে বিদেশে টাকা পাচার কঠোরভাবে রোধ করতে হবে বা নতুন নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি বেকারত্ব হ্রাস করতে হবে এবং সুশাসনে যে এবার আরো অধিক মনোযোগী হতে হবে তা মন্ত্রিসভা গঠন দেখেই বোঝা যায়। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা সহজলভ্য করে একেবারে প্রান্তিক মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হবে শেখ হাসিনার এই মনোভাব নবনিযুক্ত মন্ত্রীরা নিশ্চয় অনুধাবন করতে পারেন। আর এসবই একজন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে করা সম্ভব। এসব বাস্তবায়ন করেই স্মার্ট বাংলাদেশের পথে পা বাড়াবে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ তার কন্যার নেতৃত্বে। দেশবাসী এবার এটা আশা করে। অভিবাদন শেখ হাসিনা আপনাকে। যতদিন আপনার হাতে দেশ, সঠিক পথেই থাকবে বাংলাদেশ।

লেখক: কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ

সারাবাংলা/এসবিডিই

আমাদের একজন শেখ হাসিনা আছেন মত-দ্বিমত মো. আসাদ উল্লাহ তুষার

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর