Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ছাত্রলীগের হাতেই শেখ হাসিনার বিদায় ঘণ্টা

সাজ্জাদ কাদির
৯ আগস্ট ২০২৪ ১৬:১৮

‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে কান্নায় ভেঙে পড়লেন ছাত্রলীগ নেত্রীরা’ এমন একটি খবর বেরিয়েছিল ৩০ জুলাইয়ের পত্রপত্রিকায়। ২৯ জুলাই বিকালে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে হামলায় আহত ও নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীরা। এসময় তারা নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে,বুকে জড়িয়ে শান্তনা দিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

হ্যাঁ একথা সত্য যে সাম্প্রতিক কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেত্রীরা ব্যাপকভাবে নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। ১৬ জুলাই দিবাগত মধ্যরাতে রোকেয়া হল ছাত্রলীগের ১০ নেত্রীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল থেকে বের করে দিয়েছে হলের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একই সময়ে ঢাবির আরও কয়েকটি হল থেকে ছাত্রলীগ নেত্রীদের বের করে দেওয়া হয় খবর পেয়ে কোটা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের আক্রমণের ভয়ে সেদিন গভীর রাতেই বোরখা পরে আবাসিক হল থেকে পালিয়েছিলেন রাজধানীর ইডেন কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এসবের বাহিরেও ছাত্রলীগ নেত্রীদের বেঁধে পিটানোর দৃশ্যও আমরা দেখেছি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ নেতাদের করুণ পরিণতিও আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। ক্যাম্পাস ছেড়ে পালাতে হয়েছে এবং পালিয়ে যাবার পর হলে হলে তাদের রেখে যাওয়া রুমগুলো সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা আগুনে পুড়ে যেতে দেখলাম। দীর্ঘ ১৬ বছর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ছিল। সেখানে তাদেরই ভ্রাতৃপতীম সংগঠণ দোর্দণ্ড প্রতাপের সাথে অবস্থান করা ছাত্রলীগের হঠাৎ কেন এমনটা হল সেটি কী বিশ্লেষণ করে দেখার প্রয়োজন মনে করবেন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ কিংবা বর্তমান রাজনীতি?

বিজ্ঞাপন

বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি নিয়ে গৌরব করর মত গল্প আমরা শুনি বয়োজ্যেষ্ঠদের কাছে। কিংবা বইপত্র, পেপার পত্রিকাতেও পড়েছি ৫২, ৬২, ৬৬, ৬৯, ৭০, ৭১, ৯০-এর ছাত্র রাজনীতির ভূমিকার কথা। আর এসব আন্দোলনের প্রতিটিতে ছিল ছাত্রলীগের গৌরবজ্জল ভূমিকা। ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া বাংলাদেশ ছাত্রলীগের জন্মের পর থেকে বিগত ৭৬ বছরের পথচলাটাই এক গৌরবজ্জোল ঘটনা। তখন অবশ্য এই সংগঠনের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগ। আওয়ামী লীগের জন্মেরও দেড় বছর আগে জন্ম হয়েছিল ছাত্রলীগের। একবার ভাবুনতো পাকিস্তান সৃষ্টির মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে ছাত্রলীগের জন্ম হয়েছিল কেন? কয়েক মাসের মধ্যেই এই অঞ্চলের ছাত্র সমাজ বুঝে গিয়েছিল পাকিস্তান সৃষ্টির স্বপ্ন ভঙ্গের কথা। সেজন্যই ছাত্রলীগের জন্ম। বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। বাঙালি জাতির ইতিহাসের প্রতিটি অধ্যায় ও অর্জনে রয়েছে ছাত্রলীগের প্রত্যক্ষ ভূমিকা। এই সংগঠনটির প্রায় সতের হাজার নেতাকর্মীর আত্মত্যাগ রয়েছে আমাদের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে। জন্মের পর থেকে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়া সংগঠনটির নেতাকর্মীরা জাতীয় রাজনীতিতেও সব সময় সরব ছিলেন। বর্তমান জাতীয় রাজনীতির অনেক শীর্ষ নেতার রাজনীতিতে হাতে খড়িও ছাত্রলীগ থেকেই। ছাত্রলীগকে মানুষ এখন যে রূপে দেখছে, এটাইতো ছাত্রলীগের পুরো ইতিহাস না। ছাত্রলীগ সম্পর্কে গর্ব করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছিলেন, ছাত্রলীগের ইতিহাস বাঙালির ইতিহাস, ছাত্রলীগের ইতিহাস স্বাধীনতার ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের যথার্থতার প্রমাণ মেলে সংগঠনটির স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাসের দিকে চোখ রাখলে। অর্থাৎ ছাত্রলীগ হঠাৎ করে উড়ে এসে জুড়ে বসা ভূইফোঁড় সংগঠন নয়।

অথচ আজকে সেই ছাত্রলীগ কোথায়? এ প্রশ্ন করা উচিৎ ছাত্রলীগের বর্তমান কর্মীদের প্রত্যেকের নিজেদেরকেই। বিগত তিন দশকের ছাত্রলীগ এবং বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতির কথা কথা আমি সুস্পষ্টভাবে বলতে পারব। আমার নিজের বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই আমি ছাত্র রাজনীতি নিয়ে নিজ চোখে ইতিবাচক কিছু দেখিনি। যার কারণে এই শতকের শুরুতে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সব ছাত্র সংগঠন মিলিয়েও গোটা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শতাংশ ছাত্রকেও রাজনীতি করতে দেখিনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ কমিটি করার লোক খুঁজে পাওয়া যেত না। মিছিল করার লোকও দেখা যেত না। ছাত্রলীগের টেন্টে দুই চারজনকে বসে থাকতে দেখা যেত। এর কারণটা ছিল ছাত্র রাজনীতি নানা বিতর্কে জড়িয়ে তার আকর্ষণ হারানো। আমার নিজের ছাত্রজীবনও কেটেছে রাজনীতিহীন এবং ছাত্র রাজনীতিকে ঘৃণার চোখে দেখে। এর বদলে আমরা বেছে নিয়েছিলাম প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনকে। প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা বা সংগঠক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনটা কাটিয়ে দিয়েছি। যার কারণে পরবর্তী জীবনেও রাজনীতিকে কোনভাবেই গ্রহণ করতে পারিনি। বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের প্রচুর মন্দ কাজের মধ্যে ভালো কাজও ছিল। তার প্রসংশা করেছি আবার মন্দ কাজের সমালোচনাও করেছি। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সর্বোদায় উচ্চকণ্ঠ ছিলাম। আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে অবশ্য বহু সুবিধাবাদিকে বলতে শোনা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিরাট ছাত্রলীগ নেতা ছিলেন! ছাত্রলীগের স্লোগান শিক্ষা, শান্তি, প্রগতি। এই স্লোগানের তিনটি শব্দের একটিও ধারণ,লালন ও পালন করা হয় না। শুধু ছাত্রলীগ কেন? সকল ছাত্র রাজনৈতিক সংগঠনের একই অবস্থা। ছাত্র রাজনীতি এখন সাধারণ ছাত্রছাত্রীর নিকট কতটা অচল আর অপছন্দের গত মার্চে বুয়েটকে কেন্দ্র করে দেশবাসী সেটা বুঝেছিল। যাক সেসব কথা।

টানা চতুর্থ মেয়াদে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আরোহন করেছিল। অথচ তাদেরই ভাতৃপ্রতীম সংগঠন ছাত্রলীগ কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে অতি বাড়াবাড়ি করার কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এক পর্যায়ে প্রাণ হাতে করে নিয়ে পালিয়ে বেঁচেছিল। শুরুতে আন্দোলনটা ছিল শিক্ষার্থীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। সেখানে থাকতে পারে বাম, ডান, ছাত্রদল, শিবির নানা রাজনৈতিক মতাদর্শের শিক্ষার্থী। তারা আন্দোলন করছে করুক। সেখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে হুমকি হয়ে বাধা দেওয়ার কিছু ছিল না। কিন্তু ছাত্রলীগ শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের বাধা দিয়েছে, ভয়ভীতি দেখিয়েছে, অনেককে আন্দোলনে নামতেও দেয়নি। অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আর এক কাঠি সরেস হয়ে বলেছিলেন, “কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে কতিপয় নেতারা যে সব বক্তব্য রেখেছে, আত্মস্বীকৃত রাজাকার, যারা নিজেদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ মানসিকতার প্রকাশ ঘটিয়েছে; তার জবাব দেওয়ার জন্য ছাত্রলীগই যথেষ্ট।” আর যায় কোথায়? পেয়ে গেছি দায়িত্ব ভেবে ছাত্রলীগ আরও বেপরোয়া আচরণ করতে থাকে। এই বেপরোয়া আচরণের কারণে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা রাগে, ক্ষোভে ফুঁসছিল। বিশ্লেষকরা বলছেন, এবারের ছাত্র আন্দোলনের আগুনে তুষ ছিঁটিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং ছাত্রলীগ। শিক্ষার্থীরা সেই আগুনেরই বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে আন্দোলনের এক পর্যায়ে ছাত্রলীগ পেলেই কান ধরিয়ে, বেঁধে পিটিয়ে, হল থেকে বিতাড়ন করিয়ে কিংবা ছাত্রলীগ নেতাদের রুমে রুমে আগুন দিয়ে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এমন আচরণও কাম্য ছিল না। এ প্রসঙ্গে বঙ্কিমচন্দ্র চট্রোপাধ্যায়ের বিখ্যাত উপন্যাস ‘কপালকুন্ডলা’র বিখ্যাত উক্তি—‘তুমি অধম তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন?’-এর কথা মনে পড়ে যায়।

আর একটু গভীরে যদি যাই তাহলে প্রশ্ন জাগে ছাত্রলীগের প্রতি সাধারণ শিক্ষার্থীরা কি হঠাৎ করে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করেই ফুঁসে উঠল বা ক্ষুব্ধ হল? এক কথায় উত্তর হবে না। কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলমকে ছাত্রলীগ তকমা দেওয়ায় গত ২৬ জুলাই তার দেওয়া ফেসবুক স্ট্যাটাসের অংশ বিশেষ এখানে তুলে ধরছি, “২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারীতে ১ম বর্ষে থাকা অবস্থায় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অমর একুশে হলে উঠি। ঢাবির ছেলেদের হলে উঠার একমাত্র উপায় হচ্ছে পলিটিক্যালি উঠা। হলের সিটের ব্যাপারে প্রশাসনের তেমন কোনো হাত নেই। আপনি যে আদর্শে বিশ্বাস করেন না কেন বর্তমানে ঢাবির হলে থাকতে হলে অন্তত ১ম, ২য়, ৩য় বর্ষে আপনাকে ছাত্রলীগ করতে হবে। ছাত্রলীগের প্রোগ্রাম, গেস্টরুম করতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক। না হলে হলে থাকতে পারবেন না।” কী বুঝলেন? অর্থাৎ আপনার সন্তানকে কষ্টের টাকায় গ্রাম থেকে পাঠাবেন কিন্তু ছাত্রলীগ না করলে হলে থাকতে পারবে না। এ কোন অরাজকতা? সবাইকে কেন গণহারে ছাত্রলীগ করতে হবে? আদর্শহীন সবাইকে ছাত্রলীগ করাতে গিয়ে ছাত্রলীগ নেই হয়ে গেছে। শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির সেই ছাত্রলীগ নেই। সাধারণ ছাত্রছাত্রীর সিট দখল করে হলে হলে সিট বাণিজ্য যেন নেতাদের এক বৈধ পারমিট হয়ে গেছে। বিকৃত শিক্ষক সমাজ যারা হল প্রভোস্ট কিংবা হাউস টিউটরের দায়িত্ব পালন করেন তারা যেন এক একজন অন্ধ। দেখেও দেখেন না কিছু। আরও উপরে ভিসিদের কথা নাইবা বল্লাম। ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গ সংগঠন নয়; ভাতৃপ্রতিম (ভাইয়ের মত) সংগঠনের নেতাদের ক্ষেপিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে ভিসি হওয়ারা পদ হারাতে চান না হয়ত। নেতারা ক্যান্টিনে ফাও খাওয়া, এমনকি হলের সেলুনে চুল-দাড়ি কাটাটাও ফাও কাটাতে চান। র‌্যাগিংয়ের নামে সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের অত্যাচার, নির্যাতন, টর্চার যেন নিত্য ব্যাপার। নিজেদের রাজা বাদশা মনে করে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের প্রজা ভাবতেন নেতারা। আর এই ভাবনা থেকে একটু চুন থেকে পান খসলেই চলে নির্যাতন। দীর্ঘদিনের লাঞ্চনা, বঞ্চনা আর ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ সাম্প্রতিক ছাত্রলীগের বিতাড়ন পর্ব। শঙ্কা আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুললেও এই ছাত্রলীগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহে ফিরতে পারবে কিনা। ছাত্র সংগঠন ছাত্রদের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করবে সেটাইতো হওয়া উচিৎ। কিন্তু কাজ করে নিজেদের স্বার্থে। দলের লেজুড়বৃত্তি করে বেড়ায়। এখনকার ছাত্রলীগের কর্মীরা ছাত্রলীগের গৌরবজ্জোল ইতিহাস জানে না। জানলেও চর্চা করে না। স্লোগানের শিক্ষা, শান্তি, প্রগতির চর্চা করে না। ছাত্রলীগকে বদলাতে হবে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের মাথায় হাত বুলিয়ে, বুকে জড়িয়ে শান্তনা দিয়েছেন ভালো কথা। কিন্তু তারা কেন নির্যাতিত হলেন শেখ হাসিনা অবশ্যই সেটাও জানেন। নিশ্চয়ই ভবিষ্যতে তাদের সঠিক পথে চলার কথা বলবেন তিনি। সঠিক পথে না চলতে পারলে দরকারটা কি? বন্ধ করে দিন ছাত্রলীগ। অনেকে বলে থাকেন ছাত্র সংগঠন থেকে ভবিষ্যতের নেতা তৈরি হয়। গত তিন দশক ছাত্র সংগঠন কেমন নেতা তৈরি করেছে একটু বিশ্লেষণ করুন তাহলেই বুঝবেন। যে সব নেতা তৈরি করে সেসব দেশের দশের কতটা কাজে লাগে? কাজে লাগেনা বলেই জাতীয় সংসদে ছাত্র নেতাদের জায়গা হয় না। নেতা যদি তৈরি করতই তাহলে সংসদ ব্যবসায়ী দিয়ে ভরে উঠত না। আর কিছু বলতে চাই না এ বিষয়ে।

ছাত্রলীগ নেত্রীদের মাথায় হাত বুলিয়ে দেওয়ার চাইতেও সেই মুহূর্তে বেশি দরকার ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের মাথায় হাত বুলিয়ে ঠাণ্ডা করা। কারণ তারা সংখ্যায় ছাত্রলীগের চেয়েও শতসহস্র গুণ বেশি। একটি জাগরণের কারণে সাধারণ মানুষও শেখ হাসিনা সরকারকে দোষারোপ করেছে আর ছাত্রদের সমর্থন দিয়েছে। এই পালসটা বুঝতে পারেননি শেখ হাসিনা। দলীয় মতলববাজ চাটুকারদের কথায় ভজে ছিলেন তিনি। মতলববাজরা সব ঠিক আছে, ঠাণ্ডা করে দিয়েছি বলে গলা ফাটিয়েছেন। কিন্তু ঝড় আসলে যে তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না সেটা বোঝেননি সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে করে দেশের শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট হয়েছে। জানমালের ক্ষতি হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ শান্তি চায়;অরাজকতা চায় না। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের মাথায় হাত বুলিয়ে ঠাণ্ডা না করাটা ছিল শেখ হাসিনার চরম ভুল। যে ভুলের মাসুল দিতে হল ক্ষমতা হারিয়ে। তাইতো একথা বল্লে ভুল হবে না যে অনেকগুলো ভুলের মধ্যে ছাত্রলীগের হাতেই শেখ হাসিনার বিদায় ঘন্টা বেজে উঠল।

লেখক: গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব

সারাবাংলা/এজেডএস

ছাত্রলীগের হাতেই শেখ হাসিনার বিদায় ঘন্টা বেজে উঠল সাজ্জাদ কাদির

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর