একটা সময় পর্যন্ত ধান, পাট বা অন্য ফসল চাষই ছিল বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকার চাষিদের সহায়। তবে সে চাষবাসে অনেকেই লাভের মুখ দেখতে ব্যর্থ হতেন। সংসার চলত না অনেকের। একটা সময় গিয়ে তারা শুরু করেন পান চাষ। এলাকার পর এলাকা গড়ে উঠতে থাকে পানের বরজ। সেই পান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে শুরুতে যেতে থাকে দেশের বিভিন্ন এলাকায়। সে পানের সুনাম ছড়াতে থাকে, চাহিদা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সে পান গন্তব্য হিসেবে খুঁজে নেয় মধ্যপ্রাচ্যকে।
স্থানীয়রা বলছেন, বিষমুক্ত পদ্ধতিতে পান উৎপাদনের নানা কৌশল প্রয়োগ করে থাকেন এখানকার চাষিরা। তাতে ফলন বেড়েছে, স্বাদও বেড়েছে পানের। রফতানি পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার পর থেকে পান চাষে আয়ও বেড়েছে, চাষিদেরও উৎসাহ বেড়ে গেছে। তারা জানালেন, বাংলাদেশে উৎপাদিত পান ওমান, কাতার ও সৌদি আরবসহ ১০ থেকে ১৫টি দেশে রফতানি হয়। আর তার মধ্যেই বড় একটি অংশের জোগান দেয় বাগেরহাট।
কৃষকরা জানান, এক একর জমিতে প্রথম বছর পান চাষে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়। এরপর ওই জমি থেকে প্রায় সাত বছর ধরে পান তোলা যায়। এই পান চাষকে ঘিরে কেবল চাষিই নয়, গোটা এলাকার চিত্রই বদলে গেছে। যাদের নিজেদের পানের বরজ নেই, তারা অন্যের বরজ তৈরি, চারা রোপণ, পরিচর্যা, পান সংগ্রহসহ বিভিন্ন কাজে নিয়োজিত। এছাড়া শুধু পানকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে বেশকিছু হাট ও আড়ত। এসব জায়গায় পান বাজারজাতকরণের কাজেও অনেকের কর্মসংস্থান হয়েছে। মোট কথা বাগেরহাটের অর্থনীতির বড় একটি অংশ এখন দখল করে নিয়েছে পান চাষ।
বাগেরহাটের ফকিরহাট এলাকা থেকে ছবি তুলেছেন সারাবাংলার সিনিয়র ফটো করেসপনডেন্ট মো. হাবিবুর রহমান
- অনেকে বাড়িতে নিয়ে এসে বাছাই করেন পান
- সেই কাজেও অনেক সময় বাড়তি লোক নিতে হয়
- পান চলেছে বাজারে
- আড়তে নামার জন্য প্রস্তুত পান
- পানের হাটে পান সাজিয়ে বসে আছেন চাষিরা
- অনেকে আবার চাষিদের কাছ থেকে পান কিনে এনে হাটে তোলেন
- ক্রেতারা দেখে নিচ্ছেন কেমন পান এসেছে বাজারে
- এমন থরে থরে সাজানো পান দিন শেষে চলে গেছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, কিছু বিদেশেও