ফড়িংয়ের পাখাগুলোর গঠনও চমৎকৃত হওয়ার মতো। চারটি পাখা ফড়িং স্বতন্ত্রভাবে চালাতে সক্ষম!
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তার ‘বিলাসী’ গল্পে লিখেছিলেন— ‘অতিকায় হস্তী লোপ পাইয়াছে কিন্তু তেলাপোকা টিকিয়া আছে।’ শরৎবাবু যে প্রেক্ষাপটে এই অমর বাক্যটি রচনা করেছিলেন, সেই প্রসঙ্গের বাইরে গিয়েও বলা যায়— প্রাগৈতিহাসিক কোনো প্রাণীর কথা উঠলে তেলাপোকাই ঘুরেফিরে আসে। অথচ বিজ্ঞান বলছে, ফড়িং, যাকে ধরার জন্য কি না শিশু-কিশোররা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পরিশ্রম করেও হাঁপিয়ে যায়, সেই ফড়িংও কিন্তু প্রাগৈতিহাসিক যুগেরই প্রাণী এবং দিব্যি টিকে রয়েছে এই একবিংশ শতাব্দীতেও!
শহুরে জীবনে তেমন একটা চোখে না পড়লেও গ্রামেগঞ্জে ছোট্ট এই পতঙ্গের দেখা কিন্তু হরহামেশাই মেলে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের চোখে পড়লে ফড়িং না ধরা পর্যন্ত যেন শান্তি নেই। কিন্তু এই ফড়িং কাছে আসে, বসে— কিন্তু ধরাটাই দেয় না। তবু বাহারি রঙে আর নকশার শরীর নিয়ে সারাদিন যে নিত্য ওড়াউড়ি, তাতেই বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যের প্রতীক যেন ফড়িং।
বান্দরবানের বেতছড়া এলাকা থেকে চপলাচপল ফড়িংগুলোর ছবি তুলেছেন সারাবাংলার ফটো করেসপন্ডেন্ট শ্যামল নন্দী
-
-
বিজ্ঞানীরা বলছেন, বৃহদাকৃতির ফড়িং, অর্থাৎ আজকের ফড়িংদের পূর্বপুরুষের সন্ধান পাওয়া গেছে সেই সাড়ে ৩২ কোটি বছর আগে!
-
-
ওই সব ফড়িং অবশ্য লম্বায় হতো আড়াই ফুট পর্যন্ত, আর একপাশের পাখার মাথা থেকে অন্য পাশের মাথার দূরত্বও হতো প্রায় একই সমান
-
-
বাচ্চা ফড়িং বা নিম্ফের শরীর বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত খুব নাজুক অবস্থায় থাকে। সে কারণে বাচ্চা ফড়িংয়ের বেশিরভাগই অন্য প্রাণীর শিকারে পরিণত হয়
-
-
ছোট ছোট প্রায় ২৪ ওমাটিডিয়া দিয়ে তৈরি হয় ফড়িংয়ের চোখ। এই ওমাটিডিয়াকে বলা যেতে পারে ছোট ছোট লেন্স
-
-
চোখের এমন গঠনের কারণেই ফড়িং মানুষের চেয়েও অনেক বেশি রঙ দেখতে পায়
-
-
ফড়িংয়ের পাখাগুলোর গঠনও চমৎকৃত হওয়ার মতো। চারটি পাখা ফড়িং স্বতন্ত্রভাবে চালাতে সক্ষম!
-
-
আর এর মাধ্যমে সমান দক্ষতায় সামনে-পেছনে তো বটেই, ওপরে-নিচেও চলাচল করতে পারে ফড়িং। শরীর না নড়িয়ে ভেসেও থাকতে পারে!
-
-
শরীরের উপযোগী তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করতে বিভিন্ন কৌশল রয়েছে ফড়িংয়ের, ফলে সহজে আবহাওয়ায় কাবু হয় না। এ কারণেই হয়তো কোটি কোটি বছর ধরে টিকে রয়েছে বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যের প্রতিরূপ হয়ে
ফড়িং
বাহারি ফড়িং
বৈচিত্র্যময় ফড়িং
সৌন্দর্য