সংস্কারের ছোঁয়ায় আদি রূপে ফিরবে লালকুঠি | ছবি
৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৮:৩৭ | আপডেট: ৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ১১:৩৯
১৮৭৪ সাল। ভারতের গভর্নর জেনারেল জর্জ ব্যারিং নর্থব্রুক আসবেন ঢাকা সফরে। তার সফরকে স্মরণীয় করে রাখতে বুড়িগঙ্গার তীরে ফরাশগঞ্জে নির্মাণ করা হলো এক নান্দনিক টাউন হল। গভর্নরের নামে এর নাম দেওয়া হলো নর্থব্রুক হল। সফরের পর গভর্নর ফিরে গেলেও নর্থব্রুক হল হয়ে উঠল ফরাশগঞ্জসহ গোটা এলাকার অন্যতম প্রাণকেন্দ্র, গুণীজনদের উপস্থিতিতে হয়ে উঠল ঢাকার বিনোদন আর সংস্কৃতিচর্চার তীর্থস্থান। এমনকি সাহিত্যে নোবেলজয়ের পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয়েছিল লাল এই ভবনটিতেই, মুখে মুখে যার নাম হয়ে গেল লালকুঠি।
প্রায় দেড় শ বছরের পুরনো সেই নর্থব্রুক হল তথা লালকুঠি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে পড়েছিল জরাজীর্ণ। সংস্কার আর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে জৌলুস হারিয়ে পোড়োবাড়িতে পরিণত হতে বসেছিল। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে সেই বিধ্বস্ত অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে যাচ্ছ লালকুঠি। সংস্কারে আবারও পুরনো রূপে ফেরানো হচ্ছে একে। আদি নকশা অনুযায়ী সাজানো হচ্ছে কাঠের দরজা-জানালা, ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে কারুকাজ।
ফরাশগঞ্জে গিয়ে লালকুঠিতে চলমান সংস্কার কর্মকাণ্ডের ছবি তুলেছেন সারাবাংলার ফটো করেসপন্ডেন্ট সুমিত আহমেদ
- বুড়িগঙ্গার তীরে এক বিঘা জমির ওপর তৈরি হয় নর্থব্রুক হল।
- টাউন হল হিসেবে গড়ে তোলা হয় ভবনটি, যাতে মিলনায়তন ছাড়াও ছিল একটি নাট্যালয়।
- ভবনের দুই পাশে দুটি করে রয়েছে চারটি সুশোভিত অষ্টভুজাকৃতির মিনার।
- লালকুঠির সবগুলো দরজা অশ্বখুরাকৃতি ও অর্ধ-বৃত্তাকার।
- মিনার, দেয়াল, দরজা, ঘুলঘুলিসহ লালকুঠির প্রতিটি স্থানে ছিল নান্দনিক নিখুঁত কারুকাজ।
- ভবনটির অন্যতম এক বৈশিষ্ট ছিল— এটি দক্ষিণ দিক থেকে দেখতে লাগত একরকম, উত্তর দিক থেকে সম্পূর্ণ ভিন্নরকম।
- সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা স্থাপনা গড়ে ওঠায় আগের মতো দুই পাশ থেকে পূর্ণরূপে দৃশ্যমান নয় লালকুঠি।
- ২০১৬ সালে ভবনটির ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়।
- সম্প্রতি আবার ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ভবনটির সংস্কারকাজ শুরু করেছে।
- আদি নকশা অনুযায়ী লালকুঠিকে পুরনো রূপে ফিরিয়ে আনার কর্মযজ্ঞ চলছে পূর্ণোদ্যমে।
- ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন বলছে, আদি রূপ ফিরে পেয়ে লালকুঠি শিগগিরই আগের মতো জমজমাট হয়ে উঠবে।
সারাবাংলা/টিআর