July 5, 2018 | 10:52 pm
।। সারাবাংলা ডেস্ক।।
ঢাকা: কোটা সংস্কার আন্দোলন কর্মসূচি চলাকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হামলাকারীদের হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তেজগাঁও কলেজের প্রথমবর্ষের ছাত্রী মরিয়ম মান্নান ফারাহ।
গত ২ জুলাই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সরকারি চাকরিতে বিদ্যমান কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের সমাবেশে হামলা চালানো হয়। সেদিন আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছিলেন তেজগাঁও কলেজে স্নাতক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মরিয়ম। আন্দোলনকারীদের ওপর বিরোধীদের হামলার সময় তিনি এগিয়ে যান মার খাওয়া মানুষগুলোকে বাঁচানোর জন্যে। উল্টো তিনি হন লাঞ্ছনার শিকার।
সেদিনের সেই পরিস্থিতি মরিয়ম তুলে ধরেন আজ (৫ জুলাই) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলের সামনে এক সাংবাদিক সম্মেলনে। জানান, কীভাবে তাকে অপমানিত করা হয়েছিল। জানান, কীভাবে প্রথমে তাকে লাঞ্ছিত করেছিল হামলাকারীরা, পরে পুলিশ সদস্যরা।
তিনি বলেন, ‘যখন দেখি ফারুক ভাইকে মারছে তখন আমি ভিড়ের মধ্যে চলে গিয়েছিলাম তাকে রক্ষা করার জন্য। যাওয়ার পর যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তা ভিডিওচিত্রে আপনারা দেখছেন। তার পুরোটা ভাষায় বলা সম্ভব না।’
সেই পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে মরিয়ম বলেন, ‘ওরা (লাঞ্ছনাকারীরা) যখন বলেছিল থানায় নিয়ে চল, মনে হয়েছে যে থানায় নিয়ে গেলে আমি সেফ। কিন্তু, মনে হলো থানা আমার জন্য সেকেন্ড জাহান্নাম।’
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, ফেসবুকে পোস্ট দেখে স্বপ্রণোদিত হয়েই আন্দোলনে যোগ দিতে এসেছিলেন। তারপর এসে দেখেন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ-এর যুগ্ম আহ্বায়ক ফারুক হাসানকে আন্দোলনবিরোধীরা পেটাচ্ছে।
মরিয়ম বলেন, ‘এটা একটি যৌক্তিক আন্দোলন। একজন মানুষ হিসেবে আমার কিছু অধিকার আছে। এখানে আসার অধিকার আমার আছে। বেঁচে থাকার অধিকার আমার আছে।’
মরিয়ম বলেন, ‘আমি সিএনজিতে উঠেছিলাম বাসায় যাওয়ার জন্য। সেই সিএনজিটা ঘিরে ধরেছিল অন্তত ২০০ মোটরসাইকেল। আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। তারা আমার ফোন-ব্যাগ নিয়ে যায়।’
এরপর তারা সিএনজির ভেতরেও ঢুকছে, তাকে নোংরা কথাগুলো বলছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এরপর আমাকে ওখান থেকে শাহবাগ থানায় নিয়ে গিয়েছে। কিন্তু, সিএনজির প্রত্যেকটা মুহূর্ত আমার কাছে ছিল জাহান্নাম। তা আমি বলতে পারব না।’
থানায় নিয়ে যাওয়ার পর তার ব্যাগ খোলা হয় বলে জানান মরিয়ম। সেসময়ের পরিস্থিতি ও পুলিশ কর্তৃক মানসিক নিপীড়ন-লাঞ্ছনার বর্ণনা দেন তিনি। মরিয়ম বলেন, তার ব্যাগে ছিল একটি পানির বোতল ও দুইটা মেকআপ বাক্স। অথচ পুলিশ আমার ব্যাগ থেকে বের করলো একটা ছুরি’ বলেন লাঞ্ছনার শিকার ওই শিক্ষার্থী।
সারাবাংলা/একে