বিজ্ঞাপন

ভারতে ১৮ শতকের হাজারো ‘রকেট ক্ষেপণাস্ত্র’ উদ্ধার

July 28, 2018 | 5:13 pm

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় কর্ণাটক রাজ্যে ১৮ শতকে ব্যবহৃত এক হাজারেরও বেশি ‘রকেট ক্ষেপণাস্ত্র’ উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (২৭ জুলাই) দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শিমোগা জেলার একটি পরিত্যক্ত কূপ থেকে এগুলো উদ্ধার করা হয়।

ভারতের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী পরিচালক বলেছেন, এসব ক্ষেপণাস্ত্র মহীশুরের শাসনকর্তা টিপু সুলতানের আমলের। যুদ্ধের সময় ব্যবহারের জন্য তিনি এসব ক্ষেপণাস্ত্র ওই কূপে মজুদ করে রেখেছিলেন। প্রবল পরাক্রমশালী ভারতীয় এই শাসক ১৭৯৯ সালে ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে চতুর্থ এ্যাঙ্গলো-মিসৌরি যুদ্ধে মারা যান।

বিজ্ঞাপন

নেপোলিয়নের সময়ে বিভিন্ন যুদ্ধে যে ধরনের ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছিল, বলা হয়ে থাকে টিপু সুলতানও ওই একই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের ভাণ্ডার গড়ে তুলেছিলেন। শক্তিশালী ইস্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানির সঙ্গে লড়াইয়ে রকেট ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তির উন্নয়ন নিয়ে গবেষণায় জোর দেন তিনি। এসব রকেটের জ্বালানী কক্ষ হিসেবে লোহার তৈরি বাক্স ব্যবহার করা হতো।

ধাতব কাঠামোর জন্য রকেটের জ্বালানী অর্থাৎ ব্ল্যাক পাউডারের বিস্ফোরণ অধিকতর প্রকট হতো। এর ফলে সৃষ্টি হতো অধিক গতিবেগ, রকেট পাড়ি দিতে পারতো আরও বেশী পাল্লার দূরত্ব (সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটার পর্যন্ত)। সে সময়ের ইউরোপের রকেটগুলোর দূরত্বের পাল্লা বা গতিবেগ এর কাছাকাছিও ছিল না।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও টিপু সুলতান রকেটের সঙ্গে তরবারি সংযুক্ত করে একটি পদ্ধতি উদ্ভাবনের ধারণা দেন। এটি নির্দিষ্ট দূরত্ব উড়ে শত্রুর কাছাকাছি যাওয়ার পর যেন ঠিকভাবে ঘুরে গিয়ে তরবারির অগ্রভাগ দিয়েই আঘাত হানতে পারে। তবে মহীশুরের রকেট ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতের জন্যে সাধারণত চার ফুট লম্বা বাঁশের ফলা ব্যবহার করা হতো। এটি খাঁজের মাধ্যমে সংযুক্ত থাকতো লোহার তৈরি জ্বালানি প্রকোষ্ঠের সঙ্গে।

এ জ্বালানি কক্ষ হিসেবে সাধারণত আট ইঞ্চি লম্বা এবং দেড় থেকে তিন ইঞ্চি ব্যাসের লোহার টিউব ব্যবহার করা হতো। এ টিউবের ব্যাস ও লক্ষ্যবস্তুর দূরত্ব হিসেব করে একটি নির্দিষ্ট কৌণিক দিকে রকেট নিক্ষেপ করতে হতো। এজন্য রকেট সৈনিকরা বিশেষভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হতেন। এছাড়াও ছিল বিশেষভাবে নির্মিত রকেট লঞ্চার, যার থেকে একসঙ্গে পাঁচ থেকে দশটি রকেট নিক্ষেপ করা যেত।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ওই কর্মকর্তা বার্তা সংস্থা এএফপি’কে আরও জানিয়েছেন, যেখান থেকে এ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়েছে সেখানকার মাটি দিয়ে বারুদের গন্ধ বের হচ্ছিল। মূলত ওই গন্ধের সূত্র ধরেই এসব ক্ষেপণাস্ত্রের সন্ধান পাওয়া যায়।

বিজ্ঞাপন

১৫ সদস্যের একটি দল তিন দিন খনন কাজ চালানোর পর ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর খোঁজ পাওয়া যায়। এগুলো প্রদর্শনের জন্য শিমোগার একটি জাদুঘরে রাখা হবে।

সারাবাংলা/এএস

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন