বিজ্ঞাপন

এবার ট্রাম্প-রুহানি বৈঠক?

July 31, 2018 | 10:39 am

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

নিন্দুকেরা যাই বলুক। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘শত্রুদের’ সঙ্গে আন্তরিকতা দেখাতে বাকি রাখছেন না। ঐতিহাসিক ট্রাম্প-কিম, ট্রাম্প-পুতিন বৈঠকের পর এবার হয়তো সবশেষ, ট্রাম্প-রুহানি বৈঠক দেখবে বিশ্ববাসী। সোমবার (৩০ জুলাই) হোয়াইট হাউজে সাংবাদিকদের দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প এমন সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন বলে বিবিসি নিশ্চিত করেছে।

কোন রকম পূর্বশর্ত ছাড়া, যেকোন সময় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানির সাথে দেখা করতে ইচ্ছুক জানিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি আলোচনায় বিশ্বাস করি। যে কারো সাথে আমি কথা বলতে প্রস্তুত। তারা চাইলেই আমাদের সাক্ষাৎ হবে।’

প্রেসিডেন্টর এমন সিদ্ধান্তে সাথে সহমত জানিয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্টের কথায় মোটেও অবাক হয়নি। ইরান তার চরিত্র বদলালে এই সিদ্ধান্তে আমার সমর্থন রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

ট্রাম্পের প্রশংসা করে পম্পেও বলেন, তিনি সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন। অনেকে হয়তো এই বিষয়টা ভিন্ন চোখে দেখতে চাইবে। কিন্তু ট্রাম্পকে গত দুবছর যেভাবে দেখেছি, আমি জানি সমস্যার সমাধানে আলোচক হিসেবে তিনি খুব দক্ষ ও তার সিদ্ধান্তে সবার আগ্রহ থাকে।

গত মে মাসে মাইক পম্পেও ইরানের সাথে যেকোন নতুন চুক্তির আগে ১২টি শর্ত জুড়ে দিয়েছিলেন। তার দেওয়া শর্তগুলোর মধ্যে ছিল, সিরিয়া থেকে সৈন্য প্রত্যাহার ও ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের ইরানের যে কোন ধরনের সাহায্য দেওয়া বন্ধ করা।

এদিকে ট্রাম্পের আলোচনায় আগ্রহের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট রুহানির উপদেষ্টা হামিদ আবু তালেবি। এক টুইট বার্তায় তালেবি বলেন, ইরানকে সম্মান জানানো ও পারমাণবিক চুক্তির পুনর্বহালই একমাত্র আলোচনার পথ প্রসারিত করতে পারে।

বিজ্ঞাপন

তবে এর আগে ট্রাম্প ও রুহানি কথার লড়াই চালিয়েছেন বেশ কয়েকবার। ট্রাম্প গত সপ্তাহে এক প্রতিক্রিয়ায় বলেন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ালে, ইরানকে এমন পরিণাম ভোগ করতে হবে, যা আগে কেউ দেখেনি।

রুহানি বলেন, ইরানের সাথে শান্তিই হবে সবচেয়ে উৎকৃষ্ট, যুদ্ধ হবে ভয়াবহ ও নিকৃষ্ট। রুহানি ইরানকে শান্তিতে সব ‘শান্তির মা’ ও যুদ্ধে সব ‘যুদ্ধের মা’ বলে অভিহিত করেন।

২০১৫ সালে ভিয়েনায় ছয়টি বৃহৎ শক্তি যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়া, চায়না ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাথে ইরানের পারমাণবিক চুক্তি হয়েছিল। চুক্তি অনুসারে দেশগুলো ইরানকে প্রতিবছর ১১০ বিলিয়ন ডলারের অর্থনৈতিক সুবিধা দিতে রাজি হয়। বিনিময়ে ইরান কোন ধরনের পারমাণবিক অস্ত্র বানাবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।

গত ৮ মে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ইরানকে এখনও হুমকি উল্লেখ করে চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নেয়। সিরিয়াতে সৈন্য পাঠানো ও আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে ইরানের উত্থান ও বিকাশ ভালভাবে নিতে পারেনি যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ও ইসরায়েল অভিযোগ করে আসছে পারমাণবিক প্রযুক্তিতে ইরানের এখনো উচ্চাভিলাষ রয়েছে। সেই সুর তুলে ট্রাম্পও বলেন, ইরানের সাথে হওয়া পারমাণবিক চুক্তিটি ছিল একপেশে ও দেশটিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য যথেষ্ট নয়।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করায় ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি এই মাসের প্রথম দিকে হুঁশিয়ারি তুলে বলেন, ইরানের তেল রপ্তানি বাধাপ্রাপ্ত হলে, পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তেল রপ্তানির সুযোগ দেবে না তার দেশ। ওমান এবং ইরানের ভাগে থাকা গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্রপথ হরমুজ প্রণালিকে বন্ধ করার ইঙ্গিত করে রুহানি একথা বলেন। প্রতিদিন ১৮.৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল রপ্তানিতে উপসাগরীয় দেশগুলো এই সমুদ্রপথটি ব্যবহার করে থাকে। পরবর্তী ইরানের ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি রুহানির সাথে সহমত জানান। আমেরিকানদের মুখের কথায় বিশ্বাস নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

ট্রাম্প-রুহানি বৈঠক বাস্তবায়িত হলে, ১৯৭৯ সালের ইরানি বিপ্লবের পর দুদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে এটি উল্লেখযোগ্য আলোচনা হিসেবে বিবেচিত হবে।

সারাবাংলা/এনএইচ/এসএমএন

আরও পড়ুন,

যুক্তরাষ্ট্রকে ‘ঐতিহাসিক অনুশোচনা’ করতে হবে : রুহানি
আমেরিকানদের মুখের কথায় বিশ্বাস নেই : আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন