বিজ্ঞাপন

আমার অচেনা শেখ কামাল

August 7, 2018 | 3:43 pm

অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) ।।

বিজ্ঞাপন

৫ আগস্ট ছিল শেখ কামালের জন্মদিন। ‘সতীর্থ-স্বজন’ দ্বিতীয়বারের মত এবছরও জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় দাদার আমন্ত্রণে আমিও ছিলাম সেখানে। ছিমছাম, সাদামাটা আয়োজন। আলোচকরা প্রত্যেকেই শেখ কামালের বন্ধু। তার ছাব্বিশ বছর দশ দিনের স্বল্প পরিসর কিন্তু ঘটনাবহুল জীবনের এরা প্রত্যেকেই সাক্ষী, সঙ্গী। স্মৃতিচারণের এক পর্যায়ে পরবর্তী প্রজন্মের দৃষ্টিতে শেখ কামালকে তুলে ধরতে আমার প্রতি হঠাৎই সঞ্চালক পীযূষ দা’র আহ্বান। বিব্রত আমি, অপ্রস্তুততো বটেই।

আমি কে? আমি বাজি ধরে বলতে পারি সেদিনের সেই আলোচনা সভায়তো বটেই এমনকি এই লেখাটিও যারা পড়ছেন তাদের বেশিরভাগের কাছেই আমি ব্যাক্তিগতভাবে অচেনা। আর যারাওবা চেনেন তাদের কারো কাছে আমি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের লিভার বিভাগের চেয়ারম্যান তো কারো কাছে ল্যাবএইড স্পেশালাইজড হাসপাতালের লিভারের চিকিৎসক। কারো কারো কাছে আমি ন্যাসভ্যাকের উদ্ভাবকতো ইদানিং কারো কারো কাছে আমি ‘বারেক সাহেব’ সিরিজের লেখক। কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি যারা আমাকে ব্যাক্তিগতভাবে চেনেন তারা প্রত্যেকেই জানেন যে আমি এই জীবনে কখনোই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের বাইরে অন্যকিছুকে ধারণ করিনি। ১৯৮৬ সালে ঢাকা কলেজের করিডোরে পা দেয়ার পর থেকেই এই আদর্শের সাথে আমার সখ্যতা। এই আমিও কিন্তু স্বপ্নেও ভাবিনি যে এই আদর্শের অনুসারীরা একদিন জাতীয় সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বসবেন। শুধুমাত্র একটি আদর্শিক জায়গা থেকে নৌকার শ্লোগান দিয়েছি, এক দড়িতে ফাঁসি চেয়েছি সাঈদি’র-নিজামী’র। ধাওয়া খেয়েছি, ধাওয়া করেছে পাইপগানের ছড়ড়া গুলি। খেয়েছি টিয়ার শেলও, কিন্তু সংবিধানের চার মূলনীতি আবারও সন্নিবেশিত হবার স্বপ্ন তারপরও হৃদয়ে লালন করেছি। অথচ এই আমার কাছেও শেখ কামাল অচেনা একজন। আর শুধু আমি কেন, ভাঙ্গা স্যুটকেসের ভেলকিতে প্রতারিত আমার প্রজন্মের যে কোন কারো কাছেই তিনি তাই-ই।

অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে মেজর জেনারেল (অবঃ) সাইদ আহমেদ যখন ১৯৭১-এর জুন থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডুয়ার্সের জঙ্গলে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচের ক্যাডেট অফিসারদের ট্রেনিং-এর কঠিন সময়গুলোর সাবলীল বর্নণা দিচ্ছিলেন তখন অবাক হয়ে শুনছিলাম তার সহকর্মী, একজন রাষ্ট্রপতির ছেলে শেখ কামালের সাথে তার কাটিয়ে আসা সময়গুলোর কথাও। তিস্তার শাখা নদীতে ট্রেনিং-এর সময় হারিয়ে যাওয়া রাইফেল উদ্ধারে তাদের পাঁচ দিনব্যাপি প্রানান্ত প্রয়াস তাতে সক্রিয় অংশগ্রহণ শেখ কামালের। এ্যামবুশ ট্রেনিং-এর সময় দুর্ঘটনাক্রমে আহত ক্যাডেট অফিসারকে ট্রাক্টরে তুলে এমআই রুমে নিয়ে ছুটছেন শেখ কামালই। একদিকে মশার কামড়ে রাতের পর রাত ঘুমাতে পারছেন না, অথচ অন্যদিকে কঠিন ট্রেনিং শেষে ঘুমাতে চেষ্টা করতে যাওয়ার আগে ক্যাডেট অফিসারদের কমনরুমে হারিকেনের আলোয় হারমোনিয়ামে স্বাধীন বাংলা বেতারের গান গেয়ে উদ্দীপ্ত করছেন সহকর্মীদের। কোনো কারণ ছাড়াই কমান্ডেন্টের কাছে প্রকাশ্যে শুনতে হয়েছে রাষ্ট্রপতির ছেলে হিসাবে কোন বাড়তি সুবিধা যেন প্রত্যাশা না করেন। প্রতিবাদতো দূরে থাক টু-শব্দটিও করেননি। অথচ ক্যাডেট অফিসারদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহে প্রতিবাদী হয়েছেন উচ্চকন্ঠে। আর ট্রেনিং শেষে ফলাফল? বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রথম ব্যাচের কমিশনপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন (অবঃ) শেখ কামালের নাম ছিল মেধা তালিকায় পঞ্চম।

বিজ্ঞাপন

স্বাধীন দেশে সেনাবাহিনীর চাকরী ছেড়ে দায়িত্ব নিয়েছিলেন যুব সমাজকে সংগঠিত করার। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হিসাবে একদিকে সক্রিয় নেতৃত্ব দিয়েছেন, তেমনি যুব সমাজকে খেলায়-গানে-নাটকে মাতিয়ে একটা সুন্দর সমাজের প্রত্যাশায় কাজও শুরু করেছিলেন।

আবাহনী ক্রীড়া চক্রের যাত্রা শুরু তার হাতে ধরে, একথা জানা সবার। কিন্ত আমরা কি জানি আধুনিক জার্সি পরে, আধুনিক বুট পায়ে, আধুনিক ফুটবল দিয়ে ছোট-ছোট পাসে এদেশে আধুনিক ফুটবল খেলার জনকও তিনি। খেলতেন নিজেও। খেলতেন ফুটবল, ক্রিকেট, বাস্কেটবল আর ভলিবল। খেলেছেন আজাদ স্পোর্টিং ক্লাব, আবাহনী ক্রীড়া চক্র আর স্পারস-এ। বিশ্বাস  করতেন একজন ক্রীড়াবিদের মাধ্যমেও একটি জাতি পরিচিতি পেতে পারে বিশ্বব্যাপী। একজন সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা, সালমা কিংবা কমলা সুন্দরের কিশোরীরা কি আজ আমাদের তাই করে দেখাচ্ছেন না।

শুধু আবাহনী-ই না, দলকানা দৃষ্টিভঙ্গির উর্ধ্বে উঠে পৃষ্ঠপোষকতা করেছেন ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাব, ইস্ট এন্ড স্পোর্টিং ক্লাব আর কামাল স্পোর্টিং ক্লাবেরও (এই ক্লাবটি কিন্তু শেখ কামালের নামে নয়)। কারণটাও খুব সরল। আবাহনীর পাশাপাশি এই ক্লাবগুলোতেও তখন ছিল তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের প্রধান্য।

বিজ্ঞাপন

তবে এই পৃষ্ঠপোষকতা করতে গিয়ে তিনি কখনোই কোন বড় ব্যবসায়ীর কাছে ধর্ণা দেননি। অবলীলায় ফিরিয়ে দিয়েছেন আবাহনীর জন্য চারতলা ভবন নির্মাণের প্রস্তাবও। যারা শুধুমাত্র বিভিন্ন সময়ে ক্রীড়াঙ্গনের সাথে সংশ্লিষ্ট ছিলেন শুধু তাদেরই অধিকার ছিল শেখ কামালের এই ক্রীড়াযজ্ঞে দশ-বিশ-একশ টাকা চাঁদা দেয়ার। তাকে পৃষ্ঠপোষকতা করার সুযোগে যাতে কেউ কোন ধরনের বাণিজ্যিক সুবিধা নিতে না পারে এ ব্যাপারে সতর্ক ছিলেন তিনি বরাবরই। সাইদুর রহমান প্যাটেল আর হারুনুর রশিদ ভাইদের স্মৃতিচারণে এসব কথার অনুরনণ।

খেলার সাথে রাজনীতির যোগাযোগও ঘটিয়েছিলেন তিনি অদ্ভুত দক্ষতায়। ইস্ট এন্ড আর ব্রাদার্স ইউনিয়নে তার যোগাযোগের সুবাদে পুরো পুরনো ঢাকায়, বিশেষ করে ওখানকার শিল্পাঞ্চলগুলোতে তার বিশাল অনুসারী বলয় তৈরী হয় যার সুফল এখনও আওয়ামী লীগ ভোগ করছে বলে উঠে আসে ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের কথায়। তার আহ্বানেই সাইদুর রহমান প্যাটেল ভাই দিলকুশা ছেড়ে ইস্ট এন্ড ক্লাবে যোগ দিয়েছিলেন। একইভাবে ঢাকা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের হয়ে ব্যাট করতে নামার আগে রকিবুল হাসানের ক্রিকেট ব্যাটে জয় বাংলা লেখা স্টিকারটাও সেটে দিয়েছিলেন ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন শেখ কামালের পরামর্শেই।

শেখ কামাল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী। হারমোনিয়াম বাজিয়ে শুধু গান-ই গাইতেন না, বাজাতেন সেতারও। ইস্কাটনে স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠীর অফিসে রিহার্সালের জন্য নিজের উনসত্তর মডেলের টয়োটায় করে সারা ঢাকা শহর ঘুরে নিয়ে আসতেন শিল্পীদের, যন্ত্রীদের। পীযূষ দা’র মুখে মন্ত্রমুগ্ধের মত শুনতে থাকি এসব ইতিহাস।

পীযূষ দা’র মুখেই জানলাম এদেশের প্রথম নাট্যদল ঢাকা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতাও শেখ কামাল। স্বাধীন বাংলাদেশে মঞ্চ নাটকের প্রথম মঞ্চায়ন ঢাকা থিয়েটারের এই শেখ কামালের হাত ধরেই। এজন্য ঢাকা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভাঙ্গাচোরা অডিটোরিয়ামটা তিনি ঠিক করিয়েছিলেন অনেক তদ্বির করে। নাটক মঞ্চায়নের আগের দিন রাত সাড়ে এগারোটায় চান মিয়া ডেকোরেটরকে অনুরোধ করে চেয়ারের ব্যবস্থা করেছিলেন দর্শকদের জন্য। আর প্রচন্ড বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের পাশাপাশি সয়লাব যখন অডিটোরিয়ামটিও তখন পীযূষ দা’দের সাথে নিজে হাত লাগিয়েছেন তা পরিষ্কারে। এভাবেই মঞ্চায়িত হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম মঞ্চ নাটকটি।

বিজ্ঞাপন

নিজেও তুখোর অভিনেতা ছিলেন শেখ কামাল। বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ নাটকের নাম জানতে চান? ‘ত্রি-রত্ন’ – মাত্র দু’টি এপিসোড প্রচারিত হয়েছিল নাটকটির পচাত্তরের পনেরই আগস্ট পর্যন্ত। এর নির্দেশনায় ছিলেন শেখ কামাল, স্ক্রিপ্টও তারই। আর অভিনয়ে শেখ কামাল, আ ত ম মুনীরউদ্দিন আর তওরিদ হোসেইন বাদল ভাই। আ ত ম মুনীরউদ্দিন ভাইয়ের মুখে অমন ইতিহাস শুনে অবাক হইনা আর।

আবুজর গিফারী কলেজের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দিন শেখ কামালের গুলিতে আহত জাসদ ছাত্রলীগের কমিটির কথা মনে আছে? নির্বাচনের পরদিন পল্টনের জনসভায় ষাট হাজার লোকের সামনে রক্তমাখা শার্ট-প্যান্ট দেখিয়ে মায়া কান্নায় ভেসেছিলেন জাসদ নেতারা। সাইদুর রহমান প্যাটেল ভাইয়ের জবানীতে জানতে পারি সত্য বয়ান। নির্বাচনের দিন সকালে সেখানে ছিলেন শেখ কামাল। কিন্তু জাসদের আগ্রাসী ভাবভঙ্গি দেখে সহকর্মীদের পরামর্শে দুপুরের অনেক আগেই সেখান থেকে চলে যান তিনি। দুপুরের পরে নির্বাচনের ফলাফল ছাত্রলীগের দিকে ঝুকতে যাচ্ছে বুঝতে পেরে জাসদের বহিরাগত সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গোলাগুলি শুরু করে। কলেজের পাশের গলি থেকে তাদের গুলি ছুড়তে দেখেছেন অনেকেই। তাদেরই একজন সাইদুর রহমান প্যাটেল ভাই। অথচ কি অবলীলায়ই না পরদিন জাসদের জনসভায় উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া হলো!

আর বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘটনা যেখানে গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন শেখ কামাল – আসলে কি ঘটেছিল সেদিন? মেজর জেনারেল (অবঃ) সাইদ আহমেদ, সৈয়দ শাহেদ রেজা ভাই আর ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের ভাষ্যে পরিষ্কার হয়ে যায় সবকিছু। শেখ কামাল সেদিন শহীদ রেজাকে নিয়ে অনুসরণ করছিলেন সার্জেন্ট কিবরিয়া নামের একজন পুলিশ অফিসারকে। রাতের ঢাকায় কিছু কিছু নাশকতায় পৃষ্ঠপোষকতা করার অভিযোগ ছিল এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। তাকে অনুসরণ করতে গিয়ে কমলাপুর রেল স্টেশনের পাশ দিয়ে ব্রিক সোলিং একটি রাস্তা ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে পৌছান শেখ কামাল। সেখানে তখন একটি অস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ি ছিল। ধূর্ত সার্জেন্ট কিবরিয়া এরই মাঝে রটিয়ে দিয়েছেন যে তাকে অনুসরণ করছে সন্ত্রাসীরা। ফাঁড়ির পুলিশ গুলি চালালে আহত হন শেখ কামাল। আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে না? তাহলে কি বিশ্বাস করতে চান একজন শেখ কামাল আর একজন সৈয়দ শাহেদ রেজা ভাই ছয় স্তরের নিরাপত্তা ভেঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের ভল্টে গচ্ছিত দেশের তাবৎ টাকা আর সোনা একটা টয়োটা কারের বুটে ভরে নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করছিলেন? বিষয়টা চাঁদে লাল দাড়ি লোকটির ছবি দেখার চেয়েও বেশি গাজাখুড়ি হয়ে গেল না?

শেখ কামালকে নিয়ে সেদিন রাত বারোটার কিছু পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌছান সৈয়দ শাহেদ রেজা ভাই। সেখানে তখন উপস্থিত ছিলেন ডাঃ মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন। তাকে ওটিতে নিয়ে গেলে অধ্যাপক নওয়াব আলী এবং আরো একজন সার্জন মিলে তার কলার বোন আর রিবের মাঝখানে ঢুকে থাকা বুলেটটা বের করে নিয়ে আসেন।

শুনলাম শেখ কামালের আলোচিত বিয়ের ঘটনাটিও। সুলতানা কামাল- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় এ্যাথলেট। লং জাম্প আর একশ মিটার স্প্রিন্টের রেকর্ডের মালিক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মহিলা ‘ব্লু’। যেমন গুনি তেমনি সুন্দরী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেসময়কার সব ছাত্রের আরাধ্য নারী। কিন্তু তিনি সাড়া দিয়েছিলেন একহারা গড়নের, সাদাসিধে, হাফ শার্ট, সাদা প্যান্ট আর স্যান্ডেল পরা শেখ কামালের প্রেম নিবেদনে। মহিলাদের অঙ্গনে শেখ কামালের ছিল অসম্ভব জনপ্রিয়তা। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ বিভাগের পাশের ছাত্রী কমনরুমটিতেও তার ছিল খোলা নিমন্ত্রণ। এমনকি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নির্বাচনে দাড়িয়ে বিরোধী ছাত্র সংগঠনের সব মহিলা সমর্থকের ভোটও পেয়েছিলেন শেখ কামাল। এহন শেখ কামালের প্রস্তাবে সাড়া দেবেন সুলতানা কামাল তাতে আর অবাক হওয়ার কি? বঙ্গবন্ধু আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন সুলতানা কামালের বাসায়। দু’পক্ষের সম্মতিতে পচাত্তরের চৌদ্দ জুলাই বিয়ে হয় তাদের। বঙ্গমাতার আগ্রহে মাস্টার্স ফাইনালের মাত্র সাত দিন আগে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। পঞ্জিকা দেখে দিনটি বাছাই করেছিলেন বঙ্গমাতা। তাদের একমাস একদিন স্থায়ী দাম্পত্য জীবনের যবনিকা টেনেছিল ঘাতকের বুলেট পচাত্তরের পনেরই আগস্টে। মাশুরা হোসেন আপা আর সৈয়দ শাহেদ রেজা ভাই সাবলীল বর্নণায় সবকিছু যেন চোখের সামনে মূর্ত হয়ে উঠছিল।

যতই শুনছিলাম ততই স্তব্ধ হচ্ছিলাম, বিস্ময়ে আর অবনত হচ্ছিলাম শ্রদ্ধায় সব্যসাচী শেখ কামালের প্রতি। নিজের বক্তব্য শেষে পোডিয়াম থেকে যখন নামছি, তখন সহসা উপলব্ধি- ‘আজকের বাংলাদেশে একজন শেখ কামালের বড় বেশি প্রয়োজন। একজন শেখ কামালের শুণ্যতা যে কি বিশাল শুণ্যতার জন্ম দেয় তার সাম্প্রতিকতম উদাহরণতো আমাদের আশেপাশেই। শেখ কামালের জন্মদিনে এই ক্ষুদ্র আমার প্রত্যাশা আর আক্ষেপ মিলেমিশে তাই এতটুকুই।

অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব (স্বপ্নীল) : চিকিৎসক ও কলাম লেখক।

সারাবাংলা/পিএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন