বিজ্ঞাপন

ন্যূনতম ৪৫ পয়সা রেট সব টেলিকম অপারেটরে

August 13, 2018 | 6:18 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: দেশের সব টেলিকম অপারেটরকে অননেট (নিজেদের মধ্যে) ও অফনেট (অন্য অপারেটরে) ভয়েস কলের রেট মিনিটে ন্যূনতম ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এই রেট চালু করতে সব মোবাইল অপারেটরকে নির্দেশনা পাঠিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেশন কমিশন (বিটিআরসি)।

সোমবার (১৩ আগস্ট) পাঠানো এই নির্দেশনার ফলে দেশের যেকোনো মোবাইল অপারেটর থেকে কল করলে খরচ একই হবে। এই নির্দেশনা অনুযায়ী, কোনো অপারেটরের নিজস্ব গ্রাহকদের মধ্যে কল রেটে আগে যে সুবিধা ছিল, তা আর থাকছে না। এ ছাড়াও বিভিন্ন অফার দিয়ে টেলিকমগুলো তাদের গ্রাহক বেজ বাড়িয়ে নিলেও তার সুবিধা এখন আর গ্রাহক পর্যায়ে ভোগ করা সম্ভব হবে না।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব দেশের প্রায় ১৪ কোটি গ্রাহকের ওপর সরাসরি পড়বে বলেই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। অভিজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এতে গ্রাহক পর্যায়ে মোবাইল কলের খরচ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যেতে পারে।

বিজ্ঞাপন

ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল অপারেটরের সাবস্ক্রাইবার বা গ্রাহক সংখ্যায় পার্থক্য থাকলেও এখন থেকে নতুন নির্দেশনায় মোবাইল নম্বর পোর্টাবিলিটির (এমএনপি) কারণে তা কারও জন্য বড় কোনো সুবিধা বয়ে আনবে না বলেও মনে করছেন তারা।

বিটিআরসি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জহুরুল হক এই নির্দেশনার বিষয়টি নিশ্চিত করে সারাবাংলা’কে বলেন, অননেট-অফনেট ভয়েস কলে প্রতি মিনিট ন্যূনতম ৪৫ পয়সা ও সর্বোচ্চ দুই টাকা নিশ্চিত করতে সবগুলো মোবাইল টেলিফোন অপারেটরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

দেশের সবচেয়ে বেশি গ্রাহক নিয়ে টেলিকম সেবা দিচ্ছে গ্রামীণফোন। সোমবারই তারা ঘোষণা দিয়েছে, কোম্পানিটির গ্রাহক সংখ্যা ৭ কোটি ছাড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রামীণফোনের প্রধান জনসংযোগ কর্মকর্তা সৈয়দ তালাত কামাল সারাবাংলা’র কাছে বিটিআরসির পক্ষ থেকে চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিটিআরসির পক্ষ থেকে সব অপরেটরে একই কলরেট রাখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে নতুন নিয়মে জিপি থেকে জিপি এবং অন্য সব অপরেটরের কলরেটে একই হবে।

গ্রাহক সংখ্যায় দেশের বৃহত্তম এই মোবাইল অপারেটরের কর্মকর্তা মনে করছেন, নতুন সিদ্ধান্তে টেলিকম কোম্পানিগুলো কঠিন প্রতিযোগিতায় পড়বে। এ ক্ষেত্রে শুধু কলরেট দিয়ে গ্রাহক আকৃষ্ট করা যাবে না। নেটওয়ার্ক ও অন্য সব সেবার মান উন্নত করতে হবে।

বরি আজিয়াটার মুখোপাত্র ইকরাম কবীর সারাবাংলা’কে বলেন, অফনেট-অননেটে কলের খরচ এক হয়ে যাচ্ছে। আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম শুরু করছি। এতে কোম্পানি বা গ্রাহক পর্যায়ে কী প্রভাব পড়তে পারে, এখনই বলা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ সারাবাংলা’কে বলেন, ‘পৃথিবীর বহু দেশে একই কলরেট চালু আছে। ভিন্ন কলরেট থাকার কারণে ছোট অপারেটররা অনেক সময় আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে। অফনেট কলেই তাদের আয়ের অনেক টাকা চলে যেত। নতুন এই সিদ্ধান্তে ছোট অপারেটরদের দাবির প্রতিফলন ঘটেছে।’

বিজ্ঞাপন

সব অপারেটরে এক  কলরেটে গ্রাহকের ওপর কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে— জানতে চাইলে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ সারাবাংলা’কে বলেন, দেশের ৮০ শতাংশ গ্রাহক সাধারণ বা নিম্নবিত্ত শ্রেণির। অর্থাৎ প্রায় ১২ কোটি গ্রাহকের খরচ যদি বাড়ে, তাহলে তা স্বাভাবিকভাবেই জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়াবে। গ্রাহক পর্যায়ে এর একটি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।’

নতুন এই সিদ্ধান্তকে অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে গ্রাহকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা মহিউদ্দীন আরও বলেন, ‘বিটিআরসি কখনই গ্রাহকের স্বার্থের কথা চিন্তা করে না। কারও সঙ্গে আলোচনা না করে এ ধরনের সিদ্ধান্তের আগে বিটিআরসির উচিত ছিল গণশুনানি করা। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর আগে কিন্তু গণশুনানি হয়। এ ক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত বলে আমরা মনে করি।’

সারাবাংলা/এমএ/ইএইচটি/এমএম

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন