বিজ্ঞাপন

‘ইউএস-বাংলার পাইলট ছিলেন বিপর্যস্ত ও বেপরোয়া’

August 27, 2018 | 2:55 pm

।। আন্তর্জাতিক ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

নেপালের ত্রিভুবন বিমানবন্দরে অবতরণের সময় ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের পাইলট কন্ট্রোল টাওয়ারের সঙ্গে মিথ্যা বলেছিলেন। এমনকি ঢাকা থেকে কাঠমান্ডুগামী এক ঘণ্টার যাত্রাপথে তিনি ককপিটের ভেতর ক্রমাগত ধূমপান করেছিলেন। গত ১২ মার্চের মর্মান্তিক এই বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে নেপাল সরকারের করা তদন্তে এমন তথ্য উঠে এসেছে।

তদন্ত প্রতিবেদনের বরাতে কাঠমান্ডু পোস্টে বলা হয়েছে, ফ্লাইট বিএস২১১ এর পাইলট আবিদ সুলতান প্রচণ্ড ব্যক্তিগত মানসিক চাপ ও উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। তার ধারাবাহিক কয়েকটি ভুল সিদ্ধান্তের কারণেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়।

তদন্ত শেষে নেপালি কর্মকর্তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন যে, উড্ডয়নকালে বিমানের ভেতর আবিদ সুলতান এমন সব অস্বাভাবিক আচরণ করছিলেন, যা তার স্বভাববিরুদ্ধ। আর সেকারণেই তিনি তাৎক্ষণিকভাবে লাল পতাকা উড়িয়ে দিয়েছিলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবতরণের ছয় মিনিট আগে বিমানের ল্যান্ডিং গিয়ার নিচে নেমেছে এবং তা লক রয়েছে বলে জানান আবিদ। ককপিটের ভেতরের বৈদ্যুতিক লাইটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘গিয়ারস ডাউন, ত্রি গ্রিনস।’

কিন্তু সহকারী পাইলট পৃথুলা রশিদ চূড়ান্ত ল্যান্ডিং তালিকা পরীক্ষা করার সময় দেখেন পান গিয়ার নীচে নামেনি। এর কয়েক মিনিট পর দ্বিতীয়বারের মতো অবতরণের চেষ্টাকালে ৬৭ জন যাত্রী ও ৪ ক্রু সদস্য বহনকারী বিমানটি রানওয়েতে পৌঁছাতে ব্যর্থ হলে তাতে আগুন ধরে যায়।

বিজ্ঞাপন

ওই প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা লিখেছেন, ‘ককপিটের ভয়েস রেকর্ডারের তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি ক্যাপ্টেন প্রচণ্ড মানসিক চাপ মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। এছাড়া তাকে বিষণ্ণ ও কম ঘুমের সমস্যায় থাকা মানুষ মনে হয়েছে। কয়েকটি ক্ষেত্রে তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন।’

যদিও বিমানটি বিধ্বস্তের পরপরই ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্স ও ত্রিভুবন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কর্মকর্তাদের দাবি, পাইলটের ভুলেই বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে। আর ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে বলা হয়, নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে বিভ্রান্তিকর তথ্য দেওয়া হচ্ছিলো পাইলটকে।

দুর্ঘটনার পর এক বিবৃতিতে ইউএস-বাংলা কর্তৃপক্ষ জানায়, বিমানটি বিধ্বস্তের ঘটনায় ক্যাপ্টেন আবিদ সুলতানের কোনো ত্রুটি ছিল না। ১৩ মার্চ ইউএস বাংলার জনসংযোগ বিভাগের মহাব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা ক্যাপ্টেনের কোনো প্রবলেম খুঁজে পাইনি।’

বিজ্ঞাপন

উল্লেখ্য, গত ১২ মার্চ নেপালের ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের ড্যাশ-৮ কিউ 8০০ বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। বিমানটিতে ৪ জন ক্রু ও ৬৭ যাত্রীসহ ৭১ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৪ জন ক্রুসহ ২৭ জন বাংলাদেশি, ২৩ জন নেপালি ও একজন চীনা যাত্রী নিহত হন। আহত হন ৯ জন বাংলাদেশি, ১০ জন নেপালি ও ১ জন মালদ্বীপের নাগরিক।

সারাবাংলা/এএস

আরও পড়ুন:
নেপালে ইউএস-বাংলা বিধ্বস্তে নিহত অন্তত ৫০
বিমানে ত্রুটি ছিল না, তদন্ত অসঙ্গতিপূর্ণ: ইউএস বাংলা
ইউএস-বাংলা দুর্ঘটনা নিয়ে যা বললেন, যেভাবে বললেন বিমানমন্ত্রী
‘নেপালে প্রশ্ন করেছিলাম আপনাদের বিমানবন্দর, কেন এই দুর্ঘটনা?’

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন