বিজ্ঞাপন

প্রতিটি বিভাগে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হবে: প্রধানমন্ত্রী

September 13, 2018 | 11:59 am

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) পর রাজশাহী ও চট্টগ্রামেও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বাকি বিভাগগুলোতেও একইভাবে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বৃহস্পতিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালের নির্মাণ কাজের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, উন্নত চিকিৎসা সেবা এবং চিকিৎসা বিষয়ে গবেষণা কাজের জন্য আমরা প্রথম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে দিয়েছি। পরবর্তী সময়ে রাজশাহী ও চট্টগ্রামেও মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। সিলেটেও একটি বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে, আজকেই সংসদে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের বিল পাস হবে। পর্যায়ক্রমে এভাবে সারাদেশের সব বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আমরা করে দেবো।

বিজ্ঞাপন

সরকারের চলতি মেয়াদ শেষের দিকে বলে এই মেয়াদে সব কাজ সম্ভব হবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, এবারে তো সময় শেষ। এই শেষ সময়ে এত কিছু করা সম্ভব না। আগামীতে আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে সব করে দেবো।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, একেকটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ওই এলাকার মেডিকেল কলেজগুলো অ্যাফিলিয়েটেড থাকবে। যেমন— রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অ্যাফিলিয়েটেড থাকবে রাজশাহী-রংপুর এলাকার মেডিকেল কলেজগুলো। আবার চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অ্যাফিলিয়েটেড থাকবে চট্টগ্রাম অঞ্চলের সব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। একইভাবে সিলেট মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় চালু হলে সেখানে সিলেট এলাকার সব মেডিকেল কলেজগুলো অ্যাফিলিয়েটেড থাকবে।

মেডিকেল কলেজগুলোতে কী ধরনের পড়ালেখা হবে, তা এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দেখভাল করবে জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার মান যেন ভালো থাকে, এর মাধ্যমে তা নিশ্চিত করা যাবে। মেডিকেল কলেজগুলোতে কী পড়ালেখা হচ্ছে, আদৌ সেগুলোতে পড়ালেখা হচ্ছে নাকি রোগী মারা ডাক্তার তৈরি হচ্ছে, সেটা দেখা দরকার। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেই নজরদারির কাজটি করবে।

বিজ্ঞাপন

মেডিকেল শিক্ষাতে ছড়িয়ে দিতে সরকারের উদ্যোগ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা নতুন নতুন মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দিয়েছি। সর্বশেষ চারটি মেডিকেল কলেজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। চাঁদপুরে আরও একটি মেডিকেল কলেজের প্রস্তাব আছে। সেটাও অনুমোদন দিয়ে দেবো।

তিনি বলেন, আমরা প্রথমবার যখন সরকারে আসি তখনই মেডিকেল ইকুইপমেন্টস বা যন্ত্রাংশ কেনার ক্ষেত্রে সব ট্যাক্স কমিয়ে দেই। শিল্প খাত হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে ট্যাক্স কমিয়ে দিয়ে বেসরকারি খাতে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল তৈরির সুযোগ করে দিয়েছিলাম আমরা। সে কারণেই দেশে আজ এত বড় বড় হাসপাতাল হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য একটাই— দেশের মানুষকে সেবা দেওয়া।

সরকার চিকিৎসাসেবার উন্নয়ন চায় জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, নার্সিংয়ে আগে শুধু ডিপ্লোমা ছিল। আমরা আপডেট করেছি। এখন নার্সিংয়ে বিএসসি, এমএসসি তো বটেই পিএইচডি পর্যন্ত করার সুযোগ আছে। বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসকদের জন্য ডরমেটরি তৈরির পাশাপাশি নার্সদের জন্যও ডরমেটরি করতে হবে বলে নির্দেশনা দেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিএসএমএমইউকে সেন্টার অব এক্সিলেন্সে উন্নীত করাার জন্য বহুমুখী পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএসএমএমইউয়ের ক্যাম্পাস সম্প্রসারণের জন্য ক্যান্টিনের পাশে জমি, বেতার ভবনের পাশের জায়গা ও হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে জমিগুলো এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নেও অনেক টাকা বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। এ কাজে সহায়তা করায় কোরিয়া সরকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

মেডিকেল শিক্ষায় গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, যেখানে যেখানে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছি, প্রতিটির জন্য আলাদা ক্যাম্পাস করে দিচ্ছি। সেই ক্যাম্পাসে কেবল পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ও গবেষণা হবে। নার্সিং ছাড়া বাকি সব বিষয়ের আন্ডারগ্র্যাজুয়েশন হবে মেডিকেল কলেজগুলোতে। আর মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে হবে কেবল পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন ও গবেষণা।

বিএসএমএমইউয়ে চিকিৎসা শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের মান উন্নয়নে নিরলস পরিশ্রমের জন্য সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, গবেষণায় আরও জোর দিতে হবে। পাশাপাশি রোগ যেন না হয়, সে বিষয়েও জোর দিতে হবে। সবার মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এ কাজে সরকার সব ধরনের সহায়তা দেবে। আপনাদের সবার কাছে অনুরোধ, জনগণকে চিকিৎসা সেবা দিতে নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে।

দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা নিশ্চিত করার জন্য বিএসএমএমইউয়ে আলাদা ১০ কোটি টাকার তহবিল করে দেওয়া হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে ওই তহবিলে আরও ১০ কোটি টাকা জমা করার ঘোষণা দেন তিনি।

আরও পড়ুন- স্পেশালাইজড হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন