বিজ্ঞাপন

বই উৎসব : নতুন বইয়ে নতুন স্বপ্ন

January 1, 2018 | 1:59 pm

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর আজিমপুর গভর্নমেন্ট হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাঠ্যপুস্তক উৎসবের জন্য বরাবরের ন্যায় এবারও নতুন বছরের প্রথম দিনটি সেজেছে বর্ণিল সাজে। হাজারো কোমলমতি শিক্ষার্থীর উচ্ছ্বাসমাখা কলরবে সবুজ ঘাসের বুকে শীতের শিশিরও যেন উদ্বেলিত। নতুন বইয়ের গন্ধ মাতোয়ারা চারিদিক। ২০১৮ শিক্ষাবর্ষে নতুন বই হাতে নতুন স্বপ্নে বিভোর আগামী প্রজন্ম। এ উৎসব সম্ভাবনার, এ উৎসব একটি সমৃদ্ধ আগামী গড়ার।

২০০৯ সাল থেকে রাজধানীতে কেন্দ্রীয়ভাবে পাঠ্যপুস্তক উৎসব উদ্‌যাপন করা হয়। একইদিন সারাদেশে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা নতুন বই পেয়ে আসছে নতুন বছরের শুরুতেই। এবার আজিমপুর গভর্নমেন্ট হাই স্কুল অ্যান্ড কলেজে রঙিন বেলুন উড়িয়ে উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। একই সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের আয়োজন করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেখানে গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান এ উৎসবের উদ্বোধন করেন।

বিজ্ঞাপন

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘নতুন বই নতুন বছরে কোমলমতি শিশুদের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে উপহার। আজকের দিনে সারাদেশের শিশুরা নতুন বই নিয়ে হাসিমুখে ঘরে যাবে। প্রতিটি ঘরেই নতুন বইয়ের ছোঁয়া লাগবেই।’

পৃথিবীর অনেক দেশের চেয়ে বাংলাদেশ বিভিন্ন দিক দিয়ে পেছনে থাকলেও একইদিন এত বিপুল সংখ্যক পাঠ্যপুস্তক শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়ার ক্ষেত্রে যে পারদর্শিতা তা পৃথিবীর কোনো দেশই দেখাতে পারেনি দাবি করে শিক্ষমন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে আমরা বিস্ময়। সবাই আমাদের প্রশ্ন করে আমরা এটা কীভাবে সম্ভব!’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের উৎসবের প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার নানাভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। যার মধ্যে বছরের প্রথম দিন সবার হাতে বিনামূল্যে বই দিয়ে শিক্ষাখাতকে অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে গেছে।’ এ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়তে ব্যক্তি উদ্যোক্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

মূল অনুষ্ঠানের আগেই আজিমপুরের স্কুল মাঠটিতে রাজধানীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। মূল মঞ্চকে সামনে রেখে সারিবদ্ধভাবে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করে। বিভিন্ন স্কুলের আলাদা আলাদা ইউনিফর্মের সঙ্গে মিল রেখে রং-বেরঙের ক্যাপ, বেলুন আর জরির ফিতায় পুরো ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে রঙিন।

পরে সম্মিলিত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর বেলুন উড়িয়ে এ উৎসবের উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ সময় মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর প্রধানরা বক্তব্য রাখেন।

রহমত উল্লাহ মডেল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুন নাঈম লতা সারাবাংলাকে বলে, ‘এ বছরই পাঠ্যপুস্তক উৎসবের এ আয়োজনে যোগ দিয়েছি। নতুন বই হাতে বছরের প্রথম দিনে এমন উৎসবে যোগ দিতে পেরে অনেত খুশি লাগছে।’

বিজ্ঞাপন

ভিকারুননেসা নূন স্কুলের (আজিমপুর ক্যাম্পাস) ছাত্রী নুসাইবা জান্নাত জানায়, সপ্তম শ্রেণি থেকে তারা ১০জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে এ উৎসবে। অনুষ্ঠানে আসতে পেরে সবাই অনেক খুশি। নতুন বছরে নতুন বই পেয়ে অনুভূতি কী, এমন প্রশ্নে সে জানায়, নতুন বই মানেই নতুন কিছু। স্বপ্নপূরণে নতুন ক্লাসে নতুন উদ্যোমে পড়াশুনা শুরু হবে বলেও জানায় নুসাইবা।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত পাঠ্যপুস্তক উৎসবে অংশ নিয়েছে রাজধানী ও আশপাশের এলাকাগুলোর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েক হাজার শিক্ষার্থী।

মগবাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র রাফিউল ইসলাম জানায়, তারা স্কুল থেকে অনেকেই এসেছে। শিক্ষকরা গাড়িতে করে নিয়ে এসেছে। নতুন বই দিয়েছে। খাবার দিয়েছে। অনেক ভাল লাগছে।

২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে বছরের প্রথমদিন শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন বই তুলে দেওয়া হচ্ছে। এবার প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীর হাতে ৩৫ কোটি ৪২ লাখ, ৯০ হাজার ১৬২ পিস নতুন বই ছাপা হয়। যা সারাদেশের বিদ্যালয়গুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

সারাবাংলা/এমএস/টিএম/আইজেকে

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন