বিজ্ঞাপন

জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ না হওয়ার কারণ দেখছি না: বনমন্ত্রী

September 24, 2018 | 10:42 am

।। আজমল হক হেলাল, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে এবং কারও জন্য নির্বাচন থেমে থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। নির্বাচন শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু না হওয়ার কোনো কারণ নেই বলেও মনে করেন সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টির (জাপা) এই মন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচন শান্তিপূর্ণ বা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত না হওয়ার তো কোনো কারণ দেখছি না। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে, এটাই স্বাভাবিক। কেউ যদি নির্বাচন না করে, তার জন্য তো নির্বাচন থেমে থাকতে পারে না। ৫ জানুয়ারির (২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি) নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি, সে জন্য কি সরকার দায়ী হবে আর তার খেসারত জনগণ দেবে? সরকার তো তাদের নির্বাচন করতে বাধা দেয়নি।’

রোববার (২৩ সেপ্টেম্বর) সারাবাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এসব কথা বলেন। চলমান সরকারের মেয়াদে জাতীয় সংসদ অধিবেশন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন, রাজনৈতিক জোটসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিজের মতামত জানান সংসদে বিরোধী দল থেকে মন্ত্রিত্ব পাওয়া এই রাজনীতিবিদ।

বিজ্ঞাপন

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপিসহ বেশকিছু বিরোধী দল অংশ না নেওয়ায় ওই নির্বাচন নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলেন। তাদের সমালোচনা করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সাংবিধান অনুযায়ী হয়েছে। বহির্বিশ্বে এই নির্বাচন স্বীকৃতি পেয়েছে। বাংলাদেশেই আন্তঃসংসদীয় ইউনিয়ন (আইপিইউ) ও কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (সিপিইউ) সম্মেলন তারই প্রমাণ। যারা বলছেন, ওই নির্বাচন বহির্বিশ্বে স্বীকৃতি পায়নি, সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি, তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন। বিরোধিতা করার জন্য তারা বিরোধিতা করছেন।’

ওই নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দেড় শতাধিক প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, বলা হচ্ছে, অনেক সংসদ সদস্য বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। কেউ যদি নির্বাচনে অংশ না নেয়, সে ক্ষেত্রে অন্য প্রার্থী তো বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হবেই। সংবিধানেই লেখা আছে, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় একজন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন। এখানে তো প্রশ্নের অবকাশ নেই।

সম্প্রতি সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার লেখা একটি বই প্রকাশ পেয়েছে। ওই বইয়ে সাবেক প্রধান বিচারপতি অভিযোগ করেছেন, তাকে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, তিনি তো বিদেশ থেকে পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। তিনি পদত্যাগ না করলেই পারতেন। তার বিরুদ্ধেও তো দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। দুর্নীতির প্রমাণও মিলেছে।

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন: ‘এস কে সিনহার বই অসত্য, মোটিভেটেড ও ‍উদ্দেশ্য প্রণোদিত’

বর্তমান সরকারের সাফল্য তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, গত ৫ বছরে দেশের যে উন্নয়ন হয়েছে, তা আর কোনো সরকারের আমলে হয়নি। দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৭ শতাংশ পেরিয়ে গেছে। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে নাম লিখিয়েছে।

এসময় জাতীয় সংসদ অধিবেশনগুলোও আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বেশি কার্যকর ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘জাতীয় সংসদে কাদা ছোঁড়াছুড়ি হয়নি। টেবিল চাপরানো হয়নি। জাতীয় সংসদে বিরোধী দল জনগণের স্বার্থে ঠিকই সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। যুক্তি দিয়ে বিরোধী দলের  সংসদ সদস্যরা সরকারের বিরুদ্ধে সংসদে অবস্থান নিয়েছেন। সরকারি দল আইন পাসের সময়  বিরোধী দলের সংশোধনী ঠিকই গ্রহণ করেছে। স্পিকার শান্তিপূর্ণভাবে সংসদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পেরেছেন। এমন সংসদ এর আগে আমরা কবে দেখেছি?’ সংসদে গিয়ে দাঁড়িয়ে টেবিল চাপড়িয়ে কথা বললেই বড় পার্লামেন্টরিয়ান হওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নির্বাচনকে সামনে রেখে বিভিন্ন রাজনৈতিক জোটের আত্মপ্রকাশকে কিভাবে দেখছেন— জানতে চাইলে সিনিয়র এই রাজনীতিবিদ বলেন, ‘নির্বাচনের আগে জোট-মহাজোট হয়ে থাকে। এসব ভোট বেশি পাওয়ার কৌশল। জোট-মহাজোট হওয়া তো ভালো। আমরা বহুদলীয় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। বহুদলীয় গণতন্ত্রে এমন হয়েই থাকে।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘জোট-মহাজোট করে সরকার পতন করা যায় না। সরকার পরির্বতন হয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। জনগণ যাদের ম্যান্ডেন্ট দেবে, তারাই সরকার গঠন করবে।’

বিরোধী দলগুলো আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। আপনি সেনা মোতায়েন প্রয়োজন বলে মনে করেন কি না— এ প্রশ্নের জবাবে বনমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজনে সেনা সদস্যরা মাঠে নমবে। এখনই সেনা সদস্য মাঠে নামানোর কোনো প্রয়োজন নেই।

নির্বাচনের আগে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের জন্য সামরিক বাহিনী বা পুলিশের বিশেষ অভিযান প্রয়োজন আছে বলে মনে করেন কি? এ প্রশ্নের জবাবে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ জনগণের নিরাপত্তার জন্য সরকার প্রয়োজন বোধ করলে যেকোনো সময় অভিযান চালাতে পারে। তবে নির্বাচনের আগে অভিযান হবে কি না, তা নির্ভর করবে নির্বাচন কমিশনের ওপর। তারা চাইলে সরকার অবশ্যই নির্বাচন কমিশনকে এ বিষয়ে সাহায্য করবে।

সারাবাংলা/এএইচএইচ/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন