বিজ্ঞাপন

রাজধানীতে গণপরিবহন সংকট, যাত্রীদের ভোগান্তি

September 30, 2018 | 1:16 pm

।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই রাজধানীতে দেখা দিয়েছে গণপরিবহনের সংকট। রাজধানীর ভেতরে ও আশেপাশ থেকে দূরপাল্লার বাস কম চলাচল করছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তবে গণপরিহণ কম থাকলেও কিছু কিছু এলাকায় যানজট দেখা গেছে।

গাজীপুরের কোনাবাড়ি থেকে চাঁদপুর যাওয়ার জন্য সকাল সাতটায় সদরঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন কাজী রিয়াদ। দুপুর বারোটার সময় লঞ্চ ছাড়বে। বিকেল তিনটার দিকে চাঁদপুর কোর্টে তার বিশেষ কাজ। কিন্তু তিনি বনানী পর্যন্ত আসতে আসতেই বেজে গেছে ১২টা।

তিনি সারাবাংলাকে বলেন, “সকাল সাতটায় কোনাবাড়িতে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলাম। কিন্তু ২ ঘণ্টা পর আজমেরি পরিবহনের একটা বাসে কোনোরকমে দাঁড়ানোর জায়গা পেলাম। কিন্তু বাসটা বাইপাস এসে সব যাত্রী নামিয়ে আবার কোনাবাড়ি চলে গেলে। এমনিতে আজ বাসের তেমন দেখা মিলছে না। আবার যেটাতে উঠলাম সেটাও যাত্রী নামি চলে গেল। কারণ জিজ্ঞেস করলে হেলপার বললো ‘বাস আজ ঢাকায় যাবে না’। কিন্তু কেনো সেটা বলেনি। পরে কিশোরগঞ্জ থেকে আসা একটা বাসে উঠলাম। সেটাতে উঠেও কোনো লাভ হলো না। টঙ্গী থেকে আবদুল্লাহপুর আসতেই লেগে গেল আড়াই ঘণ্টা। আর কত ঘণ্টা সদরঘাট পৌঁছাতে পারব জানি না।”

বিজ্ঞাপন

শুধু কাজী রিয়াদ নয়, রাজধানীতে কাজে বের হওয়া অনেক যাত্রীই পড়েছেন এমন বিপাকে।

রাজধানীর গুলিস্তান থেকে শাহবাগ ও রামপুরাগামী সড়কের উভয় পাশে থেমে থেমে চলছে যানবাহন। একই অবস্থা মিরপুর-নিউ মার্কেট সড়ক ও শাহবাগ-ফার্মগেইট সড়কে। পল্টন-মতিঝিল এলাকার সড়কেও গণপরিবহণ কম।

কাকরাইল এবং তেঁজগাওয়ের বিজয় সরণী ও সাত রাস্তা এলাকায় ফ্লাইওভারগুলোর কারণে অন্যান্য দিন যানজট থাকলেও আজ কিছুটা কম দেখা গেছে।

বিজ্ঞাপন


তবে কিছু কিছু এলাকায় যানজট দেখা গেছে। ট্রাফিক পশ্চিম জোনের সহকারী উপ-কমিশনার ড. মোকসেদ আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘সপ্তাহের প্রথম কার্য দিবসের কারণে এ যানজট। তবে আমাদের ট্রাফিক পুলিশরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণে আমরা সবাই মাঠে আছি। শিগগিরই এটা নিরসন হবে।’ তবে গণপরিবহন সংকটের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না।

ট্রাফিক উত্তরের উপ-কমিশনার প্রবীর কুমার সারাবাংলাকে বলেন, ‘মহাখালী-বনানী এলাকায় যানজট কিছুটা স্বাভাবিক রয়েছে। তবে উত্তরার দিকে সড়কে উন্নয়নের কাজ চলায় কিছুটা ধীর গতি রয়েছে গাড়ি। কিন্তু এটা তীব্র নয়।’ গণপরিবহন সংকটের ব্যাপারে তিনিও কিছু জানাতে পারেননি।

এদিকে যাত্রীদের কেউ কেউ পায়ে হেঁটে চলাচল করলেও দূর পথের যাত্রীরা পড়েছেন বিপাকে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সড়কের পাশে ব অপেক্ষায় পরও দেখা মিলছে না বাসের। মাঝে মধ্যে দু’একটা বাস পেলেও সেগুলোর দরজা বন্ধ থাকে।

তবে বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে পরিবহন শ্রমিকদের সিন্ডিকেট দল পরিবহন কমিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর উত্তরের বিএনপির একজন নেতা শফিউল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আজ আমাদের সমাবেশকে উদ্দেশ্য করেছে পরিবহন শ্রমিকরা তথা কথিত আওয়ামী সমর্থিত মালিকরা বাস কমিয়ে দিয়েছে। যাতে করে নেতাকর্মীরা সমাবেশে অংশ নিতে অসুবিধা হয়। আবার সাধারণ যাত্রীরাও যেন চরম দুভোর্গে পড়ে বিএনপিকে দুষতে পারে সেজন্য এ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চাচ্ছে তারা। তবে জনগণ এসব বোঝে।’

সদরঘাট-গাজীপুর কোনাবাড়ি রুটে চলাচল করা আজমেরী পরিবহনের একজন শ্রমিক সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের আজকে অনেকগুলো গাড়ি ছাড়বে না। কিছু কিছু ছাড়লেও ঘণ্টায় একটা দুটো করে চলবে। সেগুলো গাজীপুর বাইপাস পর্যন্ত এসে আবার চলে যাবে। ঢাকায় আসবে না।’

তবে সমাবেশকে ঘিরে পরিবহন কমানো হয়েছে বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেছেন মহাখালী বাস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম। তিনি বলেন, ‘হয়তো বাসগুলো যানজটে পড়েছে। সেজন্য সংকট মনে হচ্ছে।’

এদিকে যানজট এবং বাস সংকটের কবলে পড়ে চরম বিপাকে পড়েছেন স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী ও কর্মজীবীরা। একদিকে যানজট, অন্যদিকে তীব্র গরমে হাঁপিয়ে উঠা নগরবাসীর দুর্ভোগের মাত্রা যেন বেড়েছে বহুগুণ। এতে এমন দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন নগরবাসী।

সারাবাংলা/এসএইচ/এমও/জেডএফ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন