বিজ্ঞাপন

মন্ত্রিসভায় রদবদল

January 3, 2018 | 2:23 pm

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শপথ নেওয়া নতুন তিন মন্ত্রী ও এক প্রতিমন্ত্রীর মধ্যে দফতর বণ্টনের পাশাপাশি পুরনো চার মন্ত্রীর দায়িত্ব বদলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার মন্ত্রীদের দায়িত্ব বণ্টন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম প্রজ্ঞাপনে জানিয়েছেন, রুলস অব বিজনেস ১৯৯৬ এর ৩ (IV) ক্ষমতাবলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দায়িত্ব বণ্টন করেছেন।

পুরনো চার মন্ত্রীর মধ্যে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী রাশেদ খান মেননকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামালকে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

মহাজোট সরকারের শরিক দল জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি মন্ত্রিসভা গঠনের সময় মঞ্জুকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

এরশাদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে পরিবেশ ও মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যিনি এতদিন পানিসম্পদমন্ত্রী ছিলেন।

টেকনোক্র্যাট কোটায় শপথ নেওয়া প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বারকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বাঁ থেকে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, লক্ষ্মীপুরের সাংসদ এ কে এম শাহজাহান কামাল ও তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ মোস্তফা জব্বার পূর্ণ মন্ত্রী হিসেবে এবং রাজবাড়ীর সাংসদ কাজী কেরামত আলী প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে আসা নারায়ন চন্দ্র চন্দ পদোন্নতি পেয়ে ওই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হয়েছেন। এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করে আসা মুহাম্মদ ছায়েদুল হক গত ১৬ ডিসেম্বর মারা গেলে মন্ত্রীর আসনটি শূন্য হয়।

রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্‌রাসা বিভাগের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

২০১৫ সালের ১৪ জুলাই ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পেয়েছিলেন তারানা হালিম। তাকে তথ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। হাসানুল হক ইনু এতদিন ওই মন্ত্রণালয়ে একাই দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। এবার তার সহযাত্রী হলেন তারানা হালিম।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী সৈয়দ মহসিন আলী ২০১৫ সালে মারা গেলে ওই মন্ত্রণালয় চালাচ্ছিলেন প্রতিমন্ত্রী প্রমোদ মানকিন। ২০১৬ সালের ১১ মে প্রমোদ মানকিন মারা গেলে ৩৮ দিন পর খাদ্য প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়। নতুন দায়িত্ব বণ্টনের ফলে নুরুজ্জামান আহমেদকে ওই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

বঙ্গভবনের দরবার হলে তিন মন্ত্রীর শপথ

মন্ত্রিসভায় নতুন চার সদস্য যুক্ত হওয়ায় বর্তমানে মোট সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৩ জনে। তাদের মধ্যে ৩৩ জন মন্ত্রী, ১৭ জন প্রতিমন্ত্রী এবং দুইজন উপমন্ত্রী।

এছাড়া মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূতের দায়িত্বে আছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। মন্ত্রীর পদমর্যাদায় প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসেবে আছেন আরও পাঁচজন।

নতুন যে চারজনের শপথ :  মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পাওয়া নতুন তিন মন্ত্রী ও একজন প্রতিমন্ত্রী বঙ্গভবনের দরবার হলে মঙ্গলবার শপথ নেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় তাদের শপথ বাক্য পড়ান রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ। প্রথমে তিন মন্ত্রীর শপথ পড়ান রাষ্ট্রপতি। পরে শপথ বাক্য পাঠ করেন প্রতিমন্ত্রী। শপথ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও উপস্থিত ছিলেন।

মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়া তিনজন হলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ, লহ্মীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম শাহজাহান কামাল ও প্রযুক্তিবিদ মোস্তাফা জব্বার। সেইসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন রাজবাড়ী-১ আসনের সংসদ সদস্য কাজী কেরামত আলী।

চারবারের মতো রদবদল :  ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারি গঠিত বর্তমান সরকারের মন্ত্রিসভায় এ চারবার রদবদল হলো। সরকার গঠনের দেড় মাস পর ২০১৪ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি প্রথম রদবদল হয়েছিল।

ওইদিন আবুল হাসান মাহমুদ আলীকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং নজরুল ইসলামকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেয়া হয়।

এর প্রায় দেড় বছর পর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই মন্ত্রিসভায় যোগ হন নতুন পাঁচজন। ওইদিন আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী থেকে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান প্রতিমন্ত্রী থেকে পদোন্নতি পেয়ে পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন। একইদিন মন্ত্রী হিসেবে আরও শপথ নেন প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। সেদিন ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন তারানা হালিম, সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন নুরুজ্জামান আহমেদ।

তৃতীয়বারের মতো রদবদল হয় ২০১৫ সালের ৯ জুলাই।  ওই রদবদলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে দফতরবিহীনমন্ত্রী করা হয়। একইদিন প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বদলে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেয়া হয় ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে। একসপ্তাহ পর সৈয়দ আশরাফুল ইসলামকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়।

সর্বশেষ রদবদল হলো নতুন বছরের ৩ জানুয়ারি।

সারাবাংলা/জিএস/জেএএম/আইজেকে/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন