বিজ্ঞাপন

ভর্তি পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি, জবি ছাত্রলীগের ২ কর্মী আটক

October 6, 2018 | 5:43 pm

।। জবি করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের মানবিক শাখার (ইউনিট-২) ভর্তি পরীক্ষার নারী পরীক্ষার্থীকে যৌন হয়রানির করার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তরা হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের ২য় সেমিস্টারের ছাত্র ও শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম গ্রুপের কর্মী জয়নুল আবেদীন ও একই বিভাগের মোবারক ঠাকুর প্রিন্স।

শনিবার (৬ অক্টোবর) দুপুর ১২টার দিকে এমন ঘটনা ঘটে। অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা যাচাই শেষে তাদের পুলিশে সোপার্দ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তবে অভিযুক্তদের নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রলীগের বেশ কিছু কর্মীর তোপের মুখে পরে পুলিশ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরসহ প্রক্টরিয়াল টিম এসে ছাত্রলীগ কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে আনেন।

বিজ্ঞাপন

লিখিত অভিযোগ ওই নারী শিক্ষার্থী জানান, ‘আমি পরীক্ষা শেষে বিজ্ঞান অনুষদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলাম। এসময় ওরা দুই জন (ছাত্রলীগ কর্মী) আমাকে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানিমূলক আচরণ করে। আমার শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গাকে আঙ্গুল দিয়ে ইশারা করে নানা ধরনের কুরুচিমূলক মন্তব্য করেন। এতে আমি একজন নারী হিসেবে বেশ বিব্রতকর অবস্থায় পরি।’

তিনি আরো জানান, শুধু অশালীন মন্তব্য করেই থেমে যায়নি তারা। বরং আমি ওড়না কেন পরি না তাও জানতে চায় তারা এবং মানিব্যাগ থেকে আমাকে ওড়না কেনার টাকা দিতে চায়। এসময় তারা আমার সাথে সর্বোচ্চরকম অশালীন কথাবার্তা বলে।

এ বিষয়ে ওই নারী শিক্ষার্থীর অভিভাবক তারই বড় বোন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ‘এমন আচরণ একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য চরম হতাশাজনক। আজ এ দিনেও যখন নারারা স্বাধীনভাবে চলাচলের অধিকার রাখে না, এটা মেনে নেওয়া কষ্টসাধ্য। আমি চাই আমার বোনের মত কারো সাথে এমন আচরণ করা না হোক। আমাদের চলাচলের ন্যূনতম স্বাধীনতাটুকু নিশ্চিত হওয়াই আমাদের দাবি।’

বিজ্ঞাপন


অভিযোগের বিষয়ে জবি প্রক্টর অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’জন ছাত্রের বিরুদ্ধে একজন নারী ভর্তিচ্ছুর সাথে অশালীন আচরণের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এই অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক তাদের কোতয়ালী থানায় সোপার্দ করেছি। এছাড়াও আগামী কর্মদিবসে সর্বোচ্চ মহলে আলোচনা করে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ছাত্রলীগ কর্মীদের পুলিশের গাড়িটি অবরোধ করার বিষয়ে প্রক্টর বলেন, ‘আমি তাদের কোনো রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী বলবো না। যারা পুলিশের গাড়িটি অবরোধ করার চেষ্টা করেছিল তারা অভিযুক্তদেরই বন্ধু-বান্ধব ছিল। তারা চেয়েছিল যেন, ঘটনাটি ক্যাম্পাসেই মীমাংসা করা হয়।’

জবি ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুর ইসলাম বলেন, ‘যারা অন্যায় করবে তাদেরকেই শাস্তি পেতে হবে। সে যেই হোক না কেন। তবে যদি অভিযোগকারী এবং পুলিশ মনে করে যে, সে ছেলেকে ছেড়ে দিলে আর এমন অন্যায় করবে না তবে তাকে ছেড়ে দিতে পারে।’

অভিযুক্তদের পুলিশের হেফাজতে নেওয়ার বিষয়ে কোতয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, ‘তারা থানা হেফাজতে রয়েছে। তবে যদি কেউ থানায় অভিযোগ না করে তাহলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে। কারণ যাদের অভিযোগ তারা আমাদের কাছে না বললে আমরা কি ব্যবস্থা নেবো আর কার বিরুদ্ধে নেবো।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/জেআর/এমও

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন