বিজ্ঞাপন

সব বিচারে ২১ আগস্ট হামলায় আ. লীগ-ই দায়ী: রিজভী

October 14, 2018 | 3:20 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: সব বিচারে ২১ আগস্ট হামলায় আওয়ামী লীগ এবং তাদের শুভাঙ্ক্ষিরাই দায়ী বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

রোববার (১৪ অক্টোবর) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

রিজভী বলেন, ‘সব বিচার-বিশ্লেষণে এটা মনে করার যথেষ্ট কারণ সৃষ্টি হয় যে, ২১ আগস্ট বোমা হামলায় আওয়ামী লীগ এবং তাদের শুভাকাঙ্ক্ষিরা দায়ী। যেহেতু তখন সরকার পরিচালনা করেছে বিএনপি সেহেতু নিজের সরকারের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হবে— এমন আত্মবিধ্বংসী কাজ বিএনপি কেন করতে যাবে?

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভার ওপর ভয়াবহ বোমা হামলা হলে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি সাধারণ মানুষের ব্যাপক সহানুভূতির সৃষ্টি হবে এবং বিএনপির বিরুদ্ধে মানুষের আস্থা কমবে। এতে আওয়ামী লীগের লাভ। এই উদ্দেশ্য নিয়েই আওয়ামী লীগের সভার ওপর বোমা হামলা করা হয় শেখ হাসিনার মঞ্চকে পাশ কাটিয়ে।’

‘এই বোমা হামলার আরেকটি উদ্দেশ্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিএনপি নেতৃত্ত্বাধীন জোট সরকারকে জঙ্গি সরকার বা তার পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রমাণ করা। সেজন্য পরবর্তী সময় শেখ হাসিনা ও তার সহকর্মীরা হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সম্মিলিত কন্ঠস্বরে দেশে-বিদেশে বিএনপি ও জোট সরকারের বিরুদ্ধে অপবাদের কোরাশ গেয়েছেন’- বলেন রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় বসা বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকার এমন হঠকারি কাজ করে নিজেদের পাকা ধানে মই দেওয়ার মতো নির্বোধ ছিল না। সুতরাং এক ঢিলে কয়েকটা পাখি মারার কাজ নেপথ্যে ও প্রকাশ্যে সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ। বিএনপি কখনোই আওয়ামী লীগের মতো কুটকৌশল ও নিষ্ঠুরতা শিখতে পারেনি।’
‘একইভাবে ২০০৯ সালে বিডিআর সদর দফতরের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড আওয়ামী সরকারের আমলেই ঘটেছে। এর জন্য কেন তারা দায়ী নয় ? দরবার হলের এ ধরনের অনুষ্ঠানে সবসময় প্রধান অতিথি থাকেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেন সেদিন যাননি?’— প্রশ্ন রিজভীর।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সাহারা খাতুন, জাহাঙ্গীর কবির নানক ও মির্জা আজম প্রকাশ্যে সদর দপ্তরে ঢুকে ঘাতক বিডিআর সদস্যদের সাথে দেন-দরবার করেছেন। সদর দপ্তরের বাইরে হত্যাকারী ঘাতকদের নেতা ডিএডি তৌহিদসহ তার সঙ্গীদের সাথে প্রধানমন্ত্রী নিজের সরকারি বাসভবনে বৈঠক করেন। ফাইভ স্টার হোটেল থেকে সেদিন তাদের জন্য খাবারও আনা হয়েছিল।’

রিজভী বলেন, ‘তৎকালীন সেনা প্রধান মঈন উদ্দিন দ্রুত বিডিআর সদর দফতরে সেনাবাহিনী পাঠানোর নির্দেশ চেয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান অবৈধ সরকার সেই নির্দেশ দেয়নি। কেন এই বিলম্ব করা হলো ? এই বিলম্ব না হলে প্রাণ দিতে হতো না অর্ধ শতাধিক চৌকস সেনা কর্মকর্তার। এর জন্য কি তৎকালীন আওয়ামী সরকার দায়ী নয়?’

তিনি বলেন, ‘একজন ঊর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তার নেতৃত্বে যে তদন্ত হয়েছিল, সেটা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জমা দেওয়া হলেও কেন তা প্রকাশ করা হয়নি? সে আলোকে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি কেন ? এগুলোর জবাব তো একদিন বর্তমান অবৈধ শাসকগোষ্ঠীকে দিতে হবে। ফ্যাসিবাদী শাসনে গোয়েবলসীয় কায়দায় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সারাদিন অপপ্রচারে ব্যস্ত থাকলেও সত্যকে কালো কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখতে পারবে না।’

রিজভী আরও বলেন, ‘অবৈধ শাসকগোষ্ঠীর মনে নিত্য ত্রাস আর আশঙ্কামেঘের আনাগোনা। তাই নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় ওবায়দুল কাদের অনবরত মিথ্যা ভাষণ দিয়ে যাচ্ছেন। তার বক্তব্যের বৈশিষ্ট্য ক্রোধপরায়ণতা ও কলহপ্রিয়তা।’

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের গেমপ্ল্যান খুব স্পষ্ট। আইন, আদালত, বিচার তাদের হাতে মুঠোয় থাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাবন্দী করে, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় একের পর এক সাজা দিয়ে ফাঁকা ময়দানে ইলেকশনের নামে সিলেকশন করে ক্ষমতা ধরে রাখা। সেজন্যই ছিনতাইবাজ সরকার গণতন্ত্র ছিনতাই করে ফ্যাসিবাদের বিশুদ্ধ শাসন কায়েম করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, আবুল খায়ের ভূঁইয়া, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদসহ অন্যান্যরা।

সারাবাংলা/এজেড

Tags: , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন