বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘের সঙ্গে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতা জোরদারের প্রত্যাশা

October 24, 2018 | 11:58 am

।। সারাবাংলা ডেস্ক ।।

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘ ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের সংশ্লিষ্টতা অব্যাহতভাবে জোরদারের প্রত্যাশা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ বুধবার (২৪ অক্টোবর) জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে দেওয়া পৃথক পৃথক বার্তায় এ প্রত্যাশা জানান তারা।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তার বার্তায় বলেন, ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর প্রতিষ্ঠার পর থেকে জাতিসংঘ সবচেয়ে বেশি প্রভাবশালী ও অংশীদারিত্বমূলক সংস্থায় পরিণত হয়েছে। প্রতিষ্ঠার সাত দশক পরও জাতিসংঘ নিরাপত্তা, শান্তি, টেকসই উন্নয়ন ও মানবাধিকার প্রশ্নে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ ও সক্রিয় রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা যখন টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজিজ) বাস্তবায়ন করছি, দারিদ্র্য নির্মূলের জন্য সম্মিলিতভাবে লড়াই করছি এবং সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলা করছি, তখন জাতিসংঘের ভূমিকা আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।’

বিজ্ঞাপন

জাতিসংঘ যে ভূমিকা পালন করছে, তা অন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থার পক্ষে পালন করা সম্ভব নয় বলেও মন্তব্য করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তাই জাতিসংঘ সনদে বিবৃত নীতি-আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমাদের সবার জাতিসংঘের ইতিবাচক ভূমিকা সমুন্নত করার নিবিড় প্রচেষ্টা চালানো প্রয়োজন।’

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ সবসময় জাতিসংঘের নীতি-আদর্শকে সম্মান করবে। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও মানবিক সমস্যা সমাধানে এবং বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তায় অবদান রাখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে।

তিনি বলেন, ‘মানুষ যেন মর্যাদা, শান্তি ও সমৃদ্ধির সঙ্গে বসবাস করতে পারে এবং যেখানে কাউকে বাদ দেওয়া হবে না— তেমন একটি উন্নত ও উজ্জ্বল ভবিষ্যত গড়ার জন্য জাতিসংঘকে শক্তিশালী করতে পারি, এই স্মরণীয় দিনে আমরা আমাদের সেই অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।’

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বার্তায় বলেন, জাতিসংঘ দিবসের এই শুভক্ষণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পাশাপাশি বাংলাদেশও জাতিসংঘ সনদ ও বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী বিশ্বব্যাপী শান্তি বজায় রাখা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মানবাধিকারের সুরক্ষা এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার দৃঢ় সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করছে। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে জাতিসংঘে যোগ দেন। বঙ্গবন্ধু ওই বছরই জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ভাষণে উল্লেখ করেছিলেন, বাঙালিরা শান্তিতে এবং বিশ্বের সব দেশের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বসবাস করছে। তিনি বলেন, আমাদের লাখ লাখ মানুষের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের স্বীকৃতি জাতিসংঘ সনদে স্থান করে নিয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সারাবিশ্বে টেকসই শান্তি, নিজেদের এবং সমাজের, ধর্ম জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে সম্প্রীতি বজায় রাখার প্রচেষ্টায় জাতিসংঘকে সমর্থন দিয়ে আসছি। বাংলাদেশ বিশ্ব শান্তি রক্ষায় ৫৪টি মিশনে ১,২৮,৫৪৩ জন শান্তিরক্ষী মোতায়েন করেছে। আমরা এ পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে ১৪৫ জন শান্তিরক্ষীকে হারিয়েছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন, দারিদ্র্য বিমোচন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং অন্যান্য আর্থসামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের চমৎকার ভূমিকা একটি বিশ্ব উন্নয়ন মডেল হিসাবে আত্মপ্রকাশে সহায়তা করেছে।

তিনি বলেন, আমাদের মাথাপিছু আয় ২০০৬ সালে ৫৪৩ মাকির্ন ডলার থেকে বেড়ে ২০১৮ সালে ১৭৫১ মাকির্ন ডলারে উন্নীত হয়েছে। আমরা গত এক দশকে জিডিপি গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ করতে সক্ষম হয়েছি এবং চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ। শেখ হাসিনা বলেন, মুদ্রাস্ফীতি কমে হয়েছে ৫ দশমিক ৪ শতাংশ। দারিদ্র্যের হার ২০০৬ সালের ৪১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে কমে ২০১৮ সালে ২১ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, আমাদের উন্নয়ন নীতিতে সব মানুষের জন্য সমান সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে আমাদের গ্র্যাজুয়েশনের ভিত্তি রচিত হয়েছে। আমারা আমাদের এমডিজি’র অধিকাংশই অর্জন করেছি এবং এসডিজি বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শেখ হাসিনা বলেন, জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য এখনও পুরোপুরি বাস্তবায়িত হয়নি। বিশ্বের অনেক দেশকে সংঘর্ষ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মোকাবিলা করতে হচ্ছে। জাতিসংঘ সবসময় সবার জন্য মানবতা, শান্তি ও সম্প্রীতি ও টেকসই উন্নয়নে কাজ করে যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ।

প্রধানমন্ত্রী জাতিসংঘ ও বৃহত্তর বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে আমাদের আন্তরিক সম্পৃক্ততার নীতি হিসেবে শান্তি, ন্যায়বিচার, উন্নয়ন এবং সহযোগিতা এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভিশন থেকে উৎসাহ লাভ অব্যাহত থাকবে। বাসস।

সারাবাংলা/টিআর

Tags: , , , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন