বিজ্ঞাপন

জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে নৌকায় ভোট চাইলেন শেখ হাসিনা

November 2, 2018 | 10:02 pm

।। নৃপেন রায়, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ময়মনসিংহ থেকে: ময়মনসিংহে বিশাল জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে আগামী জাতীয় নির্বাচনে নৌকায় ভোট চাইলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আজকে যে সব উন্নয়ন প্রকল্প ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি, সেইগুলো বাস্তবায়ন করা এবং বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলে জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন। হাত তুলে ওয়াদা করেন ভোট দেবেন।

শুক্রবার (২ নভেম্বর) বিকেলে ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় এই আহ্বান জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে ময়মনসিংহে স্থানীয় নেতা-কর্মীসহ জনগণের মাঝে ব্যাপক আনন্দ উচ্ছ্বাসের সৃষ্টি হয়। সার্কিট হাউজের বিশাল মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে জনতার পরিণত হয় জনসমুদ্রে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ময়মনসিংহকে নতুন বিভাগ ও সিটি করপোরেশন ঘোষণার পর এই জনপদে আজও বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের উপহার নিয়ে আসেন শেখ হাসিনা। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অনুমোদন দেয় নিকার। ওই বছরের ১৪ অক্টোবর সরকার ময়মনসিংহ বিভাগ গঠন করে গেজেট প্রকাশ করে।

বিজ্ঞাপন

 

আরও পড়ুন: ‘আ. লীগ ক্ষমতায় এসে নির্যাতন করে না, উন্নয়ন করে’

বিজ্ঞাপন

জাতীয় নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে দলীয় নেতা-কর্মীসহ আশেপাশের জেলাগুলোর মধ্যে আনন্দ উচ্ছ্বাসের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। এর আগে ২০১৩ সালের ৩ জানুয়ারি ময়মনসিংহ নগরীর ঐতিহাসিক সার্কিট হাউজ মাঠে শেষবারের মতো জনসভায় ভাষণ দেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আজকে দেশে খাদ্যের কোনো অভাব নেই। বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। সমাজে কেউ বাদ থাকবে না- সকলের উন্নয়ন হবে। সেই চিন্তা নিয়ে আমরা রাষ্ট্র পরিচালনা করি। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের উন্নয়নের রোল মডেল। এটা আমরা অর্জন করতে পেরেছি কেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। এটা মনে করি, এটাই আমাদের কতর্ব্য। বাংলার মানুষ যেন ভালোভাবে বাঁচতে পারে। বাংলার মানুষ যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে। বাংলার মানুষে যেন দু’বেলা পেট ভরে খেতে পারে। প্রতিটি মানুষের ঘর থাকবে। কোনো মানুষ গৃহহারা থাকবে না।

ডিসিদের কাছে নির্দেশ আছে, একটি মানুষও যেন গৃহহারা না থাকে- ভূমিহীন না থাকে। তাদের সকলকে আমরা বিনা পয়সায় আশ্রয়ণ প্রকল্প গুচ্ছ গ্রামের মাধ্যমে ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। বাংলাদেশকে আমরা ভিক্ষুকমুক্ত করব। এ ব্যাপারে খুলনায় সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ উদ্যোগে খুলনাকে ভিক্ষুকমুক্ত করার উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন এবং ঠিক সেইভাবে ময়মনসিংহ বিভাগকেও ভিক্ষুকমুক্ত করা হবে বলেও জানান তিনি।

 

বিজ্ঞাপন

আরও পড়ুন- ময়মনসিংহে ১৯৫ প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী

শেখ হাসিনা বলেন, কোনো মানুষ ভিক্ষা করবে না। প্রত্যেক মানুষ কাজ করে খাবে। আর যারা কর্মক্ষম না, তাদেরকে আমরা ভাতার ব্যবস্থা এবং বিনা পয়সার খাদ্যের ব্যবস্থা করে দেবো। এই বাংলাদেশ জাতির পিতার বাংলাদেশ। কেউ ভিক্ষা করবে না। ক্ষুধার্ত থাকবে না। কেউ রোগে কষ্ট পাবে না। কেউ অশিক্ষিত থাকবে না। সকলে শিক্ষার ব্যবস্থা, খাদ্যের ব্যবস্থা, চিকিৎসার ব্যবস্থা করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

‘সমগ্র বাংলাদেশে এবার প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। সেই বৃষ্টিতে যে সকল রাস্তাঘাট নষ্ট হয়েছে, আমাদের প্রকল্পের কাজ এখন থেকে শুরু হয়ে যাবে। যাতে প্রতিটি এলাকায় এলাকায় রাস্তার উন্নয়ন হয়। চলাফেরা আরও উন্নত হয়। আমরা সেইভাবে ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এই বিভাগে বিভাগীয় সব রকম সদর দফতর করার প্রকল্প ইতোমধ্যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি এবং যার কাজ শুরু হবে’, জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কাজগুলি আমরা করে দিচ্ছি, এই কাজগুলি সম্পন্ন করতে হবে। আমরা এসে মাত্র ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেয়েছিলাম, আজকে সেখানে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে রেকর্ড সৃষ্টি করেছি। ৯৩ ভাগ মানুষ আজ বিদ্যুৎ পাচ্ছে। গ্যাসের সমস্যা সমাধানের জন্য এলএনজি আমদানি করে দিচ্ছি। সারাদেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করে দেওয়া হবে। প্রত্যেকটি মানুষ যেন ভালোভাবে চলতে পারে। নিজের ভেতরে একটা আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে হবে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে উন্নীত হয়েছে। এই বাংলাদেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ। বাংলাদেশ আজকে দারিদ্র্যমুক্ত আজকে ক্ষুধামুক্ত আমরা সেই বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করব। ২০২১ সাল স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপন করব। ২০২০ সালের মার্চ থেকে ২০২১ সাল মুজিব বর্ষ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছি। এর মধ্যেই বাংলাদেশ হবে ক্ষুধামুক্ত-দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ। আমি এখানেই থেমে থাকছি না। আমরা ২০২১ থেকে ২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছি। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে দক্ষিণ এশিয়ায় উন্নত সমৃদ্ধ দেশ। সেইভাবেই বাংলাদেশকে গড়ে তুলব। বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। শত বছরের বাংলাদেশ কিভাবে উন্নত হবে। সেই পরিকল্পনাও নিয়েছি।

 

আরও পড়ুন- প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে ময়মনসিংহে উচ্ছ্বাস

“এর জন্য দরকার আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় থাকা। তাই আপনাদের কাছে আমার এই আবেদন থাকবে, আজকে যে সকল উন্নয়ন প্রকল্প ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি, সেইগুলো বাস্তবায়ন করা। বাংলাদেশকে উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তোলা, সুবর্ণজয়ন্তী আরও ব্যাপকভাবে উদযাপন করার জন্য জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চাই। আপনারা হাত তুলে ওয়াদা করেন ভোট দেবেন।”

জনসভাস্থলে উপস্থিত হওয়ার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি শুধু এইটুকুই বলবো, আমার কোনো চাওয়া-পাওয়া নেই। আপনাদের সেবা করা আমার কাজ। এখানে আপনাদের কাছ থেকে সহযোগিতা চাই এবং সকলে সুন্দরভাবে বাঁচবেন, উন্নত জীবন পাবেন- সেটাই আমরা চাই। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে শেখ হাসিনা বলেন, রিক্ত আমি নিঃস্ব আমি দেবার কিছু নেই, আছে শুধু ভালোবাসা দিয়ে গেলাম তাই।

ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট জহিরুল হক খোকার সভাপতিত্বে জনসভায় আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দিপু মনি, সাংগঠনিক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, ধর্মমন্ত্রী অধ্যক্ষ মতিউর রহমান, সিটি করপোরেশনের প্রশাসক একরামুল হক টিটু।

সারাবাংলা/এটি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন