বিজ্ঞাপন

মালেশিয়ায় নারী ক্ষমতায়নে এক রোহিঙ্গা বধূর সংগ্রাম

November 30, 2017 | 9:21 am

সারাবাংলা ডেস্ক

বিজ্ঞাপন

মালেশিয়ার কুয়লালামপুর শহরের একদম দক্ষিণের ছোট একটি শপিং মল রয়েছে। সেখানকার দোতলার একটি স্টোররুম থেকে মাঝে মাঝে শোনা যায় শিশুদের হাসির শব্দ। কখনোবা কানে ভেসে আসে ইংরেজি কবিতা আবৃত্তি। এই স্টোররুমে বেশ কিছু শিশু এবং নারীদের পড়ান মায়ানমারের রাখাইন পরিবারে বেড়ে উঠা শরীফা হোসাইন (২৪)। যেসব নারী ও শিশুদের তিনি পাঠদান করেন তারা প্রত্যেকেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা।

পাঁচ বছর বয়সে শরীফার বাবা জীবন বাঁচাতে জন্য মিয়ানমার থেকে মালেশিয়ায় পালিয়ে আসেন। তারপর ভাইবোনদের নিয়ে তাদের মা ইয়াঙ্গুনে চলে আসেন। যথাপোযুক্ত কাগজ না থাকায় শরীফার মাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এরপরে শরীফা মালেয়শিয়ায় বসবাসরত তার বাবার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে মিয়ানমারে চলে আসেন।

মালেয়শিয়ায় এসে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা গোষ্ঠীদের সহায়তায় মনোযোগী হোন। বিশেষ করে তার সম্প্রদায়ের শিক্ষা থেকে বঞ্চিত নারী ও শিশুদের সাহায্য করার জন্য ছোট স্টোররুমেই বানিয়ে ফেলেন স্কুল। নিজের কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা না থাকলেও সাহস আর মনোবলকে ভিত্তি করে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।’
শরীফা বলেন, ‘রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের কথা শোনার জন্য কোন সংগঠন গড়ে উঠেনি। তাই আমি এমন উদ্যোগ নিয়েছি।’ রোহিঙ্গা পুরুষরাও শরীফাকে খুব পছন্দ করে। নির্বিগ্নে স্ত্রী ও সন্তানদের এই স্কুলে পাঠাচ্ছেন তারা।

বিজ্ঞাপন

শরীফা আরও বলেন, ‘আমি পারিবারিক সহিংসতা বন্ধ করতে চাই। আমাদের গোষ্ঠীর মধ্যে বাল্য বিবাহ বন্ধ করতে চাই। নারী ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করতে চাই। এ জন্য প্রয়োজন মালেশিয়া সরকারের সহায়তা।’

হোসেইন ইতোমধ্যে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা, ইউএনএইচসিআর- এর পক্ষ থেকে কিছু অনুদান পেলেও তা খুব কম। নিজ অর্থেই চালিয়ে যাচ্ছেন কাজ। এই কাজে বাবা ও স্বামীর কাছ থেকে পাচ্ছেন সব সহায়তা।

এ ছাড়া বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সহায়তার জন্য তিনি অন্যান্য শরণার্থী গোষ্ঠীর কাছে আবেদন জানিয়েছেন। ইতোমধ্যে মালেয়শিয়া সরকার বাংলাদেশে রেহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবা দেওয়ার জন্য ৫০ বেডের একটি অস্থায়ী হাসপাতাল ও ছোট ছোট ক্লিনিক।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের শরণার্থী এজেন্সির বরাত দিয়ে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে ১ লক্ষ ৫২ হাজার ১৭০ জন শরনার্থী রয়েছে মালেয়শিয়াতে। এর বেশির ভাগই হলো মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী।

সারাবাংলা/মনিরা/ এমএইচটি/নভেম্বর ৩০, ২০১৭

Tags:

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন