বিজ্ঞাপন

পক্ষপাতদুষ্ট ডিসি-এসপিদের বদলিসহ ১৩ দফা দাবি ২০ দলের

November 25, 2018 | 6:50 pm

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: পক্ষপাতদুষ্ট জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও পুলিশ সুপারদের (এসপি) বদলির দাবি জানিয়েছে ২০ দলীয় জোট। একই সঙ্গে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রীদের পিএস ও এপিএসদের নির্বাচনে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ না দেওয়ারও দাবি জানানো হয়েছে ২০ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে।

রোববার (২৫ নভেম্বর) বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে ২০ দলীয় জোটের একটি প্রতিনিধি দলের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান, জোটের অন্যতম নেতা ও ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপির) চেয়ারম্যান কর্নেল (অব.) অলি আহমেদ।

‘আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব বাড়তে পারে, কাছেও আসতে পারি’

তিনি বলেন, ইসি আমাদের ১৩ দফা দাবি গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং দাবিগুলো বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা বিতর্কিত কর্মকর্তাদের শাস্তি চাই না, বদলি চাই। সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের স্বার্থে এক জেলার কর্মকর্তাদের অন্য জেলায় বদলি করা জরুরি। এখনো সবার জন্য সমান সুযোগ সৃষ্টি হয়নি। পুলিশ নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে। ইসির নির্দেশনার মাঠ পর্যায়ে কোনো প্রতিফলন নেই।’

এখনো সারাদেশে গায়েবি মামলায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে উল্লেখ করে কর্নেল অলি আহমেদ বলেন,  ‘এসব মামলায় কোনো আসামির নাম উল্লেখ না থাকায়, নির্বাচনের আগে পুলিশ বিএনপির এজেন্টদের এসব মামলায় গ্রেফতার দেখাবে। তাই আগামী ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত এসব মামলা স্থগিত রাখার দাবি জানিয়েছি।’

এ ছাড়া সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আজকের দিন পর্যন্ত ইসি প্রমাণ করতে পারেননি তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করছেন, তাদের সীমাবন্ধতা আছে সেটা আমরা জানি, তবে আমরা যে ১৩টি প্রস্তাব এনেছি তাতে ইসি একমত হয়েছে।’

বিজ্ঞাপন

২০ দলীয় জোটের দাবি সম্বলিত চিঠিতে বলা হয়, জাতীয় ঐক্যফন্টের পক্ষ থেকে কয়েক দিন আগে নির্বাচন কমিশনে বিতর্কিত কর্মকর্তাদের তালিকা দেওয়া হয়েছিল তাদের নির্বাচনকালীন সময়ে অন্যত্র বদলির করার দাবি জানানো হয়েছিল। ২০ দলীয় জোটের প্রতিনিধি দলও মনে করে এগুলোর বাস্তবায়ন জরুরি। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য অতীতে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে ইসি।

লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, রিটার্নি কর্মকর্তাদের দায়িত্বপালন করা অনেক কর্মকর্তাকেই সরকারি দলের প্রার্থীকে জয়ী করার জন্য রাতের আধারে ব্যালট পেপারে ভোট কাস্ট করে রাখেন। চাকরির রক্ষার জন্য অনেক সময় তারা এই রকম অনৈতিক কাজে আত্মসমর্পন করেন। এ ধরনের কর্মকাণ্ড এড়াতে ইসির আগে থেকেই ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।

সরকার একটি দুরভিসন্ধি ও নীল নকশার নির্বাচন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে প্রতিনিয়তিই বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেফতার করছে, ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে, মিথ্যা মামলা দায়ের করছে। এই ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে নির্বাচন কমিশনকে দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। এভাবে চললে নির্বাচন বানচাল হতে পারে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ইসির নির্দেশনা সত্ত্বেও সরকারের এমপি মন্ত্রীরা সব ধরনের সুযোগ সুবিধা ব্যবহার করে নির্বাচনী এলাকা প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন। এঅবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করা যায় না। কমিশনকে এ ক্ষেত্রে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

বিজ্ঞাপন

কর্নেল অলি বলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলার এএসপির স্ত্রী ফাতেমা তুজ জোহরা আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি। সস্প্রতি সন্তানসহ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছবি তুলেছেন তারা। এমন অবস্থায় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তার পক্ষে নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না।

নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারি রেডিও ও টেলিভিশন ইসির নিয়ন্ত্রণে থাকা বাঞ্ছনীয় বলেও মনে করে বিশ দলীয় জোট।

বেসরকারি গণমাধ্যমের নিরপেক্ষতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে ইসির তরফ থেকে একটি গাইড লাইন করা প্রয়োজন।
নির্বাচনকালীন সময়ে আইন-শৃঙ্খলা ভঙ্গকারীদের গ্রেফতারের ক্ষমতা দিয়ে পুলিশের মত একটি সশস্ত্র বাহিনীকেও দায়িত্ব দেওয়া দরকার।

১৫ ডিসেম্বর থেকে নির্বাচনি এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের পাশাপাশি সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা প্রয়োজন।

তিনি বলেন, ‘প্রত্যেক নির্বাচনী এলাকায় পূর্ণ ক্ষমতাসহ ১১ ডিসেম্বর হতে ম্যাজিট্রেট নিয়োগ করা প্রয়োজন। ভোটের দিন এই সংখ্যা বাড়ানো দরকার।’

‘এত টাকা ব্যয় করে জনগণের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইভিএম ব্যবহার করা উচিত নয়। এটি বন্ধ করুন। নির্বাচালীন সময় মন্ত্রী ও সিনিয়র নেতারা ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য স্পেশাল ব্রাঞ্চের নিরাপত্তা রক্ষী পেয়ে থাকেন। একইভাবে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সকল সদস্যসহ নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিরাপত্তা দেওয়া যুক্তিযুক্ত। তা না হলে ইসি পক্ষপাাতিত্ব করছে বলে মনে হবে। অতীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারগুলো বিরোধী দলের দাবি দাওয়া শুনতো ও ব্যবস্থা নিত।’

এসময় বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়ম মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, ৩০ ডিসেম্বর ভোট হবে। এর আগে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত মনোনয়নপত্র জমা, ২ ডিসেম্বর বাছাই ও ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

সারাবাংলা/জিএস/এমআই

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন