বিজ্ঞাপন

ইজতেমায় যাচ্ছেন না মাওলানা সাদ

January 11, 2018 | 10:57 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট

বিজ্ঞাপন

ঢাকা : ভারতীয় উপমহাদেশের তাবলীগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা সাদ কান্ধলভি তুরাগ তীরে অনুষ্ঠিতব্য ইজতেমায় যাচ্ছেন না। আগামীকাল থেকে ইজতেমা শুরু হলেও মাওলানা সাদ কাকরাইলে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার (ক্রাইম ও অপারেশন) কৃষ্ণপদ রায়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় কাকরাইল মসজিদের সামনে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো: আছাদুজ্জামান মিয়ার বরাত দিয়ে তিনি জানান, ইজতেমা ইজতেমার মতো চলবে, মাওলানা সাদ থাকবেন কাকরাইলে। ইজতেমা শেষে তিনি ফিরে যাবেন।

বিজ্ঞাপন

‘সুশৃঙ্খলভাবে ইজতেমা যাতে সম্পন্ন হয় সে জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

কাকরাইলে পুলিশি নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, জনগণের যাতে কোনো ভোগান্তি না হয়, কোনোপ্রকার বিশৃঙ্খলা যেন না হয় এই কারণে কাকরাইলে পুলিশের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, সা’দ হুজুরকে ঘিরে যাতে কোন প্রকার বিশৃঙ্খলা না ঘটে সেজন্য কাকরাইল ও তার আশেপাশের এলাকাজুড়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

 

বুধবার বেলা ১২ টায় মাওলানা সাদ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তবে আগে থেকেই তার বিপক্ষের মুসল্লিরা বিমানবন্দরের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করায় তিনি বের হতে পারেননি। পরে পুলিশি নিরাপত্তায় বিকেল পৌনে ৪টার দিকে তাকে কাকরাইল মসজিদে নেওয়া হয়। তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তায় এখন তিনি সেখানেই রয়েছেন।

এরপর ওই দিন সন্ধ্যায় সাদ এর বিপক্ষের মুসল্লিরা কাকরাইল মসজিদের কাছে প্রধান বিচারপতির বাস ভবনের সামনের রাস্তায় প্রায় ১০ মিনিট তারা মিছিল করে। এক ট্রাক ভর্তি মুসল্লি এ সময় স্লোগান দেয় ‘সা’দ তুমি ফিরে যাও’। এরপর পুলিশ তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সরে যেতে বললে মুসল্লিরা কাকরাইল মসজিদের সামনে থেকে সরে যায়।

বিজ্ঞাপন

তাবলীগ জামাত সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ তাবলীগ জামাত পরিচালনা কমিটির শূরা সদস্য ১১ জন। এর মধ্যে সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও হাফেজ মাওলানা জুবায়েরের মধ্যে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব ও গ্রুপিং ছিল। তারা একে অপরের বিরুদ্ধে এর আগেও দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। তবে দ্বন্দ্ব পরিস্থিতি ঘোলাটে হয় মাওলানা সা’দ কিছু ফতোয়া দেওয়া পর থেকেই। এরপর মাওলানা জুবায়েরের পক্ষে অবস্থান নেয় কওমি মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

তাবলীগ জামাতের জুবায়ের গ্রুপের অভিযোগ মাওলানা সা’দ ফতোয়া দিয়েছেন, স্মার্টফোন সঙ্গে থাকলে নামাজ হবে না। কারণ স্মার্টফোনে নানা ধরনের মানুষের ছবি থাকে। আর ছবি সঙ্গে থাকলে নামাজ হয় না।

সূত্র জানায়, মাওলানা সা’দ মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধেও কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, আরবি শিক্ষার বিনিময়ে টাকা নেওয়া হারাম। মূলত এমন ফতোয়ার পরেই পরিস্থিতি উত্তাল হয়।

এছাড়াও গত নভেম্বরে পাকিস্তানে তাবলীগ জামাতের এক আয়োজনে বাংলাদেশের তাবলীগ জামাতের মজলিশে শূরা সদস্য ও ফায়সাল (আমির) সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম ও হাফেজ মাওলানা জুবায়েরের যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে জুবায়ের সেখানে যান। দেশে ফেরার পর তাকে অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে বলা হয়। কিন্তু জুবায়ের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত না করে তথ্য গোপন করেন। এ নিয়েও ঝামেলা হয় দুই পক্ষের মধ্যে।

তাবলীগ জামাতের বিরোধ নিয়ে এই দুই পক্ষের মধ্যে মামলা-পাল্টা মামলা দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল তাদের নিয়ে কয়েক দফা বৈঠকও করেছেন।

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর কাকরাইল মসজিদে ওয়াসিফুল ও জুবায়ের গ্রুপ একে অন্যের বিরুদ্ধে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে প্রথমে ধাক্কাধাক্কি, এরপর হাতাহাতি হয়।

আগামী ১২ জানুয়ারি তুরাগ নদীর পাড়ে শুরু হচ্ছে মুসলিম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় সমাবেশ ‘বিশ্ব ইজতেমা’। গতবারের মতো এবারও বিশ্ব ইজতেমা দুইটি পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব আগামী ১২ জানুয়ারি থে‌কে ১৪ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব ১৯ জানুয়ারি থে‌কে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

সারাবাংলা/ইউজে/একে

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন