বিজ্ঞাপন

নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে পরিণতি হবে ভয়াবহ: ড. কামাল

December 19, 2018 | 3:13 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে দাবি করেছেন ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন।

তিনি বলেন, ‘আসছে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে শেষ করতে না পারলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। দেশে সুশাসন আছে এমনটি যদি কেউ দাবি করে থাকে, তাহলে আমি বলবো সে মিথ্যা বলছে।’

বুধবার (১৯ ডিসেম্বর) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

৭০ তম বিশ্ব মানবাধিকার দিবস ও ৪৭ তম বিজয় বার্ষিকী উপলক্ষে ‘মানবাধিকার, সুশাসন ও ভোটাধিকার’ শীর্ষক আলোচনার সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ মানবাধিকার ফেডারেশন (বিএইচআরএফ)।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘তথাকথিত নির্বাচনে আপনারা যদি ৩শ সিট চান, তাহলে বলেন আমরা দিয়ে দেই। আপনারা আরও পাচঁ বছর থাকবেন এটাতো বলেই যাচ্ছেন। এভাবে চাওয়ার থেকে আমাদের কাছে বলেন। আমরা হাত তুলে মেনে নেই।’

ড. কামাল বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে) তো বলেছেনই আরও পাঁচ বছর থাকতে চান। অসম্পূর্ণ কাজ সম্পূর্ণ করতে চান। এই পাঁচ বছর পরে আরও কিছু কাজ অসম্পূর্ণ থাকবে, তখন আরও পাচঁ বছর থাকার ইচ্ছা প্রকাশ করবেন।’

বিজ্ঞাপন

অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করার জন্য সময় যদি এভাবেই বাড়ানো যায় তাহলে আলহামদুলিল্লাহ। সবাই বলবে আরও পাঁচ বছর থেকে অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করি এটা নিয়মে পরিণত হবে- বলেন কামাল।

ড. কামাল বলেন, এখন যারা ক্ষমতায় আছেন, তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, আপনারা কোন ক্ষমতা বলে শাসন করছেন সেটা আমরা পরে বুঝব। এখন যেটা করছেন একদমই সংবিধান পরিপন্থী কাজ করছেন।

কামাল বলেন, ‘এই যে যেমন ইচ্ছা রাস্তা থেকে পুলিশ অনেককে ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এটা কি সুশাসন? আজকে আপনাকে সাহায্য করার জন্য বলে দিচ্ছি, এখনই পুলিশকে এসব কাজ থেকে বিরত থাকতে বলেন। এ ধরনের শাসন আমি কখনও দেখিনি। এটাকে যদি সুশাসন বলা হয় তাহলে মিথ্যা বলা হবে। আজকে কেউ যদি দাবি করে এদেশে সুশাসন আছে তাহলে আমি বলব সে মিথ্যুক। কি বলব এসব দেখতে হচ্ছে, শুনতে হচ্ছে।’

‘আমি উচিৎ কথা বলছি, ধরে নিয়ে যান আমাকে। আপনার পুলিশের সামনে দাঁড়িয়ে আমি এ কথা বলছি। খুব সাহসী আপনারা, ধরেন আমাকে। আশ্চর্য, স্বাধীনতার ৪৭ বছর পরে এসব দেখতে হচ্ছে’- যোগ করেন ড. কামাল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘যারা মনে করবে আমরা ক্ষমতা পেয়ে গেছি, মানবাধিকারের কথা মানতে হবে না। পুলিশকে এভাবে অপব্যবহার করতে থাকেন, বিশ্বাস করেন আমার কী হয় না হয়, তা বড় কথা না। আপনাদের বিচার হবে, শাস্তি হবে। এখানে এবং পরকালে। এখানে যদি কোনো কারণে পার পেয়ে যান, পরকালে আপনারা পার পাবেন না ইনশাআল্লাহ, সেটা মনে রাইখেন।’

বঙ্গবন্ধুর স্বাক্ষরিত সংবিধান দেখে বোঝার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল বলেন, ‘সংবিধান শ্রদ্ধার সঙ্গে মানার চেষ্টা করেন। দেশ এভাবে চলতে পারে না। সংবিধান লঙ্ঘন করলে বঙ্গবন্ধুকে সম্মান করা হয়। স্বাধীনতার ওপর আঘাত করা হয়। এটা থেকে বিরত থাকতে হবে।’

ভোটের অধিকার সবাই ভোগ করবে। স্বাধীন দেশে যদি নাগরিকেরা ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় তাহলে সেটা হবে স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এ আঘাত দেশদ্রোহীতার সামিল। কেউ যদি মনে করে দেশদ্রোহীতা করে পার পাওয়া যায়, তা ঠিক না। আজ হোক, কাল হোক তার বিচার হবে।

নির্বাচন কমিশনকে তার গুরু দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়ে ড. কামাল হোসেন বলেন, সব ক্ষমতা আপনাদের। জনগণের ভোটের অধিকার আপনাদের রক্ষা করতে হবে। এটা আপনাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব। সরকার যদি কোনো সংবিধান পরিপন্থী কাজ করে এর থেকে বিরত রাখার ব্যবস্থা করুন। সরকারকে আদেশ দেন পুলিশ সরান।

নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা দেশের জন্য ও দেশের স্বাধীনতা ও ভবিষ্যতের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। যদি আপনারা ক্ষমতা কাজে লাগান, ইনশাআল্লাহ ভালো নির্বাচন হবে। উজ্জ্বল ভবিষ্যত সামনে দেখা যাচ্ছে। আর এটা না করলে নির্বাচনের ওপর কোনো আঘাত দেওয়া হয়, তাহলে ভয়াবহ পরিণতি হবে।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সহসভাপতি ড. গোলাম রহমান ভূঁইয়া।

সংগঠনটির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ড. মোহাম্মদ শাহজাহানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন, সাবেক মন্ত্রী ও সাবেক সেনাপ্রধান লে. জেনারেল (অব) নূরুদ্দিন খান, সাবেক আইজিপি ড. এম এনামুল হক, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষণ পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজুমল আহছান কলিম উল্লাহ প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেডকে/জেএএম

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন