বিজ্ঞাপন

শেখ হাসিনার ১০ বছরের অর্থনীতি

December 23, 2018 | 6:13 pm

।। জিমি আমির ।।

বিজ্ঞাপন

শেষ হলো আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের টানা ১০ বছরের শাসনামল। স্বাধীনতার পর এই প্রথম কোনো সরকার একটানা এত সময় ক্ষমতায় থেকেছে। এর আগে, টানা দুই মেয়াদ ক্ষমতায় ছিলেন স্বৈরশাসক এরশাদ। তবে তিনিও ১০ বছর ক্ষমতায় থাকতে পারেননি, তার মেয়াদ ছিল ৯ বছর। বলা হয়ে থাকে, উন্নয়ন দৃশ্যমান করতে কোনো একটি সরকারের ধারাবাহিকতা দরকার। সে হিসেবে এরশাদ সরকারের মেয়াদের উন্নয়ন যেমন দৃশ্যমান ছিল, তেমনি শেখ হাসিনা সরকারের মেয়াদের উন্নয়নও দৃশ্যমান।

দেশ আজ উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় স্থান করে নিয়েছে। তবে এর চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে অপেক্ষা করতে হবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত। সেই হিসেবে বাংলাদেশকে এখন যেতে হচ্ছে একটি পরীক্ষার মধ্য দিয়ে। তবে গেল ১০ বছরে সরকারি খাতায় অর্থনীতির বেশকিছু সূচক কিন্তু ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয় ও রফতানি বেড়েছে, রিজার্ভ শক্তিশালী হয়েছে, বৈধ পথে রেমিটেন্স আসার হার বেড়েছে, কৃষি, শিল্প বা সেবা খাতে প্রবৃদ্ধি বেড়েছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা এসেছে, বেড়েছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। দেশের সক্ষমতা প্রমাণে প্রধানমন্ত্রী মহাকাশে উড়িয়েছেন বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।

আওয়ামী লীগ সরকারের শাসনামলের আছে উল্টো চিত্রও। গত ১০ বছরে বিনিয়োগে যে গতি আসা দরকার, তা আসেনি। একই অবস্থা কর্মসংস্থানেও। আমদানি প্রবণতা কমানো যায়নি, মূল্যস্ফীতি সহনীয় মাত্রায় রাখার চেষ্টা করা হলেও কখনও কখনও তা লাগামছাড়াও হয়েছে। ব্যাংকিংখাতের দুর্নীতি ও অস্থিরতার বিষয়টি ছিল সবচেয়ে আলোচিত। ২০১০ সালে শেয়ারবাজারে দ্বিতীয়বারের ধ্বস আজও কাটিয়ে উঠতে পারেনি বিনিয়োগকারীরা। বিশ্বের বড় কয়েকটি হ্যাকিংয়ের মধ্যে বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি একটি বড় ঘটনা। রানা প্লাজা দুর্ঘটনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রশ্নের মুখে দাঁড় করায় বাংলাদেশকে। এই অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বন্ধ হয়ে যায় দেশের অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা (জিএসপি)। আমেরিকা অনেকটা বাধ্য করে ‘ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট ফ্রেমওয়ার্ক এগ্রিমেন্ট (টিকফা)’ সই করাতে। এছাড়া, বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি বা এডিপি বাস্তবায়নের হার নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন এক লাফে দ্বিগুণ হলেও প্রায় কোনো অফিস থেকেই দূর হয়নি দুর্নীতি।

বিজ্ঞাপন

বর্তমান মহাজোট সরকার ২০০৯ সালে যখন ক্ষমতা নেয়, তখন মোট দেশীয় উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৫ শতাংশ। মহাজোট সরকার টানা দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার পেরিয়ে যায় ৭ শতাংশের ঘর। এসময় জিডিপি বাড়ার পেছনে বড় উপাদান হিসেবে কাজ করে পদ্মা সেতুসহ সরকারের মেগা প্রজেক্টগুলো। তবে উন্নয়ন সহযোগী দু’টি সংস্থা বিশ্বব্যাংক ও এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) জিডিপি নিয়ে বরাবরই ভিন্নমত দিয়ে এসেছে। জিডিপি নিয়ে সবসময় রক্ষণশীল হিসেব দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। সে তুলনায় এডিবির হিসেব ছিল সরকারের সঙ্গে অনেকটাই সামঞ্জস্যপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ যখন শক্তিশালী থাকে তখন সেই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ভাবা হয়। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতুর তৈরির চিন্তার আগে বিভিন্ন জায়গায় সহযোগিতা চাওয়ার সময় এ বিষয়টিকে মাথায় রেখেছিল সরকার। কিন্তু বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ার পর যখন ঋণ বা সহায়তা পাওয়া কঠিন হয়ে গেলে, তখন অনেক প্রকল্প বাদ দিয়েই সেতু তৈরির চিন্তা করে সরকার। অর্থনীতির কথা ভেবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সর্বোচ্চ চেষ্টা করে গেছেন ঋণ পাওয়ার। বিশ্বব্যাংক সরে যাওয়ায় এ প্রকল্পে কেউ এগিয়ে আসেনি। শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকটা জেদের বসেই ঘোষণা দিলেন, নিজেদের টাকায় সেতু বানাবেন। এখন তা বাস্তবায়নাধীন। দেশের ইতিহাসে সর্বাধিক আলোচিত এই প্রকল্প নিয়ে দুর্নীতির দায়ে পদত্যাগ করেছিলেন, সে সময়ের যোগাযোগমন্ত্রী আবুল হাসান। হাতকড়া পরেছিল সেই সময়ের যোগাযোগ সচিব ও বর্তমান এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া। তবে, শেষ পর্যন্ত কানাডার আদালতে দুর্নীতির এসব অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি।

ফিরে আসি রিজার্ভের কথায়, প্রায় ৩৩ বিলিয়ন ডলার নিয়ে ২০০৯ সালের তুলনায় রিজার্ভের আকার এখন ছয় গুণ বড়। রফতানি আয় বেড়ে যাওয়া, ব্যাংকিং বা বৈধ পথে রেমিটেন্স আসার হার বেড়ে যাওয়া, মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমে যাওয়া এবং সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে বিনিয়োগ না হওয়ায় রিজার্ভ দিনের পর দিন শক্তিশালী হয়েছে। সরকারি কিছু বিনিয়োগ হলেও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ তেমন বাড়েনি গত ১০ বছরে। অর্থনীতি শক্তিশালী করতে যেখানে শুধু বেসরকারি বিনিয়োগ হওয়ার কথা ২৮ শতাংশ, সেখানে সরকারি-বেসরকারি খাত মিলিয়ে বিনিয়োগ ২৮ শতাংশ। এ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের আক্ষেপ ছিল বরাবরই।

বিজ্ঞাপন

যে রিজার্ভ নিয়ে বাংলাদেশ গর্ব করতে পারে সেই রিজার্ভ থেকে সাড়ে ৮ কোটি ডলার হাওয়া হয়ে যায়। বিশ্বের অন্যতম সাইবার হ্যাকিংয়ের কবলে পড়ে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নিয়ে পানি গড়িয়েছে অনেক দূর পর্যন্ত। চোর তো চুরি করে নিয়েছে ঠিকই, কিন্তু এত নিরাপত্তার মধ্য থেকেও এই চুরিকে স্বাভাবিকভাবে দেখেনি সাধারণ মানুষ। সব মহল থেকে প্রশ্ন উঠেছে, এত দুর্বল সাইবার নিরাপত্তা কেন ছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংকে? এই হ্যাকিং ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করতে চেয়ে আজও তা করেনি সরকার। এ ঘটনায় পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন গভর্নর ড. আতিউর রহমান ও দুই ডেপুটি গভর্নর।

বিবিএসের এক হিসাবে দেখা গেছে, ১৫ বছরের বেশি বয়সী অর্থনৈতিকভাবে কর্মক্ষম শ্রমশক্তি ৬ কোটি ৭ লাখের মধ্যে প্রায় ৬ কোটি বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত। বাকি ২৬ লাখ ৮০ হাজার শিক্ষিত বেকার। অবশ্য বিবিএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরিবারের মধ্যে কাজ করে, কিন্তু কোনো মজুরি পান না— এমন মানুষের সংখ্যা এক কোটির বেশি। এছাড়া আছেন ১ কোটি ৭ লাখ দিনমজুর, যাদের কাজের কোনো নিশ্চয়তা নেই। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) হিসাবে এরাও বেকার। এ হিসাবে বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন বেকারের সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ২ কোটি ৪৪ লাখ।

এই মুহূর্তে দেশের ৬৮ শতাংশ মানুষ কর্মক্ষম, যাকে বলা হয় ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড। এই জনগোষ্ঠীর বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আগামী ৩০ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে এই কর্মক্ষম জনশক্তিকে কাজে লাগাতে না পারলে তা জাতির জন্য বোঝা হয়ে যাবে। তখন দেশে ৬৮-৭০ শতাংশ মানুষ হবে বৃদ্ধ। বিশেষজ্ঞদের ভাষায়, কোনো একটি রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে এ অভিজ্ঞতা একবারই হয়। দুই থেকে তিন দশকের মধ্যে তা আবার শেষ হয়ে যায়। এই সময় এই মানুষদের কাজে লাগিয়ে এক ধরনের মুনাফা আসে সরকারের কাছে। কারণ, এদের কাজে লাগাতে না পারলে এরাই জননিরাপত্তার হুমকি হয়ে দাঁড়াবে, যা নিয়ে এরই মধ্যে চিন্তায় সরকার।

বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকার উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৩ হাজার ৯২৪ মেগাওয়াট। এখন ক্যাপটিভসহ যা ১৬ হাজার ৪৬ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। ওই সময় বিদ্যুতের সুবিধা পেত ৪৭ ভাগ জনগণ, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৬ ভাগে।

বিজ্ঞাপন

সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ এসেছে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে। এর পরিমাণ পাঁচ হাজার ১৪৬ মেগাওয়াট। অন্যদিকে, প্রায় তিন হাজার ৬৭০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ এসেছে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে, যা ব্যয়বহুল। পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানিতেও সরকারের উদ্যোগ আলোর মুখ দেখতে শুরু করেছে। বর্তমানে তিন মেগাওয়াটের একটি সৌর বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করা হয়েছে। তবে ব্যয়বহুল উৎপাদনের এই বিদ্যুৎ কিনতে এরই মধ্যে মানুষের পকেটে টান লাগা শুরু হয়েছে।

রফতানি খাতেও বড় অর্জন আছে বাংলাদেশের। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বিভিন্ন পণ্য রফতানি করে বাংলাদেশ তিন হাজার ৬৬৬ কোটি ৮২ লাখ বা ৩৬.৬৬ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে। অথচ ১৯৮১-৮২ সালে তা ছিল মাত্র ৭৫ দশমিক ২ কোটি ডলার। প্রবাসী আয়ের ক্ষেত্রে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে কাজ করছেন। তারা প্রতিবছর ব্যাংকিং চ্যানেলে ১৩-১৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স পাঠাচ্ছেন। এছাড়া, ইনফরমাল চ্যানেলে আরও প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ রেমিটেন্স দেশের অর্থনীতিতে যোগ হচ্ছে। ফলে, এই ২৩ থেকে ২৫ বিলিয়ন ডলার রেমিটেন্স বৈদেশিক বিনিয়োগের বিকল্প হিসেবে অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।

খাদ্য উৎপাদনে দেশের পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো। শাকসবজি ও ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসেবে, বাংলাদেশ এখন চাল উৎপাদনে বিশ্বে চতুর্থ। শাকসবজি উৎপাদনে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয় ও কাঁচা পাট রফতানিতে প্রথম, আলু ও পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম, আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে।

বিএনপি’র অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের মতো ১২ বার বাজেট দিয়েছেন আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রী থাকা অবস্থায় সাইফুর রহমান দেশে ভ্যাটের প্রচলন করেছিলেন। এই ভ্যাটই আজ রাজস্ব বোর্ডের সবচেয়ে বড় আয়ের জায়গা। অথচ আবুল মাল আবদুল মুহিত ভ্যাটের সেই হারকে একীভূত হারে আনতে চেয়ে পারেননি ব্যবসায়ীদের আপত্তির মুখে।

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর অর্থমন্ত্রী দেশের বিনিয়োগ বাড়ানোর জন্য পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রচলন করতে চেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। অর্থমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সেই সময় অনেকেই স্বাগত জানিয়েছিলেন। কিন্তু তা আলোর মুখ দেখেনি। ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ হিসেবে জেলা বাজেট করতে চেয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। পরীক্ষামূলক হিসেবে একটি জেলায় তা শুরু হলেও এক সময় তা মুখ থুবড়ে পড়ে।

দেশের অর্থনীতির আকার অনুযায়ী দরকার না হলেও নতুন ৯টি ব্যাংকের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের দায়িত্ব নিয়ে যে সমালোচনার জন্ম হয়েছে, তার দায় এড়াতে পারেন না অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আলোচনা উঠেছে, অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ তুলে দেওয়ার।

সরকার হলেই এক নিমিষেই সব সমস্যার সমাধান করে ফেলতে পারবেন— এটা ভাবা যেমন অবান্তর, তেমনি জনগণের কাছে করা প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন না করার দায়ও মাথা পেতে নিতেই হয়। সব মিলিয়ে গত ১০ বছরে শেখ হাসিনা সরকার চেষ্টা করেছে, কখনও পেরেছে, কখনো পারেনি। উন্নয়নের সুফল পেতে সরকারকে ধারাবাহিকতার সুযোগ দেবে কি না— সে সিদ্ধান্তের ভার জনগণের।

লেখক: জয়েন্ট নিউজ এডিটর, সারাবাংলা ডটনেট

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন