বিজ্ঞাপন

বগুড়ায় ভোট গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন

December 29, 2018 | 5:53 pm

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

বগুড়া: রাত পোহালে ভোট। সারাদেশের মত বগুড়ায় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী থেমে গেছে নির্বাচনি প্রচার। জেলার ৭টি সংসদীয় আসনের ভোট গ্রহণের জন্য সব সরঞ্জাম পৌঁছেছে উপজেলা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ে। ভোটকে কেন্দ্র করে জেলায় র‌্যাব, সেনাসদস্য, পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা টহল দিচ্ছে।

বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলা নিয়ে গঠিত ৭টি সংসদীয় আসন। এসব আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, এরশাদের জাতীয় পার্টি, কমিউনিস্ট পার্টি, জাসদ (ইনু), স্বতন্ত্র, ইসলামী আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ৪৭ জন প্রার্থী হয়েছেন। এরমধ্যে, বগুড়া-৭ আসনে বিএনপি প্রার্থী মোরশেদ মিল্টন এর প্রার্থিতা উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে সঠিকভাবে পদত্যাগ না করায় জটিলতার কারণে স্থগিত হয়েছে। সেক্ষেত্রে প্রার্থী সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৬ জনে। জেলার ৯২৬টি ভোট কেন্দ্রের ৪ হাজার ৮১৭টি কক্ষ প্রস্তুত করা হয়েছে ভোট গ্রহণের জন্য। জেলায় ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র রয়েছে ৫৬০টি। মোট ২৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫৮ জন ভোটার বগুড়া থেকে ৭ জনকে নির্বাচিত করে জাতীয় সংসদে পাঠাবেন।

গত বুধবার ব্যালট পেপার ছাড়া প্রায় সকল উপকরণ পাঠানো হয় জেলায়। বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ৭টি আসনের সহকারী রিটার্নিং অফিসারদের কাছে ব্যালট পেপার পৌঁছে দেয়া হয়েছে বলে জানান রিটার্নিং অফিসার।

বিজ্ঞাপন

বগুড়ার রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোঃ ফয়েজ আহামদ জানান, গুরুত্বপূর্ণ ভোট কেন্দ্র রয়েছে ৫৬০টি। বাকিগুলো সাধারণ ভোট কেন্দ্র হিসেবে ধরা হয়েছে। যথেষ্ট সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন থাকছে। ভোটাররা যেন খুব সহজে ভোট প্রদান করতে পারে সে বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

ফয়েজ আহামদ আরও জানান, প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন করে পুলিশ সদস্য থাকবে। জেলায় বিজিবি থাকছে ১৬ প্লাটুন (৩২০ জন), প্রতি কেন্দ্রে ১২ জন করে মোট ১১ হাজার ১১২ আনসার সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। জেলার ১২টি উপজেলায় ৬৫০ জন সেনা সদস্য স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে কাজ করবেন। তিনটি ইউনিয়ন নিয়ে পুলিশের একটি মোবাইল টিম টহল দেবে।

এছাড়াও পুলিশের মোবাইল টিম থাকবে ১০৪টি। এর মধ্যে প্রতিটি আসনে ৬টি করে বিশেষ ৪২টি মোবাইল টিম, সাধারণ মোবাইল টিম ৪৯টি ও স্ট্রাইকিং হিসেবে থাকবে আরও ১৩টি টিম। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে ২৭জন। এর মধ্যে বগুড়া সদর ও বগুড়া-৬ (সদর) আসনে ৪জন। বগুড়া-২( শিবগঞ্জ) আসনে ৩জন। বাকি ৫টি আসনে ৪জন করে ২০জন।

বিজ্ঞাপন

প্রার্থীদের অস্থায়ী নির্বাচনি অফিস থেকে ভোটের দিনের করনীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। ভোটাররা কোন কেন্দ্রে ভোট দেবেন এবং তাদের ভোটার নাম্বার কত সে ভোটার স্লিপ বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেয়ার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থীর কর্মীরা।

বগুড়া, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন,
বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলা) আসনে মূল লড়াই হবে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি আব্দুল মান্নান ও বিএনপি ধানের শীষের প্রার্থী সাবেক এমপি কাজী রফিকুল ইসলাম। এই আসনে ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ১৭ হাজার ৫৬৯ জন।

বগুড়া-২ (শিবগঞ্জ উপজেলা) আসনে বর্তমান এমপি জাতীয় পার্টির (এরশাদ) শরীফুল ইসলাম জিন্নাহ ও নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। ভোটার রয়েছেন ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪০৬জন।

বগুড়া-৩ (আদমদিঘি ও দুপচাঁচিয়া উপজেলা) এই আসনে বিএনপির সাবেক এমপি আব্দুল মোমিন তালুকদার খোকার স্ত্রী মাছুদা মোমিন প্রার্থী হয়েছেন ধানের শীষের। তার সাথে লড়াই হবে মহাজোটের প্রার্থী জাতীয় পার্টির অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম তালুকদারের। ভোটার রয়েছে ২ লাখ ৯৬ হাজার ৪৬৯ জন।

বিজ্ঞাপন

বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা) এ আসনের বর্তমান এমপি জাসদ (ইনু) এর রেজাউল করিম তানসেন লড়ছেন নৌকা প্রতিকে। তার সাথে লড়াই হবে বিএনপির প্রার্থী মোশারফ হোসেনের। ভোটার সংখ্যা মোট ৩ লাখ ১২ হাজার ৮১ জন।

বগুড়া-৫ (ধুনট ও শেরপুর উপজেলা) এই আসনে লড়ছেন মহাজোটের হয়ে বর্তমান এমপি মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান। আর বিএনপির প্রার্থী হয়েছেন সাবেক এমপি গোলাম মোহাম্মদ সিরাজ। মোট ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৯ জন।

বগুড়া-৬ (বগুড়া সদর) আসনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর প্রার্থী হয়েছেন। এই আসনে প্রার্থী হয়েছেন মহজোটের নুরুল ইসলাম ওমর। তিনি জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান এই আসনের এমপি। বগুড়া সদর আসনে মোট ভোটার রয়েছে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ২৭৯ জন।

বগুড়া-৭ (গাবতলী ও শাজাহানপুর উপজেলা) ১৯৯৬ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত টানা চারবার সাংসদ নির্বাচিত হন খালেদা জিয়া। তিনি আবারো এই আসনে মনোনয়ন দাখিল করলে তা বাতিল হয়ে যায়। তার বাতিলের পর বিকল্প প্রার্থী হিসেবে গাবতলী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোরশেদ মিলটনকে দেয়া হলে তারটিও বাতিল হয়ে এখন এই আসনে বিএনপির কোন প্রার্থী থাকছে না। বিএনপির মনোনয়ন স্থগিত হওয়ার কারণে এখন পর্যন্ত এই আসনে বিএনপির কোন প্রার্থী নেই। এই আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জোটের প্রার্থী হয়েছেন জাতীয় পার্টির বর্তমান মুহাম্মদ আলতাফ আলী। তার সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী গাবতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আজম খানের স্ত্রী ফেরদৌস আরা খান, ইসলামী আন্দোলনের শফিকুল ইসলাম, ন্যাপ এর মন্তেজার রহমান, এনপিপির ফজলুল হক, স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম বাবলু।

সারাবাংলা/এনএইচ

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন