বিজ্ঞাপন

নেট বোলার থেকে হ্যাটট্টিক ম্যান 

January 11, 2019 | 8:06 pm

।।স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ছিলেন ঢাকা ডায়নামাইটসের নেট বোলার। তাও এবারের মৌসুমেই প্রথম। নেটে তার স্পিন ম্যাজিক ঢাকার ম্যানেজমেন্টের চোখে লাগে। নিখুঁত লেংথ ও টার্নিং দেখে আর ডানে-বায়ে না তাকিয়ে সোজা ঢাকার একাদশে জায়গা করে দেন কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন।

তার কল্যানেই শুক্রবার (১১ জানুয়ারি) বিগ ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে অভিষেক হয়। সেই অভিষিক্ত ম্যাচেই কী না সবাইকে তাক লাগিয়ে দিলেন! বিপিএলের তৃতীয় বোলার হিসেবে তুলে নিলেন হ্যাটট্টিক! যে রেকর্ড এর আগে দখলে রেখেছিলেন পাক পেসার মোহাম্মদ সামি ও আল আমিন। বুঝতেই পারছেন কার কথা বলছি? তিনি অ্যালিস আল ইসলাম।

ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের উথ্থানের কথা জানালেন এই ডায়নামাইটস হ্যাটট্টিক ম্যান। ‘আমি ঢাকা ডায়নামাইটসের নেট বোলার ছিলাম। আগে আমি ঢাকা ফাস্ট ডিভিশনে খেলেছি। নেট বোলিং করার সময় সুজন (ঢাকার কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন) স্যার আমাকে দেখেন। দেখে ওনার বিশ্বাস হয় যে আমি ভালো করতে পারব, তারপর আমাকে টিমে নেয়। তারপর টিম ম্যানেজমেন্ট, প্লেয়াররা আমাকে সাপোর্ট করে। তারপর আমি সেরা একাদশে।’

বিজ্ঞাপন

অ্যালিসের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছে তৃতীয় বিভাগের দল কলাবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাব থেকে। এরপর দ্বিতীয় ও প্রথম বিভাগ হয়ে বিপিএল। ‘আমি ক্রিকেট খেলা শুরু করি কলাবাগান গ্রিন ক্রিসেন্ট ক্লাব থেকে। তারপর কয়েক বছর সেকেন্ড ডিভিশন খেলার পর  ফাস্ট ডিভিশন খেলি। তারপর এই বিপিএল।’

বলা বাহুল্য ২২ বছর বয়সী এই অফ স্পিনারই ১৮ তম ওভারে এসে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছেন। দুটি ক্যাচ মিস করে যখন দলকে বিপদে ফেলে দিয়েছিলেন পরে নিজের কাঁধেই তুলে নিলেন দলের ভার। প্রথমে ফেরালেন মিঠুনকে। ৪৯ রানে ক্রিজে তখন এ জাতীয় দলের ক্রিকেটার। অ্যালিসের বল স্লগ সুইপ করতে গিয়েছিলাম। ব্যাট মিস। বল স্টাম্প ভাঙে। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় উইকেট আদায় করে নেন আলিস।

ক্রিজে তারপর রংপুর অধিপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। এবার বল একই জায়গা ফেলেন একটু টার্ন করিয়ে। আবারও ব্যাট মিস। বল কিপার সোহানের হাতে। জোরে হাঁকাতে গিয়ে ম্যাশের গোড়ালি দাগের বাইরে। সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্টাম্পিংয়ে ওভারের দ্বিতীয় উইকেট অ্যালিসের।

বিজ্ঞাপন

উইকেট যাওয়া-আসার দৌড়ে অলরাউন্ডার ফরহাদ রেজা ক্রিজে। এবার অ্যালিসের বলটা স্টাম্পে রেখে হালকা টার্নিং করালেন এই নবাগত অফ স্পিনার। বল ব্যাটে লেগে প্রথম স্লিপে। ব্যাস…হ্যাটট্রিক পূরণ। বিপিএলের তৃতীয় হ্যাটট্রিক। তার এক ওভার আগে ৮৩ রানে ক্রিজ ছাড়া করেছেন বিস্ফোরক রাইলে রুশোকে। ৪ ওভারে ২৬ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট।

অথচ ঢাকার জয়ের এই ম্যাচে ম্যাচের ‘ভিলেনও’ হতে পারতেন আলিস। এক ওভারে দুই দুটি ক্যাচ মিস করে ম্যাচ হাতের ‍মুঠো থেকে বেরিয়ে যেতে পারতো। ম্যাচের রঙ বদলানের নিজ হাতেই। অভিষেক ম্যাচে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে মাঠে নেমে ‘ভিলেন’ থেকে হিরো হলেন তিনিই।

দুটি লোপ্পা ক্যাচ। তারপরেও মিস। কেন? এই ক্যাচ ধরতে তো আর উচ্চতর ক্রিকেটীয় জ্ঞান লাগে না। এ,বি,সি,ডি’ই যথেষ্ট। না, সেটা অন্যমস্কতা বা অদক্ষতার কারণে নয়। বিপিএলে একেবারেই নতুন। তার উপর স্টেডিয়ামে এই প্রথম বলে। ‘আসলে এটা আমার বিপিএলে প্রথম ম্যাচ। খোলাসা করে বলতে গেলে স্টেডিয়ামেই এটা আমার প্রথম ম্যাচ। আমি আসলে অনেক নার্ভাস ছিলাম।’

‘তবে ক্যাচ দুটি ড্রপ করার পর টিমমেটটা অনেক সাপোর্ট করেছে আমাকে, কোচ সাপোর্ট করেছেন। সবাই আসলে অনেক সাহস দিয়েছেন। তাতে আমার মনে হয়েছে যে, ভালো জায়গায় বলটা করতে পারি তাহলে ভালো কিছু হতে পারে। আমি শুধু ভালো জায়াগায় বল করতে চেয়েছি।’

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এমআরএফ/জেএইচ

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন