বিজ্ঞাপন

ফিল্ডিং করেও ইতিহাসে থাকা যায়, প্রমাণ করেছেন জন্টি রোডস

January 14, 2019 | 8:00 pm

।। মুশফিক পিয়াল, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর ।।

বিজ্ঞাপন

১৯৭১ সালের ৫ জানুয়ারি ইতিহাসের প্রথম ওয়ানডে অনুষ্ঠিত হয়। মেলবোর্নে সে ম্যাচে মুখোমুখি হয় ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ক্রিকেটের শুরুটা অনেকটা অনাকাঙ্ক্ষিত ভাবেই হয়েছিল। ১৯৭০-১৯৭১ অ্যাশেজ সিরিজের প্রথম দুটি টেস্ট সম্পন্ন হলেও মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃষ্টির কারণে তৃতীয় টেস্টটি শুরুই হতে পারছিল না। ম্যাচটির প্রথম তিন দিন বৃষ্টির পেটে ঢুকে যায়, শেষ দিনে আবহাওয়া অনুকূলে এলেও কর্তৃপক্ষ ম্যাচটি ৪০ ওভারের সীমানা বেধে দেয়। প্রতি ওভারে হয় ৮ বল করে। ৫ উইকেটে সেই ম্যাচটি জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। এরপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃত ওয়ানডে ম্যাচ চলে আসছে।

সারাবাংলা.নেটের পাঠকদের জন্য আজ থাকছে ওয়ানডে ক্রিকেটে ক্যাচের রেকর্ডস।

আরও পড়ুন: টেস্টের বদলি খেলোয়াড় মাশরাফির ‘ইনিংসে তিন ক্যাচ’

বিজ্ঞাপন

 

সর্বোচ্চ ক্যাচ:
এশিয়া একাদশ আর শ্রীলঙ্কা জাতীয় দলে খেলা লঙ্কান গ্রেট মাহেলা জয়াবর্ধনে ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ক্যাচ নিয়ে শীর্ষে অবস্থান করছেন। ৪৪৮ ম্যাচের ৪৪৩ ইনিংসে জয়াবর্ধনে নিয়েছেন ২১৮টি ক্যাচ। ক্রিকেটের এই ফরম্যাটে ২০০’র উপরে ক্যাচ নেওয়া আর কোনো ক্রিকেটার নেই।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্যাচ নিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং। ৩৭৫ ম্যাচের ৩৭২ ইনিংসে পন্টিংয়ের মুঠোবন্দি হয়েছে ১৬০টি ক্যাচ। অজিদের সাবেক দলপতির থেকে চারটি ক্যাচ কম নিয়েছেন ভারতের সাবেক দলপতি মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন। ৩৩৪ ম্যাচের ৩৩২ ইনিংসে তিনি নিয়েছেন তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৫৬টি ক্যাচ। ভারতের কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার ৪৬৩ ওয়ানডের ৪৫৬ ইনিংসে নিয়েছেন চতুর্থ সর্বোচ্চ ১৪০টি ক্যাচ। এই তালিকায় পাঁচে আছেন এখনও নিউজিল্যান্ডের জার্সিতে খেলে যাওয়া রস টেইলর। এই কিউই তারকা ২১০ ম্যাচের ২০৬ ইনিংসে নিয়েছেন ১৩৩টি ক্যাচ।

বিজ্ঞাপন

ইনিংসে সর্বোচ্চ ক্যাচ:
ফিল্ডিংয়ের কিংবদন্তি বলা হয় মাঠে পাখির মতো উড়ে বেড়ানো দক্ষিণ আফ্রিকার জন্টি রোডসকে। এরকম উড়ন্তভাবেই প্রায় পুরো ক্যারিয়ারটা কাটিয়েছেন তিনি। ‘সর্বকালের সেরা বোলার কিংবা সেরা ব্যাটসম্যান’ নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক না কেন, ‘সর্বকালের সেরা ফিল্ডার’ নিয়ে মোটামুটি কোনো বিতর্ক নেই। সেখানে জন্টি রোডসের বিকল্প ভাবাটাই দুষ্কর। ফিল্ডিং করেও যে ক্রিকেট ইতিহাসে স্মরণীয় হয়ে থাকা যায় তা জন্টি রোডস প্রমাণ করে ছেড়েছেন। ওয়ানডে ক্রিকেটের একমাত্র ফিল্ডার হিসেবে তিনি এক ইনিংসে নিয়েছেন সর্বোচ্চ ৫টি ক্যাচ। ১৯৯৩ সালের ১৪ নভেম্বর মুম্বাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ক্যাচ নিয়ে পাঁচ ক্যারিবীয়ানকে সাজঘরে ফিরিয়েছিলেন জন্টি। সেটি ছিল ওয়ানডে ক্রিকেটের ৮৪৯তম ম্যাচ।

এক ইনিংসে সর্বোচ্চ চারটি করে ক্যাচ নিয়েছেন অনেকেই। এই তালিকায় বাংলাদেশের সৌম্য সরকারের নামও রয়েছে। ২০১৫ সালের ৫ মার্চ নেলসনে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সৌম্য নিয়েছিলেন চারটি ক্যাচ। সবশেষ ২০১৮ সালের ২১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের বিপক্ষে দুবাইয়ে ভারতের শিখর ধাওয়ান চারটি ক্যাচ নিয়েছেন।

এক সিরিজে সর্বোচ্চ ক্যাচ:
২০০৩-০৪ মৌসুমে ভিবি সিরিজে ১০ ম্যাচ খেলে ভারতের ভিভিএস লক্ষণ নিয়েছিলেন ১২টি ক্যাচ। অস্ট্রেলিয়া-ভারত-জিম্বাবুয়েকে নিয়ে অজিদের আয়োজিত এই সিরিজে লক্ষণ এক ম্যাচে নিয়েছিলেন সর্বোচ্চ চারটি ক্যাচ। এছাড়া এক সিরিজে ১২টি ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডে নাম আছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যালান বোর্ডারের। ১৯৮৮-৮৯ বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজে অংশ নিয়েছিল স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান-ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ১১ ম্যাচ খেলে সেবার অ্যালান বোর্ডার নিয়েছিলেন ১২টি ক্যাচ।

১১টি করে ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড আছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কার্ল হুপার, নিউজিল্যান্ডের জেরেমি কনি, অস্ট্রেলিয়ার রিকি পন্টিং এবং অ্যালান বোর্ডারের। ১৯৯২-৯৩ মৌসুমে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত টোটাল ইন্টারন্যাশনাল সিরিজে স্বাগতিকরা ছাড়াও অংশ নিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ-পাকিস্তান। সেখানে ক্যারিবীয়ান কিংবদন্তি কার্ল হুপার ১১টি ক্যাচ নেন। ১৯৮০-৮১ মৌসুমে বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজে নিউজিল্যান্ডের জেরেমি কনি, ২০০২-০৩ মৌসুমে কেনিয়া-দ. আফ্রিকা-জিম্বাবুয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্বকাপে রিকি পন্টিং এবং ১৯৮৫-৮৬ মৌসুমে বেনসন অ্যান্ড হেজেস ওয়ার্ল্ড সিরিজ কাপে অ্যালান বোর্ডার ১১টি করে ক্যাচ নেন।

বিজ্ঞাপন

এক সিরিজে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১০টি করে ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ড আছে অস্ট্রেলিয়ার অ্যান্ড্রু সাইমন্ডস, ওয়েস্ট ইন্ডিজের ভিভ রিচার্ডস আর নিউজিল্যান্ডের স্টেফিং ফ্লেমিংয়ের।

বদলি খেলোয়াড় হিসেবে এক ম্যাচে সর্বোচ্চ ক্যাচ:
১৯৮০ সালের ২৩ নভেম্বর অ্যাডিলেডে মুখোমুখি হয় নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া। ওয়ানডে ইতিহাসের ৯৪তম সেই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ৩ উইকেটে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড। ম্যাচে সর্বোচ্চ চারটি ক্যাচ নিয়েছিলেন নিউজিল্যান্ডের বদলি খেলোয়াড় জন ব্রাসওয়েল। তার মুঠোবন্দি হয়ে সাজঘরে ফিরেছিলেন দুই ওপেনার জন ডাইসন, গ্রায়েম উড, রড মার্শ এবং শন গ্রাফ। কিউই গ্রেট ব্রাসওয়েলের মতো আর কেউ বদলি হিসেবে এক ম্যাচে চারটি ক্যাচ নিতে পারেননি।

তবে, বদলি খেলোয়াড় হয়ে এক ম্যাচে তিনটি করে ক্যাচ নিয়েছেন চারজন। এই তালিকায় আছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্রায়ান ম্যাকমিলান, নিউজিল্যান্ডের ব্রায়ান ইয়ং, পাকিস্তানের নাসির জামশেদ এবং জিম্বাবুয়ের রায়ান মারে। এই চারজন ভিন্ন চারটি ম্যাচে বদলি হিসেবে নিজ নিজ দেশের হয়ে ফিল্ডিংয়ে নেমেছিলেন। যার দুটি ম্যাচই হয়েছিল ঢাকায়। পাকিস্তানের নাসির জামসেদ ২০০৮ সালের জুনে ভারতের বিপক্ষে এবং ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের রায়ান মারে ঢাকার মাঠে বদলি হিসেবে নেমে তিনটি করে ক্যাচ লুফে নেন।

সারাবাংলা/এমআরপি

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন