বিজ্ঞাপন

অন্তিম শয়ানে মেয়র আনিসুল

December 2, 2017 | 12:27 pm

সারাবাংলা প্রতিবেদক

বিজ্ঞাপন

অন্তিম শয়ানে শায়িত করা হলো ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রয়াত মেয়র আনিসুল হককে।  আজ শনিবার বাদ আসর রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে জানাজা শেষে সন্ধ্যার ঠিক আগে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে ও ছোট ছেলে শরাফুল হকের কবরে তার দাফন সম্পন্ন হয়।

এর আগে আর্মি স্টেডিয়ামের জানাযায় অংশ নিতে জনতার ঢল নামে।  প্রিয় মানুষটিকে শেষ বারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে আসেন সরকারি দলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন পর্ায়ের নেতাকর্মীর পাশাপাশি বিভিন্ন শ্রেণি পেশার হাজারো মানুষ।

জানাযার আগে আনিসুল হকের একমাত্র ছেলে নাভিদুল হক বলেন, ‘আমার বাবা খুবই হাসিখুশি একজন প্রাণবন্ত মানুষ ছিলেন। তিনি জীবনে কারো সমালোচনা করতে পছন্দ করতেন না।  যদিওবা কথা প্রসঙ্গে কারো সমালোচনা হয়ে যেতো পরোক্ষণে তিনি তার ভালো গুণগুলোর কথাও বলতেন।  আজ এই স্টেডিয়ামে হাজার হাজার মানুষ যারা আমার বাবার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এসেছেন এটা তার জীবনের অনেক বড় একটা অর্জন।

বিজ্ঞাপন

রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের নামাজে জানাযায় জনতার ঢল: ছবি: সুমিত আহমেদ

উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে নাভিদুল হক আরো বলেন, ‘ উনি নিজের স্বার্থে কখনো কাউকে কষ্ট দেননি।  কিন্তু মেয়র হওয়ার পর উনাকে অনেক সময় কিছু সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে, যা ছিলো শহরের স্বার্থে এই শহরের মানুষের স্বার্থে। এতে যদি আপনারা কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে দয়া করে আমার বাবাকে আপনারা ক্ষমা করে দিবেন। আমি তার পক্ষ থেকে আপনাদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি’।

এসময় তার বাবার কাছে যাবতীয় দেনা-পাওনার বিষয়ে তাকে অবহিত করার অনুরোধ জানান তিনি।

এর আগে, স্টেডিয়ামে মরহুমের বিদেহী আত্মার প্রতি রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল সারওয়ার হোসেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন ও স্পিকার  শিরীন শারমিন  চৌধুরীর পক্ষে থেকে তার সামরিক সচিব সার্জন অব আর্মড ক্যাপ্টেন মোস্তাক আহমেদ  ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।

বিজ্ঞাপন

এর আগে আজ শনিবার বেলা ১১টা ২৬ মিনিটে মেয়র আনিসুল হকের মরদেহবাহী (বিজি-২০২) বিমান সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে।  সেখানে যাত্রাবিরতির পর বেলা একটার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এসে পৌঁছে। সেখান থেকে সরাসরি তার লাশ নিয়ে আসা হয় বনানীর বাসভবনে। সেখানে পরিবারের লোকজন-আত্মীয় স্বজনদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলা তিনটার দিকে নিয়ে যাওয়া হয় আর্মি স্টেডিয়ামে।

প্রিয় মেয়রের বাসার সামনে শোকশন্তপ্ত গুনগ্রাহীদের ভীড়। ছবি: সুমিত আহমেদ

গত ২৯ জুলাই নাতির জন্ম উপলক্ষে ব্যক্তিগত সফরে সপরিবারে যুক্তরাজ্য যান আনিসুল হক।  সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে ১৩ আগস্ট তাকে লন্ডনের ন্যাশনাল নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার মস্তিষ্কে প্রদাহজনিত রোগ ‘সেরিব্রাল ভাস্কুলাইটিস’ শনাক্ত করেন চিকিৎসকরা।

এরপর তাকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছিল।  ধীরে ধীরে অবস্থার উন্নতি ঘটলে তাকে গত ৩১ অক্টোবর আইসিইউ থেকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টারে স্থানান্তর করা হয়।  গত সোমবার অবস্থার অবনতি হলে তাকে রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার থেকে পুনরায় আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়।  প্রায় সাড়ে তিন মাস চিকিৎসাধীন থাকার পর গত বৃহস্পতিবার মারা যান তিনি।

২০১৫ সালে আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন নিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র নির্বাচিত হন আনিসুল হক।

বিজ্ঞাপন

 

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন