বিজ্ঞাপন

ভর্তুকি বাড়ানো দরকার: কৃষিমন্ত্রী

February 2, 2019 | 3:00 pm

।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট।।

বিজ্ঞাপন

গাজীপুর থেকে: কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ভর্তুকি বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।

তিনি বলেন, ‘কৃষিতে আরও ভর্তুকি বাড়াতে হবে। কারণ বর্তমানে কৃষি শ্রমিকের সংকট রয়েছে। আর উৎপাদন ক্ষেত্রে শ্রমিকের খরচই সবচেয়ে বেশি। ফলে যন্ত্রপাতির ব্যবহারের বিকল্প নেই। আর কৃষক পর্যায়ে আধুনিক যন্ত্রের প্রসার ঘটাতে আরও বেশি ভর্তুকি প্রয়োজন।’

শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) গাজীপুরের ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটে প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাঁচ দিনব্যাপী এই কর্মশালায় আজ ছিল উদ্বোধনী দিন।

বিজ্ঞাপন

ধানের নতুন জাত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ‘স্বাদের’ বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষ এখন স্বাদের দিকটি বিবেচনা করে। স্বাদের ব্যাপারটি গুরুত্বপূর্ণ। তাই স্বাদের বিষয়টি বিবেচনা করে নতুন জাত উদ্ভাবন করতে হবে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘এত এত জাত উদ্ভাবন হচ্ছে, কিন্তু আটাশ উনত্রিশ ছাড়া অন্য কোনো জাত কেন মাঠে যাচ্ছে না তা নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে। নতুন উদ্ভাবিত ধানের জাত মাঠ পর্যায়ে প্রসারের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ফারাক থাকলে তা দূর করতে হবে। কৃষি সম্প্রসারণের সঙ্গে কোনো ফারাক আছে কি না তা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। এখনও ৪ থেকে ৫ মিলিয়ন টন গম আমদানি করতে হচ্ছে। গমের ওপর নির্ভরতা কমাতে হবে। দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও ধানের উৎপাদন আরও বাড়াতে হবে। তাই হাওড় ও কোস্টাল এরিয়াকে প্রাধান্য দিয়ে আরও বেশি বন্যা ও খরা সহিষ্ণু জাত উদ্ভাবন প্রয়োজন।’

সরিষা উৎপাদনে জোর দিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে আমাদের এখনো অনেক বেশি পামওয়েল ও সয়াবিন আমদানি করতে হচ্ছে। কিন্তু এর আমদানি কমাতে হবে।’

বিজ্ঞাপন

দেশে সরিষা চাষ বাড়াতে ভবিষ্যতে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়ার কথাও জানান তিনি। প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম সুগার মিলগুলোতে নতুন প্রযুক্তি প্রসারের ওপরও জোর দেন মন্ত্রী৷

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাসিরুজ্জামান বলেন, নতুন কোন উদ্ভাবিত জাত সম্পর্কে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের বিজ্ঞানীরা বলেন জাতটি ৮ টন ফলন দিবে। কিন্তু মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ওই জাত থেকে আমরা ৪ টনও ফলন পাই না। বিজ্ঞানীদের আশানুযায়ী মাঠ পর্যায়ে কেন ফলন হয় না তা নিয়েও গবেষণা করা যেতে পারে।’

প্রচলিত জাত পরিবর্তনের মাধ্যমে দেশে ধানের উৎপাদন বাড়বে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর বলেন, ‘নিত্য নতুন জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে খাদ্যের স্বয়ংসম্পূর্ণতা নিশ্চিত করা আমাদের প্রধান লক্ষ্য। এ টার্গেট পূরণে আমাদের সর্বেশষ সংযোজন উচ্চফলনশীল ব্রি ধান ৮৮ ও ব্রি ধান ৮৯।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকারের গত ১০ বছরে আমরা ৪৩ টি নতুন জাত উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছি। আগামী ২ বছরের মধ্যে ব্লাস্ট প্রতিরোধী ধানের জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্য রয়েছে।’

কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে ধান ক্রয়ের ক্ষেত্রে অনলাইন সিস্টেম চালুর পরামর্শ দেন শাহজাহান কবীর।

গত এক বছরের গবেষণা কার্যক্রম ও আগামী এক বছরের পরিকল্পনা তুলে ধরে ধান গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক (গবেষণা) ড. তমাল লতা আদিত্য বলেন, ব্লাস্ট প্রতিরোধী ধানের জাত উদ্ভাবনের লক্ষ্যে আমাদের কাজ চলছে। একই সঙ্গে গভীর ও কম পানিতে চাষ উপযোগী ধানের জাত উদ্ভাবনের চেষ্টাও চলছে।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘প্রচলিত জাতের চেয়ে হাইব্রিড ধানের জাত উদ্ভাবনে আরও বেশি নজর দিতে হবে। প্রয়োজনে হাইব্রিড গবেষণা ইনস্টিটিউট নামে আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান করা যেতে পারে।’

এতে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান ফজলে ওয়াহেদ খোন্দকার, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান কবির ইকরামুল হক ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের মহাপরিচালক মীর নূরুল আলম।

সারাবাংলা/ইএইচটি/একে

Tags: ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন