বিজ্ঞাপন

‘চিন্তাও করিনি বের হতে পারব’

February 4, 2019 | 2:27 am

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা: ‘বিচারের সময় আমি জজ সাহেবকে বলেছিলাম আমি আবু সালেক না, আমি জাহালম। আমি নির্দোষ। জজ সাহেব আমার কথা বিশ্বাস করেননি। জজ সাহেব আমার ছবি দেখে বলেছিলেন আমিই নাকি আবু সালেক।’ এভাবেই নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করলেন তিন বছর জেল খেটে মুক্তি পাওয়া নির্দোষ জাহালম।

সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ১২টা ৫০ মিনিটে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ থেকে মুক্তির পর সাংবাদিকদের সামনে তিনি একথা বলেন।এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেন এবং তার বিরুদ্ধে যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে তাদের বিচার চান।

কারামুক্তির পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাহালম বলেন, ‘কারাগারে অনেক কষ্টে আমার দিন কেটেছে, মানুষের কাপড় ধুয়ে, কাজ করে দিয়ে ভালো খাবার খাইছি। আমার জীবন থেকে তিনটি বছর চলে গেছে। আমি রাষ্ট্রের কাছে ক্ষতিপূরণ চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে ক্ষতিপূরণ চাই।’

বিজ্ঞাপন

জাহালম বলেন, ‘জজ সাহেবকে বলেছিলাম আমি এ মামলার আসামি না। আমি আবু সালেক না। আমি জাহালম। কিন্তু তিনি আমার কথা বিশ্বাস করেননি। সাক্ষীরা আমাকে আবু সালেক বলে সাক্ষ্য দিয়েছে। কিন্তু আমি তো এ মামলার কিছুই জানি না। মাসে পাঁচ থেকে ছয়বার করে আদালতে যাইতাম। অনেক কষ্ট লাগতো। কাঁদতামও। কাশিমপুর থেকে প্রতিনিয়ত যাওয়া খুব কষ্ট লাগতো।’

দুদুকের ভুলে জাহালম বিনা কারণে তিন বছর জেল খেটেছেন। তাই দুদকের কঠিন বিচার দাবি করে জাহালম বলেন, ‘সঠিক তদন্ত করে যেন আসামি ধরা হয়।’

জাহালম আরও বলেন, ‘আমি জীবনে চিন্তাও করতে পারিনি যে বের হতে পারব। আমি মানবাধিকার কমিশন ও প্রথম-আলো প্রত্রিকাকে ধন্যবাদ জানাই।’

বিজ্ঞাপন

এসময় তার ভাই সাহানুর মিয়া বলেন, ‘যাদের ভুলের কারণে তার ভাই জেল খেটেছে তাদের বিচার এবং ক্ষতিপূরণ চাই।’

উল্লেখ্য সোনালী ব্যাংকের ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির ঘটনায় সালেক নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে দুদকের দায়ের করা ৩৩টি মামলার মধ্যে ২৬টিতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ২০১৬ সালে পুলিশ ভুল করে সালেকের পরিবর্তে টাঙ্গাইলের জাহালমকে গ্রেফতার করে। পরবর্তীতে আদালতের রায়ে জাহালম ৩ বছর ধরে সাজা খেটেছেন। এ নিয়ে সম্প্রতি একটি জাতীয় দৈনিক ‘স্যার আমি সালেক না, জাহালম’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনটি হাইকোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত আদালতের নজরের আনেন। পরে বিষয়টি আমলে নিয়ে  বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ তাকে মুক্তি দেওয়ার আদেশ দেন। একইসঙ্গে আদালত এই ভুল তদন্তের সঙ্গে কারা জড়িত, তাদের চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। না হলে আদালত এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবে বলে আদেশে উল্লেখ করেন।

সারাবাংলা/এজেডকে/পিএ

বিজ্ঞাপন

Tags: , ,

বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন